Tag: এম.এম আকরাম হোসাইন

  • মহেশখালীর চিহ্নিত অস্ত্রের কারিগর ও কূখ্যাত জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ শনিবার

    মহেশখালীর চিহ্নিত অস্ত্রের কারিগর ও কূখ্যাত জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ শনিবার

    রাজীব সেন প্রিন্স : কক্সবাজার জেলার সবচেয়ে বেশী অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসাবে পরিচিত মহেশখালী উপজেলার কালামারছরা ইউনিয়ন। খুন, রাহাজানি, দস্যুতা, অপহরণসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা এখানে ঘটছে না। তবে এসব জগণ্য অপরাধের সাথে জড়িত অনেকেই এখন ফিরতে চাই স্বাভাবিক জীবনে।

    সরকারের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত সম্ভব হলে এরা জগন্য অপরাধকর্ম থেকে নিজেদের শুধরে সাধারণ মানুষের মতোই জীবিকা নির্বাহ করতে আগ্রহী। আর তাদের এ আগ্রহকে পুঁজি করে ভয়ংকর এসব অপরাধীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে, এদের একাংশকে সরকারি সহায়তার আশ্বাস দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে রাজি করিয়েছেন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আনন্দ টিভি’র বিশেষ প্রতিনিধি ও কক্সবাজারের পেকুয়ার উজানটিয়ার বাসিন্দা এম.এম আকরাম হোসাইন।

    তার মধ্যস্থতায় এর আগেও ২ দফায় বহু অপরাধী অস্ত্রসস্ত্র সরকারি কোষাগারে জমা করে আত্মসমর্পণ করেছেন। আগামী শনিবার ২৩ নভেম্বর ফের শতাধিক অস্ত্রের কারিগর ও জলদস্যু তাদের অপরাধকর্মে ব্যবহৃত প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ, ধারালো ভয়ংকর অস্ত্র, অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জামসহ আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছেন আকরামের মধ্যস্থতায়।

    ইতিমধ্যে আত্মসমর্পণের স্থানটিও নির্ধারণ করেছে প্রশাসন। মহেশখালী উপজেলার কালারমার ছরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান। স্থানটি পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেনসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা।

    গত সোমবার মাঠ পরিদর্শনকালে এসপি এ. বি.এম মাসুদ হোসেন আগত অতিথিদের নিরাপত্তা, অভ্যর্থনা, প্রটোকল, জলদস্যুদের জমায়েত, তাদের অস্ত্র জমা করা, যাতায়াত সুবিধা, প্যান্ডেল ও মঞ্চ তৈরি, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান ইত্যাদি সার্বিক বিষয় মাথায় রেখে রেকি ও ম্যাপ তৈরি করে অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক ব্যবস্থাসমেত পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ২০ নভেম্বর বুধবার থেকে প্যান্ডেল ও মঞ্চ তৈরি সহ আনুষঙ্গিক কাজ শুরু হয়েছে।

    আনন্দ টিভি’র বিশেষ প্রতিনিধি এম.এম আকরাম হোসাইন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, সমাজের নানা অপরাধকর্ম থেকে অপরাধীদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তিনি এ ঝুকিপূর্ণ কাজে তিনি হাত দিয়েছেন। সরকারের প্রশাসনের আশ্বাসে তা অনেকটা এগিয়ে নিয়েছে।

    মহেশখালীর চিহ্নিত অস্ত্রের কারিগর ও কূখ্যাত বেশ ক’টি জলদস্যু বাহিনীর সর্দার ও বাহিনীর সদস্যরা স্বদলবলে আত্মসমর্পণ করার সম্মতি জ্ঞাপন করেন। প্রাথমিক অবস্থায় আগ্রহী শতাধিক হলেও অনেকে এখনো আত্মসমর্পণের জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করছে বলে জানিয়েছেন এ সংবাদকর্মী।

    সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। এছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশের আইজি ড. জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) বিশেষ অতিথি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম (বার) পিপিএম, কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, স্থানীয় অন্যান্য সংসদ সদস্যগণ, কোস্টগার্ডের প্রতিনিধিসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকতারা আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।

    আনন্দ টিভি চট্টগ্রাম ব্যুরোর ক্যামেরা পারসন রিটন মজুমদার ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান সফল করতে ও জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগরদের তাদের আস্তানা থেকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আনতে আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যস্থতাকারী আনন্দ টিভি’র বিশেষ প্রতিনিধি এম.এম আকরাম হোসাইন বিরাট ঝুঁকি নিয়ে এখনও দিনরাত মহেশখালী উপকূল ও সাগরে অবস্থান করছেন।

    প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা যায়, আত্মসমর্পণকারীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে তাদেরকে প্রনোদনা দেওয়া হবে। আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হবে। তবে এ মামলা থেকে আত্মসমর্পণকারীরা সহজে মুক্তি পেতে মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষ তাদেরকে সহযোগিতা করবে।

    উল্লেখ্য, মহেশখালীতে জলদস্যুদের আত্মসমর্পণের ঘটনাটি হবে কক্সবাজারের জন্য ২য় পদক্ষেপ। এর আগে ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর মহেশখালীতে অনুরূপভাবে ৪৩ জন সশস্ত্র জলদস্যু আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেছিলো। সেখানে ৪৩ জনের মধ্যে বর্তমান আনন্দ টিভি’র বিশেষ প্রতিনিধি এম.এম আকরাম হোসাইনের একক মধ্যস্থতায় ৩৭ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছিলো।

    এছাড়া চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারী ১০২ জন ইয়াবাকারবারী টেকনাফে চ্যানেল ২৪ টিভি’র তৎকালীন সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার এম.এম আকরাম হোসাইনের একক মধ্যস্থতায় দেশে প্রথম মাদক কারবারি আত্মসমর্পণ করেছিলো। সেদিনের মাদক কারবারী আত্মসমর্পণ করা ছিলো এ দেশের জন্য একটা রেকর্ড।