Tag: চট্টগ্রাম বন্দর

  • চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করল সেই পাকিস্তানি জাহাজ

    চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করল সেই পাকিস্তানি জাহাজ

    চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ইয়ার্ডে ভিড়েছে পাকিস্তান থেকে আসা আলোচিত জাহাজ এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং।

    রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে ৮১১টি (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) কনটেইনার নিয়ে বন্দর জেটিতে পৌঁছায় জাহাজটি।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে শিপিং এজেন্ট কর্ণফুলী লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠানে রিজেন্সি লাইনস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আনিস-উদ-দৌলা বলেন, ‘জাহাজটিতে প্রথমবারের তুলনায় এবার কম সময়ে দ্বিগুণ কনটেইনার আসছে। এতে ব্যবসায়ীদের খরচ সাশ্রয় হয়েছে।’

    তিনি বলেন, ‘এবারও জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তান থেকে ৮১১ একক কনটেইনার পণ্য আনা হয়েছে। যার মধ্যে ৮৬ শতাংশ পণ্য পাকিস্তান এবং ১৪ শতাংশ পণ্য আরব আমিরাত থেকে এসেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১১৩টি কনটেইনার নিয়ে জাহাজটি পাকিস্তানের করাচি যায়। সেখান থেকে জাহাজে তোলা হয় আরও ৬৯৮টি কনটেইনার’।

    জাহাজটিতে কী পণ্য নিয়ে আসা হয়েছে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র ও উপ-কমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, আইজিএমের ঘোষণা অনুযায়ী জাহাজটিতে সবচেয়ে বেশি এসেছে পরিশোধিত চিনি। চিনি আছে ২৮৫ কনটেইনারে ১ লাখ ৪৮ হাজার ২০০ ব্যাগে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টন। গ্লাস তৈরির কাঁচামাল ডলোমাইট আমদানি হয়েছে ১৭১ কনটেইনার। সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল সোডা অ্যাশ ১৩৮ কনটেইনার। এছাড়া ৪৬টি কনটেইনার কাপড়ের রোল, ১৮ কনটেইনার আলু এবং ২০ কনটেইনার আখের গুড় আনা হয়েছে।

  • চট্টগ্রাম বন্দরে ‘ডিজিটাল গেট ফি’ পদ্ধতি পুরোদমে চালু

    চট্টগ্রাম বন্দরে ‘ডিজিটাল গেট ফি’ পদ্ধতি পুরোদমে চালু

    চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম অটোমেশন পদ্ধতিতে পরিচালনার উদ্যোগ অনেক বছর আগের। যার সফল দুটি উদাহরণ হলো টার্মিনাল অপারেটিং সিস্টেম ও অনলাইন ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) ইস্যু। তারই ধারাবাহিকতায় এবার বন্দরে প্রবেশকারী পণ্যবাহী সকল গাড়ির ‘ডিজিটাল গেট ফি’ পুরোদমে চালুর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালের ১১ জুলাই থেকে এটি চালুর চেষ্টা করা হলেও নানা কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে এবার সেই প্রকল্প আলোর মুখ দেখছে।

    চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে চলতি নভেম্বর মাসেই সকল সিএন্ডএফ এজেন্টদের প্রবেশকারী পরিবহন বন্দরের টস অনলাইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ‘ডিজিটাল গেট ফি’ পরিশোধ করেই বন্দরে প্রবেশ করুক। এ লক্ষ্যে ১ জুলাই বন্দরের পরিচালক (নিরাপত্তা) এর দপ্তরে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রিম ট্রেড লিমিটেড, পারাবার শিপিং, হবিগঞ্জ এগ্রো লিমিটেড, জি শিপিং লাইন্স, অমর ইন্টারন্যাশনাল নামের পাঁচ সিএন্ডএফ এজেন্টকে ‘টেস্ট এন্ড ট্রায়াল’ এর জন্য নির্বাচন করা হয়। ওইসব সিএন্ডএফ’র গেট পাস ইস্যু ও যানবাহন প্রবেশ/বাহির ব্যবস্থাপনা ‘টস অনলাইন পেমেন্ট ফর গেট টিকেট’ অটোমেশন পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হয়।

    পরবর্তীতে আরো ১৫ সিএন্ডএফ এজেন্ট (এফএফ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেসার্স সৈকত ট্রেডিং এজেন্সি, সিলভার সিন্ডিকেট, মেসার্স আলাউদ্দিন, মেসার্স কবির এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স তাসমিয়া এন্টারপ্রাইজ, মুন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, সিলভার লাইনার এজেন্সি, আবিদ এন্টারপ্রাইজ, আমিন এসোসিয়েটস, সাইদ এন্টারপ্রাইজ, আরবি ট্রেডার্স, সমির এসোসিয়েটস, ইরামিয়া এন্টারপ্রাইজ, তারেক ইন্টারন্যাশনাল) নির্বাচন করে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২০ সিএন্ডএফ এজেন্টের কার্যক্রম ‘টস অনলাইন পেমেন্ট ফর গেট টিকেট অটোমেশন’ পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হয়। চলতি নভেম্বর মাসের মধ্যে সকল সিএন্ডএফ এজেন্টের কার্যক্রম এই অটোমেশন পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হবে।

    অটোমেশন পদ্ধতিকে সাধুবাদ জানিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, অনলাইন অটোমেশনকে আমরা সব সময় স্বাগত জানাই। এটি পুরোদমে বাস্তবায়ন করা গেলে পরিবহন সংক্রান্ত কাজ অনেক সহজ ও দ্রুত হবে। একই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান ট্রাক প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব চৌধুরী জাফর আহম্মদ বলেন, বন্দরে গাড়ি প্রবেশে যানজট দূর ও গেট পাসের অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধে চট্টগ্রাম বন্দরের চালুকৃত এপসের মাধ্যমে গেট পাস ইস্যু একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এটি পূর্বের ম্যানুয়েল পদ্ধতির চেয়ে খুবই দ্রুত ও সহজ। ঘরে/অফিসে, যেকোনো জায়গায় বসে গেট পাস পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে সময় এবং অতিরিক্ত ফি’র আদায়ের হয়রানি বন্ধ হবে।

    তিনি আরো বলেন, বন্দরের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগ সফল করতে হলে মাঠ পর্যায়ে বন্দরের বিভিন্ন গেটে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীদের অনলাইন পেমেন্টের গেটপাস বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। কারণ ইতিমধ্যে কয়েকটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। অনলাইনে পেমেন্ট করে গেটপাস নেওয়ার পরও বন্দর গেটে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়।

    অনলাইন গেটপাস প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, অনলাইনে গেটপাস সংগ্রহের পদ্ধতি বন্দর অনেক আগেই চালু করেছে। তবে চালক ও হেলপারদের অনলাইনে পদ্ধতিতে গেটপাস নেওয়ার বিষয় ও পেমেন্ট দেওয়ার বিষয়টি পরিচিত করতে সময় লেগেছে। এখন সিএন্ডএফ এজেন্টদেরও তাদের নিয়োজিত গাড়িকে অনলাইনে গেটপাস নিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি ২০টি সিএন্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নভেম্বরের মধ্যেই সব সিএন্ডএফের গাড়ির ইপেমেন্ট গেটপাস ইস্যুর পরিকল্পনা রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের।

    উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১১ জুলাই থেকে অনলাইনে ফি পরিশোধের পাশাপাশি প্রথাগত নিয়মে অর্থাৎ নগদ অর্থ পরিশোধের মাধ্যমেও মালবাহী গাড়ি প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়। ওই বছর আধুনিক এ প্রক্রিয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে দু’মাসের বেশি সুযোগ দেয়া হয়েছিল। পরে ২ আগস্ট বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ থেকে চিঠি ইস্যু করে একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কোনো গাড়ি অনলাইনে আবেদন ও ফি পরিশোধ না করে বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। এটি এবছর থেকে আবারও বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।

    চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের কম্পিউটারাইজড কনটেইনার টার্মিনাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিটিএমএস) উদ্বোধনের মাধ্যমে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করে চট্টগ্রাম বন্দর। বর্তমানে সিটিএমএসকে আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে টার্মিনাল অপারেটিং সিস্টেম (টিওএস) করা হয়েছে।

    টায়ার-২ সমমানের একটি ডাটা সেন্টার স্থাপন করার ফলে নিরবচ্ছিন্নভাবে অপারেশনাল অটোমেশন সেবা নিশ্চিত করে বন্দর। ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর স্বয়ংক্রিয় ডেলিভারি পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য ছাড়ে অনলাইন ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) পদ্ধতি চালু করা হয়। এরপর সহজে এবং দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য আদান প্রদান করতে চালু হয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার। অন্যান্য ডিজিটাল সেবায় সফল হলেও ‘ডিজিটাল গেট ফি‘ বাস্তবায়নে পুরোপুরি সফল হতে পারেনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

  • তিন মিলিয়ন কনটেইনার হ্যান্ডলিং ক্লাবেই থাকছে চট্টগ্রাম বন্দর

    তিন মিলিয়ন কনটেইনার হ্যান্ডলিং ক্লাবেই থাকছে চট্টগ্রাম বন্দর

    বে টার্মিনালের মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের মাঝামাঝিতে শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।

    বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ পরিকল্পনার কথা জানান।

    বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বে টার্মিনালের মাস্টারপ্ল্যানের মোড়ক উন্মোচন করেছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বে টার্মিনালের মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব দাখিল করেছে। বে টার্মিনালের কনটেইনার টার্মিনাল ১ ও ২ নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে আগামী বছর চুক্তি সই হবে আশা করছি।

    তিনি বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে বে টার্মিনালের চতুর্থ টার্মিনাল হিসেবে গ্যাস ও অয়েল টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ টার্মিনালের জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে। লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস প্রস্তাব দিয়েছে, যা পিপিপি প্রকল্প হিসেবে প্রক্রিয়াধীন।

    ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দর স্মার্ট পোর্ট হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বমন্দার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর তিন মিলিয়ন ক্লাবে রয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০ লাখ ৪ হাজার ৫০৫ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। বছর শেষে ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে সক্ষম হবে। যা গত বছরের সমান। আশাকরি এ বছর কার্গো হ্যান্ডলিং ১২ কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে।

    অনুষ্ঠানে বন্দরের সদস্যবৃন্দসহ বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক, মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দরের প্রকল্প পরিচালক, বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • সচল হলো চট্টগ্রাম বন্দর, গভীর সমুদ্রে থাকা ৮০ জাহাজ অক্ষত

    সচল হলো চট্টগ্রাম বন্দর, গভীর সমুদ্রে থাকা ৮০ জাহাজ অক্ষত

    অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। নানা আশঙ্কা থাকলেও ঝড়ের তেমন প্রভাব পড়েনি চট্টগ্রামে। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বন্দরের বহির্নোঙরে ভেসেছিল ৮০ জাহাজ। এর মধ্যে ২০টি জেটি থেকে বের করে সেখানে পাঠানো হয়েছিল এবং ৬০টি আগে থেকে সেখানে ছিল। এগুলোর কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।

    এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে। এতে করে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অ্যালার্ট-১ জারি থাকবে। তবে এটিও শিগগিরই নামিয়ে ফেলা হবে। রোববার (১৪ মে) রাতেই অপারেশনাল কার্যক্রম এবং ডেলিভারি কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। সোমবার (১৫ মে) সকাল থেকে জেটিতে জাহাজ ভেড়ানো হবে।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বন্দরের কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। বন্দরের স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন সংকেত নেমে যাওয়ায় বন্দরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। সকালে জেটিতে জাহাজ ভিড়বে।

    তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বন্দরে অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয় এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। লাইটার জাহাজ সদরঘাট এলাকা থেকে কর্ণফুলী ব্রিজের আশেপাশের এলাকায় নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়। বন্দরের সুরক্ষা নিশ্চিতে জেটিতে থাকা ২০টি বড় জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আগে থেকে থাকা ৬০টিসহ মোট ৮০টি জাহাজ ছিল। এগুলোর কোনো সমস্যা হয়নি।

    এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ ২২ নম্বর বুলেটিনে বলা হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (১৪ মে) সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে এবং দুর্বল হয়ে মিয়ানমারের সিটুয়েতে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি স্থলভাগের অভ্যন্তরে আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।

    কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

    উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

  • চট্টগ্রাম বন্দরে রেড এলার্ট-৪ জারি

    চট্টগ্রাম বন্দরে রেড এলার্ট-৪ জারি

    ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করায় সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব অ্যালার্ট-৪ জারি করেছে। ফলে বন্দরের ইয়ার্ড ও জেটির সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

    চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক শুক্রবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

    আবহাওয়া অধিদপ্তর ৮ নম্বর সতর্ক সংকেতে জারিরর পরপরই রেড এলার্ট-৪ জারি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ থেকে পণ্য উঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বন্দরের জেটিতে অবস্থানরত মাদারভেসেলকে নিরাপদ স্থানে চলে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া বন্দরে অবস্থানরত লাইটার জাহাজগুলোকে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে। ফলে জাহাজগুলো নির্দেশনা অনুযায়ী নিরাপদ স্থানে চলে যেতে শুরু করে।

    এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বন্দরের জেটিতে অপারেশনাল ইকুইপমেন্ট ভালো করে বেঁধে নিরাপদে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

    ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বন্দর কর্তৃপক্ষ চারটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে বলে বন্দরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

  • ঘূর্ণিঝড় মোখা: চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যালার্ট-২ জারি

    ঘূর্ণিঝড় মোখা: চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যালার্ট-২ জারি

    ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ‘অ্যালার্ট-২’ জারি করেছে।

    শুক্রবার (১২ মে) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক।

    তিনি জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেতের ওপর নির্ভর করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অ্যালার্ট জারি করে থাকে। বর্তমানে বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘অ্যালার্ট-২’ জারি করেছে।

    সাইক্লোন স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা আহ্বান করেছে। একই সঙ্গে লাইটার জাহাজগুলোকে সদরঘাট থেকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকার দিকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
    জেটি ও বহির্নোঙরে থাকা জাহাজগুলোকে ইঞ্জিন চালু রাখতে বলা হয়েছে যাতে তাৎক্ষণিক মুভমেন্ট করতে পারে। বন্দরের নিজস্ব জাহাজগুলোকে নিরাপদে থেকে ডাবল মুরিং করতে বলা হয়েছে।

    এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা সংকেত বাড়লে পর্যায়ক্রমে জাহাজ চলাচল ও পণ্য খালাস বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে বন্দর জেটি, চ্যানেল, হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

    মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৩.৯° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.২°পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ (১২ মে) দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০০৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।

    অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

    চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ০২ (দুই) নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিদ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

  • চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল

    চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল

    চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। তিনি বর্তমানে পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

    বুধবার (১২ এপ্রিল) সরকারের জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আব্দুল্লাহ্ আরিফ মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানা গেছে।

    একই আদেশে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মো. শাহজাহানকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অপর দিকে পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান হিসেবে রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

    চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নতুন চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহায়েল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নির্বাহী শাখায় ১ জানুয়ারি ১৯৮৮ সালে কমিশন লাভ করেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি নৌবাহিনীর জাহাজ, ঘাঁটি ও সদর দফতরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পেশাগত প্রশিক্ষণে অত্যন্ত কর্তৃত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে নৌবাহিনীর এনইউপি পদক লাভ করেন।

    তিনি সততার সঙ্গে অসামান্য সেবা ও অবদান রাখায় রাষ্ট্রীয় শুদ্ধাচার পদক ও নৌ প্রদানের প্রশংসা পদক অর্জন করেন।

    রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহায়েল ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এবং স্টাফ কলেজের ফ্যাকালটি (ডাইরেক্টিং স্টাফ এবং সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর) হিসাবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এলিট ফোর্স র‍্যাব-এর সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভূষিত করা হয়।

    এছাড়া তিনি ডিজিএফআই সদর দফতরে কাউন্টার টেরোরিজম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (সিটিআইবি) এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ক ব্যুরোতে (আইএবি) কর্নেল জিএস হিসাবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

  • চট্টগ্রাম বন্দরে এক কনটেইনার ভারতীয় শাড়ি-লেহেঙ্গা আটক

    চট্টগ্রাম বন্দরে এক কনটেইনার ভারতীয় শাড়ি-লেহেঙ্গা আটক

    চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে সোডা অ্যাশ লাইটের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আনা এক কনটেইনার শাড়ি ও লেহেঙ্গা আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে করে প্রায় এক কোটি ৪১ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানায় কাস্টমস কর্মকর্তারা।

    সোমবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাস্টমস সূত্র জানায়, ফেনী সদর উপজেলার সওদাগর পট্টির এলাকার আমদানিকারক আজিজ এন্টারপ্রাইজ ভারতের কলকাতা থেকে চালানটি আমদানি করেছে। কথা ছিল এক কনটেইনার সোডা অ্যাশ লাইট আমদানি করা হবে। কিন্তু মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির আগাম তথ্য পেয়ে কনটেইনারটি জাহাজে থাকা অবস্থায় ৪ এপ্রিল অ্যাসাকুইডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল লক করে দেয় কাস্টমস হাউসের এআইআর শাখা। পরে কনটেইনারটি বন্দরে পৌঁছালে বিশেষ হেফাজতে রাখা হয়।

    সোমবার (১০ এপ্রিল) কনটেইনারটি ফোর্স কিপ ডাউন করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে কাস্টমস হাউসের এআইআর শাখার কর্মকর্তারা। এতে কনটেইনারটিতে ১২ হাজার ৫৫০ পিস বেনারসি শাড়ি, ১ হাজার ১৩৯ পিস জর্জেট শাড়ি ও ৪০৩ পিস লেহেঙ্গা পাওয়া যায়। এ জাতীয় ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গার ওপর উচ্চ শুল্কহার প্রযোজ্য থাকায় আলোচ্য পণ্যচালানটিতে আমদানিকৃত ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গার বিপরীতে জড়িত রাজস্বের পরিমাণ প্রায় এক কোটি ৪১ লাখ টাকা।

    চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার (এআইআর) মো. সাইফুল হক বলেন, ঈদুল ফিতরে ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। রাজস্ব ফাঁকির মাধ্যমে অধিক মুনাফার উদ্দেশ্যে পণ্যচালানটি আমদানি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্বল্প মূল্যের সোডা অ্যাশের পরিবর্তে মিথ্যা ঘোষণায় উচ্চ মূল্যের ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গা আমদানি করায় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা মানি লন্ডারিং করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হবে।

     

  • চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে ২শ মিটার লম্বা জাহাজ

    চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে ২শ মিটার লম্বা জাহাজ

    চট্টগ্রাম বন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বড় জাহাজ বার্থিং দেয়া শুরু হয়েছে। দুটি ট্রায়াল বার্থিং দেওয়ার পর সবকিছু ঠিক থাকায় গতকাল থেকে ২শ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের বড় জাহাজ ভিড়ানোর সার্কুলার জারি করা হয়। এই বন্দরে যে বড় জাহাজ বার্থিং দেওয়া যায় এই তথ্য পৃথিবীর সব বন্দর এবং জাহাজ মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে গেছে। প্রতিষ্ঠার ১৩৫ বছর পর বড় জাহাজ ভিড়ানোর কার্যক্রম শুরু হলো। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যে পরিবহন খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি গতি আসবে।

    সূত্রে জানা যায়, ১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল যাত্রা করা চট্টগ্রাম বন্দরের বয়স ইতোমধ্যে ১৩৫ বছর গত হয়েছে। মাত্র দুটি মুরিং টাইপের জেটি নিয়ে যে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল দিনে দিনে তা বিশাল কর্মযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য তথা শিপিং বাণিজ্যের সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করে চট্টগ্রাম বন্দর। বছরে চার হাজারের বেশি জাহাজ আনাগোনা করে এই বন্দরে। গত বছর ৩২ লাখ টিইইউএসের বেশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছে।

    বড় জাহাজ বার্থিং দেয়ার সুযোগ থাকলেও দুর্ঘটনা এড়াতে ড্রাফট ও ল্যান্থের ব্যাপারে সতর্ক থেকে জাহাজ বার্থিং অনুমোদন দিত বন্দর কর্তৃপক্ষ। সত্তরের দশকে চট্টগ্রাম বন্দরে ১৬০ মিটার লম্বা ও ৭.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানো হতো। ১৯৮০ সালে এসে প্রথম ১৭০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং দেয়া হয়। ১৯৯০ সালে ড্রাফট না বাড়িয়ে ল্যান্থ বাড়িয়ে ১৮০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং দেয়া শুরু হয়। ১৯৯৫ সালে এসে শুরু হয় ১৮৬ মিটার লম্বা এবং ৯.২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। ২০১৪ সালে বার্থিং দেয়া হয় ১৯০ মিটার লম্বা এবং ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ।

    প্রায় দশ বছর পর নতুন করে ২০০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হলো। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়েলিংফোর্ডের সমীক্ষা রিপোর্টের পর বন্দরে বড় জাহাজ বার্থিং দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বড় জাহাজ ভিড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।

    ইতোমধ্যে দুই দফায় ট্রায়াল রান পরিচালিত হয়। প্রথম জাহাজ এমভি কমন এটলাস বার্থিং দেওয়া হয় গত ১৫ জানুয়ারি বন্দরের সিসিটি জেটিতে। দ্বিতীয় জাহাজ এমভি মেঘনা ভিক্টোরি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বার্থিং দেওয়া হয় পিসিটি। ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ দুটির ট্রায়াল রান সম্পন্ন হওয়ার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় জাহাজ ভিড়ানোর সার্কুলার জারি করে। গতকাল বন্দরের মেরিন ডিপার্টমেন্ট থেকে জারি করা ০৯/২০২৩ সার্কুলারমূলে এখন থেকে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানোর ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে বন্দরের বোর্ড সভায় বড় জাহাজ ভিড়ানোর ব্যাপারটি অনুমোদিত হয়।

    শুরুতে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল (এনসিটি), চিটাগাং কন্টেনার টার্মিনাল এবং ১০, ১১ ও ১২ নম্বর জেটিতে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২শ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়ানোর কার্যক্রম শুরু হবে। বন্দর সূত্র বলেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে এতদিন যে ধরনের জাহাজ ভিড়ানো হতো শিপিং বাণিজ্যে সেগুলোকে মাঝারি আকৃতির জাহাজ বলা হয়। ১৯০ মিটার লম্বা বা ৯.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজে ২২শ থেকে ২৬শ টিইউএএস কন্টেনার বোঝাই করা যায়। ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০শ মিটার লম্বা জাহাজকে বলা হয় বড় জাহাজ। এগুলোতে ৩৮শ টিইইউএস পর্যন্ত কন্টেনার বোঝাই করা যায়। এর ফলে গড়ে ১ হাজার কন্টেনার বাড়তি পণ্য বোঝাই করার সুযোগ তৈরি হয়েছে

    একইভাবে বাল্ক কার্গোবাহী জাহাজগুলোর ক্ষেত্রেও ১০ হাজার টন বেশি পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হবে। কন্টেনার এবং খোলা পণ্য বেশি পরিবহনের সুযোগ তৈরি হওয়ায় আমদানি–রপ্তানি পণ্য পরিবহনে খরচ কমবে। একইভাবে বেশি কন্টেনার এবং পণ্য ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হওয়ায় আন্তর্জাতিক শিপিং বাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়বে। এতে পণ্য পরিবহনে গতি আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

    চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, এই উদ্যোগ দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য তথা কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে প্রত্যাশিত গতি আনবে। পণ্য পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন।

  • ১৩৫ বছরে প্রথমবারের মতো ১০ মিটার ড্রাফট জাহাজ ভিড়লো চট্টগ্রাম বন্দরে

    ১৩৫ বছরে প্রথমবারের মতো ১০ মিটার ড্রাফট জাহাজ ভিড়লো চট্টগ্রাম বন্দরে

    চট্টগ্রাম বন্দর প্রতিষ্ঠার ১৩৫ বছর পর ভিড়েছে বড় জাহাজ। বড় জাহাজ ভেড়ানোর ফলে সক্ষমতা অর্জন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। এছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়বে। বন্দর কর্তৃপক্ষের বড় জাহাজ ভিড়ানোর এই উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিসহ আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

    সোমবার দুপুরে বেলুন উড়িয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি (চট্টগ্রাম কন্টেইনার টার্মিনাল)-এর ১ নম্বর জেটিতে ভিড়ানো হবে ১০ মিটার দৈর্ঘ্যের ‘কমন এটলাস’ নামের কার্গো জাহাজটির ভিড়ানোর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের ভাণ্ডার ভবন এলাকায় নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।

    জানা যায়, মার্শাল আইল্যান্ডসের পতাকাবাহী ‘কমন এটলাস’ নামের কার্গো জাহাজটি মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা ৬০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি নিয়ে ব্রাজিলের সন্তোস বন্দর থেকে গত ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছায়।

    সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরে এতদিন যে ধরনের জাহাজ ভিড়ানো হতো শিপিং বাণিজ্যে সেগুলোকে মাঝারি আকৃতির জাহাজ বলা হয়। ১৯০ মিটার লম্বা বা ৯.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজে ২২শ থেকে ২৬শ টিইউএএস কন্টেনার বোঝাই করা যায়। মাত্র আধা মিটার ড্রাফট বৃদ্ধি এবং ১০ মিটার ল্যান্থ বৃদ্ধি করে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২০০শ মিটার ল্যান্থের জাহাজে ৩৮শ টিইইউএস পর্যন্ত কন্টেনার বোঝাই করা যায়। ১০ মিটার ল্যান্থ বাড়ার কারণে গড়ে ১ হাজার কন্টেনার বাড়তি পণ্য বোঝাই করার সুযোগ তৈরি করবে। দুইশ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজকে ‘বড়’ জাহাজ বিবেচনা করা হয়। চট্টগাম বন্দরে আজ থেকে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২শ মিটার ল্যান্থের জাহাজ ভিড়বে। যেখানে খোলা পণ্যবাহী জাহাজে বর্তমানের তুলনায় গড়ে ১০ হাজার টনের বেশি খোলা পণ্য এবং গড়ে ১ হাজার টিইইউএস কন্টেনার বেশি পরিবহন করা সম্ভব হবে। আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যে তা গতি বাড়বে। পাশাপাশি পণ্য পরিবহন খরচ কমাবে।

    বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দর জেটিতে সরাসরি ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানোর ফলে কন্টেইনার জাহাজের ক্ষেত্রে ১১শ টিইইউএস কন্টেইনার বেশি পরিবহন করা যাবে। পাশাপাশি, বাল্ক কার্গো জাহাজে ১৫ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন খোলা পণ্য বেশি পরিবহন করা যাবে। ফলে আমদানিকারকরা সরাসরি জেটিতেই পণ্য খালাস করে নিতে পারবে। ৯ থেকে ১৩ নম্বর জেটি, সিসিটি ও এনসিটি জেটিতে সরাসরি বড় জাহাজগুলো ভিড়তে পারবে। এতে জাহাজ জটের কোন শঙ্কা থাকছে না।

    জানা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে বন্দর চ্যানেলে গভীরতা কম থাকায় সাড় ৯ মিটারের বেশি গভীরতার জাহাজ বন্দরের মূল জেটিতে ভিড়তে পারতো না। তাই এতদিন খোলা পণ্যবাহী বিশেষ করে বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল, গম, সার, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, চিনি, সার, খাদ্য পণ্য, স্ক্র্যাপ, কয়লা সহ বিভিন্ন পণ্য বহিনোঙরে ছোট আকৃতির (লাইটার) জাহাজে পণ্য খালাস করতে হতো।

    বন্দরের বহিনোঙর থেকে বছরে প্রায় ৫ কোটি টন পণ্য পরিবহন হয়। এরমধ্যে ৭০ ভাগ পণ্য বাল্ক জাহাজ থেকে ছোট ছোট লাইটারেজ জাহাজে খালাস করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। বাল্ক জাহাজে একসঙ্গে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টন পণ্য পরিবহন হয়। আর লাইটার জাহাজের ধারণ ক্ষমতা ১ হাজার থেকে ২ হাজার টন পর্যন্ত। একটি বড় জাহাজ থেকে পণ্য নিতে ২০ থেকে ২৫টি লাইটারের প্রয়োজন। বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৮০০ লাইটার জাহাজ পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া বাকি ৩০ ভাগ কনটেইনার পণ্য টাগবোটের সাহায্যে সরাসরি আনা হয় বন্দরের জেটিতে।

    চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বড় জাহাজ ভিড়ানোর কার্যক্রম শুরু করছি। শুরুতে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল, চিটাগাং কন্টেনার টার্মিনাল এবং ১০, ১১ ও ১২ নম্বর জেটিতে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২শ মিটার লম্বা বড় জাহাজ ভিড়ানোর কার্যক্রম শুরু হবে, যা দেশের কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ে ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

    উল্লেখ্য, ১৮৮৭ সালে পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট প্রণয়ন করে ব্রিটিশ সরকার। ১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল তা কার্যকর হয়। ইতোমধ্যে ১৩৫ বছর গত হয়েছে। মাত্র দুটি মুরিং টাইপের জেটি নিয়ে যে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল দিনে দিনে তা বিশাল কর্মযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর বর্তমানে দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যের সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করে। বছরে গড়ে চার হাজারের বেশি জাহাজের আনাগোনা এই বন্দরে। গত বছর ৩২ লাখ টিইইউএসের বেশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। সত্তরের দশকে চট্টগ্রাম বন্দরে ১৬০ মিটার লম্বা এবং ৭.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানো হতো। ১৯৮০ সালে এসে প্রথম ১৭০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং দেয়া হয়। ১৯৯০ সালে এসে ড্রাফট না বাড়িয়ে ল্যান্থ বাড়িয়ে ১৮০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং দেয়া শুরু হয়। ১৯৯৫ সালে এসে শুরু হয় ১৮৬ মিটার লম্বা এবং ৯.২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। ২০১৪ সালে এসে বার্থিং দেয়া হয় ১৯০ মিটার লম্বা এবং ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। প্রায় দশ বছর পর আজ থেকে নতুন করে ২০০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানোর কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

  • চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে নাশকতার আশংকা

    চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে নাশকতার আশংকা

    চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে নাশকতার আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারি একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এ আশংকার বিষয়টি উঠে এসেছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বন্দরের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ১৩টি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে ১৯ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়। এছাড়া বন্দর এলাকা এবং জ্বালানি তেলের ডিপোসহ স্পর্শকাতর এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

    আমদানি রপ্তানি ব্যয় বাড়ার সংকটকে পুঁজি করে একটি মহল পরিস্থিতি উস্কে দিতে পারে বলে ধারন করা হচ্ছে। এ কাজে বন্দরের শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক ও ইপিজেড শ্রমিকদের কাজে লাগাতে পারে মহলটি।

    এছাড়া আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে বন্দরে নাশকতার আশঙ্কা আছে। নানা ধরনের পণ্যের সংকট দেখা দিতে পারে। আর সরকারবিরোধী চক্র এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে। এটা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পরে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বন্দরে মদ, সিগারেটের একাধিক চালান ধরা পড়ছে। এর মানে, জালিয়াতি করে বন্দর দিয়ে অনেক চালান বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য বিপজ্জনক পণ্যের চালানও বেরিয়ে যেতে পারে।

    বন্দরের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো অফডক ইনল্যান্ড ডিপো থাকার কথা নয়। কিন্তু চট্টগ্রামে অবস্থিত ১৯টি কনটেইনার ডিপোর মধ্যে প্রায় সবগুলোই বন্দরের একেবারে কাছাকাছি এলাকায়। বিপদজ্জনক দ্রব্য ও কাভার্ডভ্যানের যত্রতত্র বিচরণের কারণে বন্দর এলাকায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

    বন্দরের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন ৬’শ ৫০ জন। এছাড়া এক হাজার ৫০ জন আনসার, ২’শ সেনা সদস্য, ২০ পুলিশ সদস্য (সার্বক্ষণিক সহায়তা দেন ৫’শ ৯৩ জন) ও নৌবাহিনীর একজন সদস্য রয়েছে। এছাড়া বন্দরের মালামালবাহী পরিবহণগুলোর ট্রাফিক ব্যবস্থায় প্রতিদিন ২’শ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।

    বন্দরের অভ্যন্তরে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার জন্য অফিস রুম থাকলেও বিশেষ একটি সংস্থার জন্য রুম বরাদ্দ নেই। এ বিষয়ে বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে বারবার আবেদন করেও ফল আসেনি। তাই বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ওই গোয়েন্দা সংস্থা যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

    প্রতিবেদনে বন্দরের নানা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, প্রতিবছর দুই ঈদের আগে জাহাজ জট হয়। জাহাজ জটের কারণে আমদানিকারকদের পণ্য পেতে সময় লাগে। বর্তমান পণ্য আমদানি কমতির দিকে। সরকার বিলাসীপণ্য ও তুলনামূলক কম প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করায় আমদানি কিছুটা কমছে। তবে শিল্পের ও খাদ্যপণ্যের আমদানি বাড়ছে।

    প্রতিবেদনে পতেঙ্গা টার্মিনাল নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত বন্দর ব্যবস্থাপনা, মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ও রপ্তানির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। বলা হয়, মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানিতে ধরা খাওয়ার পর ব্যবসায়ীরা সব সময় অস্বীকার করেন। এ কারণে বিআইএন, আইপি ও এলসি থাকলেও প্রকৃত অপরধীদের আইনের আওতায় আনতে বেগ পেতে হয়।

    প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্দর শ্রমিকরা নোঙ্গর অপারেটর ও সাইফ পাওয়ারটেক অপারেটর কোম্পানি কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। সাইফ পাওয়ারটেক ২০০৮ সাল থেকে একচেটিয়াভাবে বন্দর অপারেটর হিসাবে কাজ করছে। তারাই একমাত্র বন্দর অপারেটর, যারা বর্তমানে প্রতিযোগী কাউকে কাজের অনুমতি দিচ্ছে না।

    বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি, বন্দরের অনিয়ম বন্ধ, চোরাচালান তালিকাভুক্ত সিএনএফ এজেন্ট সিন্ডিকেট দমন, বন্দরের অফিসিয়াল কাজে ব্যবহৃত সার্ভারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কাস্টম হাউজ সপ্তাহের ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সুপারিশ করা হয়।

    বন্দরে বহিরাগতরা প্রবেশ করে চুরিসহ নানা ধরনের অপকর্ম চালাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে চোর সন্দেহে বন্দরের অভ্যন্তরে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে।

    বন্দরে কে যাচ্ছে, কে আসছে এবং কতক্ষণ অবস্থান করছে সে তথ্য সংরক্ষণের সুব্যবস্থাপনা বন্দর কর্তৃপক্ষের নেই। কনটেইনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সমস্যা হলে অটো অ্যালার্ম ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।

    চট্টগ্রাম বন্দরের ধারণ ক্ষমতা ৫৩২ হাজার টিইউইএস এবং দৈনিক মালামাল লোড-আনলোডের সক্ষমতা ৩৫০০ টিইউইএস। পাঁচ হাজার ৫০০ জনবলের বিপরীতে বন্দরের কনটেইনার জেটি আছে ১৩টি। বন্দরে একসঙ্গে জাহাজ ভেড়ানো যায় ১১টি।

    আশংকার বিষয়ে বন্দর সচিব মো: ওমর ফারুক ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ কে বলেন, আমরা ইতিমধ্য বিভিন্ন সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রতিবেদন সম্পর্কে অবগত হয়েছি, এটি খুবই স্পর্শকাতর বিষয়, তারা কিসের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন দিয়েছেন সেইটা আমরা জানিনা এই ব্যাপারে আমাদের সাথে কোন আলাপ আলোচনা ও হয়নি তবু আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

    জে-আর

  • চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভিস জেটিতে পৌঁছলো অত্যাধুনিক দুই টাগবোট

    চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভিস জেটিতে পৌঁছলো অত্যাধুনিক দুই টাগবোট

    চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের বহরে যুক্ত হলো ‘কাণ্ডারী-৩’ ও ‘কাণ্ডারী-৪’ নামে দুটি অত্যাধুনিক টাগবোট। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকেলে টাগবোট দুটি চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভিস জেটিতে পৌঁছায়।

    চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, ৫০০০ বিএইচপি বা ৭০ টন বোলার্ড পুলের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন নতুন টাগবোট দুটি ১২০ মিটার দূর থেকেও জাহাজ ও জেটির আগুন নেভাতে সক্ষম এবং নদীতে তৈল দূষণ হলে বিশেষ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়ে দূষণ মোকাবেলা করতে পারবে।

    টাগ দুটিতে আধুনিক রাডার, জিপিএস, ইকো সাউন্ডার, অটো পাইলট, ইউএমএস, বেতার ও স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়াতেও টাগবোটগুলো চলতে সক্ষম।

    চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজের নিরাপত্তা বৃদ্ধি, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জাহাজগুলোকে সহায়তা প্রদান করা, কর্ণফুলী চ্যানেলের নৌ সংরক্ষণে সহায়তা প্রদান করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

    বন্দর সূত্র আরও জানায়, গত ১৪ মার্চ ১৪৫ কোটি ২২ লাখ ৫৬ হাজার টাকায় চীনা প্রতিষ্ঠান চিঅয় লি শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তির কাজ সম্পন্ন করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের ১ নম্বর বার্থের নতুন তৈরি করা সার্ভিস জেটিতে টাগবোট দুইটি রাখা হবে। নতুন টাগ দুইটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে বন্দরের নৌ বিভাগের ২০ জন মাস্টার, লস্কর, ইডিএল, ইডি নিয়ে ডেক সাইড ও ইঞ্জিন সাইডের টিম তৈরি করা হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও শেষ হয়েছে।

    1. চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে ৮টি টাগবোট রয়েছে। এগুলো সাধারণ প্রযুক্তির। বন্দরের বিদ্যমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে আধুনিক ও অধিক শক্তিশালী টাগবোটের প্রয়োজন বিবেচনায় এই টাগবোট দুটি সংগ্রহ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। বড় জাহাজগুলো জেটিতে আনতে বা ফেরত নিয়ে টাগবোটের বিকল্প নেই। এই টাগবোট দুটি যুক্ত হওয়ায় বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম আরো বেশি গতিশীল হবে বলে জানান তিনি।