Tag: করোনায় চিকিৎসকের মৃত্যু

  • করোনায় বার্ন ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালকের মৃত্যু

    করোনায় বার্ন ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালকের মৃত্যু

    করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক প্রফেসর ডা. লুৎফর কাদের লেলিন।

    বুধবার দুপুরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

    তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ডা. লেলিন।

    সর্বশেষ তিনি স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

    ডা. লেলিনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন ইস্কাটন এলাকায়। ২০০৬ সাল থেকে তিনি মেডিকেল অফিসার হিসেবে ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে যুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন।

    ডা. লুৎফর কাদের লেনিনের মৃত্যুতে বার্ন ইনস্টিটিউটের সব ডাক্তার শোকপ্রকাশ করেছেন। সেইসঙ্গে মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

  • করোনায় বিএসএমএমইউ চিকিৎসকের মৃত্যু

    করোনায় বিএসএমএমইউ চিকিৎসকের মৃত্যু

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ হোসেন (৫৬) আর নেই।

    বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।

    তিনি স্ত্রী, ছেলে, দুই মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

    পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের বাড়িতে নামাজে জানাজা শেষে তার মরদেহ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

    চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করা ডা. মুহাম্মদ হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এমএস (ইউরোলজি) ডিগ্রি অর্জন করেন। তার শিক্ষা ও শিক্ষকতা জীবনে গবেষণাধর্মী ১৯টি প্রকাশনা রয়েছে।

    ডা. মুহাম্মদ হোসেনের মৃত্যুতে শোক জানানোর পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

    এছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী শোক প্রকাশ করেছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/রাসেল

  • করোনায় চক্ষু বিশেষজ্ঞ গোলাম মোস্তফার মৃত্যু

    করোনায় চক্ষু বিশেষজ্ঞ গোলাম মোস্তফার মৃত্যু

    করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কৃতী সন্তান চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. গোলাম মোস্তফা (৭৫)।

    শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে তার মৃত্যু হয়।

    ডা. গোলাম মোস্তফা গোয়ালন্দ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বিপেন রায়েরপাড়ার বাসিন্দা মৃত হাজী মো. গিয়াসউদ্দিন প্রামাণিকের সন্তান। তবে তিনি দীর্ঘকাল ধরে রাজবাড়ী জেলা শহরের ১নং বেড়া ডাঙ্গা এলাকার নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন।

    পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি গত ১০-১২ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। এর মধ্যে করোনার পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এর পর থেকে তিনি হোম আইসোলেশনে ছিলেন।

    শনিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেয়া রাত সোয়া ৮টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    তিনি স্ত্রী ও চার মেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান।

    মরহুমের ছোট ভাই গোয়ালন্দের বাসিন্দা গোলাম মুনতাহা রাতুল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

    তিনি জানান, রোববার সকাল ১০টায় রাজবাড়ীর ১নং বেড়া ডাঙ্গা জামে মসজিদে জানাজা শেষে তাকে শহরের ভবানীপুর কবরস্থানে দাফন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভাইয়ের কোনো পুত্রসন্তান নেই। কিন্তু চার মেয়েকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন।

    বড় মেয়ে মমি রাজবাড়ীর পাংশা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভূগোল বিষয়ের অধ্যাপক, মেজ মেয়ে রমি ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিষয়ের অধ্যাপক, সেজ মেয়ে মিনজা মোস্তফা ছন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে বর্তমানে আমেরিকার আটলান্টায় স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন এবং ছোট মেয়ে তুনতুন এমবিবিএস ডাক্তার।

    এ ছাড়া তিনি সারাজীবন গরিব আত্মীয়স্বজন ও অসহায় মানুষকে নানাভাবে সেবা দিয়ে গেছেন।

    আমি আমার ভাইয়ের রুহের মাগফিরাতের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।

    ডা. গোলাম মোস্তফা চিকিৎসক হিসেবে গরিব-অসহায়দের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ সেবা দিয়ে গেছেন। তার মৃত্যুতে তার ঘনিষ্ঠ সহচর রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আ. জব্বার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে।

    ডা. গোলাম মোস্তফা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করেন এবং অনেক দিন দেশের বাহিরে সুনামের সহিত চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। এর পর দীর্ঘকাল ধরে তিনি রাজবাড়ীতে চিকিৎসক হিসেবে মানুষকে সেবা দিয়ে গেছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • করোনায় চমেকের অর্থপেডিক সার্জন ডা. নজরুলের মৃত্যু

    করোনায় চমেকের অর্থপেডিক সার্জন ডা. নজরুলের মৃত্যু

    প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের প্রখ্যাত অর্থপেডিক সার্জন এবং  চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অর্থপেডিক্স সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরী তসলিম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

    কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার (৩ আগষ্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা গেছেন।

    চট্টগ্রাম মেডিকেলের উপ-পরিচালক আফতাবুল ইসলাম মৃত‌্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চিকিৎসক নজরুল ইসলাম তসলিম ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।কয়েকদিন আগে তার করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।

    তিনি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

    চিকিৎসক নজরুল ইসলামের প্রথম নামাজে জানাজা আজ সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার মরদেহ নেয়া হয়েছে নোয়াখালী চাটখিলস্থ গ্রামের বাড়ীতে সেখানে বাদ জোহর তার দ্বিতীয় জানাজা শেষ পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

    বিএমএ সূত্রে জানা গেছে, এ নিয়ে চট্টগ্রামে ১২ জন চিকিৎসক করোনা এবং উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করলেন। এছাড়া প্রায় তিন’শ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • চট্টগ্রামে করোনায় নারী চিকিৎসকের মৃত্যু

    চট্টগ্রামে করোনায় নারী চিকিৎসকের মৃত্যু

    করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ডা. সুলতানা লতিফা জামান আইরিন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

    মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি নিশ্চিত করেছেন।

    চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিন জামান বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম মুইজ্জুল আকবর চৌধুরীর স্ত্রী। তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ১৪তম ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন।

    সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘সকালে ডা. আইরিন জামানের মৃত্যুর যে সংবাদ ছড়িয়েছিল সেটা ভুল ছিল। তখনো তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। তবে ক্ষীণ শ্বাসপ্রশ্বাস চলছিল। পরে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

    চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস’ সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেস্পন্সিবিলিটিজের হিসাব অনুযায়ী, এ নিয়ে করোনায় দেশে এখন পর্যন্ত ৬৪ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ১০ জন চিকিৎসক।চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস ও উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত আট চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • করোনায় ফেনীর সিভিল সার্জনের মৃত্যু

    করোনায় ফেনীর সিভিল সার্জনের মৃত্যু

    করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

    মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টার কিছু পরে রাজধানীর আসগর আলী হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

    এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. শাহেদুল ইসলাম কাউসার।

    ডা. সাজ্জাদ করোনা আক্রান্তের পাশাপাশি কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া এবং হার্ট ফেইলিউর হওয়ায় তাকে গত ১ জুলাই ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়েছিল। এরপর উচ্চপ্রবাহের অক্সিজেন দেওয়া হলেও তার অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। তার ফুসফুসে নিউমোনিয়া সংক্রমণও মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। চিকিৎসকদের সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ ২৪ দিন ধরে লড়াই করে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন।

    এর আগে গত ১৪ জুন করোনায় শ্বাসকষ্ট অনুভব হলে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের ৪০ শয্যার হাই-ফ্লো অক্সিজেন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) পরিবারের ইচ্ছায় ও আরও উচ্চ প্রবাহের অক্সিজেন সেবা চালু না হওয়ায় সিভিল সার্জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

    এরও আগে ১২ জুন নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেনের করোনা পজিটিভ আসে।

    সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেন ১৭তম বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডারে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেছিলেন। তার স্ত্রী ডা. নাদিরা দিলরুবা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তাদের একমাত্র মেয়ে এবার এসএসসি পাস করেছে।

    ফেনীর মেধাবী সন্তান সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেন সদর উপজেলার লেমুয়ার দেওয়ানজি বাড়ির মরহুম দেওয়ান মাহবুবুল হকের বড় সন্তান। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • করোনায় শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামানের মৃত্যু

    করোনায় শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামানের মৃত্যু

    জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান (রিঠু) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

    শনিবার (২৭ জুন) বিকাল তিনটায় রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।

    ডা. আসাদুজ্জামান সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ (সিওমেক) হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন।

    ওসমানী মেডিকেলর ৩০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. আসাদুজ্জামান (রিঠু)-এর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৬ বছর। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন।

    চিকিৎসকদের সংগঠন এফডিএসআরের (ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস’ সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেস্পন্সিবিলিটিজ) যুগ্ম সম্পাদক ডা. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫৪ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ৮ চিকিৎসক।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • চট্টগ্রামে প্রথম প্লাজমা নেওয়া ডা. সামিরুল আর নেই

    চট্টগ্রামে প্রথম প্লাজমা নেওয়া ডা. সামিরুল আর নেই

    চট্টগ্রামের প্রথম প্লাজমা থেরাপি নেয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সামিরুল ইসলাম বাবু ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

    বু্ধবার (২৪ জুন) দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

    করোনা আক্রান্ত এই চিকিৎসককে প্লাজমা দেয়ার পরে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন । চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁকে একটু ভালোর আশায় ভর্তি করা হয়েছিল মেট্রোপলিটন হাসপাতালে। হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

    তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী।

    ডা. সমিরুল ইসলামের জানাযা আজ বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে পুরাতন ভবনে অনুষ্ঠিত হবে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • এবার করোনায় এনাম মেডিকেলের চিকিৎসকের মৃত্যু

    এবার করোনায় এনাম মেডিকেলের চিকিৎসকের মৃত্যু

    করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়বেটোলজিস্ট ও অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট মো. রফিকুল হায়দার (৫০)। বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়।

    হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে রোববার তিনি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই নমুনা পরীক্ষা করান। পরদিন তার রিপোর্টে দেখা যায় তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এরপর মিরপুরের পল্লবীর বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।

    বুধবার রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে দ্রুত এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

    বুধবার রাতেই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ডা. রফিকুল হায়দারের জানাজা শেষে তাকে রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

    ডা. রফিকুল হায়দারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

    চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের মোহাম্মদ সুফিয়ানের ছেলে ডা. রফিকুল হায়দার সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কমর্রত ছিলেন।

    ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস’ সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেস্পন্সিবিলিটিজের (এফডিএসআর) যুগ্ম সম্পাদক ডা. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী জানান, এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৮ চিকিৎসক এবং করোনার উপসর্গ নিয়ে পাঁচ চিকিৎসক মারা গেছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • করোনায় ডাক্তারী পড়ুয়া সন্তান হারা চিকিৎসক মায়ের আকুতি

    করোনায় ডাক্তারী পড়ুয়া সন্তান হারা চিকিৎসক মায়ের আকুতি

    ডাক্তারী শেষ বর্ষে পড়ুয়া সালমান ঘরে থেকেও করোনায় মরলেন।

    গাইনোলজি প্রফেসর ডাক্তার শবনম তাহেরের চতুর্থ বর্ষে ডাক্তারি পড়ুয়া ছেলে। লেখাপড়া ও খেলাধূলায় সমান মেধাবী। বাবাও ডাক্তার। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সাতদিনেই মারা গেলেন।

    ছেলের মৃত্যু নিয়ে মা শবনমের হৃদয় ছোঁয়া স্টাটাস :-
    গতকাল-আমাদের ডাক্তারি পড়ুয়া মাত্র ২১ বছরের প্রিয়তম সন্তানকে হারিয়েছি। এর চেয়ে বেদনার দিন কোনো মায়ের এই পৃথিবীতে নেই। প্রচন্ড শোকের মাঝে অন্য সব মায়েদের এই বার্তা দেয়ার একমাত্র কারণ হলো- আর কোনো মাকে যেন এইভাবে তার সন্তানকে হারাতে না হয়।

    আমি শুধু মা না। আমি একজন ডাক্তার। আমার স্বামীও ডাক্তার। মাত্র ২১ বছরে আমাদের শোকের মাঝে রেখে চিরতরে চলে যাওয়া আমার ছেলেও ম্যাডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী।

    আমার ছেলের শারীরিক কোনো সমস্যা ছিলোনা। একজন স্বাস্থ্যবান তরতাজা যুবক ছিলো। প্রচণ্ড মানসিক, শারীরিক শক্তি ছিলো। বন্ধুবৎসল ছিলো। সবসময় প্রাণোচ্ছল ছিলো। পাশাপাশি সে তুখোড় মেধাবী একজন ছাত্র ছিলো। মা-বাবার মতো ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে তার অধ্যয়নে কোনো ঘাটতি ছিলোনা। কিন্তু মাত্র ৭২ ঘন্টার মাঝে আমাদের জীবনের সবকিছু উলটপালট হয়ে গেলো।

    লকডাউনে সে কোথাও যায়নি। মাত্র দুবার পাঁচ মিনিটের জন্য নিজের গাড়িতে করে বাইরে যায়। আর ঘরে ফেরার সাথে সাথে নিজের শরীরকে ভালো করে ধৌত করে। সচেতনতার কোনো ঘাটতি ছিলোনা-আমাদের পরিবারে। যেহেতু সে নিজেই ডাক্তারি পড়ছে আর আমরা ডাক্তারি পেশায় আছি।

    ঈদের আগের দিন রাতে সে দুই বন্ধুর সাথে – বড়জোড় দুই-আড়াই ঘন্টার জন্য বাইরে যায়। এর পর ঘরে এসে গোসল করে শুতে যায়। পরদিন সকালে সে সামান্য মাথা ব্যথা নিয়ে ঘুম থেকে ওঠে। আমি ওকে Panadol tablet খেতে দেই।

    মাথা ব্যথা না কমলে- চারপাশে ঘটা বর্তমান পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে আমি ওর শরীরের তাপমাত্রা নেই। দেখি ৯৯ ডিগ্রি। সাথে সাথে ওকে আমি অন্য একটা ঘরে আলাদা করে দেই। চব্বিশ ঘন্টার ভিতরে ওর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে হয় ১০১। আমি ওকে Panadol+Brufen দেই। সে তার ঘাড়েও ব্যথা অনুভব করে। আমার Pediatrician স্বামী মনে করেন -ছেলের হয়তোবা Meningitis হতে পারে। কিন্তু ওর কোনো বমি বা বমির কোনো ভাব নেই। আমরা দ্রুত টেস্টের জন্য ব্লাড স্যাম্পল পাঠাই এবং ডাক্তাররা বলেন – ওর Bacterial Meningitis হয়েছে এবং এন্টিবায়োটিকস দেয়া শুরু করি এবং আধ ঘন্টার ভিতরে ওকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করি।

    সবসময় আমি ওর সাথে ছিলাম। ওর কোনো ঠাণ্ডা, গলা ব্যথা, কাশি, বুক ব্যথা, পেট ব্যথা এসবের কিছুই ছিলোনা। ডাক্তাররা মনে করছেন-Meningitis ই হয়েছে।

    নিউরোসার্জন এসে দেখে গেলেন- এবং CT স্ক্যান করা হলো নিশ্চিত হতে আমার ছেলের অন্য কোনো সমস্যা নেই। এ সময় লক্ষ করলাম ওর একটা চোখের কিছু অংশ ফোলা। বুকের এক্সরে করে দেখা যায় ছোট একটা দাগ। ইতোমধ্যে কোভিডের রেজাল্ট আসে। আমার ছেলে করোনায় আক্রান্ত। পরের ৮- ১০ ঘন্টা ছিলো জীবনের দুঃসহ যন্ত্রণার দিন। ওর হার্ট রেট, রেসপাইরেটরি রেট বাড়ছেই, অক্সিজেন লেভেল ড্রপ করছে। প্রতি মুহুর্তে মুহুর্তে ছেলে আমাদের চোখের সামনে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা কেউ কিছুই করতে পারছিনা। কিছু বুঝে ওঠার আগে ছেলে চোখ বন্ধ করে। ও আমাদের ছেড়ে চলে যায়।

    ইতোমধ্যে আমার স্বামীরও করোনা পজিটিভ রেজাল্ট আসে। তাকেও আলাদা করা হয়। ম্যাডিকেল প্রসিডিউর অনুযায়ী আমার সন্তান সালমানের যানাজা, দাফন হয়। কাউকে জড়িয়ে ধরে যে কাঁদবো -সেই সুযোগও হয়না। কেউ হাসপাতালে ওয়ার্ডে ভর্তি হচ্ছে। কেউ লাশের গাড়িতে করে সরাসরি কবরস্থান, শশ্মানে চলে যাচ্ছে। কারো পাশে কেউ নেই। আমার সন্তানকে তো আমরা হারিয়েছি। এই শোক এই পৃথিবীতে আর কোনোদিনও কাটিয়ে ওঠতে পারবোনা।

    তাই, নিজের সন্তানকে হারানোর আগে দয়া করে আমার কথাগুলো শুনুন।

    এক) ভুলেও মনে করবেন না যে- আপনার করোনা হবেনা। আপনার নিজের না হলেও হয়তোবা আপনি করোনা ভাইরাসের বহনকারী হবেন। আমাদের যেটা মনে হচ্ছে- আমি আর আমার স্বামী প্রতিদিন নিজ নিজ কাজে গেছি। আর হয়তোবা আমরা নিজেরাই আমাদের সন্তানের জন্য বহন করে নিয়ে এসেছি। আর বেচারা ঘরে বসে থেকেই আমাদের কাছ থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

    দুই) এখনো সময় আছে সতর্ক হোন। অধৈর্য্য হয়ে ঢিলেঢালা হয়ে চলাটা আপনার জন্য ঠিক মনে করলেও ভাইরাস কিন্তুু সেটা মনে করছেনা। তাই, যাবতীয় জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। এখন, জীবনের তাগিদে যদি কাউকে বাইরে যেতে হয়- সেক্ষেত্রে কি বলা দরকার সেটা আমার জানা নেই।

    তিন) একজন ডাক্তার হিসাবে infertility treatment’র জন্য আমি প্রতিদিন ফোন কল পাচ্ছি। আপনাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ দশবছর অপেক্ষা করতে পেরেছেন। সারা জীবন নিজের জন্য বাঁচতে এবং অন্যকে বাঁচাতে কেন মাত্র আরো ছয়টি মাস অপেক্ষা করতে পারছেন না। প্লিজ ধৈর্য্য ধরুন।

    চার) সরকারের দেয়া নির্দেশনা খুবই কড়াকড়িভাবে মেনে চলুন। একজন আরেকজনকে দোষারুপ করলে কিছুই হবেনা। নিজ নিজ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্ক না হলে এই মৃত্যু মহামারী আটকানো যাবেনা। হাসপাতালের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা পেয়ে, নিজে ডাক্তার, নিজের স্বামী ডাক্তার হওয়ার পরও আমাদের সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি।

    পাঁচ) আপনাদের মাঝে যারা বলছেন- এসব মিথ্যা। শুধু টাকা আয় করবার কৌশল। তাদেরকে বলছি- আমাদের সব সম্পত্তি দিয়ে দিতে চাই। শুধু আমাদের সন্তানকে একটিবার ফিরিয়ে দিন।

    ছয়) যারা মনে করছেন- আমাদের আর করোনা হবেনা। হওয়ার থাকলে এতোদিনে হয়ে যেতো। বিশ্বাস করেন- কিছু বুঝে ওঠার আগেই জীবন শেষ হয়ে যাবে। কিছুই বুঝতে পারবেন না।

    জীবন-মরণ আমাদের হাতে না। কিন্তু সাবধান থাকা আমাদের হাতে। তাই, সতর্ক হোন, সাবধান হোন। আর কোনো মাকে যেনো আমার মতো হাহাকার করতে না হয়।

    “রাব্বুল আলামীন এই দুঃসময়ে সবার প্রতি সহায় হোন”

    বিনীত-
    করোনায় মারা যাওয়া সালমান তাহিরের এক দুঃখী মা।

    ডা: শবনম তাহের,অধ্যাপক গাইনোকোলজি,লাহোর হাসপাতাল।

    উল্লেখ্য, মে মাসের ২৮ তারিখ মারা যায় সালমান।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • মৃত্যুর সময় পাশে কেউ নেই; খ্যাতনামা চিকিৎসককে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন

    মৃত্যুর সময় পাশে কেউ নেই; খ্যাতনামা চিকিৎসককে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন

    ভাই সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ছেলে কানাডায় চট্টগ্রামের সন্তান খ্যাতনামা চিকিৎসকের লাশ দাফন হলো বেওয়ারিশ হিসেবে।

    মরদেহ কবরস্থ করা এক সেচ্ছাসেবি লিখেছেন, ঢাকার এক মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক। কত অর্থবিত্ত খ্যাতি সুনাম প্রতিপত্তি! এতকিছু থাকার পরেও তিনি এখন বেওয়ারিশ লাশ।

    রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল। আমাদের কাছে হাসপাতাল থেকে ফোন এলো– তাদের আইসিইউতে একজন রোগী মারা গেছেন। তাকে দাফন করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা হাসপাতালে গিয়ে মুখোমুখি হলাম এক মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতার।

    কারণ, অনেক খোঁজার পরেও মৃতের কোনো আত্মীয়, অভিভাবক কাউকে পাওয়া গেল না, যার সাথে কথা বলে তার দাফনের ব্যবস্থা করা হবে। হাসপাতালের আইসিইউতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মৃত ব্যক্তি হলেন একজন ডাক্তার।

    এদিকে, দীর্ঘ সময় ধরে অনেক খোঁজ করার পরেও যখন তার কোনো আত্মীয় বা অভিভাবক পাওয়া যাচ্ছে না। তখন আমাদের দ্বিধান্বিত অবস্থা– কী করবো। অবশেষে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, আত্মীয় পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাকে ফেলে রেখে চলে যাব না। বরং বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে হলেও তাকে দাফন করা মানবিক কর্তব্য।

    যেই ভাবা সেই কাজ। হাসপাতাল থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে থানায় জিডি করে থানার কাছ থেকে একটা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হবে। এরপর বেওয়ারিশ লাশ হিসেবেই তাকে দাফনের সিদ্ধান্ত হলো।

    শেষ পর্যায়ে আমরা ভাবলাম, একজন নামী ডাক্তার, অধ্যাপক। তার কেউই নেই, এটা কীভাবে সম্ভব? তিনি বেওয়ারিশ হন কীভাবে?

    পরে আমরা আবারো হাসপাতালে যোগাযোগ করি এবং খোঁজ নেই যে, এতদিন তিনি হাসপাতাল ছিলেন, কীভাবে ভর্তি হলেন। তার কোনো আত্মীয় কি ছিল না?

    কর্তৃপক্ষ বলল, তিনি জীবিত থাকাবস্থায় অনেকে যোগাযোগ করেছিল। সেই নাম্বার ধরে ফোন দিলে তারা বলল, মৃত ব্যক্তি তাদের কেউ না। অর্থাৎ মারা যাওয়ার পর আর কেউ তাকে স্বীকার করছেন না। তারা সবাই ফোনে বলে দিলেন, এই নামে তাদের কোনো স্বজন বা পরিবারের কেউ মারা যায় নি।

    পরে একটা সূত্র পাওয়া যায় যে, তিনি ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত খ্যাতনামা এক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এসে ভর্তি হয়েছেন। সেই হাসপাতালে ফোন করার সাথে সাথে তারা মুহূর্তেই চিনে ফেললেন যে, তিনি তাদের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক। তখন সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতের স্বজনদের নাম্বার দিলেন। জানা গেল, তার (মৃতের) ছেলে কানাডায় থাকেন।

    তার ছেলের সাথে কয়েকবার চেষ্টা করে ফোনে কথা হলে তিনি জানালেন, দেশে তাদের তেমন কেউ নেই। তাই তিনি অনুরোধ করলেন, আমরা যেন তার বাবার লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। আর তাকে যেন বাবার শেষকৃত্য ভিডিও করে বা ছবি তুলে কানাডায় পাঠানো হয়!

    এর একটু পরেই একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন এলো। চট্টগ্রাম থেকে একজন ডাক্তার ফোনে বললেন, মৃতের ওযু গোসল সব শেষে ব্যাগিং করে আমরা যদি পাঠিয়ে দেই, তাহলে তাকে মিরসরাই দাফন করবে তারা। তারপর আবার হঠাৎ তিনি জানালেন যে, মিরসরাই তাকে দাফনে আগ্রহ বোধ করছেন না তারা।

    পরে আরো জানা গেল যে, মৃত অধ্যাপক হলেন দেশের একজন উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তার বন্ধু এবং ঘনিষ্টজন। সেদিন সেই কর্মকর্তার আরেকজন আত্মীয় মারা যাওয়ায় তিনি স্বাভাবিকভাবেই তার দিকে মনোযোগ দিতে পারছিলেন না। তাই তার জুনিয়র সহকর্মীকে দায়িত্ব দিয়েছেন বিষয়টি দেখভাল করার জন্যে। তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে এসএমএসের মাধ্যমে আমাদের জানান।

    মৃতের লাশ কোথায় দাফন করা হবে, মৃতের কোনো আত্মীয় তার কাছে আসতেও আগ্রহী না, মৃতের কোনো আত্মীয়ের পক্ষ থেকে যখন কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় অবশেষে সেই প্রশাসনিক কর্মকর্তার অফিস থেকে সিদ্ধান্ত এলো যে, মৃত অধ্যাপককে ঢাকাতেই রায়ের বাজার বধ্যভূমি গোরস্থানে দাফন করা হবে। এরপরে মৃতের ভাই, যিনি নিজেও একজন পদস্থ কর্মকর্তা, তিনি ফোনে জানালেন যে, তিনি তার এক কর্মচারীকে পাঠাচ্ছেন দাফনের সাক্ষী হিসেবে।

    কী মর্মান্তিক! এত বিখ্যাত একজন ডাক্তার, নাম বলা মাত্রই যাকে সবাই চিনে ফেলেছেন হাসপাতালে, এত বড় একজন অধ্যাপক! তাকে যখন অন্তিম বিদায় জানানো হবে, তখন তার পাশে থাকার জন্য, সাক্ষী হিসেবে স্রেফ একজন কর্মচারী পাঠানো! আতঙ্ক আমাদের কোথায় নিয়ে গেছে! মৃতের আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগের কোনো সূত্রও পাওয়া যাচ্ছিল না শুরুতে। যা-ও কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ হলো, তারা কেউই আসেন নি; বরং একজন কর্মচারী পাঠিয়েছেন।

    ঢাকার খ্যাতনামা এক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক। কত অর্থবিত্ত খ্যাতি সুনাম প্রতিপত্তি! এতকিছু থাকার পরেও তিনি এখন বেওয়ারিশ! সব থাকার পরেও তার শেষ যাত্রা হলো যাদের কেউ নেই তাদের শেষ যাত্রার মতো সেই বধ্যভূমি গোরস্থানে। অনেকটা বেওয়ারিশ মানুষের মতোই।

    অবশেষে রাত ১১টায় সেই গভীর অন্ধকারে আমরা কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীই যেন তার স্বজন, যারা পরম মমতায় তাকে সমাধিস্থ করি অন্য যে-কোনো পরিচয়হীন মানুষের মতো। (একটি স্বেচ্ছাসেবী দাফন কার্যক্রম টিমের এক সদস্যের বাস্তব অনুভূতি)।

    সেই হতভাগ্য চিকিৎসকের নাম ডাঃ মহিউদ্দিন,অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ,ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ১৭তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন।

    উল্লেখ্য, বুধবার (৩ জুন) রাতে ঢাকার হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

    তিনি স্বাস্থ্য ক্যাডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নির্ধারিত সময়ের ৩ বছর আগে ২০১২ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এর পর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে যোগ দেন। গত বছরের শেষ দিকে তিনি অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • করোনায় ইমপালস হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট ডা. জলিলুর রহমান খানের মৃত্যু

    করোনায় ইমপালস হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট ডা. জলিলুর রহমান খানের মৃত্যু

    করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিওলজি) অধ্যাপক ডা. জলিলুর রহমান খান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

    আজ মঙ্গলবার (৯ জুন) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

    ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সসিবিলিটির (এফডিএসআর) যুগ্ম সম্পাদক ডা. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

    তিনি বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে ডা. জলিলুর রহমান খান গত তিনদিন ধরে ইমপালস হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে ছিলেন।’

    ডা. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী জানান, ডা. জলিলুর রহমান খানকে নিয়ে করোনায় আজ পর্যন্ত ২৪ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত সারাদেশে ১ হাজার ১০৮ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর