নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নে গুচ্ছগ্রাম তথা আবাসন প্রকল্প-২ এর অধিনে হতদরিদ্র ও ভূমিহীন জনগোষ্ঠীর জন্য নির্মানাধীন আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর তৈরী সম্পূর্ণ না হতেই হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার উপজেলা কার্যালয়ে ছয়জন বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির মাঝে ৬টি ঘর হস্তান্তর করেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমান চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
প্রতিটি বাড়ি ১ লাখ ৫ হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে ২টি করে ঘর, ঘরের সাথে বাড়ান্দা, রান্নার স্পেস, সেনেটারী ল্যাট্রিন রয়েছে।
কিন্তু অত্যন্ত অল্প জায়গায় ২০টি বাড়ি করায় পরিবেশ অত্যন্ত ঘিঞ্জিপূর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর ভাবে তৈরী করা হয়েছে। ঘরের জন্য ব্যবহৃত সিমেন্টের খুটিগুলোর অধিকাংশরই মাথার দিকে ভেঙ্গে রড বেড়িয়ে পড়েছে। আবার কোন কোনটির মাঝ বরাবর বেড়ায় টিন লাগানোর জন্য এঙ্গেল আটকানোর নাটের জন্য ছিদ্র করার সময় ভেঙ্গে রড বেড়িয়ে গেছে। এসব ভাঙ্গা মেরামত না করেই বেড়া ও চালের টিন লাগানো হয়েছে।
এখনও ঘরগুলোর মেঝেতে মাটি ভরাট করা হয়নি। প্রতিটি ঘরের বেড়া থেকে নিচে মাটি পর্যন্ত প্রায় দুই ফুট জায়গা ফাঁকা রয়েছে। যেখান দিয়ে কুকুর-বিড়ালসহ যে কোন প্রানী অনায়াসে ঘরের ভিতর ঢুকতে পারবে। এমনকি মানুষও ঢুকে বেড় হতে পারবে। পানি বা বিদ্যুতের ব্যবস্থায় নিশ্চিত করেনি। এমন অবস্থাতেই তরিঘরি করে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর সোমবার বিকালে কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে আবেদনকারী ভূমিহীন হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ঘর বরাদ্দের জন্য লটারী অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ভূমিহীনদের তালিকা করা ও যাচাই বাছাই নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠে।
১৫ নভেম্বর শুক্রবার জুমআর নামাজের পর সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বরাদ্দপ্রাপ্ত কয়েকজন হস্তান্তরকৃত বাড়িতে উঠার জন্য নিজেরাই ঘরের মেঝের মাটি ভরাট করছেন। অনেকে বেড়ার টিন থেকে মেঝে পর্যন্ত ফাঁকা জায়গাগুলো বাঁশ, কাঠ বা পুরাতন ইট দিয়ে বন্ধ করার চেষ্টা করছেন।
মেঝের মাটি ভরাট করা হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তফুরা একজন জানান, যেহেতু ঘরটি হস্তান্তর করেছে। তাই এটার দেখা শুনার দায়িত্ব এখন বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির। কেননা এখন এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্তৃপক্ষ নেই। যে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়নি সেগুলো অনেকটা নিরাপ্তাহীন অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় বেড়ার টিন বা কোন জিনিস যদি চুরি হয় তাহলে কারই কিছু করার থাকবেনা। তিনি বলেন, শুনেছি মাঝিয়ায় মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে এবং প্রতিটি বাড়ির জন্য ৯০টি করে ইট দেওযা হবে। যে ইটগুলো মেঝের মাটির উপর বেড়ার টিন যেন না লাগে সেজন্য ব্যবহার করা হবে।
বর্তমান অবস্থায় যদি ছেড়ে দেওয়া হয় বা মাটি ভরাট করা না হয় তাহলে এঘরে বসবাস করাই দুরহ হয়ে পড়বে।