লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : পুলিশ জনগণের সেবক, জনগণের বন্ধু। পুলিশ বাহিনী দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মানবিক কাজেও এগিয়ে আসেন। করোনাকালেও পুলিশ বাহিনী মানুষের পাশে থেকে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মানবতাবোধের জায়গা থেকে পুলিশ যে সুখে-দু:খে মানুষের পাশে থাকেন সেটি বার বার প্রমাণিত। তেমনি একজন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা লোহাগাড়া থানার ওসি মোঃ জাকির হোসাইন মাহমুদ।
শোনা যাক সেই মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা ওসি জাকির হোসাইন মাহমুদের মানবিকতা।
স্থানীয়সুত্রে জানা যায়, শাহিন আকতার। তাঁর স্বামী মৃত মুহাম্মদ আলী। পেশায় ছিলেন রং একজন মেস্ত্রী। বাড়ী চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডস্থ দক্ষিণ হরিণা মনছুর আলী সিকদার পাড়ায়। মোঃ আলী গেল বছরের ১ অক্টোবর গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর সংসারে রয়েছে ২ মেয়ে ১ ছেলে। বড় মেয়ে নুরাইন জান্নাত নুরী (১২)। সে দক্ষিণ হরিণা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেনীতে পড়ে। দ্বিতীয় মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা ইসফা (৯)। সে একই বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেনীতে পড়ে। একমাত্র সন্তানের বয়স মাত্র ৬ মাস। স্বামী হারানোর পর থেকে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অতিকষ্টে খেয়ে না খেয়ে কোন রকম দিনযাপন করছিলেন অসহায় বিধবা শাহিনা আকতার। তাঁর উপার্জনের কেউ নেই। তিনি কি খেয়ে পরে বাচঁবে, নাকি মেয়েদের পড়া-লেখা করাবে এমন এক দুর্বিষহ জীবন চলছে তাঁর।
এদিকে, গত ৫ ফেব্রুয়ারী দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লোহাগাড়ার আধুনগরের বিধবা শাহিন আক্তারের অসহায়ত্বের কাহিনী চোখে পড়ে লোহাগাড়া থানার ওসি জাকির হোসাইন মাহমুদের। এরপর মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন এ অসহায় মহিলার পাশে দাঁড়ানো দরকার।
তাই কালক্ষেপন না করে ওইদিন বিকেলেই খবর নিয়ে এ অসহায় বিধবা শাহিন আক্তারের বাড়িতে উপস্থিত হন ওসি জাকের হোসাইন মাহমুদ। তিনি নিজস্ব তহবিল থেকে নগদ টাকা এবং দুই মেয়ের লেখা-পড়ার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা সামগ্রী অসহায় বিধবা শাহিন আক্তারের হাতে তুলে দেন। এ সময় স্থানীয় আধুনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাজিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি জাকির হোসাইন মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে সবসময় মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলার পাশাপাশি মানবিক কাজেও বাংলাদেশ পুলিশ ভূমিকা রেখে চলছে । তারই ধারাবাহিকতায় আধুনগরের বিধবা শাহিন আকতারের অসহায়ত্বের খবর ফেসবুকে দেখে আবেগ আপ্লুত হয়েছি। তাই বিবেকের তাড়নায় আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে শাহিন আক্তারের দুই মেয়েকে শিক্ষা সামগ্রী ও কিছু নগদ অর্থ প্রদান করে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলে নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করি।
২৪ ঘণ্টা/এ. কে. আজাদ