Tag: চুয়াডাঙ্গা

  • শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা, ১৪ ডিগ্রিতে নামল তাপমাত্রা

    শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা, ১৪ ডিগ্রিতে নামল তাপমাত্রা

    চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। আর এই শীত মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে সুস্বাদু রস আহরণের লক্ষ্যে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। আর কয়েকদিনের মধ্যে বাজারে উঠবে খেজুর গুড়।

    সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় ১৪ দশমিক ৫ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। এটি তাপমাত্রা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

    গতকাল রোববার (১৭ নভেম্বর) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা একদিনের ব্যবধানে ১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমল।

    এদিকে শীতের শুরুতেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালের আউটডোরে তিন হাজারের বেশি বয়োবৃদ্ধরা চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন।

    তিনি বলেন, শীতজনিত কারণে রোটা ভাইরাসে শিশু ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যাও ব্যাপকহারে বাড়ছে। এছাড়া শীতজনিত কারণে হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ শিশু ও বৃদ্ধ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

    মাজেদুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক বলেন, শীত এসে পড়েছে। ভোরে কাজ করার সময় হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। আর কয়েকদিনের মধ্যে শীতের তীব্রবা আরও বাড়বে। তখন কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়বে।

    চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যৈষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, সোমবার সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৫ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিদিন ১-২ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমবে।

  • দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, বিপর্যস্ত জনজীবন

    দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, বিপর্যস্ত জনজীবন

    ঘন কুয়াশার পাশাপাশি বইছে হিমেল হাওয়া
    চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। টানা দুই দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এই জেলায়। শনিবার (০৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    গতকাল শুক্রবারও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশার পাশাপাশি বইছে হিমেল হাওয়া। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

    সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। ঘন কুয়াশা আর শীতে অনেকে রাস্তার পাশে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া তীব্র শীতের হাত থেকে বাঁচতে অনেকে বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না।

    শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সদর হাসপাতালসহ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বেড়েছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা। এর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

    চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জাহিদুল হক জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ ও হিমেল হাওয়ার কারণে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।

  • ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা

    ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা

    কনকনে শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা। শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এই জেলায় রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন সকালে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজার ও সীতাকুণ্ডে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি জানান, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি একই এলাকায় বিরাজমান রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

    শাহীনুল ইসলাম জানান, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আজ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ ছাড়া শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

    এই আবহাওয়াবিদ জানান, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ সকালে ঢাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল উত্তর/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার।

  • চুয়াডাঙ্গায় শিশুর কামড়ে সাপের মৃত্যু!

    চুয়াডাঙ্গায় শিশুর কামড়ে সাপের মৃত্যু!

    চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় খেলতে গিয়ে ‘ঘরগিন্নি’ সাপের বাচ্চাকে কামড় দিয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌস (১) নামে এক শিশু। এ ঘটনার পর সাপটি মারা গেলেও শিশুটি সুস্থ রয়েছে বলে জানা গেছে।

    মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের বিলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

    জান্নাতুল ফেরদৌস সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের বিলপাড়ার রিয়াজুল ইসলামের শিশুকন্যা। শিশুটিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখার পর দুপুরে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে।

    জান্নাতুলের মা শিলা খাতুন বলেন, সকালে চাচাতো ভাই কাউসারের সঙ্গে নিজ ঘরে খেলা করছিল জান্নাতুল। দুই শিশুই খেলতে খেলতে খাটের নিচে চলে যায়। এক পর্যায়ে মেঝেতে থাকা একটি বিষহীন ‘ঘরগিন্নি’ (ইংরেজি নাম common worm snake) সাপের বাচ্চাকে হাত দিয়ে ধরে মুখে নিয়ে দুই জায়গায় কামড় দেয়।

    হাতে ধরে সাপের বাচ্চাসহ খাটের নিচ থেকে বাইরে বের হয়ে আসে শিশু জান্নাতুল। পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। মারা যাওয়া সাপের বাচ্চাটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জান্নাতুলকে সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখার কয়েক ঘণ্টা পর বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়।

    পরিবেশবাদী সংগঠনের পরিচালক বখতিয়ার হামিদ বলেন, সাপটি বিষধর নয়। এ জাতের সাপ ছোট ছোট প্রাণী খাওয়ার জন্য নিরিবিলি স্থানে থাকে। এটি ‘ঘরগিন্নি’ সাপ।

    চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, শিশুটি না বুঝে মুখে নিয়ে সাপটিকে কামড় দেয়। শিশুটির কোনো সমস্যা না থাকায় বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

  • ঠাকুরপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

    ঠাকুরপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

    চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার ঠাকুরপুর সীমান্তে ওমেদুল ইসলাম (২৬) নামে এক বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

    রবিবার ভোরে সীমান্তের ধারে গরু আনতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।

    এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ ও মরদেহ ফেরত চেয়ে পত্র প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

    নিহত ওমেদুল ইসলাম ঠাকুরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।

    নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, রবিবার ভোরে ওমেদুলসহ ৪/৫ জন বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী গরু আনতে সীমান্তে যান।

    ভোর ৪টার দিকে তারা সীমান্তের জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি গেলে বিএসএফের একটি টহল দল তাদেরকে ধাওয়া করে।

    এ সময় অন্য সহযোগীরা পালিয়ে আসলেও বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে মারা যান ওমেদুল ইসলাম।

    হত্যার পর মরদেহ ৮৯নং পিলারের ভারতের অভ্যন্তরে ফেলে রাখে।

    চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার কড়া প্রতিবাদ ও যুবকের মরদেহ ফেরত চেয়ে বিএসএফকে পত্র প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • চুয়াডাঙ্গায় করোনায় আক্রান্ত ইতালিফেরত যুবক

    চুয়াডাঙ্গায় করোনায় আক্রান্ত ইতালিফেরত যুবক

    চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের থানাপাড়ার ইতালিফেরত এক যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

    আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান।

    ওই প্রবাসীর বাবা জানান, ২৬ বছর পর গত ১২ মার্চ তার ছেলে দেশে ফেরেন। ঢাকায় দুই দিন অবস্থানের পর আলমডাঙ্গায় ফেরেন ১৪ মার্চ। এর একদিন পর থেকেই ঠান্ডা, কাশি ও গলাব্যথাসহ জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি।

    চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (১৬ মার্চ) সকালে এই প্রবাসীকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হয়। মঙ্গলবার দুপুরে আক্রান্ত যুবকের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষার জন্য ঢাকা আইইডিসিআরে নমুনা পাঠানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যুবকের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়।

    উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৭ ছিল। চুয়াডাঙ্গার রোগীকে নিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৮-তে দাঁড়ালো। এই ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।

  • ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এসআই নিহত

    ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এসআই নিহত

    চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন সরকার (৩০) নিহত হয়েছেন।

    রোববার (৮ মার্চ) রাত পৌনে দশটার দিকে উপজেলার ওদুদ শাহ ডিগ্রী কলেজের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

    নিহত মিল্টন সরকার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার রানপাশা গ্রামের সুভাষ চন্দ্র সরকারের ছেলে। তিনি দামুড়হুদা মডেল থানায় উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

    পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার রাতে নিয়মিত টহল ডিউটি পালনের জন্য মোটরসাইকেলযোগে দর্শনার দিকে যাচ্ছিল এসআই মিল্টন সরকার ও কনস্টেবল দীপক। এ সময় উপজেলা শহরের ওদুদ শাহ কলেজের নিকট পৌঁছলে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে ধাক্কা দেয়। ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মিল্টন সরকার।

    মিল্টনের মোটরসাইকেলের পিছনে থাকা আরোহী কনস্টেবল দীপক জানান, থানা থেকে বের হয়ে উপজেলা শহরের ওদুদ শাহ কলেজের নিকট পৌছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুত গতির ট্রাক সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে সড়কের উপরেই ছিটকে পড়ে মিল্টন সরকার। দ্রুতগামি ট্রাকটি এসময় পালানোর চেষ্টা করলে সামনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মিল্টন সরকার।

    দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আব্দুল খালেক জানান, রোববার রাতে নিয়মিত টহল ডিউটির জন্য নিজ মোটরসাইকেলযোগে থানা থেকে বের হয় মিল্টন সরকার ও কনস্টেবল দীপক। কিছুক্ষণ পরে সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা পৌঁছায়। কিন্তু সেখানে যেয়ে তাকে আর জীবিত পাওয়া যায়নি।

  • আজহারীর মাহফিলে কলেজছাত্র রনি দাসের ইসলাম গ্রহণ

    আজহারীর মাহফিলে কলেজছাত্র রনি দাসের ইসলাম গ্রহণ

    লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগমে বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম হাফেজিয়া কওমিয়া মাদ্রাসার ১৩তম ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

    মহান বিজয় দিবসের দিন মাদ্রাসার পাশের বিশাল মাঠে অনুষ্ঠিত এ মাহফিলের মূল আকর্ষণই ছিলেন প্রধান বক্তা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আলোচিত বক্তা, বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার ও কোরআন গবেষক শায়খ ড. মিজানুর রহমান আজহারী।

    চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকের আয়োজনে ঐতিহাসিক তাফসিরুল এ কোরআন মাহফিলে শরিক হতে গতকাল সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা আসতে থাকেন। বাস-ট্রাক, মাইক্রো-মিনিবাস, সিএনজি-অটো, মোটরসাইকেলসহ নানা ধরনের ছোট-বড় যানবাহনযোগে মাহফিলে উপস্থিত হয়ে আলোচনা শোনেন কয়েক লাখ মানুষ।

    গতকাল দুপুরের পরপরই সড়কগুলোতে প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হলেও ধর্মপ্রাণ মানুষেরা সেসব উপেক্ষা করেই পৌঁছান মাহফিলস্থলে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিশালাকার প্যান্ডেলের প্রস্তুত রাখা হলেও মাঠ ছাপিয়ে দর্শক শ্রোতাদের জায়গা নিতে হয় আশপাশের সড়ক ও খালি জায়গায়।

    বিকেল চারটা নাগাদ দেশের প্রায় ৩০ জেলা থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অংশগ্রহণে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মাহফিল-প্যান্ডেল। তবে মাহফিলের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় মাগরিবের নামাজের পর। লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে প্যান্ডেলই আদায় করা হয় নামাজ ।

    মাহফিলে পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম হাফেজিয়া কওমিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম হযরত মাওলানা আব্দুল হামিদ সভাপতির বক্তব্য দেন। এরপর বিশেষ বক্তা হিসেবে তাফসির পেশ করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, মুফাচ্ছিরে কোরআন হযরত মাওলানা মুফতি আলী আকবর। বেশ কিছু সময় তিনি কোরআন ও হাদিস থেকে বর্ণনা উপস্থাপন করে বক্তব্য দেন।

    রাত ৯টা নাগাদ মাহফিল ময়দানে এসে হাজির হন প্রধান বক্তা শায়খ ড. মিজানুর রহমান আজহারী। তাকে কাছ থেকে একনজর দেখতে খানিকটা উত্তাল হয়ে ওঠে মাহফিলে উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

    তবে শায়খ মিজানুর রহমান আজহারী মঞ্চে উঠে উপস্থিত সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে বয়ান শুরু করলে মুহূর্তেই পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। তাঁর জন্য অধীর আগ্রহে থাকা মানুষেরা নিশ্চুপ হয়ে তার কথাই বুদ হয়ে যান। টানা ১ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ধরে পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন তিনি।

    এর মধ্যে অন্যতম ছিল নারীর মর্যাদা, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ওপর কোরআন নাজিল, ইসলামের দাওয়াত ও মহান বিজয় দিবস। তবে এসবের মধ্যে তার আলোচ্য বিষয়ের মূল তাৎপর্য ঘিরে ছিলে ‘সুরা আদ্ দোহা’।

    মাহফিলের আলোচনা শেষে মোনাজাতের আগমুহূর্তে পবিত্র কোরআনকে ভালোবেসে ও ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উপস্থিত লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে পবিত্র কালেমা পড়ে রনি কুমার দাস নামের এক হিন্দু যুবক নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। শায়খ মিজানুর রহমান আজহারী তাকে পবিত্র কালেমা পাঠ করান। স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হওয়া ওই যুবক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার নাম রাখা হয়েছে আব্দুর রহমান। তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জে। তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের স্নাতক শ্রেণির দর্শন বিভাগের ছাত্র।

    এসময় লক্ষ লক্ষ জনতার সামনে আব্দুর রহমান জানান, ইউটিউবে ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ শুনে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলামের ছায়াতলে আসার সিদ্ধান্ত নেন।কালেমা পড়ার আগে আব্দুর রহমান আরও বলেন, মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করার পর থেকে প্রতিটা মানুষেরই উচিৎ সঠিক পথে চলা। আমি এতদিন অনেক ধর্ম দেখেছি, বিভিন্ন বই পড়েছি। তবে আমার সব থেকে ভালো লেগেছে মহাগ্রন্থ কোরআন শরীফ, যার ভুল আজও পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞানী ধরতে পারেননি।

    “আমি ভেবেছিলাম লেখাপড়া করে আগে নিজে প্রতিষ্ঠিত হবো, তারপর মুসলিম হবো কিন্তু পরে ভাবলাম তার আগে যদি আমার মৃত্যু হয়ে যায় তাহলে তো মুসলিম হয়ে মরতে পারব না। এ জন্য আজকেই শান্তির ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করতে চলে এসেছি।” পরে তিনি জানান খুব শিগগিরই আদালতে গিয়ে এফিডেভিট করে ধর্মান্তরিত হবেন।

    এসময় সদ্য মুসলিম হওয়া নবমুসলিমকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন চুয়াডাঙ্গার কৃতী সন্তান বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকসহ উপস্থিত শত শত মানুষ। পরে তাৎক্ষণিক আব্দুর রহমানকে আর্থিক সহায়তাও করেন অনেকে।

    এর আগে মাহফিলের প্রধান অতিথি মাদ্রাসার পরিচালক, বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট ও সাহিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিক তাকে মঞ্চে নিয়ে এসে উপস্থিত সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং উপস্থিতির উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে সবার সহযোগিতা চেয়ে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এর সম্পাদক ও প্রকাশক মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু, মাহফিলে দেশের বিভিন্ন শহর, গ্রাম, পাড়া, মহল্লা থেকে আগত লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, নারী-পুরুষসহ অন্তত সাড়ে পাঁচ লাখ জনতার উপস্থিতি চোখে পড়ে। দেরিতে আসায় মাহফিল ময়দানে জায়গা না পেয়ে যেখানে-সেখানে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রধান বক্তার বক্তব্য উপভোগ করেন অনেকেই।

    এ ছাড়া মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে ও আগত মহিলাদের জন্য প্রজেক্টরের মাধ্যমে সাদা পর্দায় মাহফিল পরিবেশন করা হয়। মাহফিলের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, গ্রাম পুলিশসহ স্থানীয় কয়েক শ’ স্বেচ্ছাসেবক। প্রধান বক্তা শায়খ মিজানুর রহমান আজহারীর বক্তব্য রেকর্ড করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে মঞ্চের সামনে ক্যামেরা নিয়ে ভিড় করেন শতাধিক ইউটিউবার ও আইপি টিভিসহ গণমাধ্যমকর্মীরা।

    https://youtu.be/VS27zL3EHcU