Tag: উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

  • রিয়ালকে একহালি দিয়ে ফাইনালে ম্যানসিটি

    রিয়ালকে একহালি দিয়ে ফাইনালে ম্যানসিটি

    একেই বলে মধুর প্রতিশোধ। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ফিরতে লেগে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এগিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু শেষ মুহূর্তের ম্যাজিকে সিটিকে বিদায় করে ফাইনালে উঠেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এবার‌ও সেমিফাইনালে সেই রিয়াল মাদ্রিদের‌ই মুখোমুখি হলো ম্যান সিটি।

    প্রথম লেগে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে গিয়ে ১-১ গোলে ড্র করে এসেছিল পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। সিটি সমর্থকদের মনের দুরু দুরু ভয়, ফিরতি লেগে না আবার ম্যাজিক দেখিয়ে বসে রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু সব সময় ম্যাজিক কাজ করে না। সেটা অন্তত হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। ম্যান সিটি যে নিজেদের মাঠে কতটা দুর্ধর্ষ, বুঝতে পেরেছে রিয়ালের ডিফেন্স।

    লজ ব্লাঙ্কোজদের ডিফেন্সকে ছিন্নভিন্ন করে ৪বার পোস্টে বল জড়িয়েছে ম্যানসিটি। ইত্তিহাদে ৪-০ গোলে জয়, দুই লেগ মিলিয়ে রিয়ালকে ৫-১ হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠে গেলো ম্যানচেস্টার সিটি। ১০ জুন ইস্তাম্বুলের ফাইনালে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে সিটিজেনরা।

    ম্যানসিটির হয়ে রিয়ালের জালে দুবার বল জড়িয়েছেন পর্তুগিজ তারকা বার্নার্ডো সিলভা। বাকি দুই গোল করেছেন ম্যানুয়েল আকানজি এবং আর্জেন্টাইন তারকা হুলিয়ান আলভারেজ। আর্লিং হালান্ডের পরিবর্তে শেষ দুই মিনিটের জন্য মাঠে নেমে‌ই গোল পেয়েছেন আলভারেজ। কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এই আর্জেন্টাইন তারকা।

     

  • চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে কে কার মুখোমুখি

    চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে কে কার মুখোমুখি

    নিয়নে হয়ে গেলো উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র। চূড়ান্ত হলো সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কে কার মুখোমুখি হচ্ছে। এবারের আসরে সবচেয়ে বেশি ইতালির তিন ক্লাব উঠেছে শেষ আটে। ইন্টার মিলান, এসি মিলান ও নাপোলি ইতালির ভরসা। এছাড়া ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করবে চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটি। অন্য তিন ক্লাব বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ ও বেনফিকা।

    রিয়াল প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে চেলসিকে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রিয়াল, আর ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়ন চেলসি। শেষ ষোলোতে গত বছরের ফাইনালিস্ট লিভারপুলকে ৬-২ গোলের অগ্রগামিতায় বিদায় করার পর আরেকটি ইংলিশ ক্লাবের মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল। গ্রাহাম পটারের চেলসি বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে বছরের প্রথম হাারের স্বাদ দিয়ে ২-১ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ আটে।

    তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানসিটির প্রতিপক্ষ বায়ার্ন। ম্যানসিটি কোচ পেপ গার্দিওলা এবার তার সাবেক ক্লাবের মুখোমুখি হচ্ছেন। ২০১৩ সাল থেকে টানা তিন মৌসুম বায়ার্নের প্রধান কোচ ছিলেন তিনি। বুন্দেসলিগায় অপ্রতিরোধ্য থাকলেও তার আমলে প্রতি বছর চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে শেষ হয়েছিল মিশন। এবার সেই দলকে বধের ছক কষবেন স্প্যানিশ কোচ।

    ইন্টার দ্বিতীয় শেষ আটের খেলায় মুখোমুখি হবে বেনফিকার। নাপোলি শেষ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে অল ইতালিয়ান ম্যাচ, তাদের প্রতিপক্ষ মিলান। সিরি আ’র বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মিলান অল ইতালিয়ান লিগে এখনকার শীর্ষ দল নাপোলি।

    একই সঙ্গে সেমিফাইনালে কোন দল কাকে খেলবে, সেই লাইনআপও নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের বিজয়ী দল খেলবে চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট জয়ী দলের বিপক্ষে, মানে ইন্টার-বেনফিকা বনাম নাপোলি-মিলান ম্যাচ জয়ী প্রথম সেমিফাইনালে খেলবে। আর প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে জয়ী দল, অর্থাৎ রিয়াল-চেলসি ম্যাচের বিজয়ী দল দ্বিতীয় সেমিফাইনাল মুখোমুখি হবে ম্যানসিটি-বায়ার্নের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল জয়ী দলের। দুই সেমিফাইনাল বিজয়ী ক্লাব ইস্তানবুলে আগামী ১০ জুন শিরোপার লড়াইয়ে নামবে।

    প্রথম লেগ হবে ১১-১২ এপ্রিল। দ্বিতীয় লেগের খেলা হবে ১৮-১৯ এপ্রিল। সেমিফাইনালের প্রথম লেগ ৯-১০ মে এবং পরের লেগ ১৬-১৭ মে।

    প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল- রিয়াল মাদ্রিদ বনাম চেলসি

    দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল- ইন্টার মিলান বনাম বেনফিকা

    তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল- ম্যানসিটি বনাম বায়ার্ন মিউনিখ

    চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনাল- এসি মিলান বনাম নাপোলি

    প্রথম সেমিফাইনাল- ইন্টার/বেনফিকা বনাম নাপোলি/মিলান

    দ্বিতীয় সেমিফাইনাল- রিয়াল/চেলসি বনাম ম্যানসিটি/বায়ার্ন

  • ম্যাকাবিকে ৭ গোল দিয়ে শেষ ষোলোয় পিএসজি

    ম্যাকাবিকে ৭ গোল দিয়ে শেষ ষোলোয় পিএসজি

    ম্যাকাবি হাইফার বিপক্ষে গোল উৎসব করে শেষ ষোলোতে প্যারিস সেন্ট জার্মেইন। পার্ক দে প্রিন্সেসে ৭-২ গোলের দাপুটে জয়ে দুটি করে গোল করলেন লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপে। করালেনও দুটি করে। আক্রমণ ত্রয়ীর আরেক তারকা নেইমারও পেলেন গোল। এই জয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে মেসি-নেইমাররা। ‘এইচ’ গ্রুপে ৫ ম্যাচে পিএসজির পয়েন্ট ১১। ঘরের মাঠে ৪-৩ গোলে জুভেন্টাসকে হারিয়ে প্যারিসিয়ানদের সমান পয়েন্ট নিয়ে নকআউট নিশ্চিত করেছে বেনফিকাও। গোল ব্যবধানে তারা দ্বিতীয় স্থানে।

    ঘরের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই ইসরায়েলি ক্লাবটিকে চেপে ধরে পিএসজি। ১৯ মিনিটে গোলের দেখা পায় ফরাসি জায়ান্টরা। বক্সের ভেতর এমবাপ্পেকে লক্ষ্য করে বল বাড়ান মেসি। সেই বল নিয়ন্ত্রণে নিতে না পেরে ফের মেসিকে পাস দেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। বল পেয়ে বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।

    ৩২ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান এমবাপ্পে। মেসির মতোই বাঁকানো শটে দলকে জোড়া গোলের লিড এনে দেন এই ফরাসি তারকা। তিন মিনিট পর মেসির অ্যাসিস্টে গোল করেন নেইমার। ৩৮ মিনিটে ফ্রি কিকে হেড করে ব্যবধান কমান আবদুলায়ে সেক। কিন্তু একটু পরই ব্যবধান বাড়ান মেসি। হালি পূরণের পর বিরতিতে যায় পিএসজি।

    বিরতির পর ব্যবধান আরও কমায় ম্যাকাবি। ৫০ মিনিটে কর্ণার থেকে উড়ে আসা বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি পিএসজি। বল পেয়ে আবদুলায়ে সেককে লক্ষ্য করে ক্রস বাড়ান পিয়েরট। দারুণ হেডে লক্ষভেদ করতে ভুলেননি এই ডিফেন্ডার।

    ৬৪ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল পূর্ণ করেন এমবাপ্পে। আশ্রাফ হাকিমির ক্রস থেকে সহজ শটে জাল খুঁজে নেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড। তিন মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়ে পিএসজির। নেইমারের পা থেকে ছুটে আসা শট ভুল শটে নিজেদের জালে পাঠান ম্যাকাবির ডিফেন্ডার।

    ম্যাচের শেষদিকে গিয়ে খাইফার জালে আরও একটি গোল ঠুকে দেয় পিএসজি। ৮৪ মিনিটে বাঁ দিক থেকে পাওয়া মেসির পাস দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন কার্লোস সোলার। বড় ব্যবধানের এই জয় নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে মেসি-নেইমাররা।

  • রিয়ালের জয়রথ থামালো লাইপজিগ

    রিয়ালের জয়রথ থামালো লাইপজিগ

    সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৮ ম্যাচ ধরে অপরাজিত থাকার রেকর্ড ছিল রিয়াল মাদ্রিদের নামের সঙ্গে। সেই রেকর্ড ভেঙে দিল আরবি লাইপজিগ। নিজেদের মাঠেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি ৩-২ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা। হেরেও এক ম্যাচ হাতে রেখে শেষ ষোলোর টিকিট নিশ্চিত করেছে রিয়াল।

    লাইপজিগের বিপক্ষে বেশ কয়েকজন নিয়মিত খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দেন কার্লো আনচেলত্তি। তাতে করে তরুণ লাইপজিগ দল তাদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে। স্বাগতিকরা ১৩ মিনিটে লিড নেয় জোস্কো জিভারদিওলের গোলে। আন্দ্রে সিলভার হেড থিবো কোর্তোয়া ফিরিয়ে দিলে জাল কাঁপান তিনি।

    খানিক পরেই অবশ্য দ্বিতীয় গোল হজম করে তারা। সতীর্থের শট প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে বক্সে পেয়ে যান এনকুনকু। জায়গা বানিয়ে নেন বুলেট গতির শট, বল ক্রসবারের ভেতরের দিকে লেগে জালে জড়ায়।

    এরপর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠে রিয়াল। চাপ ধরে রেখে তারা সাফল্য পায় বিরতির ঠিক আগে। ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পেনাল্টি স্পটের কাছাকাছি ক্রস বাড়ান আসেনসিও। ফাঁকায় বল পেয়ে নিখুঁত হেডে ব্যবধান কমান ভিনিসিয়াস।

    কিন্তু টিমো বার্নারের শটে ৮১ মিনিটে রিয়াল ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে। ফাউলের শিকার হয়ে রদ্রিগো পেনাল্টি থেকে যোগ করা সময়ে রিয়ালের দ্বিতীয় গোল করেন। কিন্তু এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে প্রথম হার ঠেকাতে যথেষ্ট ছিল না।

    ম্যাচ শেষে আনচেলত্তি বলেন, ‘দুটি সেট পিচ থেকে আমরা দুটি গোল খেয়েছি এবং পরে ম্যাচটা হয়ে গেলো তারা যেমন চেয়েছিল। কাউন্টার অ্যাটাকে খেললো, যেটায় তারা খুব ভালো’

    লাইপজিগের দুর্দান্ত এই জয়ে গ্রুপের লড়াইটা বেশ জমে উঠেছে। অন্য ম্যাচের ওপর নির্ভর না করে গ্রুপ সেরা হতে শেষ ম্যাচে সেল্টিকের বিপক্ষে জিততে হবে রিয়ালকে। ৯ পয়েন্ট নিয়ে জার্মান দল দ্বিতীয় স্থানে, রিয়ালের চেয়ে এক পয়েন্ট পেছনে ও শাখতারের চেয়ে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে। আগামী সপ্তাহে শেষ গ্রুপ ম্যাচে ইউক্রেনিয়ান ক্লাবের মুখোমুখি হবে লাইপজিগ। নকআউট নিশ্চিত করতে একটি ড্র যথেষ্ট।

  • রিয়ালের ১৪ তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়

    রিয়ালের ১৪ তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়

    মোহামেদ সালাহর বিধ্বংসী আক্রমণ, সাদিও মানের বুলেট গতির শটে জেরবার অবস্থা। কিন্তু থিবো কোর্তোয়া অবিশ্বাস্য দৃঢ়তায় শুধু পোস্ট আগলে রাখলেন না, যেন ধরে রাখলেন রিয়াল মাদ্রিদের হাল। এর মাঝেই আচমকা এক প্রতি-আক্রমণে ব্যবধান গড়ে দিলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। ব্যস, আসর জুড়ে দুর্দান্ত সব প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখা কার্লো আনচেলত্তির দল সাফল্যের রঙ-তুলি দিয়ে আঁকল চেনা ছবি। ইউরোপ সেরার মুকুট আবারও উঠল তাদের মাথায়।

    ফ্রান্সের প্যারিসে শনিবার রাতের ফাইনালে ১-০ গোলে জিতে রেকর্ড ১৪তম বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতল মাদ্রিদের দলটি।

    ইউরোপ সেরার মঞ্চে রিয়ালের এবারের সাফল্যকে অবিশ্বাস্য বললেও বুঝি কম বলা হয়। নকআউট পর্বের প্রতিটি ধাপেই তারা পড়েছিল ছিটকে পড়ার দ্বারপ্রান্তে এবং হার না মানা, হাল না ছাড়া মানসিকতায় প্রতিবারই খাদের কিনারা থেকে দুর্দান্ত সব ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লেখে দলটি।

    ফাইনালের মঞ্চে অবশ্য তেমন কোনো গল্প বা মহাকাব্য নয়, বরং প্রতিপক্ষের টানা আক্রমণের মুখে ঘর সামলাতেই ব্যস্ত সময় কাটে তাদের। তবে, এত চাপে একটুর জন্যও দিক হারায়নি দলটি। রক্ষণ জমাট রেখে কাটিয়ে দেয় সময় আর বিশ্বস্ত প্রহরীর মতো পোস্ট আগলে রাখলেন কোর্তোয়া।

    মাঠে আক্রমণের হিসেবে লিভারপুলের দাপট কতটা ছিল, তা ম্যাচ পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট ফুটে উঠছে। গোলের উদ্দেশ্যে ২৪টি শট নেয় তারা, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। সেখানে রিয়াল নিতে পারে মোটে চার শট, লক্ষ্যে মাত্র দুটি।

    ‘হিসাব চুকানোর আছে, নেওয়ার আছে প্রতিশোধ’-এই শব্দগুলো ফাইনালের আগে সবচেয়ে বেশি যার মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছে সেই মোহামেদ সালাহ ম্যাচের ষোড়শ মিনিটে প্রথম নিশ্চিত সুযোগ পান। ছয় গজ বক্সে জটলার মধ্যে ঠিকমতো তিনি শট নিতে না পারলেও বল ছিল লক্ষ্যে, শেষ মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে ফেরান কোর্তোয়া।
    পরক্ষণেই আরেকটি সুযোগ পায় লিভারপুল; এবার অবশ্য থিয়াগো আলকান্তারার শট যায় কোর্তোয়া বরাবর। এক মিনিট পর আবারও ভীতি ছড়ান সালাহ। তবে তিনিও শট নিয়ে বসেন কোর্তোয়ার সোজা।

    চাপ ধরে রেখে ২১তম মিনিটে সেরা সুযোগটি পায় লিভারপুল। তবে কোর্তোয়ার নৈপুন্যে ও ভাগ্যের ছোঁয়ায় বেঁচে যায় রিয়াল। ডি-বক্সের বাইরে থেকে সাদিও মানের জোরাল নিচু শটে ঝাঁপিয়ে কোনোমতে আটকান গোলরক্ষক, তার হাতে লেগে বল বাধা পায় পোস্টে।

    একচেটিয়া আক্রমণে প্রথম ২৮ মিনিটে মোট ছয়টি শট নেয় লিভারপুল, যার মধ্যে চারটি ছিল লক্ষ্যে। এই সময়ে রিয়াল কোনো শটই নিতে পারেনি। এরপর পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করলেও পারছিল না তারা। উল্টো ৩৪তম মিনিটে আবারও ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়ে যান সালাহ। যদিও আবারও গোলরক্ষক সোজা হেড করে নিয়ে হতাশ করেন তিনি।

    ৪৩তম মিনিটে ঘটে প্রথমার্ধের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি। মাঝমাঠের কাছ থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রস ডি-বক্সে নিয়ন্ত্রণে নিয়েও গোলরক্ষক এগিয়ে আসায় শট নেওয়ার জায়গা পাননি বেনজেমা। বল হারিয়েও ফেলেন তিনি, অবশ্য আলিসন ও ডিফেন্ডার ইব্রাহিমা কোনাতের ভুলে লিভারপুলও পারেনি বল ক্লিয়ার করতে।

    ফাবিনিয়ো ও কোনাতের থেকে বল কাড়তে ছুটে যান ফেদে ভালভেরদে, পারেননি তিনিও। তবে তাদের বল কাড়াকাড়ির মাঝেই ফাঁকায় পেয়ে যান বেনজেমা। এবার আর জালে পাঠাতে ভুল করেননি তিনি। তবে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। ভিএআর অনেক সময় নিয়ে দেখে অফসাইডের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। শেষবার বেনজেমা বল পাওয়ার সময় শেষ খেলেয়াড় হিসেবে তার পেছনে ছিলেন অ্যান্ড্রু রাবার্টসন।

    বিরতির পরও একইরকম আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে লিভারপুল। তবে দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে ৫৯তম মিনিটে তাদের হতভম্ব করে দেয় রিয়াল। ডি-বক্সে ডান দিক থেকে ভালভেরদে অসাধারণ এক কোনাকুনি পাস বাড়ান গোলমুখে। ওখান থেকে বিনা বাধায় বল জালে পাঠাতে ভিনিসিউসের কেবল একটা ছোঁয়ারই দরকার ছিল।

    গোলের উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যে এটা ছিল রিয়ালের দ্বিতীয় শট। যেখানে ওই সময়ের মধ্যে লিভারপুলের ১০ শটের ৫টি ছিল লক্ষ্যে। মৌসুমে জুড়ে দুর্দান্ত খেলা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল হলো চারটি।

    একবিংশ শতাব্দীতে জন্ম নেওয়া প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে গোল করলেন ২০০০ সালের ১২ জুলাই জন্ম নেওয়া ভিনিসিউস।

    অধিকাংশ সময় আধিপত্য ধরে রেখেও এভাবে গোল হজম করাটা বড় ধাক্কাই বটে। তবে খেই হারায়নি লিভারপুল। ৬৪তম মিনিটে তো গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল দলটি; কিন্তু পারেনি কোর্তোয়ার দেয়াল ভাঙতে। ডি-বক্সের বাইরে ডান দিক থেকে বাঁ দিকে বল পায়ে কিছুটা আড়াআড়ি গিয়ে দূরের পোস্টে চমৎকার বাঁকানো শট নেন সালাহ, অসাধারণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

    গোলপোস্টে ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটানো কোর্তোয়া পাঁচ মিনিট পর আবারও রিয়ালের ত্রাতা। একেবারের গোলমুখে সালাহর প্রচেষ্টা কোনোমতে পা দিয়ে আটকান তিনি। খানিক পর গোলমুখে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও নিরাশ করেন কাসেমিরো। প্রথম সুযোগে শট নিয়েই ভুলটা করেন তিনি, বলও হারিয়ে ফেলেন।

    ৮২তম মিনিটে আবারও লিভারপুলের হানা এবং যথারীতি কোর্তোয়ার প্রাচীরে মুখ থুবড়ে পড়ল তা। এবার সালাহর কোনাকুনি শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় পা বাড়িয়ে ঠেকান তিনি।

    বাকি সময়ে লিভারপুল কেবল আক্রমণই শানিয়েছে, কিন্তু সত্যিকারের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি আর। আসরে সর্বোচ্চ ১৫ গোল করা এবং মৌসুমে রিয়ালের সব সাফল্যের মূল নায়ক বেনজেমা শেষে গোল করে মুহুর্তটা আরও রাঙানোর সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে কাজে লাগাতে পারেননি।

    তবে ক্ষণিকের সেই ব্যর্থতা ম্লান হয়ে গেছে শিরোপা হাসির কাছে। পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের পর শেষের বাঁশি বাজতেই সেই চেনা দৃশ্য; হতাশায় মুখ ঢেকে নুয়ে পড়লেন লিভারপুলের অনেকে। আর পাশেই উল্লাসে ফেটে পড়ল রিয়ালের কোচ, খেলোয়াড় এবং গ্যালারির দর্শকরা।

    ২০১৭-১৮ আসরের ফাইনালে এই লিভারপুলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ত্রয়োদশ শিরোপা জিতেছিল রিয়াল। তাদেরকেই কাঁদিয়ে সংখ্যাটা ১৪-তে উন্নীত করল মাদ্রিদের দলটি।

    লিভারপুল প্রতিশোধ নিতে পারল না। কিছুদিন আগেও দলটির আকাশে-বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছিল কোয়াড্রপল জয়ের স্বপ্ন। গত সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগের শেষ রাউন্ডে জিতেও ভেস্তে যায় শিরোপা সম্ভাবনা। তারপরও টিকে ছিল ট্রেবল জয়ের আশা। সেই আশাও নিভে গেল এবার। শেষ পর্যন্ত ওই লিগ কাপ ও এফএ কাপ জয়েই শেষ হলো তাদের দারুণ এক মৌসুম।

    বরং প্রতিশোধ নিল রিয়াল; ১৯৮১ সালে এই প্যারিসেই ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে ‘অল রেড’ খ্যাত দলটির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছিল তারা।

    লিভারপুলের বিপক্ষে তাদের সবশেষ হারের স্মৃতিও ওটাই। এরপর থেকে এই নিয়ে আরও ছয়বার মুখোমুখি হয়ে রিয়াল জিতল পাঁচবার, অন্যটি ড্র।

    আক্রমণভাগে পরীক্ষিত শক্তির ঘাটতি, রক্ষণে নতুন মুখ, মাঝমাঠে অভিজ্ঞ কিন্তু ‘বুড়ো’ হতে বসা তারকা-সব মিলিয়ে মৌসুমের শুরুতে রিয়ালকে নিয়ে বাজি ধরার লোক খুব বেশি কি ছিল? উত্তরটা যাই হোক, শেষের হাসি তাদের এতটাই চওড়া যে, শুরুর কথা এখন কেই-বা মনে রাখে!

    মাদ্রিদে সময়টা যে এখন আনন্দে ভাসার, উৎসবে মেতে ওঠার।

  • আজ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল

    আজ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল

    ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। এই টুর্নামেন্টের শিরোপার লড়াইয়ে আজ মাঠে নামবে ইংল্যান্ডের লিভারপুল ও স্পেনের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় প্যারিসের স্ট্যাড ডি ফ্রান্সে হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি।

    স্প্যানিশ লা লিগার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ফুরফুরে মেজাজেই মাঠে নামবে রিয়াল। কিন্তু মাত্র এক পয়েন্টের জন্য ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা খোয়ানোর হতাশা সঙ্গী হয়ে রয়েছে লিভারপুলের। তবু তাদের সামনে থাকছে রিয়ালের বিপক্ষে প্রতিশোধ নেওয়ার হাতছানি।

    ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল এ দুই দল। উড়ন্ত ফর্মের লিভারপুলকে সেই ফাইনালে খুব একটা লড়তে দেয়নি রিয়াল। গ্যারেথ বেলের জোড়া গোলের সঙ্গে করিম বেনজেমার এক গোলে ৩-১ ব্যবধানে সহজেই ম্যাচটি জিতে নিয়েছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

    ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় শেষ পাঁচ ম্যাচে রিয়ালের বিপক্ষে জয়ের দেখা পায়নি লিভারপুল। এই পাঁচ ম্যাচের চারতিই জিতেছে রিয়াল, ড্র হয়েছে একটি। তবে সবমিলিয়ে আগের আট দেখায় লিভারপুলের জয় তিন ম্যাচে, রিয়াল জিতেছে চারটি আর ড্র অন্য ম্যাচটি।

    এর আগে দুইবার ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার ফাইনালে দেখা হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ ও লিভারপুলের। ১৯৮১ সালে ইউরোপিয়ান কাপে ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল অলরেডরা। তবে সবশেষ ২০১৮ সালের আসরে তারা হেরে যায় ১-৩ ব্যবধানে।

    চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৩বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের আশপাশেও নেই আর কোনো ক্লাব। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাতবার জিতেছে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান। আজ রাতের ম্যাচে জিতলে মিলানের সমান সাতটি শিরোপা হবে লিভারপুলের।

    তবে ইংলিশ জায়ান্টদের কাজটি মোটেও সহজ হবে না। কেননা শেষ সাতবার ফাইনালে উঠে একবারও শিরোপা ছাড়া মাঠ ছাড়েনি রিয়াল। সবশেষ ১৯৮১ সালের ফাইনালে লিভারপুলের কাছেই হেরেছিল তারা। সেখান থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে পারেন সালাহ-মানেরা।

    লিভারপুলের সম্ভাব্য শুরুর একাদশ: অ্যালিসন বেকার, ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার আরনল্ড, ইব্রাহিম কোনাতে, ভার্জিল ফন ডাইক, অ্যান্ডি রবার্টসন, জর্ডান হ্যান্ডারসন, ফাবিনহো, থিয়াগো আলকান্তারা, মোহামেদ সালাহ, সাদিও মানে ও লুইস দিয়াজ।

    রিয়াল মাদ্রিদের সম্ভাব্য শুরুর একাদশ: থিবো কর্তোয়া, দানি কারভাহাল, এডের মিলিতাও, ডেভিড আলাবা, ফারল্যান্ড মেন্ডি, টনি ক্রুস, কার্লোস হেনরিক ক্যাসেমিরো, লুকা মদ্রিচ, ফেডে ভালভার্দে, করিম বেনজেমা ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র।

  • চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত, দেখুন কে কার বিপক্ষে লড়বে

    চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত, দেখুন কে কার বিপক্ষে লড়বে

    অনুষ্ঠিত হলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাউন্ড অব সিক্সটিনের ড্র। কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা। তবে কিছুটা সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।

    চলতি মৌসুমে বেশ বিধ্বস্ত অবস্থায় থাকা বার্সেলোনাকে লড়তে হবে ইউরোপের পরাশক্তি রূপে আবির্ভুত হওয়া পিএসজির বিপক্ষে। গেল আসরেও ফাইনাল খেলা নেইমার-এমবাপ্পেদের পিএসজি কড়া চ্যালেঞ্জই জানাবে মেসি-গ্রিজম্যানদেরকে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
    কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের প্রতিপক্ষ ইতালিয়ান ক্লাব আটালান্টা। কোয়ার্টার ফাইনালের পথ কিছুটা মসৃণই হবে তাদের জন্য।

    ইউরোপ সেরার আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের রাউন্ড অব সিক্সটিন প্রতিপক্ষ ইতালিয়ান ক্লাব লাৎসিও।

    রোনালদোর য়্যুভেন্তাসও বেশ সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছে। ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদেরকে কোয়ার্টারে ওঠার লড়াইয়ে নামতে হবে পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তোর বিপক্ষে।

    ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের প্রতিপক্ষ জার্মান ক্লাব লিপজিগ। গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চমক দেখানো লিপজিগের এবার তেমন ধার নেই। কোন রকমে উঠে এসেছে রাউন্ড অব সিক্সটিনে। লিভারপুলের জন্যও তাই সুখবরই।

    আরেক ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটির প্রতিপক্ষ জার্মান ক্লাব বরুশিয়া মনশেনগ্ল্যাডবাখ।
    রাউন্ড অব সিক্সটিনে চেলসি লড়বে স্প্যানিশ জায়ান্ট অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে।

    এছাড়া জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে লড়বে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়া।

  • চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেরা একাদশে নেই মেসি-রোনালদো

    চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেরা একাদশে নেই মেসি-রোনালদো

    বিগত ১৫ বছরে এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল হয়েছে সময়ের দুই সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ছাড়া। এবার প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেরা একাদশেও নেই দুই মহাতারকার একজনও।

    দুই তারকার ক্লাবই আগেভাগে বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে। স্বাভাবিকভাবেই দুই তারকাও তাই চলে গেছেন সেরা একাদশের বাইরে।

    নিজেদের ইতিহাসের ৬ষ্ঠ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পথে একক আধিপত্য দেখিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। ফুটবল ইতিহাসের প্রথম ক্লাব হিসেবে জিতে নিয়েছে এক আসরের সবগুলো ম্যাচই। সেরা একাদশেও দাপট হ্যান্সি ফ্লিক বাহিনীর।

    ফুটবল ভিত্তিক জনপ্রিয় গণমাধ্যম গোলডটকমের বিচারে সেরা একাদশে জায়গা পেয়েছেন ক্লাবটির ৮ জন ফুটবলার। টুর্নামেন্টে রানার আপ হলেও পিএসজি থেকে সেরা একাদশে জায়গা পেয়েছেন কেবল নেইমার। এছাড়া বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও লিপজিগের ১ জন করে জায়গা পেয়েছেন সেরা একাদশে।

    দেখে আসা যাক গোল ডটকমের সেরা একাদশে জায়গা পাওয়া ফুটবলারদের আসরের পারফরম্যান্স।

    গোলডটকমের সেরা গোলকিপার বায়ার্ন মিউনিখ অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়্যার।

    ২০১৮ বিশ্বকাপে বাজে পারফর‌ম্যান্সের পর অনেকেই বলেছিলেন, ফুরিয়ে গেছেন ম্যানুয়েল নয়্যার। তবে সমালোচকদেরকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পুরো আসরজুড়ে দুর্দান্ত এই গোলকিপার।

    ফাইনালে দুর্দান্ত নৈপুন্য দেখিয়েছেন নয়্যার। অনেকেই বলছেন, একা হাতেই তিনি হারিয়ে দিয়েছেন পিএসজিকে। কেবল ফাইনালেই নয়, পুরো আসরজুড়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন নয়্যার। আসরে ৬বার ক্লিনশিট পাইয়ে দিয়েছেন জার্মান ক্লাবটিকে। স্বাভাবিকভাবেই সেরা একাদশে গোলকিপার হিসেবে সেরা পছন্দও এই জার্মান গোলকিপার।

    রাইটব্যাকে গোলডটকমের পছন্দ বায়ার্ন ডিফেন্ডার জসুয়া কিমিচ। কেবল ডিফেন্সেই নয়, মিডফিল্ডেও দুর্দান্ত ছিলেন ২৫ বছর বয়সী তারকা। আসরে সবচেয়ে বেশি ২৮টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন কিমিচ। শিরোপানির্ধারণী ফাইনালে কিংসলে কোম্যানের একমাত্র গোলটিরও যোগানদাতা কিমিচ। বলা হচ্ছে, বায়ার্নের আগামীর অধিনায়কও তিনি।

    গোলডটকম সেন্ট্রাল ব্যাকে রেখেছে আরেক জার্মান ক্লাব লিপজিগের ডিফেন্ডার ডায়ট উপামেকানোকে। মাত্র ২১ বছর বয়সী এই তরুণ দেখিয়েছেন নিজের সামর্থ্য। দলকে সেমিফাইনালে টেনে তোলার ক্ষেত্রে তার অবদান ব্যাপক। বিশেষ করে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচজয়ী পারফরম্যান্স তাকে ফুটবল বিশ্বে আলাদা পরিচিতি পাইয়ে দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, আগামী মৌসুমেই ইউরোপের শীর্ষ কোন ক্লাবে দেখা যাবে এই ডিফেন্ডারকে।

    এছাড়া সেন্ট্রাল ব্যাকে আছেন বায়ার্ন মিউনিখের আরেক তারকা ডেভিড আলাবা। লেফটব্যাক হিসেবে মৌসুম শুরু করলেও, সেন্ট্রালব্যাকেও নিজের প্রতিভা দেখিয়েছেন আলাবা।

    চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেরা একাদশের লেফটব্যাকে আছেন বায়ার্ন মিউনিখের সাড়া জাগানো উইঙ্গার আলফোন্সো ডেভিস। কানাডার উদ্বাস্তু শিবির থেকে উঠে আসা এই উঠতি তারকার প্রতি এরইমধ্যে নজর পড়েছে বিশ্ব ফুটবলের। মাত্র একবছরেই বায়ার্ন মিউনিখের ভরসাস্থলে পরিণত হয়েছে আলফোন্সো। এছাড়া গোলের যোগান দিতে বেশ দক্ষ তিনি। বিশেষ করে বার্সেলোনার বিপক্ষে কিমিচকে তৈরি করে দেয়া বলটি টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

    সেরা একাদশের রাইট উইংয়ে আছেন বায়ার্ন তারকা সার্জি গ্যানাব্রি। আর্সেনাল হয়তো আফসোসে পুড়ছে। কারণ দারুণ প্রতিভাবান এই উইঙ্গারকে ধরে রাখতে পারেনি ইংলিশ ক্লাবটি। তাদের ক্ষতিতে লাভবান বায়ার্ন। দুর্দান্ত একটা আসর কাটিয়েছেন গ্যানাব্রি। আসরে করেছেন ৯টি গোল।

    সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে আছেন বায়ার্নেরই আরেকজন। তিনি থিয়াগো আলকান্তারা। খুব বেশি গোলের যোগান দিতে পারেননি তিনি। তবে পুরো আসরে বায়ার্নের মাঝমাঠের কান্ডারি হয়ে ছিলেন। আসরে ৮৩২টি পাস দিয়েছেন এই স্প্যানিশ। তারচেয়ে বেশি নেই আর কারো।

    মিডফিল্ডের অন্যজনও বায়ার্ন মিউনিখের। তিনি থমাস মুলার। সেরা একাদশে তারা থাকাটা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। আসরে ৪ গোলের পাশাপাশি ২ গোলের অ্যাসিস্ট করেছেন।

    গোলডটকম তাদের সেরা একাদশের লেফট উইংয়ে রেখেছে পিএসজি তারকা নেইমারকে। ফাইনালে হেরে অশ্রুসিক্ত বিদায় নিলেও, বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুটবলারের হাত ধরেই প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছিল ফরাসী ক্লাবটি। আসরে খুব বেশি গোল নেই তার। করেছেন মাত্র ৩টি গোল, যোগান দিয়েছেন ৪টিতে। তবে পিএসজির আক্রমণভাগের মূল দায়িত্বটা বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।

    স্ট্রাইকিং পজিশনে অবধারিতভাবেই আছেন বায়ার্ন তারকা রবার্ট লেওয়ানডস্কি। অসাধারণ একটা আসর কাটিয়েছেন পোলিশ তারকা। ১১ ম্যাচে করেছেন ১৫ গোল। অল্পের জন্য আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডটি ভাঙতে পারেননি, তবে দলকে ট্রফিটা জিতিয়েছেন ঠিকই। গোল তো করেছেনই, ৫টি গোলের যোগানও দিয়েছেন লেওয়ানডস্কি।

    সেরা একাদশের অন্য স্ট্রাইকার বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের তারকা এর্লিং হ্যালান্ড। ক্লাব আগেভাগে বিদায় নিলেও, নিজের গোলক্ষুধার প্রমাণ দিয়েছেন এই তরুণ। মাত্র ৮ ম্যাচে ১০ গোল করে তাই আসরের সেরা একাদশে আছেন হাল্যান্ডও।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • মেসিদের নিয়ে ছেলেখেলা করে সেমিতে বায়ার্ন

    মেসিদের নিয়ে ছেলেখেলা করে সেমিতে বায়ার্ন

    ইতিহাসের পাতা আতিপাতি করে খুঁজেও এতটা বাজে পাওয়া গেলো না বার্সেলোনাকে। দলটির অভ্যন্তরে যে কি চলছে, সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো বার্সেলোনা। অগোছালো মেসিদের নিয়ে স্রেফ ছেলেখেলা করল বায়ার্ন মিউনিখ। পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে মেসিদের জালে গুনে গুনে আটবার বল জড়ালো জার্মান জায়ান্টররা। নিজেদের জালে নিজেরাই জড়িয়েছে একবার।

    ১০ গোলের ম্যাচে ৯টি’ই দিলো বায়ার্ন। বার্সার হয়ে একটি মাত্র গোল করতে পেরেছেন লুইস সুয়ারেজ। শেষপর্যন্ত লিওনেল মেসির বার্সেলোনাকে ৮-২ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠল বায়ার্ন মিউনিখ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে নকআউট পর্বে এই প্রথম এতবড় একটি জয় পেলো বায়ার্ন।

    ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ডিফেন্ডার রিও ফার্ডিনান্ড বার্সার খেলা দেখে মন্তব্য করলেন, ‘সত্যিকার অর্থেই নৃশংস পরিস্থিতির মুখোমুখি বার্সা, স্ট্রিম রোলার চালানো হলো তাদের ওপর। পুরোপুরি বোকা বানিয়ে ছেড়ে দেয়া হলো তাদের।’

    ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজদের মুখখানা হয়েছিল দেখার মত। চোখ ফেটে কান্না বেরিয়ে আসবে যেন। আর কোচ কিকে সেতিয়েন তো টেন্টের ওপর দুই হাত ছড়িয়ে দিয়ে উদাস দৃষ্টিতে যেভাবে আকাশের দিকে তাকিয়েছেন, তাতেই নিশ্চিত হওয়া গেছে, ন্যু ক্যাম্পে আর হয়তো ফেরা হবে না তার। এর আগেই বিদায়ের চিঠি হয়তো ধরিয়ে দেয়া হবে।

    খেলায় জয়-পরাজয় থাকবেই। কিন্তু এভাবে স্রেফ আউটক্লাস হয়ে যাওয়া, বার্সার ক্ষেত্রে একেবারেই বেমানান। বায়ার্ন-বার্সা ম্যাচটি দেখে ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বেলো হরাইজন্তে ব্রাজিল বনাম জার্মানির ম্যাচটির কথাই মনে পড়েছে সবার। ঐ ম্যাচে যেমন জার্মানির খেলার সামনে ব্রাজিলিয়ানরা দাঁড়িয়ে ছিল, ঠিক তেমনি আজও বার্সার খেলোয়াড়রা যেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল তাদের জালে বায়ার্নের গোল উৎসব।

    মুলার, পেরিসিক, লেওয়ানডস্কি, গিনাব্রি, কিমিচরা গোল করে যাচ্ছিলেন। শেষ দিকে যোগ হলেন বার্সারই ঘরের ছেলে কৌতিনহো। একের পর এক বঞ্চিত করে লোনে বায়ার্নের কাছে দিয়ে দেয়ার কারণে কৌতিনহোকে নামতে হয়েছে বার্সার বিপক্ষেই এবং শেষ দুটি গোলও করলেন তিনি।

    গোল করতে করতে এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়লো যেন খোদ বায়ার্নই। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সাকে ৮-২ গোলের অবিশ্বাস্য ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠলো বায়ার্ন মিউনিখ।

    প্রথমার্ধেই গোল হয়েছে মোট ৫টি। পরের অর্ধে ৫টি। মোট ১০টি। এর মধ্যে ৯টিই দিলো বায়ার্ন মিউনিখ। কিন্তু ম্যাচের স্কোরলাইন ৮-২। একটি গোল বায়ার্ন নিজেদের জালে যদি না জড়াতো, তাহলে বার্সার ভাগে গোলের পাল্লা থাকতো মাত্র একটি। যেটি এসেছিল লুইস সুয়ারেজের পা থেকে।

    ম্যাচটিকে সবাই ধরে নিয়েছিল, ফাইনালের আগে আরেক ফাইনাল হিসেবে। বার্সেলোনা এবং বায়ার্ন মিউনিখের খেলা বলে কথা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তো হবেই!

    কিন্তু মাঠের খেলায় বার্সাকে খুঁজে পাওয়াই ছিল কঠিন। লিওনেল মেসিরা মাঠে নেমেছিলেন যেন শুধু বায়ার্নের আক্রমণ ঠেকানোর জন্যই। নিশ্চিত আরও কয়েকটি গোলের সুযোগ মিস না হলে স্কোরলাইন আরও বাজে হতে পারতো। লিখতে হতো হয়তো, বার্সার জালে একের পর এক গোল দিয়েই গেলো বায়ার্ন।

    প্রথমার্ধের খেলা দেখে মনে হচ্ছে, বার্সেলোনার ডিফেন্স বলতে কিছুই নেই। মাঝমাঠে ভিদাল আর বুস্কেটস ওপরে-নিচে দৌড়াচ্ছেন শুধু। মেসি বারবার জায়গা পরিবর্তন করে চেষ্টা করছেন একটা-দুটা বল পাওয়া যায় কি না। সুয়ারেজ মাঠে ছিলেন কি না দেখা গেছে শুধুমাত্র প্রথমার্ধের শেষ দিকে বায়ার্নের পোস্টে একটি শট নেয়ার পর। বলা বাহুল্য, সেই শট কোনো কাজেই আসেনি।

    মেসি ওয়ান-টু-ওয়ান একটি বল পেয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। সামনে ছিলেন শুধু গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নুয়্যার। কিন্তু তার বাম পায়ের শটটি ট্রেডমার্ক শট ছিল না। সুতরাং, জালের দেখা পায়নি মেসির সেই শট। ওই একটি ছাড়া পুরো ৪৫ মিনিটে আর শটই নেয়ার সুযোগ মেলেনি মেসির।

    প্রথম থেকেই এক তরফা খেলছে বায়ার্ন আর বার্সা। দেখে মনে হচ্ছিল পাড়ার বড় ভাই আর ছোট ভাই খেলছে। ছোট ভাইয়ের কাজই হলো বড় ভাইয়ের আক্রমণ ঠেকানো। যার ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছিল ম্যাচের একদম প্রথম দিকে।

    ৪র্থ মিনিটেই বার্সার জালে বল জড়িয়ে দেন বায়ার্নের থমাস মুলার। রবার্ট লেওয়াডস্কির পাসকে আলতো পায়ে বার্সার জালে ঠেলে দিলেন মুলার। খেলার সপ্তম মিনিটে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দেন ডেভিড আলাবা। ব্যবধান ১-১।

    ২১তম মিনিটে ইভান পেরিসিক বাম পায়ের দারুণ এক প্লেসিং শটে বার্সার জালে বল জড়ান। গোলরক্ষক টার স্টেগান ঝাঁপিয়ে পড়ে, পায়ে ঠেকিয়েও পারেননি গোল ঠেকাতে। ২৭ মিনিটে সার্জি গিনাব্রি বক্সের মাঝ বরাবর থেকে ডান পায়ের শটে বল জড়িয়ে দেন বার্সার জালে। গোরেৎজকার পাস থেকে বল পেয়েছিলেন তিনি।

    ৩১ মিনিটেই ৪-১ ব্যবধান করে ফেলেন থমাস মুলার। ডান কর্নার থেকে জসুয়া কিমিচের দারুণ একটি পাস থেকে আসা বলে শুধু পা ঠেকিয়ে দেন মুলার। টার স্টেগানকে ফাঁকি দিয়ে বলটা জড়িয়ে গেলো মেসিদের জালে। হয়ে গেলো ৪-১।

    প্রথমার্ধ শেষ হলো ৪-১ ব্যবধানে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কিছুটা নিতে চাইলো বার্সা। যার ধারাবাহিকতায় ৫৭ মিনিটে গোল করে বসেন লুইস সুয়ারেজ। মাঝ মাঠ থেকে মেসির লম্বা পাস থেকে জর্দি আলবা বলটা রিসিভ করে দেন সুয়ারেজকে। একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ গোলটি করেন তিনি।

    এরপরই যেন পুনরায় জ্বলে ওঠে বায়ার্ন। ৬৩ মিনিটে আলফনসো ডেভিস যে গোলটি তৈরি করে দিয়েছিলেন তা অবিশ্বাস্য। মাঝ মাঠ থেকে লেফট উইং ধরে বল নিয়ে এসে পুরো বার্সা ডিফেন্সকে একা কাটালেন। এরপর ছোট বক্সের মাঝ থেকে যেভাবে কয়েকজনকে ফাঁকি দিয়ে পাসটি দিলেন, সেটাই ছিল অবিশ্বাস্য। জসুয়া কিমিচ শুধু পা’টা লাগিয়ে গোল করলেন।

    ৭৫ মিনিটে সার্জি গিনাব্রির পরিবর্তে মাঠে নামেন ফিলিফ কৌতিনহো। নেমেই যেন বার্সাকে কিছু দেখিয়ে দেয়ার প্রয়োজন মনে করলেন তিনি। যার ফলে ৮২ মিনিটে ডি-বক্সের সামনে থেকে অসাধারণ একটি ক্রস করেন সেটাতেই মাথা লাগিয়ে গোল করেন রবার্ট লেওয়ানডস্কি।

    এরপর নিজেই গোল করেন কৌতিনহো। ৮৫ মিনিটে মুলারের পাস থেকে ভেসে আসা বলকে ডান পায়ের শটে জড়িয়ে দেন বায়ার্নের জালে। এরপর ৮৯ মিনিটে আবারও গোল করেন কৌতিনহো। শেষ পর্যন্ত ৮-২ গোলে বার্সাকে হারিয়ে সেমিতে উঠে যায় বায়ার্ন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর