বাংলাদেশে দ্রুত পরিবেশ সম্মত গ্রিন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু করেছে। ২০০৯ সালের চীনে অনুষ্ঠিত হংকং কনভেশন রুলস অনুযায়ী আমূল ঢেলে সাজানো হচ্ছে এ শিপ ইয়ার্ড।
আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সব শিপব্রেকিং ইয়ার্ড হংকং কনভেনশন সার্টিফিকেশন রুলস অনুযায়ী নির্মাণ করতে হবে। অন্যথায় বিদেশিরা স্ক্র্যাপ জাহাজ বিক্রি করবে না। তারই কারণে সীতাকুণ্ডে ৫ম শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড হিসেবে সীতাকুণ্ডের এস,এল শীপ রি-প্রসেস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ, এস এল ষ্টীল, এবং আনিসা শিপ এন্টার প্রাইজ জার্মানির জিএসআর নামের কোম্পানির সাথে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
জার্মানির এই কোম্পানির তত্ত্বাবধান এবং নির্দেশনায় এস,এল শীপ রি-প্রসেস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ একটি পরিবেশসম্মত গ্রিন ইয়ার্ডে পরিণত হবে।
এর আগে সীতাকুণ্ডের পিএইচপি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড, কে,আর স্টিল, এস,এন কর্পোরেশন, আরেফিন এন্টারপ্রাইজ এবং সিমনি শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি গ্রিন ইয়ার্ড গড়ে তোলার ব্যাপারে জার্মানির এ কোম্পানির সাথে চুক্তি করে।
এস,এল শীপ রি-প্রসেস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান এবং জিএসআর-এর পক্ষে মিঃ হেনিং গ্রামান সিইও চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই সময় জিএসআর এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন মাওলা ও জিএসআর-এর চিফ ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান,এস এল গ্রুপের উর্ধতন কর্মকর্তা গন উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাপী শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে গ্রিন ইয়ার্ড নির্মাণের তাগাদা রয়েছে। হংকং কনভেনশন কমপ্ল্যায়েন্সের (এইচকেসিসি) শর্তানুযায়ী ইয়ার্ডগুলোকে গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তর করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে তুরস্ক এবং ভারত তাদের বেশ কিছু শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডকে গ্রিন ইয়ার্ডে পরিণত করেছে। তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গ্রিন ইয়ার্ড গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বেশ অগ্রসর হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী গ্রিন ইয়ার্ড নির্মাণে জার্মানির জিএসআর শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। এই কোম্পানি ইতোমধ্যে বিশ্বের অন্তত ত্রিশটি ইয়ার্ডকে গ্রিন ইয়ার্ডে পরিণত করার কাজ শুরু করেছে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে বাংলাদেশের ইয়ার্ডগুলোতে শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটি প্ল্যান (এসআরএফপি) বাস্তবায়নের নির্দেশনা রয়েছে। জিএসআর এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করবে।
উল্লেখ্য যে, সীতাকুণ্ডের এস,এল শীপ রি-প্রসেস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ গত ৩০ বছর ধরে শিপ ব্রেকিং ব্যবসা করছে। এই প্রতিষ্ঠান সরকারকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রদানের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান বলেন, গ্রিন ইয়ার্ড নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পোশাক শিল্পের মতো শিপ রিসাইক্লিং শিল্পেও ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। পরিবেশ সম্মত শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে এই শিল্প পরিবেশ নষ্ট করছে বলে কেউ আর আঙুল তুলতে পারবে না। তিনি আরো বলেন গ্রীন শীপ ইয়ার্ড বাস্থবায়ন তরান্বিত করার জন্য শীপ ইয়ার্ড গুলোকে দীর্ঘ মেয়াদী লিজ প্রদান এবং স্বল্প সুদে বাংক লোনের সহজলব্যতা নিশ্চিত করন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে ও শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ট্রেনিং ইন্সটিটিউট এবং বর্জব্যবস্থাপনার জন্য ডাম্পিং জোন বরাদ্ধ করা জরুরী বলে মত প্রকাশ করেন।