Tag: কুষ্টিয়া

  • কুষ্টিয়ায় ৬’শ অসহায় ও এতিমের মাঝে “ক্ষুদ্র প্রয়াসে পাশে আছি” স্লোগানে আমরাই কিংবদন্তী’র খাবার বিতরণ

    কুষ্টিয়ায় ৬’শ অসহায় ও এতিমের মাঝে “ক্ষুদ্র প্রয়াসে পাশে আছি” স্লোগানে আমরাই কিংবদন্তী’র খাবার বিতরণ

    “এসএসসি ২০০০ এবং এইচএসসি ২০০২” এর গ্রুপ “আমরাই কিংবদন্তী” কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার একদল স্বেচ্ছাসেবী শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) “ক্ষুদ্র প্রয়াসে পাশে আছি” এই স্লোগানে কুষ্টিয়া সদর, খোকসা, ও কুমারখালী উপজেলার ৭ টি এতিমখানা ও বিভিন্ন ছিন্নমূল সুবিধাবঞ্ছিত প্রায় ছয় শতাধিক মানুষকে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে।

    এই আয়োজনের মূল আয়োজনস্থল কুমারখালীস্থ জিজাবাগান হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটায় আয়োজন শুরু করে তিন উপজেলার বিভিন্ন ছিন্নমূল অসহায়সহ আরো ৭ টি এতিমখানার প্রায় ছয় শতাধিক মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। এসময় গ্রুপের মৃত সদস্যবৃন্দ, অসুস্থ সদস্যবৃন্দ, সদস্যবৃন্দের মরহুম আত্মীয়স্বজন এবং মহামারি করোনায় আক্রান্তদের সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়।

    “আমরাই কিংবদন্তী” একটি অনলাইন ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ, যেখানে সারা বাংলাদেশের এসএসসি ২০০০ এবং এইচএসসি ২০০২ সালের ছাত্র-ছাত্রীদের একত্র করে একক প্লাটফর্মে এনে অগ্রগামী পথে মানব কল্যাণে কাজ করার পরিকল্পনা চলছে।

    দেশের ও বিশ্বের চলমান করোনা’র (কোভিড-১৯) ভয়াবহ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়াস থেকে “ক্ষুদ্র প্রয়াসে পাশে আছি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে ১২ জুন ২০২০ থেকে শুরু করে খাবার বিতরণ কার্যক্রমটি চলমান আছে। যা বর্তমানে শুক্রবার করে চলমান থাকলেও, ভবিষ্যতে প্রতিদিন করার পরিকল্পনা করছে গ্রুপের নিবেদিত প্রাণ সদস্যরা। ইতিমধ্যে ঢাকা ছাড়াও মানিকগঞ্জ, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে কার্যক্রম সম্পন্ন করে আগামীতে ধারাবাহিক ভাবে “ক্ষুদ্র প্রয়াসে পাশে আছি” কার্যক্রম চলমান রাখার প্রয়াস চলছে।

    আমরাই কিংবদন্তী

    নিজেদের আনন্দ অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত ও এতিম মানুষের সাথে সম্মিলিত ভাবে ভাগাভাগি করার প্রয়াস থেকেই ৩৬ হাজার সদস্যের পরিবার উদ্যোগী হয়ে এই কার্যক্রম হাতে নেয়।

    এখানে উল্লেখ্য, “মানবতার কল্যাণে কিংবদন্তী সবখানে” এই মূলনীতিতে এগিয়ে চলা গ্রুপটি করোনার প্রাথমিক পর্যায় থেকে বিভিন্ন জনসেচনতা ও সেবামূলক কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে।

    উল্লেখ্য যে, ১৫ নভেম্বর ২০১৭ থেকে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে প্রায় ৩৬ হাজার সদস্যের পরিবারটি আগামীর পথে এগিয়ে চলেছে।

    আমরাই কিংবদন্তী

    এই গ্রুপটি এর আগেও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখে আসছে; তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে দেশ জুড়ে পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতা অভিযান, প্রতিবন্ধী শিশুদের সহায়তা কার্যক্রম, ফ্রি হেলথ ক্যাম্প, অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ ও খাবার বিতরণ, বৃদ্ধাশ্রমে চিকিৎসা ও খাবার সরবরাহ এবং রক্তদান কর্মসূচীসহ বিবিধ কার্যক্রম।

    একটি অনলাইন ভিত্তিক গ্রুপ হয়েও বন্ধুরা শুধু অনলাইনেই সীমাবদ্ধ না থেকে দেশের, সমাজের বিভিন্ন কাজে এগিয়ে এসেছে গ্রুপটি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে সমাজের কিছু সচেতন সু-নাগরিক, যারা এই গ্রুপটি কে প্রতিনিয়ত ভালো কাজে উৎসাহ দিচ্ছেন।

    ধারাবাহিক ভাবে গ্রুপের পিছিয়ে পড়া সদস্যসহ দেশের প্রতিটি অঞ্চলের অসহায় মানুষদের পাশে চিকিৎসা সেবা সহ সকল মৌলিক সেবা পৌঁছে দিতে পরিকল্পনা করছে এই গ্রুপের সদস্যরা।

    আয়োজনের শেষ পর্যায়ে মূল গ্রুপের এডমিন প্যানেলের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী’স্থ বন্ধুদের সম্মানসূচক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

  • বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনায় যুবলীগ সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৩

    বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনায় যুবলীগ সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৩

    কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া মহাবিদ্যালয়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ যুবলীগ নেতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

    গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান, সবুজ হোসেন ও হৃদয় আহম্মেদ।

    কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, রাত থেকে অভিযান পরিচালনা করে কুমারখালীর বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে মোট চারজন জড়িত রয়েছে বলে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছেন। অপরজনের নাম বাচ্চু। সে এখনও পলাতক রয়েছে।

    অধিকতর তদন্ত চলছে। এর পেছনে যারা জড়িত আছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

    ঘটনার পর গেল রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

    কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অন্যদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।

    প্রসঙ্গত, গেলো বৃহস্পতিবার রাত একটার দিকে কুমারখালীর কয়া মহাবিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়। কলেজের রাত্রীকালীন পাহারাদার খলিল মিয়া বলেন, ওই সময় তিনি দুটি মোটরসাইকেলে করে পাঁচজনকে চলে যেতে দেখেন।

    এদিকে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনায় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

    বিপ্লবী নেতা বাঘা যতীন কুষ্টিয়ার এই কয়াতেই তার মামার বাড়িতে ১৮৮৯ সালের ৮ ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেন। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও তিনি ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের বালেশ্বর বুড়িবালাম তীরে মাত্র চারজন যোদ্ধা নিয়ে বিশাল ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরের সশস্ত্র যুদ্ধ করেন। এই যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান। ২০১৬ সালে কয়া মহা বিদ্যালয়ের সামনে বাঘা যতীনের এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। গেলো ৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে পৌরসভার নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়।

  • কুষ্টিয়ায় এমপির ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

    কুষ্টিয়ায় এমপির ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

    বিবাদমান দ্বন্দ্বের জের ধরে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. আ.কা.ম সারওয়ার জাহান বাদশার ফুপাতো ভাই হাসিনুর রহমানকে (৫০) প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

    শনিবার সকাল ৭টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

    নিহত হাসিনুর রহমান দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর এলাকার মৃত ডা. জাকির হোসেনের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এলাকা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

    স্থানীয়রা জানান, কয়েকবছর আগে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উক্ত এলাকায় ঈদের দিন কুপিয়ে শাহাবুল নামের এক যুবককে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা।

    শাহাবুলের হত্যার পরে দ্বন্দ্ব আরও প্রকোট রূপ নেয়।

    শনিবার সকালে হাসিনুর রহমান বাজারে মাছ ক্রয় করছিলেন। এসময় পিছন দিক থেকে নিহত শাহাবুলের বাবা মজিবর রহমান (৪০) তাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

    এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে সকাল পৌনে ৯টার দিকে তিনি মারা যান।

    স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, একটি খুনের ঘটনা মীমাংসার মধ্যস্থতার চেষ্টা করছিলেন হাসিনুর। এর জের ধরে তাকে খুন করা হতে পারে।

    পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, হাসিনুর রহমান সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সাংসদের অবর্তমানে তার ব্যক্তিগত ও দলীয় কাজকর্ম হাসিনুর দেখভাল করতেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জব্বার নামে একজনের মোটরসাইকেলে চড়ে নিজ বাড়ি থেকে স্থানীয় বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় বাড়ির পাশেই একটি দোকানের কাছে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মজিবুর রহমান বয়াতি তার ওপর আচমকা হামলা চালায়।

    এ সময় রমদা দিয়ে হাসিনুরের শরীরে বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকলে এক পর্যায়ে তিনি মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারী পালিয়ে যায়। আহত হন মোটরসাইকেলের চালক জব্বার আলী।

    জানা গেছে, বছরখানেক আগে মজিবুর রহমান বয়াতির এক বছর বয়সী ছেলে খুন হয়। সে সময় মজিবর এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করে দৌলতপুর থানায়। মামলার আসামিরা সবাই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। স্থানীয়রা জানায়, সাংসদের প্রতিনিধি হিসেবে হাসিনুর রহমান এই হত্যা মামলাটি মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মজিবুর এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।

    এদিকে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছাঁয়া নেমে আসে। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তার বাড়িতে ভিড় করছেন। এলাকায় যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

    স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান জানান, ‘নিহত হাসিনুর রহমান সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন। তিনি মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পছন্দ করতেন। মানুষের প্রয়োজনে পাশে থাকতেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন।’

    দৌলতপুর থানার ওসি নিশিকান্ত জানান, ‘ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পরপরই হামলাকারী মজিবর রয়াতিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।’

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • করোনায় দৌলতপুর থানার ওসির মৃত্যু

    করোনায় দৌলতপুর থানার ওসির মৃত্যু

    মহামারী করোনাভাইরাসের সঙ্গে দুই সপ্তাহ ধরে লড়াই করার পর না ফেরার দেশে চলে গেছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার ওসি এসএম আরিফুর রহমান (৪২)।

    বুধবার রাত ১০.৩৭টায় তিনি ঢাকার রাজারবাগ বাংলাদেশ পুলিশের সেন্ট্রাল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্নানিল্লাহে ওয়াইন্নাইলাইহি রাজিউন।

    এসএম আরিফুর রহমান প্রায় ২ সপ্তাহ আগে করোনা আক্রান্ত হন। প্রথমে তিনি স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিলেও পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার রাজারবাগস্থ বাংলাদেশ পুলিশের সেন্ট্রাল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। বুধবার রাতে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।

    কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত তার এই অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে আরিফুরের মরদেহ খুলনায় তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হবে।

    আরিফুরের বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলার সামন্তসেনা গ্রাম। তার এক বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন থানায় পুলিশের এসআই হিসেবে চাকরি করে মানুষের প্রশংসা কুড়ান তিনি। পরে পদোন্নতি পেয়ে ওসি হয়ে দৌলতপুর থানায় যোগ দেন। জেলার সব মহলে একজন সৎ ও সজ্জন পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচিত ছিলেন আরিফুরের।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশ সদস্য নিহত

    কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশ সদস্য নিহত

    কুষ্টিয়ার মিরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় রাশেদুজ্জামান তন্ময় (৩৫) নামে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।

    বুধবার (২২ জুলাই) দুপুরে কুষ্টিয়া-ভেড়ামারা সড়কের বহলবাড়ীয়া সেন্টার নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

    নিহত তন্ময় দৌলতপুর উপজেলার রিফায়েতপুর গ্রামের মনিরুজ্জামানের ছেলে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশের কুষ্টিয়া সার্কেলে কলস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।

    জানা গেছে, ওই সময়ে তন্ময় মোটরসাইকেল যোগে কুষ্টিয়ায় যাওয়ার পথে পিছন থেকে একটি দ্রুতগামী ট্রাক ধাক্কা দিলে তিনি ছিটকে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

    মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা যায়নি।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • বন্ধুরা সেলফিতে ব্যস্ত, পাশেই ডুবল কলেজছাত্র

    বন্ধুরা সেলফিতে ব্যস্ত, পাশেই ডুবল কলেজছাত্র

    বন্ধুরা মিলে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ী ঘুরে পদ্মাচরে যায়। বন্ধুরা পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে সবাই পানিতে খেলছিল, অনেকেই মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে ব্যস্ত। এরই মধ্যে পানিতে ডুবে যায় আহসান আবির। কিন্তু বন্ধুদের কেউ টের পায়নি।

    কিছুক্ষণ পর যখন আবিরের সন্ধান মিলছে না, তখন বন্ধুদের মোবাইল ফোনে মিলল আবিরের ডুবে যাওয়ার দৃশ্য। কথাগুলো বলছিলেন যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র পলাশ আহমেদ।

    সোমবার বিকালে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কুঠিবাড়ী সংলগ্ন পদ্মা নদীতে ডুবে মারা যায় যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আহসান আবির। সে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদালপুর গ্রামের বাসিন্দা।

    যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের সহকারী অধ্যাপক তবিবুর রহমান জানান, সোমবার সকালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে ১৩১ জন শিক্ষার্থী ও ৯ জন শিক্ষক শিক্ষাসফরে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে যায়। সেখানে যাওয়ার আগেই শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছিল একা একা কোথাও যাওয়া যাবে না। নদীতেও যাওয়া যাবে না।

    কিন্তু কয়েকজন নিষেধ অমান্য করে পদ্মা নদীতে চলে যায়। শিলাইদহ খেয়াঘাট থেকে নৌকায় পদ্মা নদীর ওপারের চরে গিয়ে খেলাধুলা করে। বেলা দেড়টার দিকে ১৯ জন শিক্ষার্থী সেখানে গোসল করতে পানিতে নেমেছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই আবির পানিতে ডুবে যায়।

    সহপাঠীরা আবিরকে খুঁজে না পেয়ে বিষয়টি শিক্ষকদের জানায়। পরে কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জাল টেনে খোঁজাখুঁজি করে।

    কিন্তু শিক্ষার্থীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। খুলনা থেকে উদ্ধারকারী ডুবুরি দলের সদস্যরা এলে তাদের সহযোগিতায় রাত ৯টার দিকে আবিরের লাশ পাওয়া যায়।

    এদিকে মঙ্গলবার কলেজে একদিনের শোক ঘোষণা করা হয়। দুপুরে ক্যাম্পাসে আহসান আবিরের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

  • বন্ধুর জন্মদিনে অ্যালকোহল পানে তিন ছাত্রের মৃত্যু, আশঙ্কাজনক ৩

    বন্ধুর জন্মদিনে অ্যালকোহল পানে তিন ছাত্রের মৃত্যু, আশঙ্কাজনক ৩

    কুষ্টিয়ায় বন্ধুর জন্মদিনে কোমল পানীয় স্পিডের সঙ্গে অ্যালকোহল মিশিয়ে পান করে বিকেএসপির বাস্কেট বল খেলোয়ারসহ তিন কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। একই কারণে তাদের আরও তিন বন্ধু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

    বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে পাঁচটার থেকে রাত সাড়ে ৭টার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

    নিহতরা হলেন- শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে ও বিকেএসপির বাস্কেট বল খেলোয়ার জাহিদুর রহমান সাজিদ (১৯), থানাপাড়া এলাকার আরমান আলীর ছেলে পাভেল (২০) এবং কুঠিপাড়া এলাকার সাগরের ছেলে ফাহিম (১৮)।

    গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও তিন বন্ধু। তারা হলেন সুরুজ (২০), শান্তি (১৮) ও আতিকুল (২১)।

    উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে বলে জানান কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার।

    হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে পাভেল, সাজিদ, শান্ত, ফাহিম, আতিকুল ও সুরুজ নামে একে একে ছয়জন প্রায় কাছাকাছি বয়সের ছেলে অসুস্থ হয়ে জরুরি বিভাগে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পাকস্থলী ওয়াসসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন। চিকিৎসারত অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়। শিক্ষার্থীরা সবাই কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র।

    চিকিৎসাধীন শান্ত বলেন, দুপুর ২টার দিকে বন্ধু সুরুজের জন্মদিনের পার্টি উপলক্ষ্যে শহরের প্রধান সড়ক সংলগ্ন পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে কেক কাটাসহ পার্টির আয়োজন ছিলো। সেখানে কোমল পানীয় স্পিডসহ হালকা কিছু খাবার ব্যবস্থা ছিলো। আতিকুল ইসলাম কটা নামের এক বন্ধু হোমিওপ্যাথি দোকান থেকে একটি শিশিতে অ্যালকোহল নিয়ে আসে। ওইটা কোমল পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে আমরা সবাই পান করি। খাওয়া দাওয়া শেষে আড্ডা দিয়ে বাড়ি চলে যাই। বেলা তিনটার দিকে আমি চরমভাবে পেটে ব্যাথাসহ শ্বাসকষ্টেভুগে অসুস্থ হয়ে পড়ি। হাসপাতালে আসার পর দেখি আমরা যে কয়জন পার্টিতে ওই পানীয় খেয়েছিলাম তারা সবাই অসুস্থ হয়ে এখানে এসেছে।

    আতিকুল ইসলাম কটা শহরের কোনো একটি হোমিওপ্যাথি দোকান থেকে নিউ লাইফ ল্যাবরেটরি ঢাকা বাংলাদেশ লেভেল যুক্ত একটি তরল কেমিক্যালের বোতলে (caconite nap) নামের কেমিকেল নিয়ে সবাই মিলে তা পান করেছেন বলে চিকিৎসকদের জানিয়েছেন রোগীরা। ব্যবহৃত খালি সেই বোতলটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

    কুষ্টিয়া জেনারেল হাসাপাতালে তদন্তের দায়িত্ব পালনকালে থানার উপ-পরিদর্শক সামছুর রহমান বলেন, বিষক্রিয়ায় এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

    কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এরা সবাই তরুণ। তারা অ্যালকোহলজাতীয় দ্রব্য কোথায় পেল বা কে বিক্রি করল বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে।

  • দুই ভাই হত্যায় চার জনের মৃত্যুদণ্ড

    দুই ভাই হত্যায় চার জনের মৃত্যুদণ্ড

    ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানায় দায়ের করা স্কুল শিক্ষক মুজিবর রহমান ও তার ভাই মিজানুর রহমান হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৪ আসামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ৭ জনকে যাবজ্জীবন ও ১ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

    রোববার (১ ডিসেম্বর) সকালে কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এই দণ্ডাদেশের রায় ঘোষণা করেন।

    মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে কমল হোসেন মালিথা, ফকিরাবাদ গ্রামের কাবুল প্রামাণিকের ছেলে কামরুল প্রামাণিক ও সুমন প্রামাণিক এবং একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নয়ন শেখ।

    যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ভেড়ামারা উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের ছের আলী শেখের ছেলে নজরুল শেখ ও আব্দুর রহিম ওরফে লালিম শেখ, একই গ্রামের আকুল মন্ডলের ছেলে মাহফুজুর রহমান, বেনজির প্রামাণিকের ছেলে হৃদয় আলী, নাজির প্রামাণিকের ছেলে সম্রাট আলী প্রামাণিক, গোলাপনগর গ্রামের মৃত নুরুল হক মালিথার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম ও আশরাফ মালিথা। এছাড়াও আরিফ মালিথা নামে এক আসামীকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্তকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে রায় দেন আদালত।

    আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল বাদী জাহারুল ইসলামের ভাতিজা আশরাফুজ্জামান রতনের ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় আসামীরা যোগসাজশে হামলা করে স্কুল শিক্ষক মুজিবর রহমানকে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে এবং তার ভাই মিজানুর রহমানকে রক্তাক্ত করে। পরবর্তীতে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনায় নিহত স্কুল শিক্ষক মুজিবর রহমানের ছেলে জাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেন।

    কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি (নারী ও শিশু) অ্যাড. আব্দুল হালিম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

  • কলেজছাত্রকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা (ভিডিও)

    কলেজছাত্রকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা (ভিডিও)

    কুষ্টিয়ার মিরপুরে ‘সমর্পণ’ মাদকাসক্তি মানসিক চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে এক মানসিক ভারসাম্যহীন কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

    নিহত ওই কলেজ ছাত্রের নাম কামরুজ্জামান ইমন। নিহত ইমন উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাদেরপুর গ্রামের এজাজুল আজিম রিপনের ছেলে ও রাজশাহী সিটি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল।

    ২০ নভেম্বর ওই সমর্পন থেকে ইমনকে মিরপুর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    মঙ্গলবার সকালে সিসি টিভির ফুটেজে কলেজছাত্র হত্যার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এ নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। তবে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দাবি ওই কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে।

    এমন দাবি করা হলেও সিসি টিভির ফুটেজে দেখা গেছে ওই ছাত্রকে পিটিয়ে ও ইনজেকশন পুষ করে হত্যা করা হচ্ছে।

    গত ১৯ নভেম্বর দুপুরে কলেজছাত্র ইমন আলীকে ভর্তি করা হয় মিরপুর বিজিবি সেক্টর এলাকার সমর্পণ মাদকাসক্তি, মানসিক চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে। মানসিক সমস্যার কারণে ভর্তি শেষে পরিবারের সদস্যরা ফিরে যান বাড়িতে।

    পরদিন ২০ নভেম্বর সকালে ইমনের পরিবারকে জানানো হয় ইমনকে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে ইমনের বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজন গিয়ে দেখতে পান তাদের ইমন আর বেঁচে নেই। ইমনের শরীরে বিভিন্ন অংশে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।

    তবে ইমনের মৃত্যু যে স্বাভাবিক নয়, তাকে নির্যাতন করেই মেরে ফেলা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে।

    ক্যামেরায় পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে বেশ কয়েকজন ইমনকে হাত-পা বেঁধে মারধর করছে, শরীরে পুষ করা হচ্ছে ইনজেকশনও।

    নিহত ইমনের পিতা এজাজুল আজিম রিপন বলেন, কোনো নেশার সঙ্গে জড়িত ছিল না ইমন। তবে সে বিভিন্ন সময় বাড়িতে ঝামেলা করত। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। এ কথা বলেছিল ডাক্তার। তাই মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

    চিকিৎসকরা বলেছিলেন, কয়েকদিন পর আসেন ভর্তি করে নেয়া যাবে। বাড়িতে ফিরে এসে ইমন খুব ঝামেলা সৃষ্টি করে। ওইদিন সবাই আমাকে কোথাও রেখে আসতে বলেন, তখন আমি কোনো কিছু না ভেবেই পৌরসভার যোগীপুল মহল্লায় অবস্থিত ‘সমর্পণ’ নামের একটি বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে দিয়ে আসি। ছেলেকে সুস্থ করার জন্য।

    তারপর ২০ নভেম্বর বুধবার সকালে শুনছি আমার ইমন মারা গেছে। মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে না রেখে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে কেন রাখলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কেঁদে ফেলে বলেন, কি থেকে কি হয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না।

    অভিযুক্ত মাদক নিরাময় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দায়ের করবেন কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, না আমার কোনো অভিযোগ নেই। যা হয়েছে সবই আমার কপালে লেখা ছিল।

    তবে ইমনের মা কামরুন্নাহারের অভিযোগ, ইমনকে সুস্থ অবস্থায় ওখানে রেখে আসা হয়েছিল। পরে তাকে নির্যাতন করেই হত্যা করা হয়।

    ইমনের কয়েকজন বন্ধু জানান, কোনো নেশার সঙ্গে জড়িত ছিল না ইমন। আমরা কখনই নেশা করতে দেখিনি। মৃত্যুর প্রায় ১৫ দিন আগে থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল ইমন। প্রথম দিকে না বুঝলেও কয়েকদিন পর বিষয়টি বুঝতে পারে ইমনের পরিবার। তারপর ইমনের বাবা ইমনকে ডাক্তারও দেখিয়ে ছিলেন। ডাক্তার বলে ছিলেন, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার ও ঘুম কম হওয়ায় এমন সমস্যা হয়েছে। কয়েকদিন বিশ্রাম করলেই সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে।

    যে মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ইমনকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সেখানে গিয়ে মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া না গেলেও ঘটনার সময় ওই নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত রুবেল নামে ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। তিনি জানান, উশৃঙ্খলতা ঠেকাতে হাত বেঁধে চড়-থাপ্পড় মারা হয় ইমনকে।

    সমর্পণ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক হাবিব উদ্দিন জানান, নির্যাতনে নয়, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায় ইমন।

    এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি মিরপুর থানার ওসি আবুল কালাম।

    মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন ফারাজি বলেন, ইমনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল কিন্তু কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।

    https://youtu.be/QCJZoMFh9ic

  • কুষ্টিয়ায় ভর্তি হলেন আবরারের ছোট ভাই

    কুষ্টিয়ায় ভর্তি হলেন আবরারের ছোট ভাই

    কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হলেন বুয়েটের নিহত মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ।

    আজ বৃহস্পতিবার ফায়াজের বাবা বরকত উল্লাহ ঢাকা কলেজের ছাড়পত্র কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে জমা দেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে ফায়াজকে ভর্তি করে নেয়।

    কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মনজুর কাদির জানান, বুয়েটে নিহত আবরার ফাহাদের বাবা কলেজে আসেন। তিনি ফায়াজের ঢাকা কলেজের ছাড়পত্রসহ কাগজপত্র জমা দেন। তাৎক্ষণিকভাবে ফায়াজকে ভর্তি করা হয়। এখন থেকে সে এই কলেজেই পড়াশোনা করবে। এখান থেকেই তার শিক্ষাজীবন চলতে থাকবে।

    এবিষয়ে ফায়াজের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ফায়াজ অসুস্থ থাকায় আমিই তার কাগজপত্র নিয়ে এসেছি। কাগজপত্র দেওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করেছে।

    গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন।

    ভাইয়ের মৃত্যুর পর ফায়াজ ঢাকায় পড়ালেখা করতে অনীহা প্রকাশ করেন। ফায়াজ ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

    ভাইয়ের মৃত্যুর নিজ বাড়িতে ফায়াজ জানান, ভাইকে হারিয়ে একা হয়ে পড়েছি। ভাই আমার সব বিষয়ে খোঁজ খবর রাখতেন। আজ ভাই নেই, তাই আমিও আর ঢাকায় থাকবো না। এর আগে গত ১৫ অক্টোবর সে ঢাকা কলেজ থেকে ছাড়পত্র নেন ফায়াজ।

  • আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ ঢাকায় পড়তে চান না

    আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ ঢাকায় পড়তে চান না

    ঢাকায় আর না পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বুয়েটে হত্যাকাণ্ডের শিকার মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের একমাত্র ছোট ভাই আবরার ফায়াজ।

    বর্তমানে তিনি ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। ঢাকা কলেজ ছেড়ে গ্রামের কোনো বিদ্যাপীঠে ভর্তি হতে চান তিনি।

    গতকাল শনিবার বিকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ সিদ্ধান্তের কথা বলেন ফায়াজ।

    কেন এমন সিদ্ধান্ত সেই প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যমকর্মীদের ফায়াজ বলেন, ভাইকে হারিয়ে আমি একা হয়ে পড়েছি। ঢাকায় থাকার এখন কোনো মানে হয় না।

    তিনি বলেন, ‘ফাহাদ ভাই আমার অভিভাবক ছিলেন। আমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে যে সম্পর্কটি ছিল তা এক কথায় প্রকাশ করা যাবে না। ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক এমন ছিল যে মা–বাবার কথা তেমন মনেই হতো না। আর সেই ভাই এখন নেই। কার জন্য তা হলে ঢাকায় পড়ে থাকব। বড় ভাইকে হারিয়ে মা-বাবা এমনিতেই দিশেহারা। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঢাকা আর না, কুষ্টিয়াতে পড়াশোনা করব। এটিই পরিকল্পনা।’

    উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের দিন ফায়াজ কুষ্টিয়াতেই ছিলেন। আবরার ফাহাদ যেদিন (রোববার) কুষ্টিয়ার পিটিআই সড়কের বাড়ি থেকে চলে যান, সেদিন সকালে ঘুমিয়ে ছিলেন ফায়াজ।

    ফায়াজ বলেন, ‘ভাই যাওয়ার সময় মা ডেকেছিল। কিন্তু শুয়েই ছিলাম। আমাকে শুয়ে থাকতে দেখে ভাই বলল, তাড়াতাড়ি ঢাকায় চলে আসবি। আমি ঘুমের ঘোরেই হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়েছিলাম। ভাইয়ের সঙ্গে এটিই ছিল আমার শেষ কথা।’

    কান্নারত কণ্ঠে তিনি বলেন, এখন ভাই নেই, ঢাকায় আমি কার কাছে যাব?

    ভাইয়ের এমন হত্যাকাণ্ড ঘটনার পর কি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ফায়াজ! তাই ঢাকায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত? এমন প্রশ্ন ওঠার আগেই নিজের আবেগের কথা জানালেন তিনি।

    তিনি বলেন, ‘কোনো ভয় থেকে নয়, সত্যি কথা হচ্ছে- ঢাকাতে নিয়ে ভাই (ফাহাদ) আমাকে ঢাকা কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। সব ছিল ভাইয়ের ইচ্ছায়। ঢাকায় ও আমার অভিভাবক ছিল। বাবা-মা ওর হাতেই আমাকে তুলে দিয়েছিল। ভাই আমাকে সেভাবে যত্ন ও দেখভালও করতেন। এই যেমন ধরুন- মেসে পানি নেই, ভাইকে বলতাম, তিনি ব্যবস্থা করে দিতেন। এখন ও নেই, সেখানে কী করে থাকব আমি।’

    প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে গত ৫ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ।

    এর জের ধরে পর দিন ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

    এমন ঘটনার সময় থেকে আবরার ফায়াজ কুষ্টিয়া গ্রামের বাড়িতেই আছেন। ঢাকায় ফেরেননি এখনও।