Tag: চট্টলবীর

  • চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরী গণমানুষের নেতা ছিলেন: রেজাউল

    চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরী গণমানুষের নেতা ছিলেন: রেজাউল

    নগরীর মোমিন রোডস্থ প্রিয়া কমিউনিটি সেন্টারে সম্মিলিত বৌদ্ধ নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ৩ বারের সাবেক সফল মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি চট্টলবীর এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা টিংকু বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সনত কুমার বড়ুয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়।

    সভার শুরুতে চট্টলবীরের প্রতি দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

    স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন-চিরজাগ্রত, মৃতুঞ্জয়ী মহিউদ্দিন চৌধুরী মানবসেবক ছিলেন বলেই সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের কাছে চট্টগ্রাম তথা সারা বাংলাদেশের কাছে চির স্মরণীয় হয়ে আছেন। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের চট্টগ্রাম শহরে কোন সার্বজনীন শ্মশান ছিল না। আপনাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের শবদাহ করার জন্য চান্দগাঁওয়ে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শ্মাশান নির্মাণ করেছিলেন। সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত নাগরিকদের সুখশান্তির কথা চিন্তা করে হোল্ডিং টেক্স বাড়ায়নি। আমিও আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রদাঙ্ক অনুসরণ করব। যুব সমাজকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত রাখতে নিজের জীবন বাজি রেখে হলেও প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাব।

    স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া, একুশে পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহ-সভাপতি ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ডা. বিদুৎ বড়ুয়া, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন পুত্র মো. বোরহান উদ্দিন সালেহীন, জামাল খান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিথুন বড়ুয়া, বৌদ্ধ সমিতি যুব’র সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার বড়ুয়া, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ যুব’র সাধারণ সম্পাদক ড. সুব্রত বরণ বড়ুয়া, সাবেক ছাত্রনেতা ভিপি উত্তম কুমার বড়ুয়া, যুবলীগ নেতা ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের সদস্য স্বরূপ বিকাশ বড়ুয়া বিতান, প্রণব রাজ বড়ুয়া, নগর যুবলীগ নেতা কাজল প্রিয় বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌ: সীমান্ত বড়ুয়া, প্রকৌ: পলাশ বড়ুয়া, সীবলী সংসদ সভাপতি বিকাশ বড়ুয়া, নারী নেত্রী রেবা বড়ুয়া, ছাত্রলীগ নেতা ছোটন বড়ুয়া রুহিত, সম্যক শুভ বড়ুয়া প্রমুখ।

    স্মরণ সভায় বৌদ্ধ সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৌ: পরিতোষ কুমার বড়ুয়া, স্বদেশ কুসুম চৌধুরী, বিনয় ভুষণ বড়ুয়া, প্রাক্তন অধ্যক্ষ দীপক বড়ুয়া, সংগঠক প্রীতিশ রঞ্জন বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শচী ভূষণ বড়ুয়া, কাতালগঞ্জ নবপণ্ডিত বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমলেন্দু বিকাশ বড়ুয়া, মোমিন রোড সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি অলক বড়ুয়া বিটু, প্রকৌ: বিধান চন্দ্র বড়ুয়া, বৌদ্ধ নেতা লোকপ্রিয় বড়ুয়া, রঞ্জন রশ্মী বড়ুয়া, অতীশ দীপঙ্কর সভাপতি সনত বড়ুয়া, সংগঠক সূর্যসেন বড়ুয়া শঙ্কু, তাপস কুমার বড়ুয়া, বিধান বড়ুয়া, চন্দন বড়ুয়া, বৌদ্ধ নারী নেত্রী রেখা বড়ুয়া, পূর্ণিমা বড়ুয়া, দোলা চৌধুরী, শুভ্রমনিয়াম বড়ুয়া, ত্রিরত্ন সাধারণ সম্পাদক কমল বড়ুয়া, দোলন বড়ুয়া প্রমুখ।

    সভায় আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ বলেন সর্বজনের সেবক মানবতাবাদী বলেই চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরী সকল সম্প্রদায়ের কাছে চিরস্মরণীয় মৃত্যুঞ্জয়ী একটি নাম।

  • আজ চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী

    আজ চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী

    চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

    এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে নগর আওয়ামী লীগ ও তার পরিবার। কর্মসূচির শুরুতে আজ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় নগরের চশমাহিল কবরস্থানে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জিয়ারত করা হবে।

    তাঁর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মরহুমের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সকাল ১০টায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (আইসিসি) খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, সকাল ১১টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

    এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভার্চুয়ালি তার বাসভবন ঢাকা থেকে অংশ নেবেন।

    সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী।

    এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতাকর্মী, থানা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীন সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

    পাঁচ দশকেরও বেশি সময় নানা রাজনৈতিক সংকটে সম্ভাবনায় চট্টগ্রামের মানুষের পাশে থেকে এই আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে উঠেছিলেন ‘চট্টল বীর’। তাঁর মৃত্যুতে প্রশংসা ঝরেছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কণ্ঠেও। দল মত নির্বিশেষে সকলের নেতা হয়ে উঠেছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ করে চট্টগ্রামের স্বার্থ ও সংকটের তাঁর অবদান চট্টলবাসী চিরদিন মনে রাখবে। প্রিয় নেতা মৃত্যুর খবর শুনে ২০১৭ সালের এইদিনে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল চট্টলার পুণ্যভূমিতে। তাঁর জানাজায় হাজির হয়ে শেষ বিদায় জানিয়েছিল লাখো জনতা। দল মত নির্বিশেষে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে সেদিনের জানাজা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল।

    ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর রাউজানের গহিরা গ্রামের বক্স আলী চৌধুরী বাড়িতে জন্ম মহিউদ্দিন চৌধুরীর। বাবা হোসেন আহমদ চৌধুরী ছিলেন রেলওয়ে কর্মকর্তা। মা বেদুরা বেগম।

    ছাত্রাবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া মহিউদ্দিন ১৯৬২ সালে এসএসসি, ১৯৬৫ সালে এইচএসসি এবং ১৯৬৭ সালে ডিগ্রি পাস করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং পরে আইন কলেজে ভর্তি হলেও শেষ করেননি। জড়িয়ে পড়েন ছাত্র আন্দোলনে।

    ১৯৬৮ ও ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা মহিউদ্দিন একাত্তরে গঠন করেন ‘জয় বাংলা’ বাহিনী। গ্রেফতার হন পাকিস্তানি সেনাদের হাতে। পাগলের অভিনয় করে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে পালিয়ে যান ভারতে। সম্মুখ সমরের যোদ্ধা মহিউদ্দিন স্বাধীনতার পর শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হন। পরে যুবলীগের নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ পান। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মহিউদ্দিন চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের শীর্ষ পদে ছিলেন।

    পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলে প্রতিশোধ নিতে মৌলভী সৈয়দের নেতৃত্বে ‘মুজিব বাহিনী’ গঠন করেন। ওই সময় ‘চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলা’র আসামি করা হলে তিনি কলকাতায় চলে যান। এরপর ১৯৭৮ সালে দেশে ফেরেন।

    ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর বেওয়ারিশ মরদেহ নিজ কাঁধে বহন করে দাফন ও সৎকার করে চট্টগ্রামের গণমানুষের নেতা হিসেবে পরিচিতি পান মহিউদ্দিন চৌধুরী।

    চট্টগ্রামে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, বন্দর রক্ষা আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।

    পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে ছিল অনেক অর্জন। ১৯৯৪ সালে প্রথমবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী হয়েই মহিউদ্দিন চৌধুরী বিজয়ী হন। ২০০০ সালে দ্বিতীয় দফায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০০৫ সালে তৃতীয় দফায় মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। তিন তিনবার নির্বাচিত হয়ে টানা ১৭ বছর তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ছিলেন। তাঁর আমলে নগরের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সেবা এখনো চট্টলবাসী ভুলতে পারে না।

    ২০১৫ সালে আবার মেয়র প্রার্থী হলেও দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে তিনি মেয়র প্রার্থী থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন। তবে বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরী মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। যে মাসে তাঁর জন্ম, সে বিজয়ের মাসে এই মহান বীরের মৃত্যু এখনো চিরস্মরণীয় হয়ে আছে চট্টলবাসীর মনে।

    ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর হৃদযন্ত্র ও কিডনির জটিলতায় নগরের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।