চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে ধ্বংস করা হলো প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৩৭০ লিটার কোকেইন। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আটক হওয়া কোকেইনের চালান এটি।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গাস্থ র্যাব-৭ সদর দফতর সংলগ্ন এলিট হলে আয়োজিত মাদক ধ্বংস ও মাদকবিরোধী প্রচারণা অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের উপস্থিতিতে এসব মাদক ধ্বংস করা হয়।
চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পক্ষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান ও চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে এস্টেট শাখায় কর্মরত সহকারী ব্যবস্থাপক রায়হান উদ্দিন মাদক ধ্বংস কার্যক্রম তদারকি করেন।
এর আগে র্যাব-৭ কার্যালয়ের এলিট হলে মাদক বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, মাদকের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে এবং মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।
মাদক ধ্বংস ও মাদকবিরোধী প্রচারণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন- প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশে মাদক নির্মূলে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মাদক, জঙ্গিবাদ নির্মূলে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে আমাদের র্যাব ও পুলিশ বাহিনী। তাদের অব্যাহত অভিযানে দেশের মাদক পাচার মাদক ব্যবহার কমে এসেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স এর নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মাদক ও মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূলে অভিযান অব্যাহত রেখেছে র্যাব।
র্যাবের স্লোগান ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে। এযাবৎ মাদকের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযানে ১০৬ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন বলে মন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, সুন্দরবন একসময় জলদস্যু, বনদস্যুদের অভয়ারণ্য ছিল। কোনো পর্যটক, স্থানীয় জেলে সুন্দরবনে যেতে পারতেন না। কিন্তু র্যাবের প্রচেষ্টায় এখন সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হয়েছে। দেশে ইয়াবা প্রবেশের প্রধান রুট কক্সবাজার। সেখানেও র্যাব, পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তা কমে এসেছে বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, মো. হাবিবুর রহমান এমপি, মো. ফরিদুল হক খান এমপি, পীর ফজলুর রহমান এমপি, চট্টগ্রাম-১১ আসনের এমপি এম আবদুল লতিফ, র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. বেনজীর আহমেদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান।
এ সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটোয়ারী, বিভিন্ন সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তাসহ র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাদক ও জঙ্গিবাদ বিরোধী শপথবাক্য পাঠ করান র্যাব সদর দফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপরেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার।
পরে ৩৭০ লিটার কোকেনসহ কয়েক হাজার কোটি টাকার অবৈধ জব্দ করা মাদক ধ্বংস করা হয়।