চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেছেন, নগরবাসীর দ্বারপ্রান্তে সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে চসিকের উদ্যোগে দ্বিতীয় দফায় আরো ২টি করোনা টেস্টিং বুথ উদ্বোধন করা হলো।
টেস্ট করতে আসা নগরবসীর উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, নমুনা পরীক্ষার ফল পেতে অহেতুক উদগ্রীব হবেন না। রোগী প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে স্বংক্রীয়ভাবে ফলাফল চলে যাবে। তারপরও নিয়মানুযায়ী নমুনা সংগ্রহের পর নির্দ্দিষ্ট ল্যাবে যাবে পরীক্ষার জন্য। ল্যাবে পরীক্ষাকৃত নমুনার ফল দেয়া হবে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের কাছে সিভিল সার্জন নির্দিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দিবেন। এটি খুবই তড়িৎগতিতে হয়ে থাকে।
প্রসঙ্গক্রমে মেয়র বলেন, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু কিছু ফার্মেসীতে বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় সারা দেশ যখন একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করছে তখন কতিপয় কিছু লোক মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে কয়েকগুণ বেশি মূল্যে ওষুধ বিক্রয় করছে, যা অনাকাক্সিক্ষত ও অমানবিক। তাদের এই অমানবিক সমাজবিরোধী কাজ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি রাখে। ওষুধের দামে কারসাজির অপরাধী চক্রকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে প্রসাশন। এ ধরনের অমানবিক কাজের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। তাই মানুষকে হয়রানী থেকে বিরত থাকার আহবান মেয়রের।
আজ সকালে নগরীর বিবিরহাটস্থ ওয়ার্ড অফিস ও চান্দগাঁওস্থ হামিদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করোনাভাইরাস নমুনা সংগ্রহ বুথ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
বিবিরহাটস্থ ওয়ার্ড অফিস করোনা টেস্টিং বুথ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী এবং হামিদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় করোনা টেস্টিং বুথ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু।
এসময় মেয়রের একান্ত সচিব মো. মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, ব্র্যাকের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. হানিফ উদ্দিন, ব্র্যাকের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ইয়াছিন মিয়া, মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য বেলাল আহমদ, মামুনুর রশিদ মামুন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
নমুনা পরীক্ষায় সাধারণ উপসর্গ নিয়ে ভীত না হয়ে মেয়র নগরবাসীকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন এইসব বুথে আপনারা অহেতুক ভীড় এড়িয়ে চলুন। প্রকৃত রোগীদের সেবা পেতে সুযোগ করে দিবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই এই রোগ থেকে অনেকটা পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
তিনি চট্টগ্রাম নগরীতে অবস্থানরত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এই করোনা সংকট মোকাবেলায় আন্তরিক ভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়ার আহ্বান জানান।
১৫ জুন চালু হচ্ছে চসিকের আইসোলেশন সেন্টার
পরিস্থিতি সামাল দিতে আরো চিকিৎসাকেন্দ্র চাই- মেয়র
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও অর্থায়নে আগ্রাবাদস্থ সিটি কনভেনশন হলে প্রস্তুতকৃত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা আইসোলেশন সেন্টার আগামী ১৫ জুন চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন।
আজ অপরাহ্নে টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইসোলেশন সেন্টারটি চালু করণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন।
এই সময় তিনি বলেন, চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমন পরিস্থিতি উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌছেছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে চসিক আইসোলেশন সেন্টারের জন্য চিকিৎসক, নার্স, বয় নিয়োগসহ তাদের সুরক্ষা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সংযোজনের প্রস্তুতি সুসম্পন্ন করেছে।
তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র লকডাউন দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না। যে হারে সংক্রমনের হার বাড়ছে তা মোকাবেলায় আক্রান্তরা যাতে চিকিৎসা সেবা পান তা নিশ্চিত করতে আরো বেশি চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। এ ছাড়াও করোনা সনাক্তের জন্য কোথায় সহজে নমুনা পরীক্ষা সম্ভব এবং চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত তথ্যাবলী মানুষ যেন অবগত হতে পারে সেই ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকেও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, বিএমএ সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, আইটি অফিসার ইকবাল হাসান, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য গবেষক ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, মেমন মাতৃসদন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. প্রীতি বড়ুয়া, ডা. মোহাম্মদ আলী, ডা. রবিউল করিম, ডা. নাসিম ভূইয়া, চসিক তত্ত্বাধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক ও আবু সাদাত মো. তৈয়ব প্রমুখ।
এ ছাড়া আজ বিকেলে সিটি মেয়র আগ্রবাদস্থ সিটি কনভেনশন হলের প্রস্তাবিত ২৫০ শয্যার করোনা আইসোলেশন সেন্টারও পরিদর্শন করেন।
২৪ ঘণ্টা/এম আর