Tag: ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’

  • বুলবুলে ফসলের ক্ষতি ২৬৩ কোটি টাকা : কৃষিমন্ত্রী

    বুলবুলে ফসলের ক্ষতি ২৬৩ কোটি টাকা : কৃষিমন্ত্রী

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে উপকূলীয় ১৬ জেলায় ২২ হাজার ৮৩৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৬৩ কোটি ৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া ৫০ হাজার ৫০৩ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড.আবদুর রাজ্জাক।

    আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

    তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে প্রাথমিকভাবে ১৬টি জেলায় রোপা আমন, শীতকালীন শাকসবজি, সরিষা, খেসারি, মসুর ফসলের আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে।

    ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে জানিয়ে আবদুর রাজ্জাক বলেন, অতিরিক্ত কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি চলছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ প্রাপ্তির পর যথাসম্ভব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

  • ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে ১১ জেলায় ১৪ জনের মৃত্যু

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে ১১ জেলায় ১৪ জনের মৃত্যু

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর তাণ্ডবে ১১ জেলায় ঘর ও গাছচাপা পড়ে নারীসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

    এর মধ্যে খুলনায় ২ জন, বাগেরহাটে ২ জন, পটুয়াখালী ১ জন, পিরোজপুরে ১ জন, মাদারীপুরে ১ জন, ভোলায় ১ জন, সাতক্ষীরায় ১ জন, শরীয়তপুরে ১ জন,বরিশালে ১ জন, গোপালগঞ্জে ১ জনবরগুনায় ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

    এছাড়া ঝড়ে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং বিপুলসংখ্যক গাছ উপড়ে পড়েছে।

    শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার দুপুরের মধ্যে ঝড়ের সময় এসব ঘটনা ঘটে।

    খুলনা : প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে খুলনার দিঘলিয়া ও দাকোপে গাছের নীচে চাপা পড়ে নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন।

    নিহতরা হলেন- প্রমিলা মণ্ডল (৫২) ও আলমগীর হোসেন (৩৫)।

    জানা গেছে, দাকোপ উপজেলায় প্রমিলা মণ্ডল (৫২) নামে এক নারী ঝড়ের সময় গাছ চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়া দিঘলিয়া সেনহাটি গ্রামের আলমগীর হোসেনও (৩৫) গাছ চাপায় নিহত হয়েছেন।

    এদিকে বুলবুলের আঘাতে কয়রা উপজেলায় দেড় হাজার ঘরবাড়ি এবং দাকোপ উপজেলায় ১৭০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

    এছাড়া দাকোপে ৩১৫টি চিংড়ি ঘের ও ৪২৫টি পুকুর ভেসে গেছে। এই দুটি উপজেলায় গতকাল মধ্যরাত থেকে বিদ্যুৎ নেই।

    বাগেরহাট : ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে বাগেরহাটের রামপাল ও ফকিরহাটে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

    রোববার দুপুরে ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলী গ্রামে গাছচাপায় হিরা বেগম নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। হিরা বেগম একই গ্রামের মাসুম শেখের স্ত্রী। বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহতের পরিবারকে ফকিরহাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।

    এর আগে সকালে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ভরসাপুর গ্রামে গাছচাপা পড়ে সামিয়া খাতুন (১৫) নামে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। সামিয়া উপজেলার দরপোনারায়ণপুর গ্রামের বাবুল শেখের মেয়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তুষার কুমার পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

    পটুয়াখালী: পটুয়াখালীতে দমকা হওয়ায় গাছ উপড়ে বসত ঘরের ওপর পড়ে মির্জাগঞ্জ উপজেলায় হামেদ ফকির (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছে। পেশায় তিনি ছিলেন একজন মৎস্যজীবী।

    শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের উত্তর রামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সরোয়ার হোসেন জানান।

    পিরোজপুর: বুলবুলের তাণ্ডবে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের লড়া গ্রামে ঘরের উপর গাছ চাপা পড়ে ননী গোপাল মণ্ডল (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ মারা যান।

    রোববার দুপুরে তিনি মারা যান। এসময় গুরুত্বর আহত হয় একই পরিবারের সুমী (৮) ও নাসির (১৬) নামে দুই শিশু। ওই উপজেলার ৯ নম্বর কলারদোয়ানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাসানাত ডালিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

    মাদারীপুর: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামে ঘরের ওপর গাছ পড়ে সালেহা বেগম (৪০) নামে এক নারী মারা গেছেন।

    রোববার বেলা ৩ টার দিকে বসত ঘরের ওপর গাছ পড়ে ঘরের ভিতর আলমারির নিচে চাপা পড়ে তিনি মারা যান।

    মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সদর উপজেলার ঘটমাঝি এলাকায় একটি গাছ বসত ঘরের ওপর আজিজ খানের স্ত্রী সালেহা বেগম আহত হন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সালেহার পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।

    এছাড়া রাজৈর উপজেলায় গাছে নিচে পড়ে ৬ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে চৌহদ্দি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লাসরুম ভেঙ্গে গেছে।

    ভোলা: ভোলায় ঘূর্ণিঝড়ে ট্রলার ডুবে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

    ভোলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, ইলিশা এলাকার মেঘনা নদীতে ২৪ জন জেলে নিয়ে একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০ জন জেলে জীবিত উদ্ধার ও ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১৩ জন জেলে।

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুল’র প্রভাবে ভোলায় দেড় শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। এদের মধ্যে গুরুতর ৫ জনকে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

    এছাড়া শনিবার রাত থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পর্যন্ত গোটা জেলায় ভারি বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাস বইছিল। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। উপড়ে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি। বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অতি বৃষ্টির কারণে ভোলার সদরের ইলিশা ব্রিকস, রিয়াদ ব্রিকস, মায়ের দোয়া ব্রিকস, সাবাব ব্রিকসসহ ৬৩টি ফিল্ডের কয়েক লাখ কাঁচা ইট গলে গিয়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

    সাতক্ষীরা: বুলবলের তাণ্ডবের পর সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় আবুল কালাম (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

    শ্যামনগর থানার ইউএনও জানান, আবুল কালাম শেল্টার হোম থেকে উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।

    শরীয়তপুর: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় ঘরের উপর গাছ পড়ে মো. আলী বক্স ছৈয়াল (৭০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছে।

    রোববার বিকালে নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের দেওজড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে নড়িয়া থানার ওসি হাফিজুদ্দিন জানিয়েছেন।

    এছাড়াও জেলার গোসাইরহাট উপজেলায় প্রায় ৩৫০টি ঘরবাড়ি ও শত শত গাছপালা ঝড়ে পড়ে গেছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।

    ব‌রিশাল ব্যুরো: রোববার বিকাল ৩টার দিকে ব‌রিশালের উজিরপুর উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র আঘাতে ঘরচাপা পড়ে আশালতা মজুমদার (৬৫) নামে এক বৃদ্ধা মারা যান।

    উজিরপু‌র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার মৃত্যুর বিষয়টি নি‌শ্চিত করে জানান, বৃদ্ধা আশালতা উ‌জিরপু‌র পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের দ‌ক্ষিণ মাদারসী এলাকার বাসিন্দা।

    কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ): গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে গাছ চাপা পড়ে সেকেল হাওলাদার (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।

    রোবিবার দুপুরে ঝড়ের সময় উপজেলার বান্ধাবাড়ি গ্রামের মৃত হাসান উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে সেকেল হাওলাদার গাছচাপা পড়ে মারা যান।

    এছাড়া শতাধিক ঘরবাড়ি, পোল্ট্রি সেট বিধ্বস্ত হয়েছে। হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে। মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশের গাছ উপড়ে পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে কোটালীপাড়ায় সেকেল হাওলাদার নামে এক বৃদ্ধের নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এছাড়া এ উপজেলায় শতাধিক ঘরবাড়ি, পোল্ট্রি সেট বিধ্বস্ত হয়েছে। হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে। মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতির পরিমান নির্ণয়ের কাজ করছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের সার্বিক সহযোগিতা করবো।

    বরগুনা ও বামনা: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে বরগুনা সদর ও বামনা উপজেলায় দুইজন মারা গেছেন।

    বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিচুর রহমান জানান, বরগুনা সদর উপজেলার ৯ নম্বর এম বালীয়াতলী এলাকার ডিএন কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে হালিমা খাতুন (৬৬) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি সদর উপজেলার বানাই গ্রামে। হালিমা খাতুন নামের ওই নারী অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন বলে তিনি জানান।

    এছাড়া বামনা উপজেলার উত্তর কাকচিড়া গ্রামে ঝড়ের আতঙ্কে শিশীর বিশ্বাস (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ঝড়ের সময় ছুটাছুটি করতে গিয়ে আহত হয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকজন।

    বামনা-পাথরঘাটা, বামনা-বরিশাল ও বামনা-বরগুনা সড়কে বড়বড় গাছ উপড়ে পড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় সমগ্র বামনা এখন বিদ্যুতবিহীন রয়েছে। বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা কলেজের টিনসেট ভবনটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলী হরি ও বামনা থানার ওসি মো. মাসুদুর রহমান ক্ষয়গ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন ও আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবার বিতরণ করছেন।(যুগান্তর)

  • ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আতঙ্ক কাটার পর অতিবৃষ্টিতে উৎকন্ঠায় রাউজানের আমন চাষীরা

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আতঙ্ক কাটার পর অতিবৃষ্টিতে উৎকন্ঠায় রাউজানের আমন চাষীরা

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ নিয়ে গত কয়েকদিন আতঙ্কে কেটেছে রাউজানের আমন চাষীদের। মহা বিপদ সংকেত কাটিয়ে আপাতত ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক কাটলেও এবার নতুন করে দুশ্চিন্তায় ভুগছে চাষীরা।

    রোববার সকালে হালকা বৃষ্টিপাত শুরুর পর দুপুরের পর থেকে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের সাথে কপাঁলে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে রাউজানের চাষীদের।

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। দুপুরের পর থেকে অতিবৃষ্টিতেই যেন মলিন হতে চলেছে কৃষকের হাসিমুখ।

    অথচ চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলনে রাউজানের আমন চাষীরা ছিল বেশ হাসিখুশি। রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, চলতি আমন মৌসুমে ১১ হাজার ২৭৬ হেক্টর আমনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উপজেলায় আমনের চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৮০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৪ হেক্টর বেশী চাষাবাদ হয়েছে চলতি মৌসুমে। এরমধ্যে উপশী জাতের ১১ হাজার ২১০, হাইব্রিড জাতের ৮০ হেক্টর, ও স্থানীয় জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০হাজার মেক্টিকটন শুকনা ধান উৎপাদনের আশাবাদও ব্যক্ত করেছিলেন কৃষি কর্মকর্তারা।

    সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে হলদে বর্ণের আমনের ক্ষেতে আমন ধান কাটা শেষে রোদে শোকানোর জন্য রেখে দিয়েছেন কৃষকরা। অনেকেই জমিতে ধান মাড়াই করে শুকনো ধান ঘরে তোলার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও অতিবৃষ্টির ফলে কৃষি জমিতে পানি জমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

    পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কৃষক রফিক বলেন, বাম্পার ফলন হওয়ায় এবার খুব খুশি হয়েছিলাম। জমিতে ধান কেটে মাড়াই করে ধান ঘরে তুলবো বলে ভাবছিলাম। কিন্তু রোববারের অতিবৃষ্টিতে আমাদের দূর্ভোাগ যেন বেড়ে গেছে। এখন ভেজা ধান গুলো বাড়িতে এনেই মাড়াই করতে হবে। কামলাদের দৈনিক মজুরি অবিবেশী হওয়ায় কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা।

    শুধু কৃষক রফিক নয়, এমন দুশ্চিন্তায় ভুগছেন অনেকেই। সোমবার রোদের দেখা না মিললে সে দুশ্চিন্তা যে আরো কয়েকগুণ বাড়বে তা বলার অবকাশ রাখেনা।

  • ‘বুলবুল’ ঘীরেও পর্যটকদের উচ্ছ্বাস

    ‘বুলবুল’ ঘীরেও পর্যটকদের উচ্ছ্বাস

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে কক্সবাজারের থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। দুই দিন ধরে বৈরী আবহাওয়া ও সতর্ক সংকেত থাকায় টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের মধ্যে জাহাজসহ কোনও নৌযান চলাচল করেনি। ফলে প্রায় ১২০০ পর্যটক দ্বীপে আটকে পড়েছেন।

    অপরদিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সবকটি পয়েন্টে টাঙানো হয়েছে লাল পতাকা। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র স্নানে ব্যস্ত। তবে লাইফ গার্ড কর্মীরা সার্বক্ষণিক পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এ অবস্থায় সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। লাল পতাকা এবং লাইফ গার্ড কর্মীদের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উত্তাল সাগরে গোসল করছে পর্যটকরা।

    ঢাকা থেকে পর্যটক রবিন বলেন, যান্ত্রিকতা জীবন ছেড়ে একটু ছুটি পেয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ছুটে এসেছি। এখানেও দেখি প্রকৃতি বিরূপ আচরণ করছে। কিন্তু করার কিছু নেই একটু আনন্দ করার জন্য এসেছে তাই নিষেধাজ্ঞা স্বত্ত্বেও সাগরে নেমে গোসল করে জীবনকে উপভোগ করছি।

    ছৈয়দুল আমিন নামে আরেক পর্যটক বলেন, সাগর উত্তাল ও লাইফ গার্ড কর্মীরা সতর্ক করে দিচ্ছে এই অবস্থায় সাগরে না নামতে। কিন্তু করার কিছুই নেই কাল কক্সবাজার ছেড়ে আবার ঢাকা চলে যাবো। তার একটু সাগরে হাঁটু পরিমান পানিতে নেমে গোসল করছি।

    এ অবস্থায় যে কোন দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যটকদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন লাইফ গার্ড কর্মীরা। সৈকতের লাবনী পয়েন্টে দায়িত্ব থাকা সী-সেইভ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ মোহাম্মদ চিরু বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি হওয়াতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার সৈকতে বেড়াতে এসেছে। এছাড়াও সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় তারাও কক্সবাজার সৈকতে ভিড় করছে। ফলে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সমুদ্র স্নানে নিরাপত্তায় হিমশিম খেতে হচ্ছে।

    এই মুহুর্তে যেহেতু ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে তাই আগত পর্যটকদের নিজেদের সচেতন হওয়া খুবই জরুরী বলে জানান তিনি। এব্যাপারে পর্যটকদের নিষেধ ও সচেতন করা হচ্ছে। তবে কেউ এই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। অসতর্ক অবস্থায় সৈকতে গোসল করছে। তবে আমরাও চেষ্টা করছি তাদের নিরাপত্তা দেয়ার

    কক্সবাজার ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর কারণে কক্সবাজার উপকূলে প্রায় ৪ হাজার ট্রলার ফিরে এসেছে। বাকি যে হাজার খানেক ট্রলার রয়েছে তাও বিকেলের মধ্যে ফিরে আসবে।

    এদিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের পানিতে না নামা এবং সতর্কতার সাথে বেড়ানোর জন্য মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসক।

    শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ট্যুারিস্ট পুলিশ পর্যটকদের উদ্দেশ্যে এই মাইকিং করেন।

    এছাড়া হিমছড়ি, ইনানী এবং টেকনাফ সমুদ্র সৈকতেও একই রকম মাইকিং করা হয়। অপরদিকে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের সর্তকতার সাথে সৈকতে ঘোরাফেরা করতে মাইকিং করেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ।

    ইউপি মেম্বার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিভিন্ন হোটেল ও আশ্রয় কেন্দ্রে আটকে পড়া পর্যটকদের কাছে গিয়ে সতর্কতার সাথে সৈকতে বেড়ানোর আহ্বান জানান।

    জেলা প্রশাসনের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে চেয়ারম্যান আরো জানান, দূর্যোগ না কাটা পর্যন্ত তাদের পরিচ্ছন্ন ভাবে হয়রানি মুক্ত আতিথেয়তা দিতে হোটেল কর্তৃপক্ষকে বলা আছে। পরিষদের সবাই সর্বক্ষণ খোঁজ খবর নিয়ে পর্যটকদের আতংকিত না হতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

    চেয়ারম্যানের মতে, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৫টি সাইক্লোন শেল্টার ও বহুতল কয়েকটি হোটেল রয়েছে। কঠিন দূর্যোগ বা জলোচ্ছ্াস হলেও আটকে পড়া পর্যটকদের বিচলিত হবার কিছু নেই। সংকেত বাড়লে আমরা তাদের এসব উচু ভবনে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করব।

    দ্বীপে আটকা পড়া পর্যটকদের হোটেল ও খাবার বিল ডিসকাউন্ট দিতে সব হোটেল-মোটেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহম্মদ।

    তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাত থেকে দ্বীপে বৃষ্টি ও বাতাস বেড়েছে। এজন্য রুম থেকে বের হতে পর্যটকদের নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া দ্বীপের চারদিকে সমুদ্র সৈকতে যাতে কোনও পর্যটক না নামেন, সেজন্য পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। যারা প্রথমবারের মতো সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে এসেছেন, তাদের মধ্যে কিছু লোকজন ভয়ে আছেন বলে শুনেছি। তবে পর্যটকদের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’

    সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আজমীর ইলাহি বলেন, ‘দ্বীপে আটকে পড়া পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে।’

  • কক্সবাজারে বুলবুল শংকা মুক্ত

    কক্সবাজারে বুলবুল শংকা মুক্ত

    কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রভাব নেই। উপকূলীয় এলাকা ‘বুলবুল’ আশংকা মুক্ত হয়েছে। ৪ নং হুশিয়ারী সংকেত নামিয়ে কক্সবাজারসহ উপকূলীয় এলাকায় ৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

    আজ সন্ধ্যার মধ্যে আবহাওয়া সংকেত নামিয়ে ফেলা হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সর্বশেষ রোববার ১০ নভেম্বর দুপুর ১২ টায় প্রচারিত ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বিষয়ক আবহাওয়ার ৩১ নম্বর বুলেটিন পর্যালোচনা করে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান ও সহকারী আবহাওয়াবিদ মোঃ আবদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    ‘বুলবুল’ নামক স্ট্রম সাইক্লোনটি সুন্দরবন বনাঞ্চলে বাঁধা পেয়ে সেটি শনিবার রাত হতে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে গভীর নিন্মচাপে পরিণত হয়েছে। গভীর নিন্মচাপ হতে সেটি সহসায় লঘু নিন্মচাপে পরিণত হয়ে রোববার সন্ধ্যা নাগাদ সেটি সম্পূর্ণ মিলিয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সহকারী আবহাওয়াবিদ মোঃ আবদুর রহমান।

    তিনি বলেন, দূর্বল হওয়া নিন্মচাপের প্রভাবে এবং মুন পেইজ অর্থাৎ আসন্ন পূর্ণিমার ভরাকাঠালের কারণে আগামী ২ দিন কক্সবাজার সহ দেশের সমগ্র উপকূলীয় এলাকায় সামুদ্রিক জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চাইতে ২ ফুট থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে। একইসাথে আগামী ২ দিন কক্সবাজার ও দেশের উপকূলীয় এলাকায় হালকা ঝড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টি হতে পারে। শেল্টার ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া উপকূলীয় এলাকার লোকজন নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারবেন।

  • প্রধানমন্ত্রী বুলবুল পর্যবেক্ষণে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন

    প্রধানমন্ত্রী বুলবুল পর্যবেক্ষণে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলা পর্যবেক্ষণে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

    তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি নাকি যথেষ্ট নয়। অথচ ব্যাপক ও পর্যাপ্ত প্রস্তুতির ফলে আমাদের প্রাণ ও সম্পদ উভয়ই ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। আমি বলবো, নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখতে। কারণ, তাদের সময়ে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে লাখ লাখ প্রাণহানি ও ব্যাপক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বিমান বাহিনীর ৩৫ টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল শুধু ব্যবস্থাপনার ত্রুটিতে, কারণ প্লেন তো উড়িয়েই অন্যত্র নেয়া যেত। বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারগুলো চলে এসেছিলো রাস্তায়। যখন মানুষের লাশ পানিতে ভাসছে, সমস্ত চট্টগ্রামে লাশের গন্ধ, তখন নওয়াজ শরিফ আসায় বেগম খালেদা জিয়া একদিনে সাতটি শাড়ি বদল করেছেন।’

    রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কার্যালয়ে ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে শহীদ নূর হোসেন সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

    তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার রক্তধমনীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রক্তস্রোত প্রবাহমান, তিনি বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসে দেশ ও মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, মেহনতী মানুষের জীবনের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। সেকারণেই শেখ হাসিনার অপর নাম গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর দেশ ও জাতির উন্নয়ন।’

    মন্ত্রী বলেন, ‘নূর হোসেনের রক্ত বৃথা যায়নি। নূর হোসেনসহ সকল শহীদের রক্তে আমাদের গণতন্ত্র আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। নব্বইয়ের ১০ নভেম্বরের সেই দিন শুধু নূর হোসেন নয়, টার্গেট ছিলেন শেখ হাসিনাও।’

    শহীদ নূর হোসেন দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি তছলিম আহম্মেদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, নূরুল আমিন রুহুল, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, শহীদ নূর হোসেনের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।

  • ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে  চার জেলায় নিহত ৬

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে চার জেলায় নিহত ৬

    বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে খুলনায় ২ জন,বরগুণায় ১ জন,  সাতক্ষীরায় ১ জন এবং পটুয়াখালিতে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ২ জন নিহত হয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় গাছ-পালা উপড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে হাজারো ঘরবাড়ি।

    রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে পটুয়াখালীর মির্জাগ‌ঞ্জের উত্তর রামপুরা গ্রা‌মে ঘরচাপা পড়ে হামেদ ফকির (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

    এছাড়া এদিন সকাল ১০টার দিকে খুলনার উপকূলীয় দাকোপ উপজেলার দক্ষিণ দাকোপে প্রমিলা মন্ডল (৫২) নামে এক নারী ঝড়ের সময় গাছ চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন। অপরদিকে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় সেনহাটি গ্রামে আলমগীর হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক গাছচাপা পড়ে নিহত হয়েছেন।

    বরগুনা সদর উপজেলার ডিএন কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে হালিমা খাতুন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তার বাড়ি সদর উপজেলার বানাই গ্রামে।

    সাতক্ষীরার গাবুরায় সকালে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার সময় আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
    এদিকে উপকূলে আঘাত হানার পর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ক্রমশ দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সন্ধ্যা নাগাদ বুলবুলের প্রভাবমুক্ত হবে সারাদেশ। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

    বরগুনায় ৬৪ মাঝি-মাল্লাসহ ৭টি মাছধরার ট্রলার নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে।

    আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে: চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলাসমূহের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

    আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বর্তমানে সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট অঞ্চলে অবস্থান করছে। এটি তার অবস্থান থেকে ক্রমান্বয়ে উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে মাদারীপুর, ফরিদপুর, ঢাকা ও কুমিল্লা অঞ্চলের ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে। তারপর ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলের দিকে যেতে আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।

  • চঞ্চল চৌধুরীকে বন্দী করে রাখল বুলবুলি

    চঞ্চল চৌধুরীকে বন্দী করে রাখল বুলবুলি

    বিনোদন ঘন্টা : ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কবলে সিনেমার শুটিং বন্ধ রয়েছে। সেন্ট মার্টিনে আটকা পড়েছেন ছবির নায়ক চঞ্চল চৌধুরীসহ অন্য শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

    জানা যায়, নির্মিত হচ্ছে সিনেমা “হাওয়া”। সমুদ্রের জেলেদের গল্প নিয়ে হবে এ সিনেমা। মাছ ধরার ট্রলারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ছবির কাহিনি।

    এটি নির্মাণ করছেন মেজবাউর রহমান সুমন। গল্পের প্রয়োজনেই কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিনে ছবির দৃশ্যধারণ করা হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই শুটিং চলছিল সেন্ট মার্টিনের গভীর সমুদ্রে।

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কবলে নায়ক চঞ্চল চৌধুরীসহ অন্য শিল্পী ও কলাকুশলীরা এখন বন্দি।

    চঞ্চল চৌধুরী ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাসের গতিবেগ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতে বাতাসের আওয়াজ আর সাগরের গর্জনে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। সকাল পর্যন্ত এই পরিস্থিতি ছিল।

    শনিবার দুপুরের পর থেকে আবার সেই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এখন হোটেলে আড্ডা দিয়ে, গল্প করে সবাই সময় কাটছে। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে।

    নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, প্রশাসনের কঠোর নির্দেশ রয়েছে, তাই কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। সবাই হোটেলের ভেতরেই আছেন। সঙ্গে পর্যাপ্ত খাবার আছে। কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

    তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিনের রাস্তাঘাটও জনমানব শূন্য। সবাই নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। চঞ্চল চৌধুরী ছাড়াও আমাদের সঙ্গে রয়েছেন নাফিজা তুশি, সুমন আনোয়ার, শরিফুল রাজ, রিজভি, নাসির, মাহমুদসহ টিমের অনেকেই।

    তিনি বলেন, ছবির বেশির ভাগ শুটিং শেষ হয়ে গেছে। আপাতত শুটিং বন্ধ। আরো কয়েকদিন শুটিং করতে হবে। আবার কবে শুটিং শুরু করবো, বুঝতে পারছি না।

    ইসলাম, কক্সবাজার

  • সাতক্ষীরা উপকূলে ‘বুলবুলের’ তাণ্ডবে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

    সাতক্ষীরা উপকূলে ‘বুলবুলের’ তাণ্ডবে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

    সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলা প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বিধ্বস্ত হ‌য়ে‌ছে সহস্রাধিকঘরবা‌ড়ি।

    রোববার ভোররাত থেকে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া।

    ঝড়ে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাচা ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

    রাস্তাঘাটে গাছপালা উপড়ে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মাছের ঘের ভেসে গেছে। এখনও উপকূলে ঝড়ো বাতাস বইছে।

    উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভবতোষ মণ্ডল বলেন, ঝড়ে সব কিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। রাস্তাঘাটে গাছপালা পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মানুষের মাটির ঘরবাড়ি একটিও নেই। মানুষের মাছের ঘের ভেসে গেছে। প্রচণ্ড বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া ভোররাত থেকে শুরু হয়ে এখনও চলছে।

    শ্যামনগ‌র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন, গাবুরা ও পদ্মপুকুরের ৮০ শতাংশ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হ‌য়ে‌ছে। এছাড়া বৃ‌ষ্টির পা‌নি‌তে বি‌ভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃ‌ষ্টি হ‌য়ে‌ছে।

  • ‘বুলবুল’ অতিক্রম করার আগে বুলবুলির জন্ম

    ‘বুলবুল’ অতিক্রম করার আগে বুলবুলির জন্ম

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আতঙ্কে দেশের মানুষ। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ জানমাল নিয়ে যে যার মতো ছোটাছুটি করছে দিগ্বিদিক। এই দুর্যোগেরই মধ্যে কলাপাড়ার নীলগঞ্জ আবাসনে জন্ম হয়েছে এক কন্যা শিশুর। দুর্যোগের মধ্যে জন্ম হওয়ায় ঘূূূূূর্ণিঝড়ের নাম অনুসারে ওই বাচ্চাটির নাম রাখা হয়েছে বুলবুলি।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত পটুয়াখালীর দুর্গম এলাকার ৬৮৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে মোট ৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬৭ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

    আবহাওয়া অফিস মহাবিপদ সংকেত দিলে চরাঞ্চলের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়, যার মধ্যে গর্ভবতী মায়েরাও আছেন। এই পরিস্থিতিতে শনিবার দুপুরে জন্ম নেয় এক কন্যা শিশু। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সঙ্গে মিলিয়ে তার নাম রাখা হয়েছে বুলবুলি আক্তার বন্যা।

    পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আবাসনে মা হুমায়রা বেগমের কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে কন্যা সন্তান বুলবুলি। বুলবুলির বাবা আবুল কালাম পেশায় একজন ডেকোরেটর শ্রমিক।

    আবুল কালাম বলেন, দুপুরে আমার কন্যাসন্তান পৃথিবীতে এসেছে। এটা আমাদের প্রথম সন্তান। নীলগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শায়লা শহিদের বাসার পাশে আমাদের আত্মীয়ের বাসা। আজ বন্যার দিনে আমাদের মেয়ের নাম রেখেছেন বুলবুলি আক্তার বন্যা। মা-মেয়ে দুজনই সুস্থ আছে।

    নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড নাসির উদ্দীন মাহমুদ জানান, নীলগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শায়লা শহিদ আবাসনে জন্ম নেয়া কন্যা শিশুর নাম রেখেছেন বুলবুলি আক্তার বন্যা।

    ১ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য প্রফুল্ল কুমার হাওলাদার জানান, নীলগঞ্জ আবাসনে আবুল কালাম ও হুমায়রা বেগম দম্পতির বসবাস। হুমায়রা গর্ভবতী ছিলো। শনিবার দুপুর দেড়টায় আবাসনের ঘরে বসে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।

    নীলগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহেলা পারভীন বলেন, আবাসনে এক মা কন্যা সন্তান প্রসবের খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি আবাসনের ভাঙা ঘর। নেই তেমন সুব্যবস্থা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ঘরটি আরো নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় মা-মেয়ের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাদের নিজ বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছি।’

    নাম রাখার প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এ উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে বলে শোনা যাচ্ছে। সে কারণে ঝড়ের সঙ্গে মিল রেখে ওর মায়ের সঙ্গে আলাপ করে নামটি রাখি।

     

  • লালমোহন ও চরফ্যাশনে আহত ৮

    লালমোহন ও চরফ্যাশনে আহত ৮

    দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ঝড়ো বাতাসে সাতটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় ৮ জন আহত হয়েছেন।

    শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লালমোহনের পশ্চিম চর উমেদ ও চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের এ ঘটনা ঘটে।

    আহতদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন পশ্চিম চর উমেদ ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ মাল, তার ছেলে ইমরান ও তিশান।

    ওই এলাকার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে একটি ঘুর্ণিঝড়ের বিকট আওয়াজ শুনতে পায়। মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকার রশিদ মালসহ একই বাড়ির আরও দুইটি ঘর বিধ্বস্ত হয়। এ সময় বাড়ির গাছপালাও উপড়ে পড়ে।

    তিনি আরও জানান, একই সময়ে ওই এলাকার পাশের এলাকা চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আব্দুল মোতালেব ও তার ছেলে মামুন ও বিল্লালের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। পাশের আরেকটি বাড়ির আব্দুল মুনাফের বসত ঘরটিও বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এ সময় ওই এলাকার রাস্তার গাছপালাও উপড়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।

    অপরদিকে লালামোহন উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের চরপেয়ারীমোহন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে অন্তঃত পাঁচ জন আহত হয়েছেন। তবে সেখানকার আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

    লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি বলেন, আমরা লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের রায়চাঁদ এলাকায় গাছ পড়ে একজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে বাকিদের খবর আমরা পাইনি।

  • বুলবুল মোকাবেলায় সন্দ্বীপে ব্যাপক প্রস্তুতি

    বুলবুল মোকাবেলায় সন্দ্বীপে ব্যাপক প্রস্তুতি

    চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

    ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

    উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহবিপদ সংকেত এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) জরুরি প্রস্তুতিমূলক সভা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদর্শী সম্বৌধি চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

    এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, গণমাধ্যম কর্মী ছাড়াও সিপিবির কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ইউনিটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদর্শী সন্বোধী চাকমা বলেন,সন্দ্বীপে ১১০টি সাইক্লোন শেল্টার মানুষের অবস্থানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে, পাঁচ হাজার লোক শেল্টারে অবস্থান নিয়েছেন। এবং শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন উপকরণ স্টকসহ একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ও রাতে খাওয়ার পর বেশির ভাগ লোক শেল্টারে ফিরবেন বলে মনে করি।

    দুর্যোগপূর্ণ আবহওয়ার কারণে সন্দ্বীপের সঙ্গে বাহিরের সকল প্রকার নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ৯৫টি ভলন্টিয়ার টিম, ইউনিয়নভিত্তিক স্কাউট দল, নয়টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

    যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে লোকজনকে সরিয়ে আনার জন্য ব্যাপক মাইকিং করা হয়েছে।

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবেলায় ও ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনতে চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকা সন্দ্বীপ উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রচারণা শুরু করেছে।

    সিপিপি’র কর্মীদের সাথে বৈঠক করেছেন পৌর মেয়র জাফর উল্যাহ টিটু

    শনিবার সকাল থেকে হরিশপুর ২নং ইউনিট সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সহ সকল ইউনিট একযোগে প্রচার প্রচারনা শুরু করেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী স্বেচ্ছাসেবকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। রাস্তা,বেড়িবাঁধে মানুষকে সচেতন করছে। এছাড়াও পরিত্যাক্ত সাইক্লোন সেল্টারকে অবস্থানের উপযোগী করা হয়েছে।

    পৌর মেয়র জাফর উল্যা টিটু সিপিপি হরিশপুর ২নং ইউনিটের সাথে বৈঠক করে তাদেরকে সর্বসাধারণের পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক সহযোগীতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

    পৌর-আওয়ামী সভাপতি মোক্তাদের মাওলা সেলিম, কমিশনার শাহাদাৎ বিল্লাহ খাঁন মহসিন ও ইউনিয়ন টিম লিডার মো. দুলাল জনগণকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে প্রচারণা চালিয়েছেন।

    সন্দ্বীপ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তাদের মাওলা সেলিম জানান পৌর এলাকায় সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সদস্যদের নিয়ে আমি সর্বোচ্চ প্রচারণা চালিয়েছি। যারা এখনো শেল্টারে ফেরেননি তাদের রাতে গিয়ে আমরা নিয়ে আসবো শেল্টারে।

    ২ নং ইউনিটের টিম লিডার কার্তিক চক্রবর্তী,বাদল রায় স্বাধীন,মিঠু মজুমদার,পলি রানী নাথ,অশ্রু বিশ্বাস,ঝিনুক বিশ্বাস,সীমা ভদ্র, সতি রানী ভদ্র, পাভেল রায়, প্রান্ত চক্রবর্তী ও শুভ দে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন।

    বাদল রায় স্বাধীন জানান, সর্বোচ্চ প্রচারণা চালিয়ে আমরা মানুষকে সচেতন করেছি। আশা করি, সন্ধ্যার মধ্যে সবাই সেল্টারে আশ্রয় নেবে। আমাদের প্রচারণায় গর্ভবতী, প্রসূতি নারী ও প্রতিবন্ধী এবং বৃদ্ধদের সবার আগে শেল্টারে নেওয়ার আহবান করেছি। আমার সহযোগী সকল স্বেচ্ছাসেবক যেকোনো সময় প্রস্তুত রয়েছে। এবং ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বিপদ সীমা নিচে নামা পর্যন্ত সকলে সক্রিয় থাকবে সেটা প্রত্যাশা করছি।

    সিপিপির পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, সন্দ্বীপের ১৫টি ইউনিয়নের ১৪৬ ইউনিটের ৭৩০ নারী ভলান্টিয়ার ১৪৬০ পুরুষ ভলান্টিয়ারসহ মোট ২১৯০ জন ভলান্টিয়ার দুর্যোগের প্রস্তুতি মুলক প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছে।

    মগধারা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন প্রচারণা চালাচ্ছেন

    মগধরা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন তার ইউনিয়নের জনগণকে নিরাপদে সরে যেতে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

    এদিকে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা দুর্যোগ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে সন্দ্বীপবাসীর পাশে দাঁড়াতে নিজের সংসদীয় এলাকায় ফিরে এসে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সকল দপ্তরের অফিসারদের নিয়ে জরুরি সভায় অংশগ্রহণ করে দুর্যোগ মোকাবেলার সর্বশেষ আপডেট জেনে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

    আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।