এ দেশকে রক্ষা করতে হলে কৃষক ও জমি বাঁচাতে হবে। কৃষিজমি নষ্ট করে কোনো শিল্প কলকারখানা ও ইন্ডাস্ট্রি করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের ১০ম সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, কৃষকের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি আমরা উন্নত হব, শিল্পায়ন করব, কৃষকদের বাদ দিয়ে নয়, কৃষিকে বাদ দিয়ে নয়। কাজেই আমাদের উন্নয়নে কৃষকদের সবসময় গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
প্রানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। কৃষকরাই বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রাখে। কৃষক ফসল ফলায়, আমরা খেয়ে বেঁচে থাকি। একটি সমাজ ও দেশের জন্য কৃষক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শেখ হাসিনা বলেন, আগে কৃষক ফসল ফলাতো, কিন্তু তার পেটে খাবার ছিল না। তাদের পরনের কাপড় ছিল না। কৃষকের অধিকার সংরক্ষণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কৃষক যেন তাদের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। এটার অর্থ হলো যেন কৃষি জমি নষ্ট না হয়। যারা ইন্ডাস্ট্রি করতে চায়, তাদের ওইসব অঞ্চলে প্লট দেওয়া হবে। এ ছাড়া সব ধরনের সার্ভিস দেওয়া হবে। তারা সেখানে শিল্প গড়ে তুলবে। কারণ আমার কৃষি জমি বাঁচাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ই-কৃষি চালু হয়েছে। কৃষকরা যে কোনো সমস্যার সমাধানে ‘১৬১২৩’ নম্বরে কল করে জানতে পারে। আমাদের কৃষকরাও এখন যথেষ্ট পরিপক্ব। মোট কথা কৃষকদের যত ধরনের সুবিধা দেওয়ার কথা, আমরা তা দিচ্ছি।
কৃষি খাতে গবেষণার গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গবেষণা ছাড়া কৃষি উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা গবেষণার মাধ্যমে উন্নতমানের বীজ উৎপাদন করছি। বর্তমানে দেশেই গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সবজি ১২ মাসই উৎপাদন করা যাচ্ছে। আমরা কৃষি উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। খাদ্য উৎপাদনে সারাবিশ্বে আমরা চতুর্থ অবস্থানে আছি। বাংলাদেশে একটি মানুষও আর গৃহহারা থাকবে না। তাদের প্রত্যেকের যেন মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়, আমরা সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা কৃষকের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করার চিন্তা করছি। এতে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়বে।
এর আগে বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় সম্মেলন মঞ্চ থেকে স্লোগান দিয়ে তাকে অভিবাদন জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের ফুরের শুভেচ্ছা জানানো হয়। এর পর মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথিদের ব্যাজ পরিয়ে দেয়া হয়। কৃষক লীগের প্রকাশনা মোড়ক উম্মেচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে সম্মেলন পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার শামসুল হক রেজা। সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্টও পেশ করেন রেজা।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সর্বভারতীয় কৃষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক অতুল কুমার অঞ্জন। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।