শ্বাসরুদ্ধকর এক জয়ে কোয়ালিফায়ারে পৌঁছে গেল বেক্সিমকো ঢাকা। আগে ব্যাটিং করে ইয়াসির আলির অর্ধশতকে ১৫০ রানের সংগ্রহ পায় মুশফিকুর রহিমের দল। জবাবে রানে ১৪১ থামে বরিশাল। ৯ রানের জয়ে বরিশালকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিল ঢাকা।
১৫১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন সাইফ হাসান। কিন্তু তার ৩টি চারের ইনিংস থেমে যায় ওই ১২ রানেই। শফিকুল ইসলামের বলে ড্রাইভ করতে ব্যর্থ হয়ে বোল্ড হয়ে যান সাইফ। তারপর তামিম ইকবাল ও পারভেজ হোসেন ইমন ধীরগতিতে খেলেন। ১১ বলে ২ রান করে ইমন বোল্ড হয় রবিউল ইসলাম রবির বলে।
২৮ বলে ২২ রান করে আউট হন তামিম। ওদিকে ত্বরত্বর করে বাড়তে থাকে বরিশালের প্রয়োজনীয় রানরেট। আফিফ হোসেন ধ্রুব দ্রুতগতিতে রান তুলে বরিশালের জয়ের আশা জিইয়ে রাখেন। শুরুতেই একবার তাকে আম্পায়ার আউট দিয়েছিল তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান আফিফ।
ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ফিল্ডারদের ভুলে রান আউট থেকেও বেঁচে যান আফিফ। তবে ওই ওভারেই টানা দুই বলে তৌহিদ হৃদয় ও সোহরাওয়ার্দী শুভকে আউট করেন ম্যাচ ঢাকার পক্ষে হেলিয়ে দেন আল আমিন জুনিয়র। অপরপ্রান্তে ৩২ বলে অর্ধশতক তুলে নেন আফিফ।
দলকে কঠিন সমীকরণের সামনে দাঁড় করিয়ে ৩৫ বলে ৫৫ রান করে বিদায় নেন আফিফ। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা। আফিফের বিদায়ের সাথে সাথে বরিশালের বিদায় ঘণ্টাও বেজে যায়। তবে শেষে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন মিরাজ। কিন্তু তা যথেষ্ট হয়নি। ৯ রানের হারে বরিশালকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।
আল আমিন ৪ ওভারে ২২ রান খরচায় নেন ২টি উইকেট। রবি ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান খরচায় নেন ১টি উইকেট।
তার আগে টস হেরে ব্যাটিং করে ঢাকা। বরিশালের পক্ষে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতিদান দিয়ে বরিশালের বোলাররা ভালো শুরু করেন। পাওয়ারপ্লের মধ্যেই ঢাকার ৩টি উইকেট তুলে নেন তারা। প্রথম ৬ ওভারে ঢাকা সংগ্রহ করে কেবল ২৪ রান। ঢাকা শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তারপরে তাসকিন আহমেদ। মোহাম্মদ নাঈম শেখ ৫ (১১), আল আমিন জুনিয়র ০ (২) ও সাব্বির রহমান ৮ (১৪) ফিরে যান। সাব্বিরকে বোল্ড করেন সোহরাওয়ার্দী শুভ।
ইয়াসির আলি রাব্বিকে সাথে নিয়ে ঢাকার ব্যাটিং বিপর্যয় সামাল দেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় উইকেটে তারা গড়েন ৪৮ রানের জুটি। মুশফিক ৩০ বলে ৪৩ রান করে বিদায় নেন।
বোলার কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে সুবিধামতো শট না নিতে না পারার ফলে বোলারদের হাতেই তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়েন ইয়াসির ও আকবর আলি। ইয়াসির এক প্রান্তে ধীরগতিতে ব্যাটিং করলেও আকবর নেমেই দ্রুত রান তুলতে থাকেন। তবে থিতু হতে পারেননি আকবর। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯ বলে ২৩ রানের ছোট্ট ঝড় তুলে মিরাজের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান।
ঢাকার পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস আছে ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান ইয়াসিরের উইলো থেকে। ৪৩ বলে ৫৪ রান করে কামরুলের শিকার হন ইয়াসির। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছক্কা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ঢাকা পেয়েছে ১৫০ রানের সংগ্রহ।
বরিশালের স্পিনার মিরাজ ৪ ওভারে ২৩ রান খরচায় নেন ২টি উইকেট। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে তাসকিন নেন ১টি উইকেট। অপরদিকে খরুচে বোলার কামরুল ২টি উইকেট পেলেও খরচ করেন ৪০ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বেক্সিমকো ঢাকা ১৫০/৮ (২০ ওভার)
ইয়াসির ৫৪, মুশফিক ৪৩, আকবর ২১;
মিরাজ ২/২৩, কামরুল ২/৪০, তাসকিন ১/২১, শুভ ১/৩২।
ফরচুন বরিশাল ১৪১/৯ (২০ ওভার)
আফিফ ৫৫, তামিম ২২;
আল আমিন ২/২২
ফল: বেক্সিমকো ঢাকা ৯ রানে জয়ী।