মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দামের কারসাজিতে যুক্ত রয়েছে ১৫ জনের একটি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটে রয়েছে টেকনাফ বন্দর, টেকনাফ উপজেলা, কক্সবাজার সদর এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ভিত্তিক পেঁয়াজ আমদানিকারক, সিএন্ডএফ, আড়তদার ও কতিপয় বিক্রেতা।
এদের যোগসাজশে মিয়ানমার থেকে ৪২ টাকা দরে আমদানীকৃত পেঁয়াজ পাইকারী বাজার পর্যায়ে ৯০ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে ব্যবসায়িরা।
আজ সোমবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে আসে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে এসব সিন্ডিকেটের তথ্য দেন খাতুনগঞ্জস্থ ব্যবসায়ীরা।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরুর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সেলিম হোসেন, উপসচিব কর্তৃক জেলা প্রশাসন, কক্সবাজারের নিকট পেঁয়াজের দামে কারসাজিতে যুক্ত সিন্ডিকেটের তালিকাটি প্রেরণ করা হয়।
তালিকায় কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকার ৪ আমদানিকারক সজিব, মম (মগ), জহির ও সাদ্দাম। কাদের নামে একজন রয়েছে টেকনাফ স্থল বন্দরের সিএন্ড এফ অ্যজেন্ট এ। টেকনাফের পেঁয়াজ বিক্রেতা ফোরকান, দালাল শফি, বিক্রেতা গফুর, মিন্টু, খালেক, টিপু দখলে নিয়েছে পেঁয়াজের রাজত্ব।
এদের সাথে যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আজমীর ভান্ডার, মেসার্স আল্লার দান স্টোর, নগরীর স্টেশন রোড নুপুর মার্কেটের মেসার্স সৌরভ এন্টারপ্রাইজ, ঘোষাল কোয়ার্টার খাজা দস্তগীর ম্যানশনের নিচ তলার এ হোসেন ব্রাদার্স ও কক্সবাজারের টেকনাফ কে কে পাড়ার জেসি হাউজের মেসার্স আলীফ এন্টারপ্রাইজের মালিকরা।
জানা যায়, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ ভিত্তিক উপরোক্ত সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আজ সোমবার বেলা ১২ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই ও রিয়াজুদ্দিন বাজারের পাইকারি পেঁয়াজের আড়তগুলো পরিদর্শন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি উপ-সচিব সেলিম হোসেন। এসময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ তৌহিদুল ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।
আজকের অভিযানে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও মাত্রাতিরিক্ত দামে মিয়ানমারের পেয়াজ বিক্রি করার দায়ে খাতুনগঞ্জের গ্রামীণ বাণিজ্যালয়কে ৫০ হাজার টাকা এবং রিয়াজুদ্দিন বাজারের রুহুল আমিন সওদাগরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এসব তথ্য ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, অভিযানে বিভিন্ন আড়তের নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মিয়ানমার থেকে পেয়াজের আমদানি মূল্য কেজি প্রতি পড়ছে ৪২ টাকা। ফলে পরিবহন খরচ, শ্রমিক খরচ, মুনাফা ও বিবিধ খরচসহ মিলিয়ে কেজিপ্রতি পাইকারি পর্যায়ে মিয়ানমারের পেয়াজের দাম ৫৫-৬০ টাকা দরে এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৫-৭০ টাকা দরে বিক্রি করার নির্দেশনা দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সেলিম হোসেন।
অভিযানে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী, র্যাব-৭, এপিবিএন, সিএমপি সদস্যগণ এবং বাজার পরিদর্শক বিল্লাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।