Tag: গার্ডার

  • বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার দুর্ঘটনায় মৃত্যু : ৮ আসামিকে ৭ বছর করে দণ্ড

    বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার দুর্ঘটনায় মৃত্যু : ৮ আসামিকে ৭ বছর করে দণ্ড

    চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে ১৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায়ে ৮ আসামির প্রত্যেককে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

    বুধবার (১০ জুলাই) চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

    কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মীর আখতারের সে সময়ের প্রকল্প ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনজুরুল ইসলাম, প্রকল্প প্রকৌশলী আব্দুল জলিল, আমিনুর রহমান, আব্দুল হাই, মো. মোশাররফ হোসেন রিয়াজ, মান নিয়ন্ত্রণ প্রকৌশলী শাহজান আলী ও রফিকুল ইসলাম।

    রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ। রায় ঘোষণার সময় ৮ আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়।

    আদালত সূত্রে জানা যায়, বিচারিক প্রক্রিয়ায় মামলাটিতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ২২ জন। আসামিপক্ষে সাফাই সাক্ষী দিয়েছেন ৭ জন। সবশেষ গত ২৫ জুন মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আজ (বুধবার) রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। রায়ে মামলার একটি ধারায় প্রত্যেককে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অন্য একটি ধারায় প্রত্যেককে ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

    জানা গেছে, নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে ১৩ জন প্রাণ হারায়। এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে ওই বছরের ২৬ নভেম্বর চান্দগাঁও থানার তৎকালীন এসআই আবুল কালাম আজাদ ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় ফ্লাইওভার প্রকল্পের পরিচালক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী তানজিব হোসেন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়।

    অন্য আসামিদের মধ্যে ছিলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আখতার অ্যান্ড পারিসা ট্রেড সিস্টেমসের ১০ জন এবং বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএআরএম অ্যাসোসিয়েটসের ১২ জন। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর পুলিশ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সিডিএর তিন কর্মকর্তা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ তিনজন এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মতিনসহ ১৮ জনের নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

    ২০১৪ সালের ১৮ জুন তৎকালীন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এস এম মজিবুর রহমান অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আট আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

    ২০১০ সালে এম এ মান্নান (বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার) ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। নির্মাণ কাজ শেষে ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর ফ্লাইওভারটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর ফ্লাইওভারটি কার্যকর না হওয়ায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আরাকান সড়কমুখী র‍্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ৩২৬ মিটার দীর্ঘ এবং ৬ দশমিক ৭ মিটার চওড়ার র‌্যাম্পটি নির্মাণ শেষে ২০১৭ ডিসেম্বরে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

  • পটিয়ায় সেতু নির্মাণ কাজে দুর্ণীতির আভাস! ৩৫ লাখ টাকার গার্ডারে ফাটল

    পটিয়ায় সেতু নির্মাণ কাজে দুর্ণীতির আভাস! ৩৫ লাখ টাকার গার্ডারে ফাটল

    ২৪ ঘন্টা স্পেশাল : পঞ্চাশ কোটি ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাই পাস সংলগ্ন দ্বিতীয় ইন্দ্রপুল সেতু। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় যাতায়াতের সহজতম যোগাযোগের লক্ষ্যে পুরনো একটি ব্রিজ থাকা অবস্থায় নতুন সেতুটি নির্মিত হচ্ছে।

    তবে এ সেতুটি মানুষের উপকারে আসবে নাকি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হবে তাই নিয়ে এখন থেকেই চিন্তিত স্থানীয় এলাকাবাসী। সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় ব্রিজের জন্য নির্মিত ৭ টি গার্ডারের মধ্যে ১ টি গার্ডারে ফাটল দেখা দিয়েছে।

    প্রয়োজনের তুলনায় কম এবং নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার করায় নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত গার্ডারটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।

    তাছাড়া ব্রীজ নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার, সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি ও ঠিকাদারের দুর্নীতি হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারী বাড়ানোর দাবী জানান স্থানীয়রা।

    মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সরেজমিনে ইন্দ্রপুল ব্রীজের নির্মাণ কাজের সর্বশেষ অবস্থান জানতে গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন একটি ব্রিজের পাশে নতুন ব্রিজটির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

    নির্মাণকাজে নিয়োজিত একাধিক শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায় ব্রিজটির নির্মাণ কাজে মোট ২৪টি গার্ডার তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে ৭টি গার্ডারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

    তাছাড়া ব্রিজটির জন্য বর্তমানে তিনটি পিলার নির্মাণ কাজও শেষ। আর ৫টি গার্ডার তৈরি শেষ হলে মোট ১২টি গার্ডার বসানো হবে এ তিন পিলারের উপর। কিন্তু সোমবার সকাল ১০ টার দিকে একটি গার্ডারের লোহা টাইট দিতে গিয়ে সেটি ভেঙ্গে যায়।

    গার্ডারের ফাটল মারাত্মক জানিয়ে সেটি আর কোন কাজে আসবে না বলে জানালেন এ প্রকল্পের প্রকৌশলী তানভীর হাসান খান। ফাটল দেয়া গার্ডারটির নির্মাণে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে জানিয়ে সেটি পুনরায় নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।

    এদিয়ে এ ঘটনায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে। বিষয়টি নিয়ে নানান আলোচনার জন্ম দিচ্ছে।

    অনেকেই বলেন, নির্মান কাজ চলমান থাকতেই গার্ডারের ফাটল দেখেই বুঝা যায় এখানে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া ঠিকাদারের দুর্ণীতির পাশাপাশি গাফিলতি হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।

    তবে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করে কাজ শতভাগ ভালো হয়েছে দাবি করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রার পরিচালক জিয়াউল হক জিয়া।

    নির্মাণ কাজে কোনো ধরনের অনিয়ম কিংবা গাফিলতি হয়নি জানিয়ে গার্ডারে ফাটলের বিষয়টি তিনি অবগত নয় বললেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক। অন্যদিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।

    জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের জাইকার যৌথ অর্থায়নে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে প্রায় ৭শ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা-সিআর ২৪বি জয়েন্ট ভেনচার।

    এর মধ্যে পটিয়া ইন্দ্রপুল সেতুটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। যা ২০২৩ সালের নভেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। একই প্রকল্পের বাকি সেতুগুলো হচ্ছে চন্দনাইশ উপজেলার বরগুনি সেতু, দোহাজারী সাঙ্গু সেতু ও কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহরী সেতু।

    ২৪ ঘন্টা/রাজীব সেন প্রিন্স