১২ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী ছাত্রছাত্রীদের করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় আনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
জাতীয় সংসদ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ পরিকল্পনার কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী সংসদে টিকা কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রার কথা তুলে ধরে বলেন, ক্রমান্বয়ে দেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখানে ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব সব ছাত্রছাত্রীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসা, মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিবন্ধীদের সুবর্ণকার্ডের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা ও অগ্রাধিকার ভিত্তিকে শ্রমিকদের টিকা প্রদান করা হবে।
প্রতি মাসে এক কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংসদে টিকার মজুত নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৪ কোটি ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৬০ ডোজ টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ক্রয় চুক্তি ও উপহার হিসেবে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৮০ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপাক্ষিক ক্রয় চুক্তির আওতায় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি এবং চীনের সিনোফার্ম ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে সাত কোটি ৭০ লাখ ডোজ টিকা ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
অপরদিকে রাশিয়া থেকে এক কোটি ডোজ স্পুটনিক-ভি টিকা ক্রয়ের চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া কোভ্যাক্সের মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ সিনোফার্ম ও সাত কোটি ৫০ লাখ ডোজ সিনোভ্যাক টিকা ক্রয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চীনের সিনোফার্ম হতে দেওয়া শিডিউল অনুযায়ী অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি করে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৬ কোটি টিকা পাওয়া যাবে। চলমান টিকা কার্যক্রম জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে সব বিভাগীয় সদর, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে অবস্থিত ৬৭৩টি টিকা কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে ৬৭৩টি টিকা কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণকে টিকা দেওয়া হচ্ছে আর টিকা কেন্দ্র বিস্তৃত করা হয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়ে। টিকা প্রদানে প্রয়োজনীয় জনবলকে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আশা করি পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকা প্রদান সম্ভব হবে।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বলেন, আমরা টিকা সংগ্রহ ও টিকা প্রদানের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা ও সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার দেশের সব মানুষকে টিকার আওতায় আনতে ন্যাশনাল ডেভেলপম্যান্ট অ্যান্ড ভ্যাকসিনেশন প্ল্যান (এনডিভিপি) প্রস্তুত করেছে যা কোভ্যাক্স অনুমোদিত।
গতকালও প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আবারো এই করোনাকালীনে সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলার কথা স্মরণ করে দিয়েছেন। এমন কি যারা টিকা নিয়েছেন তাদেরকেও তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
এন-কে