Tag: ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’

  • জরুরি প্রয়োজনে সরকারি কন্ট্রোল রুমের ফোন নাম্বার

    জরুরি প্রয়োজনে সরকারি কন্ট্রোল রুমের ফোন নাম্বার

    ধ্রুত গতিতে ধেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। উপকূলের ৫’শ কিলোমিটারের মধ্যে প্রবেশ করায় বেড়েছে উৎকণ্ঠা। এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বন্দর থেকে লঞ্চ ও জাহাজ চলাচল।

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুল চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে যেকোনো সহায়তার জন্য প্রস্তুত সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি তথ্য আদান-প্রদান ও সহায়তা গ্রহণের জন্য সরকারি দপ্তরগুলো কন্ট্রোল রুম খুলেছে।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ক্ষতি এড়াতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার।

    বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বরিশাল বিভাগের জন্য যোগাযোগের নম্বর ০১৭৬৬৬৯০৬২১, খুলনা বিভাগের জন্য যোগাযোগের নম্বর ০১৭৬৬৬৯০৩৮৩, চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য যোগাযোগের নম্বর ০১৭৬৬৬৯০১৫৩ এবং অতিরিক্ত নম্বর ০১৭৬৬৬৯০০৩৩।

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ও কন্ট্রোলরুম খুলেছে।

    পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোলরুমের যোগাযোগের নম্বর ০১৩১৮২৩৪৫৬০ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোলরুমের নম্বর ০১৫৫২৩৫৩৪৩৩ ।

    এছাড়াও বিআইডব্লিউটিএ’র কন্ট্রোলরুমের নম্বর ০১৯৫৮৬৫৮২১৩।

    বিনা খরচে ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ খবর জানা যাবে ১০৯০ নম্বরে ফোন করে।

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’এর কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকেপড়া পর্যটকদের সাহায্যের জন্য কক্সবাজার জেলা কন্ট্রোলরুমের নম্বর ০১৭১৫৫৬০৬৮৮ অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, টেকনাফ এর ০১৮৫১৯৬৬৯৬৬ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

    এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ সম্পর্কিত সবশেষ তথ্যের জন্য ঢাকার তথ্য অধিদফতরের সংবাদকক্ষের ০২৯৫১২২৪৬, ০২৯৫১৪৯৮৮ টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

    বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
    আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূল (সুন্দরবনের কাছ দিয়ে) অতিক্রম করতে পারে।
    অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

  • ৯ জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

    ৯ জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের গতিবেগ বেড়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি।

    ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

    ওইসব এলাকার সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) আবহাওয়া অধিদফতরের উপপরিচালক আয়শা খানম সংবাদ বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

  • মোংলা ও পায়রায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রামে ৯

    মোংলা ও পায়রায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রামে ৯

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলের’ প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ৯ ও কক্সবাজার ৪ নম্বর সংকেত এবং ৭ ফুট পর্যন্ত জলচ্ছ্বাসের আশংকা করা হচ্ছে।

    ‘বুলবুল’ আজ শনিবার সন্ধ্যার পর বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদফতর।

    প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এ ছাড়া ৭ ফুট পর্যন্ত জলচ্ছ্বাসের আশংকা করা হচ্ছে।

    আবহাওয়ার এক বিশেষ বুলেটিনে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরেও ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ থেকে এটি এখন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে।

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ শনিবার সকাল পর্যন্ত মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে ঝোড়ো হাওয়ার আকারে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

    ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫শ’ থেকে ৭’শ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে এগিয়ে আসতে পারে।

    ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১শ’ কিলোমিটার যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বুলবুলের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে সমুদ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি ও ঢাকাতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।

    এটি বাংলাদেশ অংশে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া এবং ভারতে সাগরদ্বীপের মাঝখানে আছড়ে পড়তে পারে।

    এ এলাকায় উভয় দেশের সুন্দরবন অবস্থিত। ফলে ‘সিডরের’ মতো এবারের ঘূর্ণিঝড়টিও সুন্দরবনের ওপর দিয়ে অতিক্রম করার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ‘বুলবুল’ দিক বদলাচ্ছে।

    বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান জানান, ঘূর্ণিঝড়টি আজ সন্ধ্যার পর থেকে মাঝরাতের মধ্যে বাংলাদেশের খুলনা-বরিশাল অঞ্চলের ওপর আঘাত হানতে পারে।

    এর একটি অংশ ভারতের সুন্দরবন পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। তবে উপকূলে আঘাত হানার আগে কিছুটা দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

    বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, বুলবুলের গতি হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। এটি শনিবার মধ্যরাতের দিকে উপকূল অতিক্রমের পূর্বাভাস ছিল।

    কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ৬ ঘণ্টা আগেই এটি আছড়ে পড়তে পারে। সেই হিসাবে সন্ধ্যার পরপরই এটি আঘাত হানতে পারে। এর আগে দুপুর থেকেই এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব পড়তে শুরু করবে। ঢাকা পর্যন্ত এর প্রভাব টের পাওয়া যাবে।

    বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগের (বিএমডি বা বাংলাদেশ মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট) বিজ্ঞানীরা বলেছেন, উপকূলের ১৯ জেলায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে। এর মধ্যে ১৩ জেলা বেশি ঝুঁকিতে।

    ঝড়ের সঙ্গে উপকূলীয় জেলা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৭ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।

    এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সারা দেশে নৌযান ও ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। সেন্টমার্টিনে সহস্রাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। উপকূলে সতর্কতা বাড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক।

    আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ঘূর্ণিঝড়কে চার ভাগে ভাগ করা হলে এর ডান পাশে বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকে। এর সঙ্গে বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস থাকে। সবচেয়ে আতঙ্কের হয় যদি আঘাত হানার সময়ে সাগরে জোয়ার থাকে। তখন জলোচ্ছ্বাস বেড়ে যায়।

    আর বুয়েটের পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বুলবুল’ এখন পর্যন্ত ক্যাটাগরি-২ পর্যায়ের ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছে। এর প্রভাব পুরো দক্ষিণাঞ্চলসহ উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্যাঞ্চলে পড়বে। তবে এটাও ঠিক যে, ঘূর্ণিঝড়ের সার্বিক ব্যাপারে এভাবে আগাম পূর্বাভাস করা কঠিন।

    কেন না যে কোনো সময় এ ধরনের ঝড় গতিমুখ পরিবর্তন করতে পারে। সে কারণে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।

    বুলবুল এখনও সমুদ্রে থাকলেও স্থলভাগে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বুলবুলের কারণেই শুক্রবার দুপুর থেকে আকাশের মুখ ভার। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশ ছিল ধূসর বর্ণের মেঘে ঢাকা।

    দুপুরের পর ঢাকাসহ উপকূলীয় এলাকায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়

    আর উপকূলবর্তী এলাকায় বুলবুলের প্রভাব আরও বেশি হবে। ইতিমধ্যেই দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। বেড়েছে সমুদ্রে ঢেউয়ের উচ্চতাও।

    বিএমডি জানায়, শুক্রবার রাত ৯টায় ঘূর্ণিঝড়টির অবস্থান চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৫৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

    এদিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ভয়াবহতা ও ছোবল থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।

    তিনি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এটি ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার বেগের বাতাসের শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে।

    আপাতত এর গতিমুখ সুন্দরবনের দিকে। তবে এতে ফসল ছাড়া বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা নেই। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাতটি উপকূলীয় জেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

    জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দেশের ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত আছে। ঝড়ের ১৪ ঘণ্টা আগে লোকজন সরিয়ে নেয়া হবে। তবে এ ব্যাপারে আজ বেলা ১১টায় সচিবালয়ে প্রস্তুতি সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

    সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামালসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ভোলা জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সাত জেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে লোক সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুতি আছে।

    আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় ২০০০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জেলা-উপজেলা সংশ্লিষ্টদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

    জানা গেছে, শুক্রবার চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন সমুদ্রবন্দরে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক ছিল। তবে বহির্নোঙরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সন্ধ্যার দিকে এসে মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামা একেবারে বন্ধ করে দেয়া হয়।

    সুদূর প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট উষ্ণমণ্ডলীয় ঝড় ‘মাতমো’ গত অক্টোবরের শেষে ভিয়েতনাম হয়ে স্থলভাগে উঠে আসে। সেই ঘূর্ণিবায়ুর অবশিষ্টাংশই ইন্দোনেশিয়া পেরিয়ে ভারত মহাসাগরে এসে প্রথমে লঘুচাপে ও পরে তা ৬ নভেম্বর নিুচাপে রূপ নেয়। এরপর এখন তা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলে’ রূপ নিল।

    এর আগে গত ৩ মে উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় ফণী। সেটি পরদিন বাংলাদেশে দুর্বল হয়ে আঘাত হেনেছিল।

  • ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় পটিয়ার প্রসাশন প্রস্তুত

    ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় পটিয়ার প্রসাশন প্রস্তুত

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় পটিয়া উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

    এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ১৩টি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫২টি, মাদ্রাসা ২৩টি ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৭টি প্রস্তুত রয়েছে।

    তারমধ্যে ১৮টি মেডিকেল টিম রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় ২ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ৩০জন করে স্বেচ্ছাসেবক টিম এবং প্রত্যেক স্কুলে ২০জন সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক টিম করা হয়েছে। সরকারি ছুটি বাতিল করে সকল শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    শুক্রবার সন্ধ্যায় পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসানের নেতৃত্বে এক জরুরি সভা থেকে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

    ইউএনও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, স্থায়ী সাইক্লোন শেল্টার ছাড়াও অস্থায়ী ভিত্তিতে বিভিন্ন স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। সজাগ রাখা হয়েছে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ কমিটির সদস্যদের।

    জরুরী সভায় পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভুমি) সাব্বির রহমান সানিসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    জানা গেছে, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উপজেলায়। পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং শুরু করা হয়েছে। তবে রাতে বুলবুলের মূল গতিপথ জানার পর যদি বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকি দেখা যায় তবে ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে মূল কর্মযজ্ঞ শুরু হবে।

    পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান জানান, পটিয়ায় ১৩টি স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে ছাড়াও স্কুল, মাদ্রাসার আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির নেতৃত্বে পরিচালনা কমিটি বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ হলে সাথে সাথে যেন সেবা দেয়া যায় সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী কালের জেএসসি-জেডিসি সহ সকল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

  • আগামীকালের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা স্থগিত

    আগামীকালের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা স্থগিত

    আগামীকালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত জেএসসি পরীক্ষা ১২ নভেম্বর ও জেডিসি ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে।

    শুক্রবার (৮ নভেম্বর) শিক্ষামন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে সাতটি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলাগুলো হলো- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও ভোলা।

    আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, দ্রুততার সঙ্গে ধেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। এটি খুলনা সংলগ্ন সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকায় ১৪০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে। এতে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

    ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতোমধ্যে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত সরিয়ে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বন্দর থেকে লঞ্চ ও জাহাজ চলাচল। অন্যদিকে, চট্টগ্রামে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারে এখনো চার নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

    ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি ঘনীভূত হয়ে উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

  • ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল : ৬ নম্বর সংকেতে বন্দরে এলার্ট-৩ জারি, বন্ধ বহির্নোঙরে পণ্য খালাস

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল : ৬ নম্বর সংকেতে বন্দরে এলার্ট-৩ জারি, বন্ধ বহির্নোঙরে পণ্য খালাস

    ২৪ ঘন্টা চট্টগ্রাম ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রবল শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসছে। এর শক্তি ক্রমাগত বাড়ছেই। আগামীকাল শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল কিংবা দুপুরের দিকে বাংলাদেশে আঘাত আনতে পারে ‘বুলবুল’।

    ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আঘাত হানার আশঙ্কায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

    এর প্রভাবে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একারণে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণভাবে ‘অ্যালার্ট-৩ জারি’ করেছে।

    ফলে বহির্নোঙরে (সাগরে) বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাস বন্ধ থাকার পাশাপাশি বন্দরের মূল জেটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

    চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র শক্তি ক্রমাগত বাড়ছে। আবহাওয়া অফিস থেকেও সতর্ক সংকেত বাড়ানো হচ্ছে। এজন্য শুক্রবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

    শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি সভায় প্রথমে অ্যালার্ট-২ জারি করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ। বিকেল পর্যন্ত বন্দরের কাজ স্বাভাবিক চললেও সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতর চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য ৬ নম্বর সংকেত জারির পর কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করেছে।

    জেটিতে অবস্থানরত জাহাজগুলো ‘অ্যালার্ট-৩’ জারির সঙ্গে সঙ্গে বহির্নোঙরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সময় সব হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট, গ্যান্ট্রি ক্রেন টার্মিনাল বা শেডে নিরাপদ রেখে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

    এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বন্দরের করণীয় নির্ধারণে বিকেল ৫টা থেকে চলছে জরুরী সভা। আজ বিকেল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ১৭টি জাহাজ অবস্থান করছে এবং এসব জাহাজে মালামাল উঠানামা করছে। তবে সন্থ্যার পর ৬ নম্বর সর্তকতা জারীর পর বন্দর কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

    জানা গেছে,ঘূর্ণিঝড় “বুলবুল” মোকাবেলায় বন্দর জেলা প্রশাসন ও সিএমপি পুলিশের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে একাধিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এ মূহুর্তে বন্দর বহিনোঙরে অবস্থান করছে পণ্যবাহি ৫৫টি জাহাজ। এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।

    চট্টগ্রামে সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃস্টি হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও সাগর ক্রমান্বয়ে উত্থাল হচ্ছে।

    চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোবাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। উপকুলীয় এলাকায় সকল আশ্রয় কেন্দ্র (সাইক্লোন সেন্টার) গুলো খুলে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।

  • সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত

    সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত

    পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এ পরিণত হয়েছে।

    ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্দ রয়েছে।
    আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ কথা জানানো হয়।

    এতে বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও সামান্য উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

    এটি আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯শ’ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮শ’ ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮শ’ ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮শ’ ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

    চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

    উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।