Tag: গাড়ী ভাঙচুর

  • চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতার গাড়িবহরে হামলা

    চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতার গাড়িবহরে হামলা

    মিরসরাই প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার নেতৃত্বে উঠে এসেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনের নাম। হামলায় রক্তাক্ত আহত হয়েছেন ৪ যুবলীগ কর্মী।

    শনিবার (১৭ জুন) বিকেল ৩টার সময় উপজেলার ১১ নম্বর মঘাদিয়া ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। হামলায় আহতরা হলেন নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের অনুসারী আসিফ রহমান শাহিন (৩৮), মো: আলি (৩৮), রমজান আলী বাবলু (৩৬), মো: শাহাবুদ্দিন (৩৭)।

    কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট জানান, মঘাদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা ইদ্রীস মিয়ার কবর জেয়ারত করার জন্য গাড়ি বহর নিয়ে মঘাদিয়া এলাকায় যাই। কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে ১১ নম্বর মঘাদিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী তৌহিদ আনোয়ার বাপ্পী,আবদুল্লাহ আল নাঈম রবিন, ফিরোজ খান, আবু নসর রিপন, মোমিনুল ইসলাম সহ অর্ধশতাধিক যুবক তার গাড়িবহর ঘিরে ধরে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী রক্তাক্ত আহত হয় ও তার ব্যাক্তিগত গাড়ি সহ কর্মীদের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

    হামলার ঘটনা অস্বীকার করে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মাষ্টার জানান, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙ্গচুরের ঘটনার প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করে আমি বাড়ি চলে যাই। পরবর্তীতে মঘাদিয়া স্কুলের সামনে মারামারি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে এলিটের কর্মীবাহিনী আমার উপর ও আমার অনুসারীদের উপর হামলা করে ও বৃষ্টি গুলি ছোঁড়ে। এতে আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়।

    গুলি ছোঁড়া সম্পর্কে এলিট জানান, আমার গাড়িতে অতর্কিত চোরা গুপ্তা হামলার পর আমার গাড়ি ও কর্মীদের লক্ষ করে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি এলোপাথাড়ি গুলি ছোঁড়ে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসি বাহিনী। এসময় জীবন রক্ষার তাগিদে আমাকে ও আমার কর্মীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমার গানম্যান একরাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। সেই সুযোগে আমরা আত্মরক্ষা করে আহতদের চিকিৎসার জন্য উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

    এদিকে সংঘর্ষে আহতদের ছবি ও নাম ঠিকানা জানতে চাইলে তাদের তালিকা ও ছবি দিতে ব্যার্থ হয়েছেন জাহাঙ্গীর হোসেন চেয়ারম্যান। তিনি দাবি করেন এলিটের অনুসারীদের ছোঁড়া গুলির আঘাতে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে তার। তবে নেতা কর্মীদের আহতের ছবি ও নাম চাইলে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এর পর বেশ কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

    তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যান। সেখানে দুই কর্মীকে ইমার্জেন্সিতে কিছুক্ষণ রেখে আবার ফেরত আসেন।

    সংঘর্ষের ঘটনায় থানার গৃহীত উপস্থিত পদক্ষেপ ও ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কবির হোসেনের ফোন নাম্বারে বারবার কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। দায়িত্বরত বিউটি অফিসার এএসআই আজমীর জানান, হামলায় ঘটনায় হতাহতের খবর শুনেছি। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আছে। তবে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। অন্যদিকে মঘাদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ আগামীকাল এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের বিরুদ্ধে। মিরসরাইতে আর পা রাখতে দেয়া হবেনা বলেও ঘোষণা দেয়া হয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে।

    এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, সাংগঠনিক নিয়মের বাইরে কেউ উপজেলা রাজনীতি করতে চাইলে তাকে উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে অবশ্যই প্রতিহত করা হবে। মিরসরাইতে আওয়ামীলীগ করতে হলে মিরসরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের মাধ্যমে রাজনীতি করতে হলে। যুবলীগ করতে হলেও মিরসরাই উপজেলা যুবলীগের মাধ্যমে রাজনীতি করতে হবে। এর বাইরে মিরসরাই উপজেলায় কারো রাজনীতি করার সুযোগ নাই।

  • শিবচরে ইউএনও-চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর, আটক ২২

    শিবচরে ইউএনও-চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর, আটক ২২

    মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়র জনগণ। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

    সোমবার রাতে উপজেলায় কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

    এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ জনকে আটক করে।

    জানা যায়, এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেয়া, প্রবেশপত্র ও সনদ বিতরণের সময় টাকা নেয়া, নিয়োগে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।

    সোমবার বিকালে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনায় বসেন শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামানসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা।

    এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে বর্তমান শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। রাতেই গাড়ি দুটি উদ্ধার করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে নিয়ে আসা হয়।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করে।

    পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলিবর্ষণ করে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে শিবচর থানার একটি সূত্র জানায়।

    এ ব্যাপারে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন জানান, এলাকার কিছু লোকজন ও প্রাক্তন ছাত্ররা মিলে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আন্দোলন করছে।

    শিবচর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, সোমবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ে যান। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে মাদারীপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব সহায়তায় রাতে অভিযান চালিয়ে ২২ জনকে আটক করা হয়।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত তিন দিন ধরে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল। সোমবার বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে নিয়ে ওই এলাকায় যাই। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সমোঝতা করার চেষ্টা করি। কিন্তু শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী প্রশাসনের আশ্বাস মেনে নেয়নি। পরে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা আমাদের অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

    এর আগে গত শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-মানববন্ধন করে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীরা। ওই সময় বিষয়টি ‘দেখার’ আশ্বাস দেন প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় সোমবার বিকালে ফের আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।