Tag: জঙ্গি

  • আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রশিক্ষকসহ ৬ সদস্য আটক, ছিল নাশকতার পরিকল্পনা

    আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রশিক্ষকসহ ৬ সদস্য আটক, ছিল নাশকতার পরিকল্পনা

    নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম বা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ (এবিটি) এর ছয় সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গতকাল রবিবার রাতে তাদের আটক করা হয়।

    আটককৃতদের মধ্যে আছেন, সংগঠনটির আশুলিয়া, সাভার, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী ও প্রশিক্ষণ শাখার প্রধান আব্দুর রাজ্জাক ওরফে ইসহাক ওরফে সাইবা।

    অন্যরা হলেন, শরিফুল ইসলাম মুরাদ (৩১), আশিকুর রহমান উসাইমান (২৭), মুহাম্মদ জাকারিয়া আবরার (২৪), আল আমিন (২৪) ও আবু জর মারুফ (১৮)। র‌্যাব বলছে, আটককৃতদের কাছে থেকে বিপুল পরিমাণ জিহাদী ও উগ্রবাদী বই এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

    র‌্যাবের ভাষ্য, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানিয়েছেন, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর সদস্য। তারা আফগানিস্থানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।

    এ উদ্দেশে সংগঠনের সদস্যদের তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী বই, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করতেন। এছাড়াও তারা সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য প্রদান করে আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের কাছে থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতেন।

    র‌্যাব জানিয়েছে, আটককৃতরা পার্শবর্তী বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে যোগাযোগ রাখতেন। তারা সংগঠনের সদস্যদের তথাকথিত হিজরতের উদ্দেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের জন্য অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠাতেন বলেও জানা গেছে।

    আটক হওয়া আব্দুর রাজ্জাক দাখিল পাশ। ২০১৫ সালে সংগঠনের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগদান করেন। সংগঠনে যোগদানের পর তিনি বিভিন্ন পেশার আড়ালে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। পরে আশুলিয়া, সাভার, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক এবং প্রশিক্ষণ শাখার প্রধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। রাজ্জাকের সঙ্গে আনসার আল ইসলামের বর্তমান আমিরের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

    র‌্যাব জানায়, রাজ্জাকের নির্দেশনায় শরিফুল সংগঠনের বেশকিছু সদস্যকে তথাকথিত হিজরত ও বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের জন্য অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে চারজন চলতি বছরের মাঝামাঝিতে গ্রেপ্তার হন। শরিফুল কাশিমপুর কারাগারে থাকা আনসার আল ইসলামের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতেন এবং আত্মীয়-স্বজনদের দেখা করিয়ে দিতেন।

    আটক বাকিদের পরিচয় সম্পর্কে র‌্যাব জানিয়েছে, আশিকুর সংগঠনের ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম প্রধান সেকশন চিফ। জাকারিয়া আবরার ভ্রাম্যমাণ রকমারি ব্যবসার আড়ালে সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম ও নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ করতেন।

  • দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শক্তিশালী জঙ্গি সংগঠন বানাতে চেয়েছিলেন আনিসুর

    দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শক্তিশালী জঙ্গি সংগঠন বানাতে চেয়েছিলেন আনিসুর

    র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফীল হিন্দাল শারক্বীয়া’কে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটি শক্তিশালী জঙ্গি সংগঠন বানাতে চেয়েছিলেন মো. আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ। সংগঠনকে সংগঠিত করে টার্গেট কিলিংয়ের পরিকল্পনা ছিল তার।

    সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

    রোববার ভোর রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে নতুন জঙ্গি সংগঠনের আমির মো. আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০ এর একটি দল।

    বাকি দুই গ্রেপ্তার হলেন কাজী সরাজ উদ্দিন ওরফে সিরাজ (৩৪) ও মাহফুজুর রহমান বিজয় ওরফে বাবুল ওরফে জাম্বুলি (২৮)। এই দুই জন হলেন আমিরের দেহরক্ষী। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছে থেকে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, উগ্রবাদী বই জব্দ করা হয়।

    গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী জঙ্গি সংগঠন বানাতে চেয়েছিলেন শারক্বীয়া’র আমির মো.আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ। দেশের বাইরে হামলার কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও দেশের মধ্যে হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তারা টার্গেট কিলিং মিশনের পরিকল্পনা করেছিল। মুক্তমনা মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করে কিলিং মিশন করার পরিকল্পনা ছিল। আর তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর সসস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করছিলেন আমির মাহমুদ।

    সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তার আনিসুর রহমান নতুন জঙ্গি সংগঠনের আমির। তিনি মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের একটি সিএনজি রিফুয়েলিং পাম্পে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন। তিনি ইতিপূর্বে হুজি’র সদস্য ছিলেন। পরে তার সঙ্গে কুমিল্লার একটি রেস্টুরেন্টে আনসার আল ইসলামের রক্সি ও ফেলানীর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তারা যাত্রাবাড়ীতে একটি মিটিং করে নতুন একটি সংগঠন তৈরি ও বিস্তারের পরিকল্পনা করে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার কার্যক্রম শুরু করে।

    খন্দকার আল মঈন বলেন, আনিসুর রহমান ২০১৬ সাল পরবর্তী বিভিন্ন সময় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তিনি ২০২০ সালে বান্দরবানের গহীন এলাকায় আসলাম নামক এক ব্যক্তির কাছে প্রায় এক মাস সামরিক বিভিন্ন কৌশল, অস্ত্র চালনা, প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। আমির মাহমুদ কুমিল্লায় তার বাড়ি জমিসহ বিক্রি করে দেন, এর মধ্যে কিছু টাকা তিনি সংগঠনে দান করেন। অবশিষ্ট টাকা দিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সাড়ে ৩ বিঘা জমি কিনে ওই বছরই সেখানে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে এবং পোল্ট্রি ফার্ম, চাষাবাদ ও গবাদি পশুর খামার পরিচালনা করতেন।

    তিনি আরও বলেন, আনিসুর রহমানের আগে নতুন জঙ্গি সংগঠনটির আমির ছিলেন মাইনুল ইসলাম ওরফে রক্সি। ২০২১ সালে রক্সি গ্রেপ্তার হলে আনিসুর রহমানকে আমির করা হয়। এদিকে পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থানের সময় মাহমুদের সঙ্গে ‘কেএনএফ’ সদস্যদের পরিচয় হয়। কেএনএফ প্রধান নাথান বম ও সেকেন্ড ইন কমান্ড বাংচুংয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয় আনিসুরের। পরে তাদের মধ্যে পাহাড়ে জামাতুল আনসারের সদস্যদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে তাদের মধ্যে চুক্তি হয়।

    র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, চুক্তি অনুযায়ী কেএনএফ ২০২৩ সাল পর্যন্ত নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেবে। এর বিনিময়ে কেএনএফকে ৩-৪ লাখ টাকা দিতো তারা। এই টাকা দিতে জঙ্গি সংগঠন দেশ-বিদেশে অর্থ সংগ্রহ শুরু করে। আমিরের নির্দেশে কেএনএফ থেকে ১৭ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরনের ভারি অস্ত্র ও বিদেশি অগ্নেয়াস্ত্র কিনে সংগঠনটি। এই অস্ত্র ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ নিতো। এছাড়া মাহমুদের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন স্থানে আনসার হাউজ তৈরি এবং পরিচালিত হতো।

    পলাতক জঙ্গি নেতা চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার সঙ্গে মাহমুদের একাধিকবার দেখা হয়েছে জানিয়ে র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, আমির মাহমুদের সঙ্গে আনসার আল ইসলামের নেতাদের সুসম্পর্ক ছিল। শীর্ষ জঙ্গি চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার সঙ্গে তার বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছিল। ২০২২ সালে কিশোরগঞ্জে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে একটি মিটিংয়ে মাহমুদের সঙ্গে আনসার আল ইসলামের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আনসার আল ইসলাম মাহমুদকে ১৫ লাখ টাকা দেয়।

    তিনি আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর অভিযান শুরু হলে গ্রেপ্তার আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ পাহাড় থেকে পালিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থাকেন। সংগঠনকে পুনরায় সংগঠিত করার জন্য তিনি পলায়নকৃত সূরা সদস্য ও অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে; ক্লোজ গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করছিল। এ সময় কেএনএফের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। কেএনএফ প্রধান নাথান বম পার্শ্ববর্তী দেশের মিজোরামে অবস্থান করছে। বিভিন্ন সময়ে কেএনএফের হামলা ও আক্রমণের বিষয়ে তার ইন্ধন থাকতে পারে। টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনের পর ৭-১০ দিন আগে তিনি মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের একটি বাসা ভাড়া নেয় ও সংগঠনের বেশকিছু সদস্য নিয়মিত বাসায় আসা-যাওয়া করত। নিরাপত্তার জন্য তিনি সবসময় তার সঙ্গে দুজন সশস্ত্র দেহরক্ষী রাখতেন।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জের যে বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেখানে বোমা তৈরির জন্য বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি পাওয়া গেছে। এছাড়া তার কাছে যে অস্ত্র ছিল সেটি তার আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার করতেন। তাদের প্রশিক্ষণের বিভিন্ন কৌশল দেখেন মনে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নাশকতার মাধ্যমে সংগঠনের জানান দিতে চেয়েছেন।

    তিনি আরও বলেন, এই সংগঠনটি এখন পর্যন্ত কেএনএফ ছাড়া বাইরের কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। এছাড়া দেশের বাইরে এই সংগঠনের কোনো কাজ নেই।

  • জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মাহফুজ ও তার স্ত্রী রিমান্ডে

    জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মাহফুজ ও তার স্ত্রী রিমান্ডে

    সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রাজধানীর ডেমরা থানার মামলায় নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা শামিন মাহফুজের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তার স্ত্রী নাজনীন সুলতানার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

    আজ শনিবার (২৪ জুন) আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। পরে ডেমরা থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) উপপরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবীর এ আদেশ দেন।

    আদালতে ডেমরা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মাহমুদুর রহমান বিষয়টি জানিয়েছেন।

    এর আগে শুক্রবার (২৩ জুন) রাতে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।

  • জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা গ্রেপ্তার

    জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা গ্রেপ্তার

    জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা শামিন মাহফুজ (মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি) ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।

    শুক্রবার রাতে রাজধানীর ডেমরা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়ে।

    রাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

    এ বিষয়ে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ রাতে ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শামিন মাহফুজ ও তার স্ত্রী ফাতিমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য শনিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।

  • ‘আনসার আল ইসলামের’ সঙ্গে সংগঠিত হওয়ার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের

    ‘আনসার আল ইসলামের’ সঙ্গে সংগঠিত হওয়ার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের

    নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফীল হিন্দাল শারক্বীয়া’ পুনরায় সংগঠিত হওয়ার পরিকল্পনা করছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

    নতুন জঙ্গি সংগঠনটির শূরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন ওরফে রাকিবসহ তিন সদস্য আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল অর্থসহ গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার হলে তাদের থেকে এই তথ্য পায় এলিট ফোর্সটি।

    গ্রেফতারকৃতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানে কথা বলেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার মঈন।

    র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে র‌্যাব-১ ও ৭ এর আভিযানিক দল গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে একটি অটোরিকশা থেকে মোশারফ হোসেন ওরফে রাকিব, জাকারিয়া হোসাইন ও মো. আহাদুল ইসলাম মজুমদার ওরফে সিফাত ওরফে মামিদকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও নগদ ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী লিফলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

    খন্দকার মঈন আরও জানান, গ্রেফতার মোশারফ ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র অন্যতম শূরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান। তিনি ২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে অবস্থানকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ এক জঙ্গির মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে দেশে ফিরে আনসার আল ইসলামে যোগদান করে এবং পাশাপাশি গার্মেন্টস পণ্যের ব্যবসা শুরু করেন। ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে তিনি সংগঠনের অর্থ সংগ্রহ ও সরবরাহ সংক্রান্ত কার্যক্রম এবং সমতলের যাবতীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করতেন। আনসার আল ইসলাম থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা প্রাপ্তিপূর্বক তার কাছে জমা ছিল।

    র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, রাজধানীর মুগদা এলাকায় থাকাকালীন হিজামা সেন্টারের আড়ালে সাংগঠনিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন মোশারফ। ঢাকাস্থ সকল শূরা কমিটির মিটিং তার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো।

    খন্দকার মঈন আরও জানান, ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত সংগঠনের শুরা সদস্য মায়মুনসহ অন্যান্যরা দেশ ও দেশের বাইরে থেকে সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করে তার কাছে জমা রাখত। মোশারফ সংগঠনের অর্থায়নে মুন্সিগঞ্জে গবাদি পশুর খামার স্থাপন করেন। তথাকথিত হিজরতকৃত অধিকাংশ সদস্য তার খামারে বিভিন্ন সময়ে অবস্থান নিতেন এবং তাদের শারীরিক কসরত ও তাত্ত্বিক জ্ঞান দিতেন। তিনি সংগঠনের আমির মাহমুদের নির্দেশনায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, অস্ত্র ও রসদ ক্রয়সহ সংগঠনের অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য অর্থ সরবরাহ করতেন এবং শুকনা খাবারসহ পাহাড়ে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় করে পার্বত্য প্রশিক্ষণ শিবিরে পাঠাতেন। এছাড়াও স্বেচ্ছায় নিরুদ্দেশ সদস্যদের পাহাড়ে পাঠানোর সামগ্রিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করতেন। বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ পরিচালনা ও সাংগঠনিক কাজে পার্বত্য অঞ্চলে প্রশিক্ষণ শিবিরে যান। পাহাড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে সংগঠনের আমির মাহমুদের নির্দেশনায় সমতলের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। আত্মগোপনে থেকে সংগঠনের অন্যান্য আত্মগোপনকৃত সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সংগঠনের সদস্যদের সংগঠিত করার চেষ্টা করতে থাকেন।

    ‘ইতোপূর্বে আনসার আল ইসলামের সদস্য থাকায় ওই সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় রাখতেন মোশারফ। আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে পুনরায় সংগঠিত হওয়ার পরিকল্পনা করছিল। পাহাড় থেকে পলায়নের সময় তার কাছে সংগঠনের প্রায় ২০ লাখ টাকা জমা ছিল যার মধ্য হতে সংগঠনের বিভিন্ন কাজে ইতোমধ্যে প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ করেছে। গ্রেফতারকৃত দুই সদস্যকে নিয়ে গাজীপুর হয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুরের জঙ্গল এলাকায় অবস্থান করে সংগঠনের আত্মগোপনকৃত অন্যান্য সদস্যদের একত্রিত করে আমিরের নেতৃত্বে পুনরায় সংগঠিত হওয়ার পরিকল্পনা করছিল মোশারফ।-বলেন র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন।

    গ্রেফতার জাকারিয়া সম্পর্কে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, জাকারিয়া ২০০৮ সালে স্থানীয় একটি মাদরাসা থেকে হিফজ সম্পন্ন করে ফরিদপুরে একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। ২০২১ সালে সংগঠনের শুরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান রাকিবের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনটিতে যোগ দেন। পরিবারকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে যাওয়ার কথা বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। পরবর্তীতে ২০২২ সালের প্রথম দিকে রাকিবের মাধ্যমে বান্দরবানের থানচি ও বাকলাইপাড়া হয়ে কেটিসিতে গমন করেন।

    পাহাড়ে গমনের পর বিভিন্ন অস্ত্র চালনাসহ বিভিন্ন ধরণের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন জাকারিয়া। পরবর্তীতে পাহাড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ত্যাগ করে সমতলে আসে এবং সমতলের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। পরবর্তীতে সংগঠনের আমিরের নির্দেশে রাকিবের সঙ্গে সংগঠনের বিভিন্ন স্থানে

    আত্মগোপন করেন। পরবর্তীতে সংগঠনের আমিরের নির্দেশে রাকিবের সঙ্গে সংগঠনের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনকৃত সদস্যদের একত্রিত করতে টাঙ্গাইলের মধুপুরের জঙ্গল এলাকায় যাওয়ার সময় গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন।

    গ্রেফতার আহাদুল কুমিল্লার একটি কলেজে অনার্স ৪র্থ সেমিস্টারে অধ্যয়নরত। তিনি ২০১৮ সালে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়ে সংগঠনের আমির মাহমুদের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরবর্তীতে সংগঠনের আমিরের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে। উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে তথাকথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। প্রথমে প্রায় দুই মাস আমির মাহমুদের বাসায় অবস্থান করেন। পরবর্তীতে মাহমুদের মাধ্যমে বান্দরবানের থানচি হয়ে কেটিসিতে গমন করেন। পাহাড়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন অস্ত্র চালনা, বোমা তৈরিসহ বিভিন্ন সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। পাহাড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে তিনিও প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ত্যাগ করে সমতলে এসে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। পরবর্তীতে সংগঠনের আমিরের নির্দেশে রাকিবের সঙ্গে সংগঠনের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনকৃত সদস্যদের একত্রিত করার চেষ্টা করেন।

  • জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা হয় ৬ মাস আগে : সিটিটিসি

    জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা হয় ৬ মাস আগে : সিটিটিসি

    নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে ঢাকার আদালত পাড়া থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) কর্মকর্তারা। আর ঘটনার ৬ মাস আগে থেকে এ নিয়ে পরিকল্পনা করা হয় বলেও জানানো হয়।

    আজ শনিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, শুক্রবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার কোতয়ালি থানার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গন থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন ফাতেমা তাসনীম ওরফে শিখা ও হুসনা আক্তার ওরফে হুসনা। ফাতেমা তাসনীম শিখা ২০১৪ সালে প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। একপর্যায়ে তার ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমনের মাধ্যমে সে আনসার আল ইসলামের আদর্শে দীক্ষিত হয় এবং পরবর্তীতে সায়মনের মাধ্যমে আবু সিদ্দীক সোহেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সোহেল আনসার আল ইসলামের সামরিক (আসকারি) শাখার সদস্য ছিলেন।

    তিনি বলেন, সোহেলের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে সে আরও গভীরভাবে সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৭ সালে মুক্তমনা ব্লগার অভিজিত রায়, দিপন ও নীলাদ্রি নিলয় হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আবু সিদ্দিক সোহেল গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে শিখা কারাবন্দি সোহলসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখে সংগঠনের কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু করে। আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা মোতাবেক গত বছরের ২০ নভেম্বর আদালতের কার্যক্রম শেষে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়। শিখা এ কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে।

    তিনি আরও জানান, পরিচয় গোপন করে আনসার আল ইসলামের সদস্যরা জঙ্গি ছিনতাইয়ের পুরো পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে ঢাকা এবং এর পাশের জেলায় একাধিক আনসার হাউস ভাড়া নেয়। সেখানে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ এবং সামরিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আয়মান এবং শিখাসহ অজ্ঞাতনামা আনসার আল ইসলাম সদস্যদের নিয়ে নিয়মিত মিটিং করত।

    আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনার প্রায় ৬ মাস আগে থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিএমএম কোর্টে হাজিরা দেওয়ার সময় এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয় এবং পরিকল্পনার সমন্বয়ক হিসেবে শিখাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ঘটনার দিন সে সিএমএম কোর্ট এলাকায় এসে পৌঁছে কৌশলে তার বাবার কাছ থেকে বিছিন্ন হয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া মশিউর রহমান ওরফে আয়মান’সহ আনসার আল ইসলামের সদস্যের সাথে যোগাযোগ করে পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।২০ নভেম্বর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার নিম্ন আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে মেরে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য আবু সিদ্দিক সোহেল ও মইনুল হাসান শামীমকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

    এ ঘটনায় রাতে ২০ জঙ্গিকে আসামি করে মামলা করেন পুলিশ পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন আকন্দ।

  • বান্দরবানে ‘জামাতুল আনসারে’র ৯ সদস্য গ্রেপ্তার

    বান্দরবানে ‘জামাতুল আনসারে’র ৯ সদস্য গ্রেপ্তার

    বান্দরবান থেকে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। আজ সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান র‍্যাবের সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান।

    তিনি বলেন, টঙ্কাবতী এলাকায় গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালানো হয়।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠনটির পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেন চম্পাইসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ।

    বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হওয়া কয়েকজন তরুণের বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে নতুন এ জঙ্গি সংগঠনটির খোঁজ পাওয়ার পর গত বছরের অক্টোবর থেকে পাহাড়ে র‍্যাবের অভিযান চলছে।

    ওই সময় থেকে ধারাবাহিক অভিযানে বিভিন্ন সময়ে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র অনেককে গ্রেপ্তার করেছে এলিট বাহিনী। পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ বা বম পার্টির সম্পৃক্ততা রয়েছে জঙ্গি সংগঠনটির সঙ্গে।

    অব্যাহত অভিযানের মধ্যে গত ২৩ জানুয়ারি র‍্যাব জানায়, জঙ্গি সংগঠনটির শীর্ষ পর্যায়ের দুই নেতাকে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে তারা গ্রেপ্তার করে। পাহাড়ে-সমতলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাড়া খেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিল জঙ্গিরা।

  • ‘হিজরত’ করা জঙ্গিদের মধ্যে ২৫ জঙ্গি গ্রেপ্তার, দুজনের মৃত্যু

    ‘হিজরত’ করা জঙ্গিদের মধ্যে ২৫ জঙ্গি গ্রেপ্তার, দুজনের মৃত্যু

    বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে এক বিশেষ অভিযান চালিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ সময় থানচি উপজেলার রেমাক্রি সেতু সংলগ্ন এলাকা থেকে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম। এ ছাড়া সাত লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

    গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্য ও অন্য তিনজন পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সদস্য। পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সদস্যরা নব্য জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।

    র‌্যাবের জঙ্গি বিরোধী বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রি-প্রাংশা এলাকায় এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) মঙ্গলবার ৭ ফেব্রুয়ারি নব গঠিত জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ১৭ সদস্য এবং তাদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ‘কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ বা ‘কেএনএফ’ এর ৩ সদস্যকে আটক করে।

    আজ বুধবার ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে বান্দরবান শহরের মেঘলায় পার্বত্য জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

    খন্দকার আল মঈন জানান, এই অভিযানসহ এ পর্যন্ত ৫৫ জন নব্য হিজরতকারী জঙ্গির মধ্যে ২৩ জনকে আটক করা সম্ভব হয়েছে। নিজেদের মধ্যে বিরোধে মারা গেছে দুজন এবং পুলিশবাহিনী আটক করেছে আরো দুজনকে। অবশিষ্ট ২৮ জনকেও আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে একজন জঙ্গিও অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।

    খন্দকার মঈন জানান, এর আগে কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সামরিক প্রধান রনবীরকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। সেসব তথ্যের ভিত্তিতে বর্তমানে সম্ভাব্য এলাকাগুলোতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

    খন্দকার আল মঈন জানান, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত আমরা ৫ জঙ্গিকে আটক করতে সক্ষম হই। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে থানচি উপজেলার রেমাক্রি ব্রিজের কাছাকাছি এলাকা থেকে আরো ১২ জঙ্গিকে আটক করা হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে ‘কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ বা ‘কেএনএফ’ এর তিন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয় র‌্যাব।

    গ্রেপ্তারকৃত ২০ জনকে বিভিন্ন মামলায় আটক দেখিয়ে বান্দরবান আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

  • রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলি, অস্ত্রসহ দুই জঙ্গি গ্রেপ্তার

    রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলি, অস্ত্রসহ দুই জঙ্গি গ্রেপ্তার

    কক্সবাজারে কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে র‍্যাব ও জঙ্গিদের মধ্যে গোলাগুলির পর দুই জঙ্গিকে দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ আটক করেছে র‍্যাব।

    সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (আইন ও গণমাধ্যম) আবু সালাম চৌধুরী।

    আবু সালাম চৌধুরী জানান, নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ এর শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান রনবীর ও তার সহযোগী বোমা বিশেষজ্ঞ বাশারকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্র-গোলাবারুদসহ কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

    এ বিষয়ে পরবর্তীতে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

  • পলাতক জঙ্গিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকি রয়েছে : পুলিশ

    পলাতক জঙ্গিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকি রয়েছে : পুলিশ

    ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত চত্বর থেকে গত রোববার ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত অবশ্যই ঝুঁকি থেকে যায় বলে দাবি করছে পুলিশ।

    আজ বুধবার দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) বিপ্লব বিজয় তালুকদার এসব কথা বলেন।

    তিনি বলেন, ঝুঁকি এড়াতে সারা দেশে পুলিশ ইউনিট ও বর্ডার নিয়ন্ত্রণে যারা রয়েছেন, তাদের সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যে দুই জঙ্গি পালিয়েছে, তাদের ছবি প্রতিটি থানায় পাঠানো হয়েছে।

    ডান্ডাবেড়ি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার আরও বলেন, ‘দুর্ধর্ষ আসামিদের ক্ষেত্রে ডান্ডাবেড়ি পরানোর বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই বিষয়গুলো এড়ানোর জন্য সবাইকে সমন্বিত করে একটা জায়গায় আনার চেষ্টা চলছে।’

  • ‘বড় ভাইয়ের’ নির্দেশে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ছক

    ‘বড় ভাইয়ের’ নির্দেশে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ছক

    নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে বড় ভাই ওরফে সাগর ওরফে মেজর জিয়া (চাকরিচ্যুত মেজর)। মেজর জিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হয়।

    পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতার দুই জঙ্গি মো. আরাফাত রহমান (২৪) ও মো. আ. সবুর ওরফে রাজ ওরফে সাদ ওরফে সুজন (২১) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছে।

    ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টায় ২০১২ সালে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন মেজর জিয়া। এই অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত থাকায় দুই সেনা কর্মকর্তা গ্রেফতার হলেও পালিয়ে যান জিয়া। এরপর তিনি যুক্ত হন জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে। বহিষ্কৃত জিয়ার পরিকল্পনা ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ঘটে একের পর এক হত্যাকাণ্ড। আনসার আল ইসলামের বেশিরভাগ নেতাকর্মী গ্রেফতার হলেও এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে তিনি। এরইমধ্যে কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ হয়েছে।

    ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পলাতক ও অজ্ঞাত আসামিদের গ্রেফতারে রাজধানীসহ দেশজুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে।

    মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আয়মান ওরফে মশিউর রহমান (৩৭), সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক (২৪), তানভীর ওরফে সামশেদ মিয়া ওরফে সাইফুল ওরফে তুষার বিশ্বাস (২৬), রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ ওরফে সুমন (২৬) ও মো. ওমর ফারুক ওরফে নোমান ওরফে আলী ওরফে সাদ (২৮) পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে।

    এ পরিকল্পনার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুটি মোটরসাইকেলযোগে আনসার আল ইসলামের অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন সদস্য অবস্থান নেয়। এছাড়াও আদালতের আশপাশে অবস্থান করা অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য আদালতের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করে। এরপর তারা পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

    মামলা এজাহারে আরও বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে কাশিমপুর থেকে ১২ জন আসামিকে ঢাকার আদালতে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে আসা হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার প্রসিকিউশন বিভাগে আসামিদের হাজিরা দেওয়ার জন্য সিজেএম আদালত ভবনের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইবুনাল ৮-এ নিয়ে যাওয়া হয়।

    এ মামলার শুনানি শেষে জামিনে থাকা ১৩ নম্বর আসামি মো. ঈদী আমিন (২৭) ও ১৪ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি (২৪) আদালত থেকে বের হয়ে যায়।

    এরপর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে আদালতের মূল ফটকের সামনে পৌঁছানো মাত্র আগে থেকেই দুটি মোটরসাইকেলযোগে অজ্ঞাতনামা আনসার আল ইসলামের ৫/৬ জন সদস্য, আদালতের আশপাশে অবস্থানরত আনসার আল ইসলামের আরও ১০/১২ জন সদস্য হামলা করে। তারা কনস্টেবল আজাদের হেফাজতে থাকা আসামি মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান (২৪), মো. আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪) মো. আরাফাত রহমান (২৪) ও মো. আ. সবুর ওরফে রাজু ওরফে সাদ ওরফে সুজনকে (২১) ছিনিয়ে নিতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে।

    কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা তাদের কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে আসামিদের মধ্যে কোনো একজন তার হাতে থাকা লোহা কাটার যন্ত্র দিয়ে কনস্টেবল আজাদের মুখে আঘাত করে।

    সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা যায়
    জঙ্গিদের মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে যাওয়ার দুটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছে জাগো নিউজ। এতে দেখা যায়, ১ নম্বর রঘুনাথ দাস লেনের রায় সাহেব বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে লাল রঙের একটি মোটরসাইকেলে তিনজন পালিয়ে যান। তাদের পিছু পিছু আরও কয়েক যুবক দৌড়াচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে একজনের হাতে হেলমেট, দুজনের হাতে ব্যাগ ও দুজন খালি হাতে ছিলেন।

    ছিটানো হয় পিপার স্প্রে
    আদালত প্রাঙ্গণে দায়িত্বরত পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্য দিনের মতো আজকেও ডিউটিরত ছিলাম। হঠাৎ পিপার স্প্রে ছিটানোর পরে চারদিকে ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

    পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের এক কর্মকর্তা বলেন, আদালতের শুনানি শেষে প্রথমে চারজনকে নিচে নামিয়ে আনা হয়। দুটি হাতকড়া দিয়ে দুজনকে আটকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বাকি আসামিরা তখন উপরে ছিল।

    তিনি বলেন, চারজনের মধ্যে মইনুল হাসান ও আবু সিদ্দিককে জঙ্গিরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তবে মো. আরাফাত ও মো. সবুজকে নিতে পারেনি।

    আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
    জঙ্গিদের আদালতে আনার দিন নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. গোলাম ছারোয়ার খান জাকির।

    আদালতের নিরাপত্তার ঘাটতি আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলতে পারবে। তবে অবশ্যই নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার হওয়া উচিত ছিল। তাদের কীভাবে নামিয়ে আনা হয়েছিল তা জানি না।

    আদালত এলাকা পরিদর্শন শেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়েছি। আমাদের ডিবির প্রত্যেকটা টিম কাজ করছে। আশা করছি তাদের (পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি) দ্রুত গ্রেফতার করতে পারবো।

    ‘জঙ্গিরা বিভিন্ন কৌশল নিয়ে কাজ করে। এবার তারা নতুন একটি কৌশল নিয়েছে। আমরা শুনেছি আদালতের গেটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের চোখে স্প্রে করে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়েছে অপর জঙ্গিরা। চোখে স্প্রে করার কারণে দায়িত্বরতরা কিছু দেখতে পারেননি।’

    ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।

    কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা
    আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

    তিনি বলেন, বিচারের মাধ্যমে দুই জঙ্গির ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ দুজন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। তাদের আনা হয়েছিল, কোর্ট হাজতে তাদের রাখা হয়েছে, তাদের ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে প্রডিউস করার পর আবার নির্দিষ্ট রুমে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন আমরা জানলাম যে পুলিশরা তাদের দায়িত্বে ছিলেন, তাদের ওপর কেমিক্যাল ছুড়ে, অজ্ঞান করে কয়েকজন তাদের সমর্থকদের নিয়ে পালিয়ে যায়।

    তিনি বলেন, ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা রেড অ্যালার্ট জারি করেছি। আমাদের পুলিশ তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে, তাদের খুব শিগগির ধরতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করছি। আমরা বর্ডার এলাকাগুলোতেও বলে দিয়েছি, তারা যেন দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে।

    ‘এ ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা মনে করি যদি কারও অবহেলা থাকে, যদি কারও গাফিলতি থাকে যদি কেউ ইচ্ছা করে এ কাজটি ঘটিয়ে থাকেন, তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।’

    আসাদুজ্জামান খান বলেন, এটা নিয়ে নিশ্চয়ই আমরা তদন্ত কমিটি করবো। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। সচিব, কারা মহাপরিদর্শক, ডিএমপি কমিশনার সবাই এটা নিয়ে মিটিং করছেন। আমরা খুব সহসাই পরবর্তী নির্দেশনা জানাবো।

    রাজধানীতে রেড অ্যালার্ট
    আদালত থেকে ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারে রাজধানীতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। রাজধানীর প্রতিটি থানা ও অন্যান্য ইউনিটকে চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

    ধরিয়ে দিলে পুরস্কার ২০ লাখ
    মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা পুস্কারের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

    ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি, প্রতিবেদন তিনদিনের মধ্যে
    দুই জঙ্গি পালানোর ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে সভাপতি করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। রোববার (২০ নভেম্বর) ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

    তদন্ত কমিটির সভাপতি হলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম আ্যন্ড অপস) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

    কমিটির সদস্যরা হলেন ডিএমপির যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস), যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি), লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও ডিএমপির সিআরও’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

    পলাতকদের দ্রুত গ্রেফতারের আশা ডিএমপির
    রোববার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, পুলিশের চোখে স্প্রে মেরে ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গেট থেকে দুই আসামিকে কারা ছিনিয়ে নিয়েছেন, তাদের সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।

  • ছিনিয়ে নেওয়া ২ জঙ্গিকে ধরিয়ে দিলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার

    ছিনিয়ে নেওয়া ২ জঙ্গিকে ধরিয়ে দিলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার

    মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা পুস্কারের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

    রোববার (২০ নভেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. মনজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

    তিনি বলেন, পলাতক দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছে।

    এদিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

    রোববার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, ছিনিয়ে নেওয়ার পর পরই তাদের ধরতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। পুলিশ তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে। আশা করি শিগগির তারা ধরা পড়বে।

    এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তদন্তের পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

    পুলিশের চোখে স্প্রে করে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দুই জঙ্গি আবু ছিদ্দিক সোহেল ও মঈনুল হাসান শামীমকে ছিনিয়ে নিয়েছে জঙ্গিরা।

    রোববার দুপুরের দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

    ২৪ঘণ্টা/এনআর