Tag: ঘুষ

  • ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন

    ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন

    সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য নেওয়া ঘুষের প্রায় ১০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং কুড়িগ্রাম-৪ আসনের এমপি জাকির হোসেন। রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে মন্ত্রীর এক ঘনিষ্ঠজন ভুক্তভোগী আবু সুফিয়ানের কাছে টাকা ফেরত দেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

    সূত্র জানায়, গত ৭ ডিসেম্বর ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে পাওনাদারদের প্রতিমন্ত্রীর বাসায় ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। ওইদিন ভুক্তভোগী তিনজনের মধ্যে দু’জন মন্ত্রীর বাসা থেকে নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে যান। আবু সুফিয়ান নামে একজন প্রাণ বাঁচাতে মন্ত্রীর বাসার দেয়াল টপকে ডিবি কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। এ সময় তাঁকে আটক করেন ডিবি সদস্যরা।

    এ নিয়ে গত শুক্রবার সমকালে ‘প্রতিমন্ত্রী জাকিরের এ কেমন নির্মমতা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে সেদিন তা অস্বীকার করেছিল মন্ত্রণালয়।

    জানা গেছে, ওই সংবাদ প্রকাশের পর গত শুক্রবার আবু সুফিয়ানকে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ। এর মধ্যে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা আবু সুফিয়ানের সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। পরে আবু সুফিয়ানের কাছে যে পরিমাণ টাকার ডকুমেন্ট রয়েছে, তা প্রতিমন্ত্রী ফেরত দেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। দেনদরবার শেষে শনিবার বেলা ১১টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে এক কর্মকর্তার রুমে যান মন্ত্রীর দু’জন প্রতিনিধি। তাদের মধ্যে একজন উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন। আবু সুফিয়ান সেখানে প্রবেশ করার পর ওই কর্মকর্তা দ্রুত সেখান থেকে বের হয়ে যান।

    কিছু সময় কথা বলার পর ডিবির ওই কর্মকর্তা মন্ত্রীর অন্য প্রতিনিধিকে আবু সুফিয়ানের টাকা বুঝিয়ে দিতে বলেন। এর আগে একটি কালো রঙের কাগজের শপিং ব্যাগে সাড়ে ৯ লাখ টাকা সেখানে টেবিলের ওপর রাখেন মন্ত্রীর প্রতিনিধি। পরে ওই ব্যাগ আবু সুফিয়ানের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

    টাকা লেনদেনের পর আবু সুফিয়ানকে একটি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে বলা হয়। তখন উপস্থিত অন্যদের সামনে ‘আমি পাওনা টাকা বুঝিয়া পেলাম’ লিখে স্বাক্ষর করেন আবু সুফিয়ান।

    তবে টাকা দেওয়ার পর আবু সুফিয়ানকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যজনকে চলে যেতে বলেন ওই ডিবি কর্মকর্তা। দুপুর ১২টার দিকে তিনি বের হয়ে যান। তবে চাকরি পেতে যারা টাকা দিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ফেরত দেওয়া টাকা ডিবি কার্যালয়ে রেখে যেতে বলা হয়। ওই টাকা ডিবির ওই কর্মকর্তার জিম্মায় রেখে আবু সুফিয়ান বের হয়ে যান।

    এ বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ ফজলে এলাহীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, যারা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে টাকা দিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে এবং তারা যেন টাকা বুঝে পান সেটা নিশ্চিত করা হবে। আবু সুফিয়ানকে ওইসব ব্যক্তির নাম ও ফোন নম্বর দিতে বলা হয়েছে।

    এ বিষয়ে আবু সুফিয়ান বলেন, ডিবি কর্মকর্তারা তাঁকে দু-এক দিন পরে এসে টাকা নিয়ে যেতে বলেছেন।

    জানা গেছে, সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে প্রতিমন্ত্রীর আরও কয়েক স্বজন বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়েছেন। সেই ভুক্তভোগীরাও এখন টাকা ফেরত পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

  • দুর্নীতি ও ঘুষের ব্যাপারে সরকারি কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    দুর্নীতি ও ঘুষের ব্যাপারে সরকারি কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি ও ঘুষের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে এবং দেশের উন্নয়নমূলক কাজে সরকারি অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার করার জন্য প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তাসহ সকল সরকারি চাকরিজীবিদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

    তিনি আরো বলেন, ‘ঘুষ ও দুর্নীতির ব্যাপারে আপনাদের সবাইকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। এই সব ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি অনেক সময় আমাদের সমাজকে ধ্বংস ও উন্নয়নকে ম্লান করে দেয়। তাই আপনাদের এ ব্যাপারে গণ সমচেতনা সৃষ্টি করতে হবে।’

    প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বিসিএস অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন অ্যাকাডেমিতে ১১৩, ১১৪ ও ১১৫তম বিসিএ প্রশাসন ও আইন কোর্স এর সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তাদের বলবো জনগণের ট্যাক্স এবং কৃষক-শ্রমিকের কঠোর পরিশ্রমের কল্যাণে আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি।’

    তিনি আরো বলেন, ‘তাই তাদের এই পরিশ্রমলব্ধ অর্থের যেন যথাযথ ব্যবহার হয় এবং সুপরিকল্পিত ও সাশ্রয়ীভাবে যেন উন্নয়নমূলক কর্মকা-গুলো সম্পন্ন হয় সেদিকে আপনাদের বিশেষ নজর দিতে হবে।’

    শেখ হাসিনা দেশের আরো উন্নয়নের জন্য দেশপ্রেম ও কর্তব্যপরায়ণতার সাথে কাজ করার জন্য নতুন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

    তিনি বলেন, ‘আপনাদের একথা মনে রাখতে হবে যে এ দেশে আমাদের এবং আপনাদের সন্তানরা ভবিষ্যতে এখানেই বাস করবে। তাই আপনাদের এ কথাও মাথায় রাখতে হবে যে আপনারা আপনাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কি রেখে যাচ্ছেন। আপনারা যদি এই চিন্তা-চেতনা ও আদর্শ লালন করে কাজ করেন, তবে আমাদের দেশ আরো এগিয়ে যাবে।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের মতো সামাজিক ব্যাধির মূল উৎপাটনের জন্য অভিযান শুরু করেছে এবং এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে নতুন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

    তিনি তাদেরকে আরো বেশি উদ্ভাবনীর পরিকল্পনার সাথে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, তারা তাদের এলাকার পরিবর্তন ঘটাতে পারেন এবং তাদের কাজের মাধ্যমে দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটাতে পারেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি আপনারা প্রতিটি ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারেন। এলাকাগুলোর উন্নয়ন আপনাদের কাজের মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে। তাই দেশের জন্য ভালবাসা ও কর্তব্যপরায়ণতার সাথে এই উদ্ভাবনী পরিকল্পনাগুলো কাজে লাগাতে হবে।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে প্রশাননের নবীন কর্মকর্তাদের স্মরন করিয়ে দেন যে, জনগণই দেশের মালিক।

    তিনি বলেন, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, এই জনগণের জন্য আমাদের দায়িত্ব রয়েছে এবং তাদের জন্য আমাদেরকে কাজ করতে হবে।

    আমরা যেমন আমাদের পরিবারের জন্য দায়িত্বশীল, এই চিন্তা চেতনা নিয়ে তেমনি দেশের জনগণের জন্যও আমাদেরকে কাজ করতে হবে।
    শেখ হাসিনা নবীন কর্মকর্তাদের শপথকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করেন এবং নিয়মিতভাবে এই শপথ অনুসরন করতে তাদের প্রতি পরামর্শ দেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, শপথের প্রতিটি বাক্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটি শুধু পাঠ করলেই চলবে না, এটি চর্চাও করতে হবে। আমরা চাই আপনারা তা করবেন।

    তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যখন মাঠ পর্যায়ে বড় দায়িত্ব পালন করবেন, তখন আপনাদের দায়িত্ব আরো বেড়ে যাবে।

    শেখ হাসিনা দেশের আরো উন্নয়নের জন্য তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনা ও নীতির উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার ২০১০-২০২০ সাল পযর্ন্ত মেয়াদে ১০ বছরের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহন করেছে।

    তিনি আরো বলেন, আমরা এখন দেশের আরো উন্নয়নের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২০ বছর মেয়াদী প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা কৌশলপত্র (২০২১-২০৪১) প্রণয়ন করেছি। আজকের তরুন অফিসাররা একদিন সিনিয়র অফিসার হবেন। সে সময়ে তাদেরকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেই সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে তাদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
    সততার শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি উল্লেখ করে

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার পদ্মা সেতুর বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ মোকাবেলা এবং চ্যালেঞ্জে বিজয় লাভ করেছে।

    তিনি আরো বলেন, আমরা সৎ পথে ছিলাম বলে এই অভিযোগ আমরা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। অবশেষে সত্য প্রমাণিত হয়েছে এবং কানাডার ফেডারেল কোর্ট রায় দিয়েছে যে, এই অভিযোগ ছিল সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য। আমরা সততার সঙ্গে অগ্রসর না হলে আমরা এই চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে পারতাম না।

    এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের কিছু লোকের উস্কানির কারণে বিশ্ব ব্যাংক এসব অভিযোগ এনেছিল।

    তিনি আরো বলেন, যারা বিশ্ব ব্যাংককে দিয়ে এসব অভিযোগ করিয়েছিল, তারা আমার হাত থেকে লাভবান হয়েছিল। আমি তাদেরকে গ্রামীন ফোনের ব্যবসা দিয়েছিলাম। আমি ১৯৮৫-৮৬ সালে গ্রামীন ব্যাংকের পক্ষে প্রচারনা চালিয়েছিলাম এবং আমার সরকার জাতিসংঘে গ্রামীন ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণের ধারনার ওপর প্রস্তাব পেশ করেছিল এবং ১৯৯৬ সালে এটি পাস করতে সাহায্য করেছিল।

    সেই লোকই গ্রামীন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদের জন্য পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন তহবিল বন্ধ করতে গিয়েছিল। তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন একজন নোবেল বিজয়ী ব্যক্তি একটি ব্যাংকের এমডি পদের জন্য এতোটা লোভী হয়ে উঠেছিলেন কেন?

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রচলিত আইন অনুযায়ি একজন এমডি কেবল ৬০ বছর বয়স পযর্ন্ত তার পদে থাকতে পারেন। অথচ সে সময়ে এই ব্যক্তির বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন অবৈধভাবে পদ আকড়ে থাকায় বাধা সৃষ্টি করলো, তখনি পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল কারণ তিনি ছিলেন হিলারির বন্ধু।

    প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের দু’জন খ্যাতিমান সম্পাদকও সে সময়ে পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্ব ব্যাংকের অর্থসহায়তা বন্ধ রাখতে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমি তখন এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছিলাম। আমি তখন বললাম কোথায় দুর্নীতি হয়েছে, তা প্রমাণ করতে হবে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার লক্ষ্যে সরকারের একটি সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের মানুষের ধারনা বদলে গেছে। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পর তারা ধারণা করতে পেরেছে যে, বাংলাদেশ যদি ইচ্ছা করে তাহলে পারে এবং আমরা তাই করেছি।

    শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারিদের কল্যাণে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছে এবং বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনার জন্য তাদেরকে সুবিধা দিয়েছে।

    তিনি বলেন, ‘যারা ভাল কাজ করবে তাদেরকে পুরস্কৃত করতে আমরা জনপ্রশাসন পদক চালু করেছি। এর উদ্ধেশ্য হচ্ছে, আমরা চাই তারা দেশ ও দেশের জনগণের জন্য বেশি করে কাজ করুক, আমার জন্য নয়।’

    জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হাসেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এইচএন আশিকুর রহমান এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

    অনুষ্ঠানে বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর কাজী রওশন আখতার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। রেক্টর অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী তিন কোসের্র তিন তরুন কর্মকর্তা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন।

  • ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে নীলফামারী পাসপোর্ট অফিসের নৈশ প্রহরী আটক

    ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে নীলফামারী পাসপোর্ট অফিসের নৈশ প্রহরী আটক

    ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে নীলফামারী পাসপোর্ট অফিসের নৈশ প্রহরী এনামুল হককে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ।

    ১৬ অক্টোবর বুধবার রাতে শহরের পাচঁমাথা মোড়স্থ পাসপোর্টের আঞ্চলিক অফিস থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

    জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কুন্দল এলাকার বাসিন্দা সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজির হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পুলিশে দেয়া হয় তাকে।

    নজির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমার পরিবারের দুজনের পাসপোর্ট করার জন্য আমি কয়েক দিন থেকে ঘুরছি এখানে। সঠিক নিয়মে ফরম পূরণ করেও নানাভাবে ভুল বের করে ফরম নিচ্ছিলেন না তিনি। এক পর্যায়ে আমার কাছে ২৫০০ টাকার বিনিময়ে দ্রুত কাজ করে দেয়ার পরামর্শ দেন এনামুল। বিষয়টি আমি নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মাসুদ সরকারকে জানালে সে তার দুইজন কর্মী খোরশেদ ও হাতেমকে পাসপোর্ট অফিসে পাঠায় এবং তারা কৌশলে পাসপোর্ট অফিসের নৈশ প্রহরী এনামুলের ঘুষের টাকা গ্রহণের ভিডিও করে।

    জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মাসুদ সরকার জানায়, ভিডিও নিয়ে আমরা উপ-সহকারী পরিচালক শহিদ উল্যাহকে বিষয়টি জানাই। তিনি বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে আমরা প্রশাসনকে অবগত করি।

    ইতোমধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে অনেকে জড়ো হন সেখানে। অনেকের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে এনামুলের শাস্তি দাবি করেন বিক্ষুব্ধরা।

    শহরের শাহীপাড়া এলাকার মোহাম্মদ দ্বীপ অভিযোগ করে বলেন, আমি তিনটি পাসপোর্ট করতে এসে অনেক হয়রানির শিকার হয়েছি। দুটি জরুরি এবং একটি সাধারণ পাসপোর্ট করার জন্য অতিরিক্ত ৭ হাজার টাকা নেন এনামুল।

    ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাহারুল ইসলাম ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মাহবুব হোসেন উপস্থিত হয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

    এ সময় এনামুল হক টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শুধু আমি নই কর্মকর্তাদের কাছেও এই টাকা যায়।

    তবে উপ-সহকারী পরিচালক শহিদ উল্যাহ্ বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আরো কেউ জড়িত থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।