Tag: কুবি

  • শিক্ষার্থীদের ব্যায়ামাগার ‘পাহারা দেয়’ কুবি ছাত্রলীগ!

    শিক্ষার্থীদের ব্যায়ামাগার ‘পাহারা দেয়’ কুবি ছাত্রলীগ!

    কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যায়ামাগার এখন অনেকটাই শাখা ছাত্রলীগের অঘোষিত ‘দলীয় কার্যালয়’।

    বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সরাসরি কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় নিজেদের ইচ্ছেমতো খুলে এখানে বসেই নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম চালান শাখা ছাত্রলীগের নেতারা।

    তবে দলীয় অফিস নয়, বরং ব্যায়ামাগারটি রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিয়মিত পাহারা দিয়ে দেখভাল করেন বলে দাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির। যদিও ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যোগদানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পূর্বে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এটিকে ‘দলীয় কার্যালয়’ বলেই উল্লেখ করেছিলেন।

    জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের উত্তরপাশে অবস্থিত ব্যায়ামাগারটি উদ্বোধন করেন। প্রায় ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৭টি ব্যায়ামের যন্ত্র কেনা হয় ব্যায়ামাগারটিতে।

    কিন্তু উদ্বোধনের কিছুদিন পরই শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ব্যায়ামাগারটিতে নিজেদের দলীয় স্টিকার সম্বলিত টেবিল এবং চেয়ার ঢোকালে ব্যায়ামের জায়গা আরও সংকীর্ণ হয়ে পড়ে।

    ব্যায়ামাগারটি পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা যায়, ব্যায়ামাগারের একপাশে ছাত্রলীগ নেতাদের বসার জন্য চেয়ার-টেবিল পাতা, শাখা ছাত্রলীগের পদধারী কয়েকজন ব্যায়ামাগারের ভেতর বসিয়েছেন আড্ডা, চলে ধূমপানও।

    ব্যায়ামাগারে চেয়ার-টেবিল পেতে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোয় ব্যায়ামাগারের জায়গা সংকীর্ণ হয়ে এসেছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি ব্যায়ামাগারে আসতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন বলেও অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

    ব্যায়ামাগারের সুবিধাবঞ্চিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম ইনজামাম জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি একটি ব্যায়ামাগার খোলা হলেও সেখানে প্রশাসনের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নেই। পর্যাপ্ত জায়গাও নেই ব্যায়ামাগারে। কুবির ব্যায়ামাগার একটি নামমাত্র প্রতিষ্ঠান।’

    এদিকে অভিযোগ উঠেছে ব্যায়ামগারটি প্রায়শই তালাবদ্ধ থাকে। যার চাবি থাকে শুধুমাত্র শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের কাছেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের কারও হাতে নেই এর চাবি বা নিয়ন্ত্রণ।

    এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক মনিরুল আলম বলেন, ‘প্রশাসন থেকে ব্যায়ামাগার পরিচালনার কোনো নির্দেশনা বা কোনো চাবি আমাকে দেওয়া হয়নি। আমাকে শুধুমাত্র এর জিনিসপত্র কেনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো এবং আমি বাজেটের আলোকে তা কিনে দিয়েছি। বাদবাকি কে কিভাবে ব্যায়ামাগার চালাচ্ছে আমার জানা নেই।’

    এমন অবস্থায়, ছাত্রলীগ নেতাদের ইচ্ছামতো এটি খোলা এবং বন্ধ করা হয়। প্রায় সময়ই নেতারা ভেতরে বসে আড্ডা দেন, এবং দলীয় কার্যক্রম করে থাকেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। গত ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং গত ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ব্যায়ামাগারের সামনে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ছাত্রলীগের দলীয় পতাকা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকতা পালন করে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি থেকে শুরু করে অনেক নেতাকর্মীকে ব্যায়ামাগারটিকে ‘দলীয় কার্যালয়’ উল্লেখ করে প্রচার করতে দেখা গেছে।

    নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘এমনিতেই গাদাগাদি এবং তার উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাদের ব্যায়ামাগারে কর্তৃত্ব দেখে আর ওখানে যাওয়ার আগ্রহ হয় নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যায়ামাগার কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের অফিস কিভাবে হয় তা আমার বোধগম্য নয়।’

    উপর্যুক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘এটা আসলে আমাদের অফিস না, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামও (ব্যায়ামাগার) না। আমরা কিছু ছেলে আবেদন করে জিমের কিছু জিনিসপত্র আনিয়েছি প্রশাসন থেকে। এটা মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তার কাজের লোকদের লেবার শেড হিসেবে তৈরি হয়েছিল। পরে আমরা এটাকে জিম করে দিতে বলেছি। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই আসে, খেলে, ব্যায়াম করে আর আমরা এটা পর্যায়ক্রমে নিজেদের ছেলেদের দিয়ে পাহারা দিয়ে রাখি। না হয় জিমের জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাবে।’

    ব্যায়ামাগারের জিনিসপত্র পাহারার দায়িত্ব ছাত্রলীগের কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর জন্য লোক দেয় না বলেই আমরা এটা নিজেরা পাহারা দেই। এটি বাংলাদেশের একমাত্র জিমনেশিয়াম যেটা আমাদের পাহারা দেওয়ার জন্য এর কোনো জিনিস হারায়নি। প্রশাসনের লোক না থাকায় আমরা নিজেরা নিজেদের জিনিস দেখে রাখছি।’

    যখন-তখন ব্যায়ামাগার বন্ধ করে রাখেন এবং খুলেন, এতে করে শিক্ষার্থীরা কিভাবে ব্যায়াম করতে পারে?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি একইসুরে জানান, ‘আমরা ২৪ ঘন্টা খুলে দিয়ে চলে গেলে তো জিনিসপত্র চুরি যাবে।’

    বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের এ বিষয়ে বলেন, ‘ব্যায়ামাগারকে ছাত্রলীগ তাদের অফিস হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না। এটা শারিরীক শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্বে থাকবে। ব্যায়ামাগার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর এবং এটি সবাই ব্যবহার করবে সমভাবে। এর ব্যত্যয় হয়ে থাকলে আমরা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।’

  • নতুন রূপে কুবির ‘ইভিনিং’ কোর্সের আত্মপ্রকাশ!

    নতুন রূপে কুবির ‘ইভিনিং’ কোর্সের আত্মপ্রকাশ!

    কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) উপাচার্যের সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধের ঘোষণার পর এবার নতুন করে চালু করা হয়েছে সপ্তাহান্ত (উইকেন্ড) কোর্স।

    প্রতি শুক্র ও শনিবার দিনের বেলায় এই কোর্সের অধীনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হবে বলে জানা গেছে। ‘পুরাতন বোতলে নতুন মদের মতো’ এই প্রাইভেট প্রোগ্রাম চালু থাকলেও বিষয়টি জানা নেই খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

    জানা যায়, গত ১৩ এবং ১৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: আমজাদ হোসেন সরকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে চারটি বিভাগে ‘উইকেন্ড প্রোগ্রাম’ কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হবে। এই কোর্সে আবেদনের শেষ সময়সীমা জানুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

    যদিও এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধের ঘোষণা আসে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষ থেকে।

    এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের বলেছিলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে সন্ধ্যাকালীন কোর্সে শিক্ষার্থী বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে বর্তমানে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি আছেন তারা নিয়মানুযায়ী তাদের কোর্স সমাপ্ত করতে পারবেন। কিন্তু নতুন করে আর কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হবে না।’
    তবে সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধের ঘোষণা দিয়ে দিনের বেলায় এই উইকেন্ড কোর্স চালু যেন নতুন মোড়কে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বলে মতামত অনেক শিক্ষার্থীর।

    এ প্রসঙ্গে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করতে বলা মানে আমার মনে হয় তিনি শুধু রাতের বেলা কোর্স বন্ধ করতে বলেছেন এমনটি নয়। বরং আমি মনে করি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধের প্রতিই ইঙ্গিত দিয়েছেন। এখন নাম পাল্টে দিনের বেলায় একই কোর্স চালু রাখা পুরনো পণ্যের মোড়ক পাল্টানো ছাড়া কিছুই নয়।’

    লোক প্রশাসন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রিজওয়ান কবির বলেন, ‘নগদ সুবিধা প্রাপ্তির আশায় এই ধরনের কোর্স চালু হলে শিক্ষার পরিবেশের পাশাপাশি সার্বিক পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। আমরা চাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে এমন কোর্স যাতে নতুন করে চালু না হয়।’

    এই উইকেন্ড কোর্স এর ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যবসা অনুষদের ডিন ড. আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, ‘আমরা সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধের কোনো অফিসিয়াল নোটিশ পাইনি। আমরা যে কোর্সের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি সেটি সন্ধ্যাকালীন কোর্স নয়। এটি উইকেন্ড প্রোগ্রাম। যেখানে শুধু শুক্র ও শনিবার দিনের বেলায় ক্লাস হবে।’

    এ প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, ‘এর আগে উপাচার্য মহোদয় বলেছিলেন সন্ধ্যাকালীন কোর্স চলবে না। তবে এখন আবার নতুন করে যে উইকেন্ড কোর্স চালু হয়েছে সেটি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে উপাচার্য স্যারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলে বিস্তারিত জানাতে পারবো।’

  • পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে কুবিতে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত

    পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে কুবিতে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত

    কুবি প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়েছে।

    শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটি পালন করেন।

    এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রশিদুল ইসলাম শেখ, সাধারণ সম্পাদক ড.স্বপন চন্দ্র মজুমদারসহ শিক্ষক সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, হলের প্রভোস্ট, শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীবৃন্দ এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ।

    পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, “বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল বাঙালী জাতির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। কারণ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে বাঙালী জাতি তাঁর স্বাধীনতার পূর্ণতা পায়।”

    বক্তারা আরও বলেন, “১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জানুয়ারির এই প্রেক্ষাপট একদিনে রচিত হয়নি। এই প্রেক্ষাপট দীর্ঘ সংগ্রামের। জাতীয় চার নেতার নেতৃত্বে লাখো কোটি বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ দেশ যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল সে স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে।”

    উল্লেখ্য, আগামী ১২ জানুয়ারি রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন।