Tag: গার্ড অব অনার

  • জমিয়তুল ফালায় সাংসদ বাদলের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত, শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল

    জমিয়তুল ফালায় সাংসদ বাদলের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত, শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল

    ২৪ ঘন্টা চট্টগ্রাম ডেস্ক : মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও পার্লামেন্টারিয়ান মঈনউদ্দিন খান বাদলের দ্বিতীয় জানাজা চট্টগ্রাম নগরীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) বাদ মাগরিব নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে ময়দানে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জানাজায় ইমামতি করেন আওলাদে রাসুল (সাঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মা.জি.আ) এর বড় শাহাজাদা হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ কাশেম শাহ (মা.জি.আ)। শনিবার ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ইমাম সাহেব জানাজা পড়ানো শুরু করেন।

    এর আগে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্থরের মানুষের ঢল নামে জমিয়তুল ফালায়। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সারাদিনের মেঘলা আকাশ ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে মসজিদের দ্বিতীয় ও নিচতলায় অবস্থান নেন।

    জানাজায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন নদভী, মাহফুজুর রহমান মিতা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, জেলা জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।

    জানাজায় অংশগ্রহণ নিতে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে ছুটে আসেন চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক অরাজনৈতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বাদলকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে ভিড় করেন।

    জানাজা শেষে বাদলের মরদেহে ফুল দিয়ে তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে মঈন উদ্দিন খান বাদলকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

    এর আগে ঢাকায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাদলের ভাই মনির উদ্দিন খান জানিয়েছেন জানাজা শেষে ঢাকা থেকে সড়কপথে মঈন উদ্দিন খান বাদলের মরদেহ চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে আনা হয়। এখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের মরদেহ নিজ এলাকা বোয়ালখালীর উদ্দ্যেশে নেয়া হচ্ছে।

    বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ ময়দানে তৃতীয় জানাজা এবং নিজ গ্রামে চতুর্থ জানাজা শেষ করে তার পারিবারিক কবরস্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে দাফন করা হবে।

    গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ভারতের বেঙ্গালোরে দেবী শেঠীর নারায়ানে হাসপাতালে মজুমদার ইউনিটে মারা যান বাদল। ৬৭ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

    গত ১৮ অক্টোবর থেকে ভারতে প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠির তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় হার্টফেল করায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

    ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেয়া মঈন উদ্দীন খান বাদল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম ৮ আসনের তিন তিন বারের সংসদ সদস্য। সংসদে অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে খ্যাতি ছিল তার।
    ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা বাদল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

    বাঙালিদের ওপর আক্রমণের জন্য পাকিস্থান থেকে আনা অস্ত্র চট্টগ্রাম বন্দরে সোয়াত জাহাজ থেকে খালাসের সময় প্রতিরোধের অন্যতম নেতৃত্বদাতা ছিলেন বাদল।

    মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাদল সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন। জাসদ, বাসদ হয়ে পুনরায় জাসদে আসেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল গঠনেও বাদলের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।