মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন প্রিপেইড গ্রাহকদের রিচার্জের সর্বনিম্ন সীমা বাড়িয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী- অপারেটরটির গ্রাহকদের সর্বনিম্ন ৩০ টাকা রিচার্জ করতে হবে।
বর্তমানে গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা সর্বনিম্ন ২০ টাকা রিচার্জ করতে পারেন। এটি বন্ধ হয়ে যাবে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দিনগত রাত ১২টায়। আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে নতুন নিয়ম অর্থাৎ, সর্বনিম্ন ৩০ টাকা রিচার্জ চালু হবে।
গ্রামীণফোন গ্রাহকদের এসএমএস দিয়ে এ তথ্য জানিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া প্রিপেইড গ্রাহকরা তাদের মাইজিপি অ্যাপেও সতর্কীকরণ এ নোটিশ দেখতে পারছেন।
গ্রাহকের কাছে পাঠানো এসএমএসে গ্রামীণফোন বলছে, আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে সর্বনিম্ন রিচার্জ অ্যামাউন্ট ৩০ টাকা করা হবে। তবে ৩০ টাকার নিচের রিচার্জ অফার এবং স্ক্র্যাচকার্ড আগের মতো ব্যবহার করা যাবে।
এদিকে, মাইজিপি অ্যাপে ঢুকলেই সতর্কীকরণ বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে। তাতে লেখা, ‘আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে সর্বনিম্ন রিচার্জ অ্যামাউন্ট ৩০ টাকা হয়ে যাবে।’
তবে গ্রামীণফোনের এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন গ্রাহকরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে তারা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে সরব গ্রাহকরা।
সিদ্দিকা তিশা নামে একজন গ্রাহক ফেসবুকে লিখেছেন, মিনিটে ৩ টাকা কাটে। ইন্টারনেটের দাম আকাশছোঁয়া। এখন আবার সর্বনিম্ন রিচার্জ ৩০ টাকা করা হচ্ছে। এ সিম ব্যবহার বন্ধ করা ছাড়া উপায় দেখছি না।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে মোবাইলের গ্রাহক সংখ্যা ১৯ কোটি ৩৬ লাখে পৌঁছেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে চারটি মোবাইল কোম্পানি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বিটিআরসির তথ্যমতে, গ্রামীণফোনের গ্রাহক ৮ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার, রবির ৫ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার, বাংলালিংকের ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৮০ হাজার এবং টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা ৬৪ লাখ ৬০ হাজার।
চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক, বিটিভির সাবেক চট্টগ্রাম সংবাদদাতা, প্রবাসের জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল আকাশযাত্রা ডট কমের এডিটর ইন চীফ এজাজ মাহমুদের ছোট ভাই আশেক মাহমুদ (৩৮) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রবিবার (৫ জুলাই) দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে নগরীর মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি মারা যান।
করোনা উপসর্গ জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে মৃত্যুর আগে রবিবার রাতে তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানান বড় ভাই এজাজ মাহমুদ।
মির্জা আশেক মাহমুদ গ্রামীন ফোনের সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে যান।
আশেক মাহমুদের গ্রামের বাড়ী ফেনী জেলায় হলেও ছোট থেকে চট্টগ্রামেই তার বেড়ে উঠা। নগরীর লালখান বাজার বাসায় থাকতেন পরিবার নিয়ে।
আশেক মাহমুদ চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের ভাগ্নে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নিরীক্ষা দাবির পাওনার মধ্যে বাকি এক হাজার কোটি টাকা তিন মাসের মধ্যে দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী। অন্যদিকে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম ও আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনার মধ্যে বিটিআরসিকে তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এ আদেশ রিভিউ চেয়ে আবেদন করে গ্রামীণফোন।
ওই রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগ দুই হাজার কোটি টাকার মধ্যে একহাজার কোটি টাকা সোমবারের মধ্যে দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদেশ মোতাবেক গ্রামীণফোন রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিটিআরসিকে এক হাজার কোটি টাকা দেয়।
গত বছরের ২ এপ্রিল বিভিন্ন খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিল। পরে গ্রামীণফোন ওই চিঠির বিষয়ে নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (মামলা) করে। একইসঙ্গে ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।
শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ অক্টোবর হাইকোর্ট আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে টাকা আদায়ের ওপর দু’মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন। পরে গ্রামীণফোনের কাছে ওই টাকা দাবি আদায়ের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২৪ নভেম্বর তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এ আবেদেনের রিভিউ চেয়ে আবেদন করে গ্রামীণফোন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নিরীক্ষা দাবির পাওনা ১ হাজার কোটি টাকা আগামী সোমবারের (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
আদালতে আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন ও মেহেদী হাসান চৌধুরী। অন্যদিকে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম ও আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনার মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তিন মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশ রিভিউ চেয়ে আবেদন করে গ্রামীণফোন।
পরে আইনজীবী মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ‘অডিটে রবির ক্ষেত্রে সিম্পল ইন্টাররেস্টে ক্যালকুলেট করা হয়েছে। জিপির ক্ষেত্রে কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট সিস্টেমে করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) আদালত বলেছেন আগামী সোমবারের (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে আসতে। ওইদিন রিভিউ আবেদনের ওপর আদেশর জন্য দিন রেখেছেন আদালত। আমরা এখন এটা কোম্পানিকে জানাবো। আদালত বলেছেন আদেশে অনুসারে অবশ্যই ২ হাজার কোটি টাকা দিতে তবে। আমরা বলার চেষ্টা করেছি কোম্পানির অ্যাবিলিটি (সামর্থ) তো থাকতে হবে। গ্রামীণফোন একটা শেয়ার মার্কেট লিস্টেড কোম্পানি।’
‘আমরা আদালতে বলেছি, ৫০০ কোটি টাকা এক মাসে দেবো। বাকিটা ছয় মাসে ইক্যুয়েলি দেবো। কিন্তু আদালত সেটা গ্রহণ করেননি’- বলেন মেহেদী হাসান চৌধুরী।
গত বছরের ২ এপ্রিল বিভিন্ন খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিল। পরে গ্রামীণফোন ওই চিঠির বিষয়ে নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (মামলা) করে। একই সঙ্গে ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।
পরে শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ অক্টোবর আদালত আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে টাকা আদায়ের ওপর দু’মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন।
পরে গ্রামীণফোনের কাছে ওই টাকা দাবি আদায়ের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে।
ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২৪ নভেম্বর তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
এ আবেদেনের রিভিউ চেয়ে গ্রামীণফোন আবেদন করলে আদালত এ আদেশ দেন।
সরকারের রাজস্ব বকেয়া পাওনার বিষয়ে সালিশের জন্য গ্রামীণফোন সিঙ্গাপুরের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, জিপি সিঙ্গাপুরের একটি আইন সংস্থার মাধ্যমে আমাদের রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ দিয়েছে আরবিট্রেশনে (সালিশ) যাওয়ার জন্য।
‘আমি মনে করি যে এটি খুব দুঃখজনক, বাংলাদেশে ব্যবসা করবে একটি প্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ দিয়ে তারপরে তারা আরবিট্রেশনের জন্য চাপ দেবে, এটা বোধহয় কোনোভাবে আমাদের কাছে খুব সহজে গ্রহণ করার মতো অবস্থা না।’
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আমরা এটা বুঝি, ব্যবসা যদি কেউ করে তাহলে ব্যবসার ক্ষেত্রে তাদের নানা ধরনের সমস্যা থাকবে। আমাদের দায়িত্ব ফ্যাসিলেটেড করার, আমরা তাদের ফ্যাসিলেটেড করব।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা চেয়ে গত এপ্রিল মাসে চিঠি দিয়েছিল টেলিযোগাযাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। তাতে কাজ না হওয়ায় আরোপ করা হয় কড়াকড়ি।
গ্রামীণফোনের পাশাপাশি ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনার দাবিতে আরেক অপারেটর রবির ক্ষেত্রেও বিটিআরসি একই পদক্ষেপ নেয়। বিটিআরসি সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তিতে রাজি না হওয়ায় দুই অপারেটর আদালতে হয়।
মীমাংসার উদ্যোগে নিয়ে অর্থমন্ত্রী গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির কর্মকর্তাদের নিয়ে দুই দফা বৈঠক করলেও তাতে সমাধান আসেনি।
বিটিআরসির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার নিরীক্ষা দাবির নোটিসের ওপর হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখে গত ২৪ নভেম্বর গ্রামীণফোনকে অবিলম্বে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রবির নিরীক্ষা আপত্তির বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারধীন। টেলিকম খাতের প্রতিবেদকদের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, “আমরা এটা বুঝি, ব্যবসা যদি কেউ করে, তাহলে ব্যবসার ক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যা থাকবে, আমাদের দায়িত্ব ফেসিলেটেট করা, আমরা তাদের করব।”
গ্রামীণ ফোনের উকিল নোটিসের বিষয়ে সরকার কী পদক্ষেপ নেবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “যে নোটিস দেওয়া হয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত অবহিত করা আছে। সবাই বিষয়টাকে জানে।”
এ বিষয়ে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই উকিল নোটিস নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এর কারণটা হচ্ছে তারা যে জায়গায় চাচ্ছে, সে জায়গাটা হচ্ছে আর্বিট্রেশন যেন করা হয়। আর্বিট্রেশন করার জায়গায় আমরা উম্মুক্ত আছি। বাংলাদেশের আদালতে মামলা করে বসে থাকে, আদালতের বাইরে আর্বিট্রেশন করার সুযোগ নাই।
“আদালত যদি হুকুম দেয় আর্বিট্রেশন করার, তাহলে করতে পারব। যে দেশে বিজনেস করে সে দেশের আইন আদালত অমান্য করে দুনিয়ার কোনো জায়গায় গিয়ে অন্য বিচার পাওয়ার সম্ভবনা নাই। আমরা সঠিক পথে আছি, আদালত তার দৃষ্টিভঙ্গি চমৎকারভাবে করেছে।”
গ্রামীণফোন আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কোনো উদ্যেগ নিচ্ছে কিনা- সেই প্রশ্নও সাংবাদিকরা মন্ত্রীকে করেছিলেন।
উত্তরে তিনি বলেন, “তারা এরকম একটি ধারণা দিয়েছে যদি আর্বিট্রেশন না হয় তাহলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে। তবে আমার যেটা অবজারভেশন, বাংলাদেশের আদালতে হেরে গিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে কিছু একটা করা যাবে আমি এটা বিশ্বাস করি না।
“আফটার অল, দিনের শেষে অংকটা সহজ, ব্যবসাটা বাংলাদেশেই করতে হবে, বাংলাদেশের আইন কানুন না মেনে আন্তর্জাতিক আদালত বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা করে দেবে না।”
এই বিরোধ নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “আমরা সহানুভতিশীল, আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক। আমরা সমস্যার সমাধান করার জন্য সব ধরনের উদ্যেগ নিতে প্রস্তুত। কিন্তু এর মধ্যে থেকে কেউ জাতীয় স্বার্থ বিপন্ন করতে চাইলে আমরা সেটি করতে পারি না।”
বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট গ্রামীণফোনের বিষয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছে, তা মেনে চলা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “রবি ইতোমধ্যে প্রস্তাব দিয়েছে মামলা তুলে নিতে চায়। আমরা বলেছি আমরা তো মামলায় যাইনি, ওরা যদি মামলো তুলে নিলে আলোচনায় বসতে কোনো আপত্তি নেই। তবে মামলা চলাকালীন অবস্থায় আলোচনা করতে পারি না, কারণ সেটি আদালত অবমাননা হয়ে যাবে।”
আর গ্রামীণফোন যতক্ষণ না আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করছে, ততক্ষণ তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসা সম্ভব না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এ টাকা দেওয়ার পর আদালত নির্ধারণ করবে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে। রবি যদি মামলা প্রত্যাহার করে আসে, তাহলে আলোচনায় বসতে রাজি আছি।”
প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনার মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এখন দুই হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ আজ এ আদেশ দেন।
যদি এ টাকা পরিশোধ করা না হয়, তাহলে প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা আদায়ের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে বলেও আজ আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তাদের সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী। অন্যদিকে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবে আলম ও আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
আদেশের পর গ্রামীণফোনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দুই হাজার কোটি টাকা না দিলে তিন মাস পর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়ে যাবে।
আমরা আদেশ পাওয়ার পরে ক্লায়েন্টের (গ্রামীণফোন) সঙ্গে আলাপ করবো রিভিউ করবো কি-না। তিন মাস সময় রয়েছে। আর এক মাসের মধ্যে রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে।
বিটিআরসির আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সাংবাদিকদের বলেন, বিটিআরসির যে পাওনা এর মধ্যে তারা (গ্রামীণফোন) যদি দুই হাজার কোটি টাকা এখন না দেয়, তাহলে হাইকোর্ট থেকে যে নিষেধাজ্ঞা নিয়েছিল, সেটা ভ্যাকেট (প্রত্যাহার) হয়ে যাবে। এখন গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। তারা যদি না দেয় তাহলে বিটিআরসির যেকোনো অ্যাকশন নিতে আইনগত আর কোনো বাধা থাকবে না। আদেশের অনুলিপি পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। এখন হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে যদি তারা দুই হাজার কোটি টাকা দেয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তো ফাইনাল সেটেলমেন্ট না। গত ১৭ অক্টোবর বিচারপতি একেএম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি আদায়ের ওপর দু’মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন। পরে গ্রামীণফোনের কাছে ওই টাকা আদায়ের দাবির ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে।
এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ দুই হাজার কোটি টাকা দেয়ার আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল বিভিন্ন খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিল। পরে গ্রামীণফোন ওই চিঠির বিষয়ে নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (মামলা) করে। একই সঙ্গে ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।
পরে শুনানি শেষে ১৭ অক্টোবর আদালত আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে টাকা আদায়ের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন
নিয়ম না মেনে গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি করেছেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। যে কারণে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, সাকিবকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
শনিবার বিকেলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমকে বোর্ড প্রধান বলেছেন, ‘আমাদের আইন অনুযায়ী কোনোভাবেই খেলোয়াড়রা এটা করতে পারে না। সেটা টেলিকম কোম্পানি যেমন জানে, তেমনি খেলোয়াড়রাও জানে। সাকিব এটা কেন করলো আমরা জানি না। তারপরও আমরা তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিচ্ছি। তবে এটা বলতে পারি, আইন অনুযায়ী একজন ক্রিকেটার কোনও টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে পারে না।’
সাকিবকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে নাজমুলের জবাব, ‘প্রশ্নই ওঠে না।’ এ সময় পাশ থেকে বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনাম বলে ওঠেন, ‘আইন ভঙ্গ করলে যে রকম শাস্তি হওয়ার কথা সেরকমই হবে।’
গত ২২ অক্টোবর গ্রামীণফোনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন সাকিব। সেদিন জিপি হাউজে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘গ্রামীণফোনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি আনন্দিত। আমার বিশ্বাস, গ্রামীণফোনের সঙ্গী হয়ে দেশকে ও দেশের ডিজিটাল খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’
গ্রামীণফোনের নতুন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নিযুক্ত হলেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। শক্তিশালী ডিজিটাল সমাজ নির্মাণে গ্রামীণফোনের সঙ্গী হয়ে কাজ করবেন সাকিব।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও এবং সিএমও ইয়াসির আজমান বলেন, নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার এবং একজন জাতীয় আইকন হিসেবে সাকিব আল হাসান নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।
বাংলাদেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবায় গ্রামীণফোনও সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এটি একটি দুর্দান্ত সমন্বয়। গ্রামীণফোন এবং সাকিব আল হাসানের এই অংশীদারিত্ব সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
সাকিব আল হাসান বলেন, গ্রামীণফোনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ এবং ডিজিটাল খাতের অগ্রগতিতে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক অবদান রাখছে। নিজের পারফরম্যান্স আরো সমৃদ্ধ করতে এবং সমর্থকদের আস্থা অটুট রাখতে আমি সবসময় আত্মবিশ্বাসী। আমি বিশ্বাস করি, গ্রামীণফোনের সঙ্গী হয়ে দেশকে এবং দেশের ডিজিটাল খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।
শক্তিশালী সমাজ নির্মাণে বছর জুড়ে গ্রামীণফোন ব্যাপক পরিসরের নানা ধরনের উদ্যোগ পরিচালনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে অনলাইন স্কুল, সবার জন্য সহজে ইন্টারনেট শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড। গ্রামীণফোনের সাথে যুক্ত হয়ে সাকিব আল হাসান জাতীয় উন্নয়ন এবং সামাজিক ক্ষমতায়নের পথ প্রশস্ত করবে।