Tag: এক্সপ্রেসওয়ে

  • এক্সপ্রেসওয়েসহ চট্টগ্রামের ১২ প্রকল্পের উদ্বোধন

    এক্সপ্রেসওয়েসহ চট্টগ্রামের ১২ প্রকল্পের উদ্বোধন

    দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে তিনি চট্টগ্রামের আরও ১১টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

    এগুলো হলো— পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, বে-টার্মিনাল মাস্টারপ্ল্যান, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় সিজিএস কলোনিতে জরাজীর্ণ ১১টি ভবনের স্থলে ৯টি বহুতল ভবনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৬৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ, চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি নির্মাণ, ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সড়ক নির্মাণ, সিরাজুদ্দৌলা রোড থেকে শাহ আমানত ব্রিজ সংযোগ সড়ক (বাকলিয়া এক্সেস রোড), চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, আনোয়ারা-ফৌজদারহাট গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ, চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ ও কেজিডিসিএল গ্যাস বিতরণ নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের ২৫২ তম কিলোমিটারে মুরালী খালের ওপর ১২১ মিটার দীর্ঘ ভেল্লাপাড়া সেতু নির্মাণ।

    জানা গেছে, উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পগুলোর অন্যতম বৃহৎ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার লম্বা এই এক্সপ্রেসওয়ে ৫৪ ফুট প্রশস্ত। তবে উদ্বোধন হলেও এই উড়ালসড়ক দিয়ে যানচলাচল শুরু হতে আরও মাসখানেক সময় লাগতে পারে।

    সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হলেও কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে। এগুলো মাসখানেকের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এটি চালু হলে ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যাবে মাত্র ২০ মিনিটে। এতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রুটের বিমান যাত্রীরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি করে চট্টগ্রাম শহরের যানজটও কমবে। যানজটের কারণে জ্বালানি তেলের অপচয়, মানুষের কর্মঘণ্টার অপচয়, ফ্লাইট মিসহওয়াসহ যে ক্ষতি প্রতি বছর হয় তা টাকার অঙ্কে নিরূপণ করা যাবে না।

    সিডিএ সূত্র জানায়, চার লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে ১৪টি র‌্যাম্প। এর মধ্যে জিইসি মোড়ে একটি, টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে চারটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেডে দুটি এবং কেইপিজেড এলাকায় থাকবে দুটি র‌্যাম্প। তবে এসব র‍্যাম্প নির্মাণ কাজ এখনই শুরু হয়নি। আপাতত মূল ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। এরপর শুরু হবে র‍্যাম্পসহ অন্যান্য নির্মাণ কাজ।

    চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ২০১৭ সালে প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। অনুমোদনের প্রায় দুই বছর পর ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।

  • দেশের প্রথম ‘এক্সপ্রেসওয়ে’ জাতির জন্য মুজিব বর্ষের উপহার:প্রধানমন্ত্রী

    দেশের প্রথম ‘এক্সপ্রেসওয়ে’ জাতির জন্য মুজিব বর্ষের উপহার:প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাত্রাবাড়ী-মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেছেন।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) বেলা ১১টায় তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনকালে এটিকে জাতির জন্য মুজিব বর্ষের উপহার বলে উল্লেখ করেন।

    ভ্রমণের সময় কমানোর পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর জনগণের জন্য আরামদায়ক ও নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আর এর মাধ্যমে মুজিব বর্ষের প্রাক্কালে বাংলাদেশ যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক নতুন যুগে প্রবেশ করল।

    একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় খুলনা, বরিশাল ও গোপালগঞ্জ সড়ক জোনে নির্মিত ২৫টি সেতু এবং তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ (সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় ৬ লেনবিশিষ্ট ৮ কিলোমিটার তৃতীয় কর্ণফুলী (শাহ আমানত সেতু) সেতুর এপ্রোচ সড়ক উদ্বোধন করেন।

    অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বক্তৃতা করেন।

    অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম প্রকল্প বিষয়ে তথ্য চিত্র উপস্থাপন করেন।

    রেলপথ মন্ত্রী মো.নুরুল ইসলাম সুজন,প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

    পিএমও’র এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ,পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

    প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের এই এক্সপ্রেসওয়ে দুইটি সার্ভিস লেনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীকে যুক্ত করবে। এখন মাত্র ২৭ মিনিটে ঢাকা থেকে মাওয়ায় যাওয়া যাবে।’

    প্রকল্পের বিবরণ অনুসারে, এক্সপ্রেসওয়েতে পাঁচটি ফ্লাইওভার, ১৯টি আন্ডারপাস এবং প্রায় ১০০টি সেতু এবং কালভার্ট রয়েছে, যা দেশের ব্যবসা- বাণিজ্য বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।

    এটিতে মাওয়া থেকে ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এবং ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ পানছার থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত দুটি এক্সপ্রেসওয়ে পুরো খুলনা ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা বিভাগের একটি অংশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ঢাকা শহর এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের মধ্যে যোগাযোগ জোরদার করবে।

    বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা, খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ছয় জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলার মানুষ সরাসরি এই আন্তর্জাতিক মানের এক্সপ্রেসওয়ে থেকে উপকৃত হবেন।

    আধুনিক এক্সপ্রেসওয়ের দুটি অংশ ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত হবে, যা বর্তমানে নির্মাণাধীন। দেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর চার কিলোমিটার গতকাল মঙ্গলবার ২৬তম স্প্যান বসানোর পরে ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।

    ২০২১ সালের জুনের মধ্যে ট্র্যাফিকের জন্য ব্রিজটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গেলে, কোনও ভ্রমণকারীকে ভাঙ্গা থেকে ঢাকা আসা এবং যেতে এক ঘন্টা সময় লাগবে না।

    এই হাইওয়েতে আগামী ২০ বছরের জন্য ক্রমবর্ধমান ট্রাফিকের পরিমাণ বিবেচনা করে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে প্রায় ১১০০৩ দশমিক ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মিত হয়েছে।

    সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যৌথভাবে ২০১৬ সালে চারটি জেলা- ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর এবং ফরিদপুরে এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করে এবং এটি নির্ধারিত সময়সীমার তিন মাস আগে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের ২০ জুন।

    এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচটি ফ্লাইওভারের মধ্যে একটি ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার কদমতলী-বাবুবাজার লিংক রোড ফ্লাইওভার রয়েছে। অন্য চারটি ফ্লাইওভার হলো আবদুল্লাহপুর, শ্রীনগর, পুলিয়াবাজার এবং মালিগ্রামে।

    ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচটি ফ্লাইওভারের মধ্যে একটি ২.৩ কিলোমিটার কদমতলী-বাবুবাজার লিংক রোড ফ্লাইওভার রয়েছে। অন্য চারটি ফ্লাইওভার হলো আবদুল্লাহপুর, শ্রীনগর, পুলিয়াবাজার এবং মালিগ্রামে।

    ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে জুরাইন, কুচিয়ামোড়া, শ্রীনগর ও আটিতে চারটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ রয়েছে এবং চারটি বড় সেতু রয়েছে যার মধ্যে ৩৬৩ মিটার ধলেশ্বরী -১, ৫৯১ মিটার ধলেশ্বরী -২, ৪৬৬-মিটার আড়িয়াল খান এবং ১৩৬-মিটার কুমার সেতু।

    পরে পৃথক এক ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এদিন মুজিব বর্ষ, ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে ‘পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর’ কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।