Tag: ছাত্রলীগ

  • ঢাবিতে ছাত্রলীগের হামলায় ৫ ছাত্রদল কর্মী আহত

    ঢাবিতে ছাত্রলীগের হামলায় ৫ ছাত্রদল কর্মী আহত

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ।

    রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

    ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের নামে থাকা একটি ফেসবুক আইডির লেখাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছিল ক্যাম্পাসে। ফেসবুকের ওই লেখার জন্য ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং তাকে ‘দেখে নেয়া’র হুঁশিয়ারি দেয় ছাত্রলীগ। তবে আলোচিত এই ফেসবুক আইডিটি ‘ভুয়া’ বলে জানিয়েছেন ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক।

    এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল। পরে ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহনেতারা মধুর ক্যান্টিনে যান। মধুর ক্যান্টিনে আগে থেকেই অবস্থান করছিল ছাত্রলীগ। ছাত্রদল নেতারা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও বসার জায়গা পাচ্ছিলেন না। পরে তারা ফ্লোরে বসে পড়েন।

    এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছাত্রদল নেতাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ছাত্রদল নেতাকর্মীরা এগিয়ে এলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এসময় ৫ ছাত্রদল নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করে ছাত্রলীগ।

    তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা যায় নি।

  • আবরারকে হত্যার আগের দিন নির্যাতনের নির্দেশ

    আবরারকে হত্যার আগের দিন নির্যাতনের নির্দেশ

    বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে শনিবার (৫ অক্টোবর) মেরে শেরেবাংলা হল থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন।

    শেরেবাংলা হলের ১৬তম ব্যাচের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়। ফেসবুক গ্রুপে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়।

    বুয়েট ও শেরেবাংলা হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে তৈরি ফেসবুকের মেসেঞ্জার গ্রুপে ৫ অক্টোবর দুপুর ১২টা ৪৭ মিনিটে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। ‘এসবিএইচএসএল ১৫+১৬’ নামে ওই গ্রুপে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে আবরারকে মেরে হল থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

    গ্রুপটি বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শেরেবাংলা হলের ১৫ ও ১৬তম ব্যাচের নেতাকর্মীদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হতো বলে জানা গেছে।

    ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কথোপকথনে দেখা যায়, ৫ অক্টোবর দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে ১৬তম ব্যাচের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মেহেদী হাসান রবিন লেখে, ‘১৭-এর আবরার ফাহাদ; মেরে হল থেকে বের করে দিবি দ্রুত @১৬; এর আগেও বলছিলাম; তোদের তো দেখি কোনও বিগারই নাই; শিবির চেক দিতে বলছিলাম; দুই দিন সময় দিলাম।’

    রবিন মেসেঞ্জার গ্রুপে আরও লেখে, ‘দরকারে ১৬ ব্যাচের মনিরের সঙ্গে কথা বলিস। ও আরও কিছু ইনফো দিবে শিবির ইনভলমেন্টের ব্যাপারে।’

    ‘ওকে ভাই’ জবাব দেয় ১৬তম ব্যাচের মনিরুজ্জামান মনির।

    রবিনের নির্দেশ পাওয়ার পরদিন রবিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টা ৫২ মিনিটে মনির গ্রুপে লেখে, ‘নিচে নাম সবাই’।

    এরপরই রাত ৮টা ১৩ মিনিটে আবরার ফাহাদকে তার রুম থেকে ডেকে নিয়ে যায় তানিম, বিল্লাহ, অভি, সাইফুল, রবিন, জিওন ও অনিক। যা শেরেবাংলা হলে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে।

    এরপর রাত ১২টা ৩৮ মিনিটে ‘এসবিএইচএসএল ১৬+১৭’ গ্রুপে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা লেখে, ‘আবরার ফাহাদ কি হলে আছে’। জবাবে শামসুল ও সজীব জানায়, ‘২০১১-তে আছে।’ জানা গেছে ২০১১ নম্বর কক্ষে অমিত সাহা থাকে।

    মেসেঞ্জারে অন্য আরেকটি কথোকথন পাওয়া গেছে, যা ছিল অমিত সাহা ও ইফতি মোশাররফ সকালের মধ্যে। এতে অমিত সাহা লিখেছে, ‘আবরার ফাহাদরে ধরছিলি তরা?’। ইফতি জবাব দেয়, ‘হ’। আবার প্রশ্ন করে অমিত, ‘বের করছোস?’ জবাবে ইফতি পাল্টা প্রশ্ন করে, ‘কি হল থেকে নাকি স্বীকারোক্তি’। এবার অমিত লেখে, ‘স্বীকার করলে তো বের করা উচিত।’

    এরপর ইফতি জবাব দেয়, ‘মরে যাচ্ছে; মাইর বেশি হয়ে গেছে’। জবাবে অমিত সাহা লেখে, ‘ওওও বাট তাকে তো লিগ্যালি বের করা যায়’। এরপর একটি ইমোজি পাঠায় ইফতি। পরে এই দুজনের আর কোনও কথোকথন পাওয়া যায়নি।

    এদিকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথোপকথনের বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তারা অবগত আছেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম। তিনি জানান, আমরা এগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করছি।

    আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ইতিমধ্যে পুলিশ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন। ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

  • আবরারের দাদা এখনও জানেন না নাতি নেই!

    আবরারের দাদা এখনও জানেন না নাতি নেই!

    বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস এখনও জানেন না তার নাতিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

    ৮৭ বছরের এই বৃদ্ধের বয়সের ভারে স্মৃতিশক্তি লোপ পেলেও আবরারকে নিয়ে কিছু ঝামেলা হয়েছে সেটি তিনি বুঝতে পারছেন।

    বাড়িতে সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে আবদুল গফুর বিশ্বাস জানতে চান- কী হয়েছে? কিন্তু পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ এবং শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় সত্য আড়াল করে তাকে জানানো হয়, আবরার সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং এখন ভালো আছেন।

    আবদুল গফুর বিশ্বাসের পাঁচ ছেলে চাকরির সুবাদে বাড়ির বাইরে থাকেন। একসঙ্গে এত লোক কখনও তাদের বাড়িতে আসে না। অনেকে কান্নাকাটি করছেন, অনেকেই ভারাক্রান্ত। সব মিলিয়ে অজানা শঙ্কা আবদুল গফুরের মনে।

    মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে আবরার ফাহাদের লাশ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স যখন তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায় তখনও আবদুল গফুর বিশ্বাসকে কিছুই জানানো হয়নি।

    কিন্তু বাড়িতে এত আত্মীয়স্বজন আর মানুষ দেখে ব্যাকুল হয়ে জানতে চান- তোমরা না গতকালকে বললা আমার নাতি অ্যাক্সিডেন্ট করেছে? আজকে বাড়ি আসবে। আমার নাতি বাড়িতে আসছে না কেন, আর আমার বাড়িতে এত লোকজন কেন? কিছু প্রশ্নের উত্তর হয় না। নির্বাক দর্শকদের ভূমিকা পালন করা ছাড়া খুব বেশি কিছু করা সম্ভব হয় না।

    শুধু রায়ডাঙ্গা না, কুষ্টিয়া না, সারা দেশে যখন আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে, দেশি-বিদেশি মিডিয়াগুলো ফলাও করে আবরারকে ন্যক্কারজনকভাবে হত্যার সংবাদ পরিবেশন করছে, তখনও দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস আজানা শঙ্কা নিয়ে অপেক্ষা করে আছেন, মেধাবী নাতি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে।

    আবদুল গফুর বিশ্বাসের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আবরার তাকে নিয়মিত দেখতে আসে কিনা। তিনি বলেছিলেন, ছুটিতে বাড়িতে এলেই গ্রামের বাড়িতে ছুটে আসত আবরার। খোঁজখবরও নিত। মেধাবী নাতিকে নিয়ে গর্বিত এ বৃদ্ধ জীবনের শেষলগ্নে এসেও স্বপ্ন দেখেন তার নাতি অনেক বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে। যদিও তার এবং পরিবারের একসময় চাওয়া ছিল আবরার ডাক্তার হবে।

    কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়া মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছিলেন আবরার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় দ্বিতীয় হয়েছিলেন। কিন্তু নিজের ইচ্ছাতেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। অত্যন্ত মেধাবী আবরার ফাহাদের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবার আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা। আর বৃদ্ধ দাদা তো প্রতীক্ষায় দিন গুনছেন- নাতি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন। যে প্রতীক্ষার কোনো শেষ নেই…

    প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তার লাশ সিঁড়িতে ফেলে রাখা হয়।

  • আবরার হত্যার পর খুনিরা মেসিদের খেলা দেখতে গিয়েছিল!

    আবরার হত্যার পর খুনিরা মেসিদের খেলা দেখতে গিয়েছিল!

    বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ নেতারা হত্যাকাণ্ডের পর খুনিরা টিভিতে মেসিদের বার্সেলোর খেলা দেখতে গিয়েছিল বলে জানা গেছে।

    ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে করা তদন্তে এ তথ্য জানা গেছে।

    ভারতকে গ্যাস, পানি ও সমুদ্রবন্দর দেয়ার বিরোধিতা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

    এ ঘটনায় আবরারের বাবা ১৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ১১ জনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় কমিটি।

    হত্যাকাণ্ডের পর পরই ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর দায়িত্বে ছিলেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার। তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। তারা নির্দিষ্ট সময়েই প্রতিবেদন দাখিল করেন।

    এই প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডের সময় হল প্রশাসনের ‘দায়িত্বহীনতা ও নির্লিপ্ত’ ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

    তদন্ত কমিটির সদস্য ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন, কমিটি করার পর আমরা তৎক্ষণাৎ সেখানে যাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সাধারণ শিক্ষার্থী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্বে যারা আছেন, সবার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার নির্দেশ দেয়া হলেও তার আগেই কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিই।

    তিনি বলেন, ‘সেদিন রাতে যারা এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন, তারা এর আগে দুর্গাপূজা দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে তারা মদপান করেছিলেন। সবাই মাতাল ছিলেন। তাদের মধ্যে মানবিকতা বলে কিছুই ছিল না। সেখান থেকে এসে তারা একটি স্ট্যাটাস কেন্দ্র করে আবরারকে তার ১০১১ নম্বর রুম থেকে ২০১১ নম্বর রুমে ডেকে নিয়ে যায় এবং তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আবরারের মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটে।’

    ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরও দাবি করেন, ‘আবরারকে নির্যাতনের সময় ওই কক্ষে তিন থেকে চার শিক্ষার্থী থাকলেও অন্যান্য রুমের কিছু লোক এই নির্যাতনে অংশ নেয়।’

    নির্যাতনের একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে আবরার মোবাইলে তার বন্ধু ও সহপাঠীদের সাহায্য চেয়েছিলেন বলেও ছাত্রলীগের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, ‘কিন্তু কারও সাড়া পাননি আবরার ফাহাদ।’

    ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির নেতা আরও বলেন, ‘তদন্তে আরও পেয়েছি, ওই রাতে বার্সেলোনার খেলা ছিল। পূজা থেকে এসে আবরারকে শারীরিক নির্যাতনের পর তারা বার্সেলোনার খেলা দেখতে চলে গিয়েছিলেন।’

    ‘আবরার এই ফাঁকে তার এক বন্ধুকে ফোন করে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তার বন্ধু তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেননি। যদি তার বন্ধুরা এগিয়ে আসত, তা হলে হয়তো এমন একটি অপমৃত্যুর মতো ঘটনা নাও ঘটতে পারত’, বলেন ইয়াজ আল রিয়াদ।

    এদিকে হলের কক্ষের মধ্যে অন্য ছাত্রদের হাতে নির্যাতিত হয়ে আবরারের মৃত্যুর জন্য প্রশাসনের ‘দায়িত্বহীনতা ও নির্লিপ্ততাকে’ও দায়ী করেছেন ছাত্রলীগ নেতা ইয়াজ আল রিয়াদ।

    তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘হলের মধ্যে রাতভর একটা ছাত্রকে নির্যাতন করা হলেও প্রশাসন কেন বিষয়টি জানতে পারল না? হলের প্রভোস্ট, আবাসিক শিক্ষকরা তা হলে কী দায়িত্ব পালন করলেন?’

    এ ঘটনায় প্রশাসন ‘দায়িত্বহীনতার’ পরিচয় দিয়েছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই বলেও মন্তব্য করেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি।

    তিনি আরও বলেন, হল কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এর দায়ভার এড়াতে পারে না।’

    ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারও মত প্রকাশে ছাত্রলীগ বাধা দিতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির এ সহসভাপতি।

    তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ কখনও কারও ব্যক্তিগত মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাখে না। এমনটি করার অধিকারও নেই। যার যার মত তিনি প্রকাশ করবেন। এ ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের কারোর মতপ্রকাশের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।’

    ছাত্রলীগের কেউ যদি কারও মতপ্রকাশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অপকর্ম করেন, তা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ইয়াজ আল রিয়াদ।

    তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ একটি বৃহত্তর সংগঠন, ছাত্রলীগ কাউকে মারতে বলে না। যেকোনো ভালো কাজ ছাত্রলীগ সমর্থন করে। যদি কেউ ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো অপরাধ করে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে।

    প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তার লাশ সিঁড়িতে ফেলে রাখা হয়।

    আরো:: আবরার হত্যার বিচারসহ ৭ দফা দাবি বুয়েট শিক্ষার্থীদের

  • ‘ফাহাদ মারা গেছে, আমি বেঁচে ফিরেছি’

    ‘ফাহাদ মারা গেছে, আমি বেঁচে ফিরেছি’

    বুয়েটের ও এ বি এর দোতলায় মেকানিক্যাল ড্রয়িং কুইজ দেয়া শেষ হওয়া মাত্রই পরীক্ষার রুম থেকে তন্ময়, আরাফাত, শুভ্র জ্যোতি টিকাদারদের নেতৃত্বে ৮-১০ জন ছাত্রলীগের ছেলে শিক্ষকের সামনে থেকে তুলে নিয়ে আহসানউল্লাহ হলের তখনকার টর্চার সেল ৩১৯ নম্বর রুমে নির্যাতন করে। আমি কারো সাথে যেখানে রাগারাগি পর্যন্ত করতাম না, কারো সাথে কখনোই সম্পর্ক খারাপ পর্যন্ত যেখানে ছিল না, শুধুমাত্র ফেইসবুকে সরকারি নীতির সমালোচনা করে পোস্টের কারণে বুয়েটের মত একটা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগ আমার সাথে এমন আচরণ করে।

    এর ৬ দিন আগে সাবেক বুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ্র জ্যোতি টিকাদার(‘০৯) ও কাজল(‘০৯) ল্যাব থেকে আমাকে ধরতে এসে ব্যর্থ হয়ে পরীক্ষার রুম থেকে আমাকে একা ধরতে ওরা ৮-১০ জন প্রস্তুতি নিয়ে আসে! বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা ৩০! বদ্ধ রুমে আমার পিঠের ওপর লোহা দিয়ে ‘১০ ব্যাচের এক ভাই প্রধানত তার শক্তি পরীক্ষা করে।

    এর কতদিন আগে কোনো একটা নামাজ মিস দিয়েছি ভুলেই গিয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন তারা আসর আর মাগরিব নামাজ পর্যন্ত পড়ার সুযোগ দেয়নি।

    সারাজীবন একটি মাত্র স্বপ্ন দেখেছিলাম- বুয়েটে পড়বো। বুয়েটের ছাত্রদের ভাবতাম আদর্শ। অথচ সেখানেও এমন হবে- জানা ছিল না।

    ভর্তি পরীক্ষার সময় গুরুজনেরা বলতেন- দোয়া কর, যেখানে তোমার জন্য কল্যাণ, আল্লাহ যেন সেখানেই তোমাকে চান্স পাইয়ে দেন। আর বুয়েটের অন্ধপ্রেমিক এই আমি দোয়া করতাম- আল্লাহ, বুয়েটেই আমার কল্যাণ দাও।

    আসলে বুয়েটে পড়ার প্রথম ইচ্ছে হয়েছিল ক্লাস ফাইভে, বাবা বলেছিলেন- ছেলেকে বুয়েটে পড়াতে চাই, সেই থেকে।

    ভার্সিটি এডমিশনের সময় বাবা অন্য ভার্সিটিগুলোর ফর্ম নিতে দিচ্ছিলেন না, বলছিলেন- ওসবে কালো রাজনীতি ছেয়ে গেছে, বুয়েটেই চান্স পেতে হবে, ওখানেই পড়তে হবে, ওখানে কালো রাজনীতি নেই। জানি, তুমি পারবা।
    পরবর্তীতে আমার বাবা আমার ওপর নির্যাতন দেখে ডুকরে কেঁদেছেন। আমি হাসিমুখে বলেছি- সব ঠিক হবে, আল্লাহ ভরসা, কোনো অন্যায় করিনি, আমার আল্লাহ সাক্ষী, আল্লাহই এর প্রতিদান দেবেন।

    মায়ের কান্নাজড়িত চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলার ছিল না, মনে মনে ভেবেছি- “আর কেউ না জানুক তুমি তো জানো মা, তোমার ছেলে কেমন। ”

    এত নির্যাতনের পর আবার আমাকেই উল্টো পুলিশে দেয়ার জন্য পুলিশ ডেকে আনে। কিছু শিক্ষক অনেক চেষ্টা করে আর অনেক অপমান সহ্য করেও তাদের থেকে বাঁচিয়ে নেন।

    ছাত্রকল্যাণ পরিচালক দেলোয়ার স্যারকে পরে অভিযোগ জানালে উনি বলেন, ওদের সাথে তাল মিলিয়ে চল না কেন? হায়রে! সেদিন চ্যালেঞ্জ করেছিলাম স্যারকে- এ রকম শুধু আমাকেই না, আরো ১৭টি নির্যাতনের ঘটনা কিছুদিনেই ঘটেছে। অথচ যারা ভুক্তভোগী তাদের বিরুদ্ধে একটা মাত্র বুয়েটের শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা কারো সাথে ঝামেলার ঘটনার প্রমাণ দেন। আর যারা নির্যাতন করছে- তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কত গুণ্ডামির প্রমাণ লাগে বলুন।

    আল্লাহ তুমি সাক্ষী…আমার বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগ ওরা প্রমাণ করতে পারেনি। কিন্তু আমার এই ছবিগুলো তখনই প্রচার হয় বলে ওরা এতে ব্যাপক ক্ষেপে যায়। পাশাপাশি বুয়েট শিক্ষক সমিতি এর বিচারের দাবি জানিয়ে লিখিত বিবৃতি দিয়েছিল। আমাকে ওরা এজন্য ক্যাম্পাসেই ঢুকতে দিতো না, মৃত্যুর হুমকি দিতো। এসব দেখে অন্য নির্যাতিত আরও অসংখ্য ছাত্র নির্যাতিত হলেও প্রকাশ করতো না। নইলে বুয়েটে পড়াশোনা কন্টিনিউ করাই সম্ভব হবে না ওদের।

    সেদিন দলকানা ছাত্রকল্যাণ পরিচালক চরম অসহযোগিতা করেছেন। পক্ষান্তরে নিরপেক্ষ শিক্ষকেরা অপমান সহ্য করেও আমাকে উদ্ধার করেছেন। দলকানা শিক্ষকেরা সব সময় স্বার্থবাদী হয়। আমি জীবন নিয়ে ফিরতে পারলেও আবরার জীবন দিল। এভাবে অপরাজনীতির শিকার আরও কত জীবন হবে তা ভাবা অসম্ভব।

    এসব অপরাজনীতি থাকলে ক্যাম্পাসে রক্ত ঝরবেই। তাই নির্যাতিত ছাত্র হিসেবে দাবি জানাই- ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হোক, ছাত্র এবং শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক।

    আমি বুয়েটিয়ান হিসেবে লজ্জিত নই, লজ্জা তাদেরই পাওয়া উচিত, যারা অন্যায় করেছে অথবা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে। ভালোবাসি বুয়েট, ভালোবাসি বাংলাদেশ।

    (ফেসবুক থেকে সংগৃহীত) লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, বুয়েট

  • সীতাকুণ্ডে সরকারী জায়গা দখল,অপ-প্রচারের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন

    সীতাকুণ্ডে সরকারী জায়গা দখল,অপ-প্রচারের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন

    সীতাকুণ্ডে ১০ কোটি টাকার সরকারী জায়গা দখল করে রেখেছে ছাত্রলীগ নেতা মো. রমজান আলী এমন একটি অভিযোগে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশকে একটি কুচক্রী মহলের অপ-প্রচার বলে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড কদমরসুল জাহানাবাদ এলাকায় মুন্সী মিয়ার পুত্র এবং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রমজান আলী।

    আজ মঙ্গলবার(৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুুুুষ্ঠিত হয়।

    সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি সরকারী জায়গা দখল করেছি বলে যে প্রচার করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা,ভিক্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ৪/১/১৯৯৪ তারিখে ১০৪,১০৫ নং ছাফ কবলামূলে গুরা মিয়া চৌধুরী এবং গত ২/৮/১৯ তারিখে নুরুল ইসলাম ও মছুয়া খাতুন হইতে ক্রয় করি। আমি আমার পৈতৃকসূত্রে উক্ত জায়গা ভোগ দখলে আছি। এলাকার কিছু কুচক্রী মহল, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু বঙ্গবন্ধু স্নৃতি সংসদ, শেখ রাসেল স্নৃতি সংসদ,বঙ্গমাতা ফাউন্ডেশন এবং এমপি ফাউন্ডেশ এর নাম ভাঙ্গিয়ে আমার জায়গা দখল করার চেষ্টা করছে। আমি আইনের আশ্রয় নিলে চক্রটি ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্নভাকে আমাকে হয়রানি করছে।

    মূলত আমি নিজেও একজন বঙ্গবন্ধুর আর্দশের সৈনিক। মূলত উক্ত সম্পত্তি বাংলাদেশ সওজ কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হয় এবং পরিত্যাক্ত অংশ আমার বি.এস সম্পত্তির সামনে হওয়ায় বাংলাদেশ গেজেট সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগ সম্পত্তি শাখার মতে আমার দখলে থাকার কথা।

    আমি কখনো কোন অবস্থায় সরকারী ও বেসরকারী কোনরূপ সম্পত্তি অবৈধ জবরদখল,হস্তগত করেনি বা করবো না। আমি প্রশাসনের মাধ্যমে সকল প্রকার অপ-প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

    সংবাদ সন্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ ইউসুফ, মোহাম্মদ শফি ও আহম্মদ মিঞা চৌধুরী।

  • আবরার হত্যা: বুয়েট ছাত্রলীগের ১১ জন বহিষ্কার

    আবরার হত্যা: বুয়েট ছাত্রলীগের ১১ জন বহিষ্কার

    বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ মুজাহিদের অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ১১ নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

    সোমবার (৭ অক্টোবর) রাত ১০টায় তাদের বহিষ্কারের তথ্য এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।

    এতে বলা হয়, ছাত্রলীগ কতৃর্ক গঠিত তদন্ত কমিটির তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    বহিষ্কৃতরা হলেন, বুয়েট শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-দফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, সদস্য মুনতাসির আল জেমি, সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম, সদস্য মুজাহিদুর রহমান।

    এর আগে, সোমবার (৭ অক্টোবর) রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে থেকে লাশবাহী গাড়ি বুয়েট ক্যাম্পাসের সেন্ট্রাল মসজিদের সামনে এসে দাঁড়ায়। ৯টা ৫৫ মিনিটে শুরু হয় জানাজা।

    জানাজায় উপস্থিত আবরার ফাহাদের বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এছাড়া আবরারের পরিবাবারসহ তার সহপাঠী, দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ এবং শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টরা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। মসজিদের সামনের মূল রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।

    রাত ১০টা ১০ মিনিটে বুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে গাড়ি ছেড়ে দেয় বাড়ির উদ্দেশে। ছেড়ে গেলেন প্রিয় ক্যাম্পাস, সহপাঠী ও শিক্ষক।

    এ সময় সহপাঠীরা কান্না চোখে আবরারকে শেষ বিদায় জানান। লাশবাহী গাড়ি সঙ্গে রয়েছে দুটি মাইক্রো।

    গত রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শের-ই–বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

    এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার নয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে চারজন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের পদধারী নেতা।

  • আবরার হত্যায় ৯ ছাত্রলীগ নেতা আটক

    আবরার হত্যায় ৯ ছাত্রলীগ নেতা আটক

    বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে (২১) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ৯ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

    ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সোমবার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

    আটকরা হলেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ছাত্রলীগ নেতা রবিন, মুন্না, তানভীরুল আরেফিন ইথান, অমিত সাহা, আল জামি।

    কৃষ্ণপদ রায় জানান, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ (সিসিটিভি), প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান এসব যাচাই-বাছাই করে আবরার হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে ৯ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে।

    পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জানান, নিহত আবরারের বাবা-মায়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা মামলা করবেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আবরারের বাবা-মা থানায় যাবেন। সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

    আটক হওয়াদের মধ্যে ছয়জন আছেন ডিবি পুলিশের কাছে, দুইজন আছেন চকবাজার থানায় ও একজন আছেন শাহবাগ থানায়।

    নিহত ফাহাদ বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে।

    সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে হওয়া চুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে রোববার রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষের ভেতর ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই কক্ষটিতে ছাত্রলীগের নেতারা থাকতেন। তারা সবাই এখন পলাতক।

    হলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী একদল নেতাকর্মী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

    হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ফাহাদকে জেরা ও পেটানোর সময় ওই কক্ষে অমিত সাহা, মুজতাবা রাফিদ, ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন।

    ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফায় ফাহাদকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন। তারা সবাই মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী।

  • আবরারকে মারধরে জড়িত সবাই ছাত্রলীগের পোস্টেড নেতা

    আবরারকে মারধরে জড়িত সবাই ছাত্রলীগের পোস্টেড নেতা

    বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার জামিউশ সানি।

    সোমবার দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

    তিনি বলেন, রাতে খবর পাওয়ার পরই আমি সেখানে (ঘটনাস্থল) যাই। কয়েকজন তাকে ওই রুমে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। যারা মারধরে জড়িত তারা সবাই ছাত্রলীগের পোস্টেড নেতা।’

    তিনি বলেন, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন একটি ঘটনায় ছাত্রলীগের কর্মীরা জড়িত থাকতে পারে- এমন ভাবাও কষ্টের। এটা খুবই ন্যাক্কারজনক।

    সানি বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে ছাত্রলীগের ছেলে হিসেবে নয়, অপরাধী যে-ই হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    অপরদিকে এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

    নিহত ফাহাদ বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে।

    রোববার দিনগত রাতে তাকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষের ভেতর পিটিয়ে হত্যা করা হয়। কক্ষটিতে ছাত্রলীগের নেতারা থাকতেন। তারা সবাই এখন পলাতক।

    হলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী একদল নেতাকর্মী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

    হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ফাহাদকে জেরা ও পেটানোর সময় ওই কক্ষে অমিত সাহা, মুজতাবা রাফিদ, ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন।

    ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফায় ফাহাদকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন। তারা সবাই মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী।