Tag: জাতীয় সংসদ

  • দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু

    দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু

    দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় বসে সংসদের প্রথম অধিবেশন। অধিবেশনের প্রথম দিন টানা চতুর্থবারের মতো জাতীয় সংসদের স্পিকার পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

    একাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়।

    অধিবেশনের শুরুতে ডেপুটি স্পিকার সবাইকে স্বাগত জানান। এরপর নতুন স্পিকার নির্বাচন করা হয়। সংসদে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পিকার হিসেবে শিরিন শারমিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সম্পাদক চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন ওই প্রস্তাব সমর্থন করেন। স্পিকার হিসেবে অন্য কোনো মনোনয়ন ছিল না। পরে কণ্ঠভোটে স্পিকার নির্বাচিত হন।

    এরপর সংসদ ২০ মিনিটের জন্য সংসদ মুলতবি করা হয়। এসময় সংসদ ভবনস্থ রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নতুন স্পিকারের শপথ পড়ান।

    স্পিকার নির্বাচনের সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরসহ সরকারি ও বিরোধী দলের প্রায় সব সংসদ সদস্য সংসদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

    রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশন মুলতবি করা হবে।

    একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ২০১৯ সালে ৩০ জানুয়ারি। সেই হিসাবে ২৯ জানুয়ারি শেষ হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ।

  • সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসছে আজ

    সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসছে আজ

    জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশন বসছে আজ বৃহস্পতিবার। এদিন বেলা ১১টায় অধিবেশন শুরু হবে। এটি একাদশ জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশন। এর আগে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক।

    অধিবেশন শুরুর দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও দ্বিতীয় দিন শুরু হবে বিশেষ অধিবেশন। এদিন (শুক্রবার) বিকেল ৩টায় বসবে সংসদের বৈঠক। এ বৈঠকে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ স্মারক বক্তৃতা দেবেন। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের এটিই হয়তো সংসদের শেষ ভাষণ। আগামী ২৩ এপ্রিল তার দুই টার্মের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।

    রাষ্ট্রপতির ভাষণের পরদিন শনিবার সকালে শুরু হবে সংসদের বৈঠক। ওই বৈঠকে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৪৭ বিধিতে সাধারণ প্রস্তাব তুলবেন। এরপর তিনি ওই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করবেন। পরে দুদিনব্যাপী সাধারণ প্রস্তাবের ওপর সংসদ সদস্যরা বক্তব্য দেবেন। এরপর তা গ্রহণ করা হবে।

    করোনাকালের ধারাবাহিকতায় এবারও এমপিদের কোভিড-১৯ টেস্ট করে সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতে হবে। এ ছাড়া সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে করোনার নমুনা পরীক্ষা করতে হবে।

  • জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির সাথে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

    জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির সাথে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

    রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদের সাথে বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনে তাঁর অফিস কক্ষে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    “সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন,” রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো: জয়নাল আবেদীন বাসসকে জানান।

    রাষ্ট্রপতি হামিদ ২১শে বইমেলায় তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ “আমার জীবননীতি, আমার রাজনীতি” এর মোড়ক উন্মোচন করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

    আবেদিন জানান, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির অফিস কক্ষে প্রায় ঘন্টাখানেক অবস্থান করেন।

    এ সময় রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।

  • কর্মহীন প্রবাসী শ্রমিকদের কর্মস্থলে পুনঃনিয়োগে সরকারে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

    কর্মহীন প্রবাসী শ্রমিকদের কর্মস্থলে পুনঃনিয়োগে সরকারে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন প্রবাসী শ্রমিকেরা যাতে পুনঃনিয়োগ পেতে পারে সেজন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দুস্থ শ্রমিকদের জরুরী ত্রাণ সহায়তারও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

    তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে কর্মহীন হয়ে পড়া বাংলাদেশি কর্মীরা যাতে করোনা-পরবর্তী সময়ে পুনরায় কর্মে নিয়োগ পেতে পারেন সেজন্য বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আমরা কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।’

    সরকার প্রধান আরো বলেন, ‘এই অন্তবর্তী সময়ে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের মাধ্যমে আমরা দুস্থ ও কর্মহীন হয়ে পড়া প্রবাসী কর্মীদের মাঝে প্রায় ১১ কোটি টাকার ওষুধ, ত্রাণ ও জরুরি সামগ্রী বিতরণ করেছি।’

    শেখ হাসিনা আজ দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশনে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের তারকা চিহ্নিত প্রশ্ন এবং সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

    এর আগে সাতদিন বিরতির পর বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের মুলতবি বৈঠক পুণরায় শুরু হয়।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার কারণে চাকরিচ্যুত হয়ে কিংবা অন্য কোনো কারণে বিদেশফেরত কর্মীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের অনুকূলে ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করেছি।’

    তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিদেশ প্রত্যাগত কর্মীদের এবং প্রবাসে করোনায় মৃত কর্মীর পরিবারের উপযুক্ত সদস্যকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্পসুদে ও সহজ শর্তে বিনিয়োগ ঋণ প্রদানের জন্য আমরা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছি। এ-সংক্রান্ত নীতিমালা ইতোমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে।’

    সংসদ নেতা বলেন, ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী শুধুমাত্র বৈধ ও নিবন্ধিত অভিবাসী মৃত কর্মীর পরিবারকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তিন লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। করোনা মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্তমানে করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত নির্বিশেষে সকল প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য আমরা তিন লাখ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’

    করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে প্রবাসী শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তবে, এ চাপ প্রশমিত করার জন্য আমাদের সরকার বিভিন্নমুখী কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’

    তিনি বলেন, ‘কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে আমি কতিপয় সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের নিকট এ বিষয়ে পত্র প্রদান করেছি। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’

    ‘আমাদের সরকারের গৃহীত খাদ্য ও চিকিৎসা কূটনীতির আওতায় বিশ্বেও বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও ওষুধ প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য আমাদের পাশবর্তী দেশগুলোতে যেখানে লক্ষধিক শ্রমিক ফেরত এসেছেন সেখানে বাংলাদেশের মাত্র ২২ হাজার শ্রমিক ফেরত এসেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত কূটনৈতিক উদ্যোগের ফলে ফিরে আসা প্রবসী শ্রমিকের সংখ্যা এখনও কম রয়েছে’, যোগ করেন তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ফিরে আসা শ্রমিকদের টেকসই পূনর্বাসনের লক্ষ্যে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ এবং যথাযখ সহায়তা প্রদানের জন্য একটি ডাটাবেজ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়া যারা পুণরায় বিদেশে যেতে সক্ষম তাঁদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

    তিনি বলেন, প্রবাসীদের বিদেশে চাকুরী ধরে রাখা এবং নতুন নতুন প্রফেশনে যোগদান এবং কৃষিখাতে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স এন্ড রিকোভারী ফান্ড’ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, এই ফান্ডটি হবে ‘ক্লাইমেট ট্রাস্ট ফান্ড’ ও ‘ক্লাইমেট রেসিলেন্স ফান্ড’ এর অনুরূপ।
    শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশে গমনাগমনের সুবিধার্থে আমরা ইতোমধ্যে কাতার এয়ারওয়েজ, টার্কিশ এয়ারলাইন্স, এয়ার অ্যারাবিয়া এবং এমিরেটসকে বাংলাদেশে নিয়মিত বিমান চলাচলের অনুমতি প্রদান করেছি। তাছাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-লন্ডন রুটে বিমান চালু করা হয়েছে।’ ঢাকা-কুয়ালামপুর রুটে বিমান চালনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে।

    করোনা চলাকালীন পাসপোর্ট অধিদফতরে প্রাপ্ত ২ লাখ ১৫ হাজার আবেদনের অধিকাংশ পাসপোর্ট মুদ্রণ করে বিদেশস্থ বিভিন্ন মিশনে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাসপোর্ট না থাকার কারণে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য যে সকল পাসপোর্ট মুদ্রণের অপেক্ষায় রয়েছে, তা দ্রুত মুদ্রণ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে বিতরণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব সংসদে

    স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব সংসদে

    স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তাব এসেছে জাতীয় সংসদে।

    বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান এ প্রস্তাব দিয়েছেন।

    মঙ্গলবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাব বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে এ প্রস্তাব করেন পীর ফজলুর রহমান।

    দেশের স্বাস্থ্য খাতের ভঙ্গুর চিত্র তুলে ধরে পীর ফজলুর রহমান বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাত দুরাবস্থার মধ্যে পড়ে আছে। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নাকি মিনা কার্টুনের টিয়া পাখির দ্বারা চলছে। আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরি। সেইসব গ্রামের মানুষ আমাকে বলেছেন যে, আপনি তো সংসদে কথা বলতে পারেন।

    আপনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ে দিতে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে দেওয়ার কথা বলেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে মানুষের এই কথাটি জানালাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় সংসদের অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

    এদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে করোনা পরিস্থিতিতে উঠে আসা দেশের স্বাস্থ্য খাতের দুরাবস্থা নিয়ে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • ‘মীরজাফর মোশতাক ও জিয়ার চক্রান্তে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়’

    ‘মীরজাফর মোশতাক ও জিয়ার চক্রান্তে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়’

    মীরজাফর মোশতাক ও জিয়ার চক্রান্তে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় সংসদের সভাপতিত্বে ছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

    আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির দীর্ঘ সংগ্রামের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে যে অর্জন সেটা হচ্ছে- বাংলাদেশের স্বাধীনতা। জাতি স্বাধীন হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।

    তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য জাতির পিতা রাষ্ট্র পরিচালনার যখন দায়িত্ব পেলেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটিকে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক সে সময় সেই আরেক মীরজাফর মোশতাক এবং জিয়ার চক্রান্তে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়ে গেল।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৭৫৭ সালে ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে সিরাজউদ্দৌলা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে যুদ্ধে হেরে যান। সেখানে মীরজাফর আলী খান বেঈমানি করেছিল। তার ফলে কিন্তু এই পতন ঘটে। অর্থাৎ তখন সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলা উড়িষ্যাসহ এই অঞ্চলের শাসক। সেই স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল পলাশীর যুদ্ধে আম্রকাননে।’

    ‘আর ২৩ জুন প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর সেই আওয়ামী লীগ আবার সেই সূর্য উদয় করে। আওয়ামী লীগের সংগঠন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।

    তিনি বলেন, ‘আমি জাতির পিতার প্রতি সম্মান জানিয়ে এটুকু বলব- তিনি আজীবন মানুষের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। জনগণের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি তার সংগ্রামের পথে অনেক বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করেছেন। কিন্তু তিনি ১৯৭১ সালের ১৫ মার্চ যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা হলো- ‘‘জীবনের বিনিময়ে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের স্বাধীন-মুক্ত মানুষ হিসেবে স্বাধীনভাবে আর আত্মমর্যাদা সম্পন্নভাবে বাস করার নিশ্চয়তা দিয়ে যেতে চাই।’’ তিনি ভাষা আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা পাই।’

    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার জন্মলগ্ন থেকেই মানবতার সেবা করে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একটু পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব- একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে তখনই বাঙালি কিছু পেয়েছে। তখনই বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কিন্তু তারপরও আমরা দেখেছি সবসময় এই বাঙালিকে কীভাবে পেছনে টেনে রাখবে সেই প্রচেষ্টাই করা হয়েছে।’

    জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করার জন্য দীর্ঘ পরিকল্পনা করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমরা সেটা করতে পারিনি। আজ আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সীমিতভাবে উদযাপন করছি। কারণ লোক সমাগম হোক এ ধরনের কর্মসূচি আমরা বাতিল করেছি জনগণের কথা চিন্তা করে। জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে। কারণ আমাদের কাছে জনগণের কল্যাণই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

    এ সময় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • সংসদের ৪৩ কর্মকর্তা ও ৮২ আনসার করোনায় আক্রান্ত

    সংসদের ৪৩ কর্মকর্তা ও ৮২ আনসার করোনায় আক্রান্ত

    আসন্ন বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে সংসদের কর্মকর্তাদের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ৪৩ জনের রেজাল্ট পজিটিভ এসেছে। অথচ তাদের অধিকাংশের শরীরে তেমন কোনো উপসর্গ ছিল না।

    করোনা পজিটিভ হওয়াদের অনেকেই স্পিকারের দফতরে অবাধে যাতায়াত করতেন। অধিবেশন চলাকালীন অনেকেরই সংসদ কক্ষে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল।

    আজ সোমবার (৮ জুন) সংসদ ভবনের সংসদ সচিবালয় কমিশনের ৩১তম সভা এবং পরে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই দুই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে দায়িত্বরত ৮২ জন আনসার সদস্য করোনায় আক্রান্ত। এছাড়া সংসদে কর্মরত তিনজন পুলিশ সদস্যও করোনায় আক্রান্ত।

    সংসদের ৪৩ কর্মকর্তাসহ বিপুল সংখ্যক আনসার ও পুলিশ সদস্যের করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরে সংসদে কর্মরত বাকিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

    আগামী ১০ জুন থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। এ কারণে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় অধিবেশন চলাকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের পাশাপাশি করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা।

    এরই অংশ হিসেবে সংসদে দায়িত্বরত প্রায় ৩০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনাভাইরাস পরীক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়। গত ২ জুন থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়। সোমবার তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা শেষ হয়। কিন্তু ওই অধিবেশনে যোগ দিতে পারেন এমন সংসদ সদস্যদের (এমপি) করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

    সংসদ মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার আরিফুল হক সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, সংসদের ৪৩ কর্মকর্তার শরীরে আমরা করোনা পজিভিট পেয়েছি। এর মধ্যে আজ সোমবার ১১ জনের শরীরে, গতকাল রোববার ১৬ জনের শরীরে এবং শনিবার চারজনের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়।

    এদিকে, গতকাল রোববার (৭ জুন) আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক (যোগাযোগ) মেহেনাজ তাবাসসুম রেবিন জানান, আনসার বাহিনীর করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৮২ জন ব্যাটালিয়ন আনসার সংসদ সচিবালয়ে কর্মরত।

    সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, সংসদে আক্রান্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।

    সূত্র জানায়, আক্রান্তদের মোবাইলে ‘করোনা পজিটিভ’ জানিয়ে মেসেজ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আমর্স তাদের তালিকা ধরে ফোন দিচ্ছেন। তাদের সংসদে না আসার জন্য বলা হচ্ছে। আজও সংসদ সচিবালয়ের ৩১তম কমিশন বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা ছিল এমন কয়েকজন কর্মকর্তার করোনা শনাক্ত হয়। পরে তারা বৈঠকে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা পরীক্ষার জন্য সংসদ সদস্যদের জন্য নির্দিষ্ট মেম্বারস ক্লাবে একটি বুথ তৈরি করা হয়। সেখানে নমুনা নিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে অধিবেশনে অংশ নেয়া এমপিদের করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে না বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন।

    তিনি বলেন, ‘সংসদে যাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার দরকার ছিল তাদের করাচ্ছি। এছাড়া অনেকে নিজ নিজ উদ্যোগে পরীক্ষা করাচ্ছেন।’

    এমপিদের পরীক্ষার ব্যাপারে চিফ হুইপ বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের ব্যাপারে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। কারণ আজ টেস্ট করলাম কাল যে পজেটিভ হবে না তার কোনো গ্যারান্টি আছে? তবে নিজেদের সেভ করার জন্য টেস্ট করলে ভালো। আমরা কীভাবে বলি?’

    এদিকে এমপিদের করোনা পরীক্ষা না করায় সংসদে কর্মরতদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কারণ এখন পর্যন্ত সাতজন এমপি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একজন প্রতিমন্ত্রীর বাসায় কর্মরত চারজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এজন্য সংসদ যোগ দেবেন এমন এমপিদেরও করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে।

    এ বিষয়ে সংসদের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘শুধু শুধু আমাদের করোনা নেগেটিভ হলে কী হবে? সংসদ সদস্যদেরও করোনা পরীক্ষা করানো উচিত। কারণ তারা জনসাধারণের সঙ্গে বেশি মেশেন। তাই আমাদের করোনা নেগেটিভ হলেও আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে।’

    আগামী ১০ জুন শুরু হচ্ছে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশন। অধিবেশন শুরুর পরের দিন অর্থাৎ ১১ জুন বাজেট উত্থাপন হবে। এটি পাস হবে ৩০ জুন। বাজেট অধিবেশন ঘিরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে অনেকগুলো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং এটা চলতেই থাকবে:প্রধানমন্ত্রী

    মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং এটা চলতেই থাকবে:প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা মাদকের কবল থেকে যুবসমাজকে রক্ষার জন্য এর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চলমান মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

    তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে দিয়েছি। এই মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে এবং এটা চলতেই থাকবে। কারণ মাদক একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাদক দেশেরও ক্ষতি করে। আর যে মাদক সেবন করে সে নিজেরও ক্ষতি করে। কাজেই এর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। যার একটা হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করা।’

    তিনি বলেন, ‘এজন্য আমরা তাঁদের অভিভাবক বা স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বক্ষেত্রেই সবাইকে সচেতন করছি, প্রত্যেকে যেন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে মাদককে দূরে রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

    প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গার এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধূলা সহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে যুবকদেরকে ব্যস্ত রাখা, যার ফলে তাঁরা এসব দিকে নজর না দিয়ে নিজের জীবনকে যেন সুন্দরভাবে গড়তে পারে, সে ব্যবস্থাটাও আমরা নিয়েছি।

    বিএনপি’র সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রটোকল নিয়ে চলি বলে আমি দেশের অবস্থা যে, জানি না সে ধারনাটা ঠিক নয়।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যুবসমাজ হারিয়ে যাক,আমরা চাইনা। তাঁদেরকে সঠিক পথে নিয়ে সুশিক্ষিত করে ,তারা যেন মানুষের মত মানুষ হয় এবং দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে এবং দেশের উন্নয়ন করে সেদিকেই আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি এবং কি হচ্ছে আমরা নজরে রাখছি।’

    তিনি বলেন, আমি সবদিকে নজর রাখার চেষ্টা করি। আবার যখন বেশি কাজ করি তখন এই বিরোধী দলের সাংসদরাই প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রীকে কেন এত কাজ করতে হবে,দেখতে হবে। তবে, আমি মনে করি আমি যেহেতু দায়িত্বে রয়েছি তাই সবদিকে নজর দেওয়াটা আমার দায়িত্ব এবং কর্তব্য।

    তিনি অতীতের অন্ধকার যুগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন,’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় আসে, মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র,অর্থ তুলে দিয়ে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি শুরু করেছিল।

    তিনি বলেন, অনেক মেধাবী ছেলে যাদেরকে আমরা চিনতাম, দেখা গেল-এসএসসিতে স্যান্ড করেছে, তাকে একহাতে অর্থ আরেক হাতে অস্ত্র দিয়ে বিপথে ঠেলে দেওয়া হয়। জীবনে আর কিছু তারা করতে পারেনি। হারিয়ে গেছে সমাজ থেকে। এরকম ঘটনাও ঘটেছে।

    সংসদ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের যুব সমাজের জন্য আমরা সন্ত্রাস,মাদক, জঙ্গিবাদ দূর করে তারা যেন সুস্থ জীবনে ফিরে আসে সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

  • পেঁয়াজের দাম নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ

    পেঁয়াজের দাম নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ

    সারা দেশে অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবার শুরু হয়েছে জাতীয় সংসদেও।

    আজ বৃহস্পতিবার সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকার ও বিরোধী দলের একাধিক সংসদ সদস্য (এমপি)। তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।

    সংসদ অধিবেশনে ‘পয়েন্ট অব অর্ডারে’ দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন সরকারদলীয় জ্যেষ্ঠ এমপি মোহাম্মদ নাসিম। সরকার ও বিরোধী দলের পাঁচ সদস্য এ বিষয়ে বক্তব্য দেন।

    প্রতিদিন পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ছে, সে প্রশ্ন রেখে নাসিম বলেন, ‘পেঁয়াজের ঝাঁজ বেশি হয়ে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে এটা নিয়ে প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। মানুষের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া হলে সেটা খারাপ হবে। পেঁয়াজের দাম প্রায় ২০০ টাকা হয়ে গেছে।

    নাসিম বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী যখন বলেন ১০০ টাকার নিচে দাম নামবে না, তাহলে ব্যবসায়ীরা তো সুযোগ পেয়ে যায়। বলা হচ্ছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। তাহলে কেন দাম বাড়ছে, এটা বোধগম্য নয়। এতে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে বলেছিলেন, পেঁয়াজের ঝাঁজ বেড়ে গেছে। তিনি ভারতকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ না করতে অনুরোধ করেছিলেন। সংসদে অর্থমন্ত্রী আছেন। বাণিজ্যমন্ত্রীকে দেখা যাচ্ছে না। অর্থমন্ত্রীকে বলব, পেঁয়াজের ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আরও তৎপর হওয়া উচিত। অর্থমন্ত্রী যদি জবাব দেন, তাহলে আমরা আশ্বস্ত হব।’পরে অবশ্য অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে সংসদে কোনো বক্তব্য দেননি।

    সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর অনেক কর্তব্য রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে পেঁয়াজের দাম একটু হয়তো বেড়েছে। দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে, আজকে পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা। আমরা কোনো দিনই এটা ভাবিনি।’

    জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘গত পরশু বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৮০ টাকা। ওই দিন এই সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে শিল্পমন্ত্রী দেওয়া বক্তব্যে পেঁয়াজের মূল্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে বললেন। এটা বলার পরদিন দাম হয়ে গেল ১৫০ টাকা। আর আজকে হলো ২০০ টাকা।’

    মুজিবুল হক বলেন, ‘ভারতে পেঁয়াজের দাম না পেয়ে কৃষক কাঁদছেন। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে এত ভালো সম্পর্কের পর প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে পদক্ষেপ নিলে এই সংকট থাকত না।’

    পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখারও দাবি জানান মুজিবুল হক।

    তিনি বলেন, অনেক ফেনসিডিল ব্যবসায়ী রাস্তাঘাটে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মরে যায়। পেঁয়াজের মূল্য যারা বাড়াচ্ছে তাদের একটা বন্দুকযুদ্ধে মরে যাক। তাহলে এটা একটা উদাহরণ হবে।

    আওয়ামী লীগের এমপি আ স ম ফিরোজ বলেন, ‘বাজারে পেঁয়াজ আছে। এর দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। কিন্তু গতকাল দাম ছিল ১৫০ টাকা আর আজ ২০০ টাকা।’

    ফিরোজও মনে করেন, পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ‘জিহাদ’ ঘোষণা করেছে। এই সময় দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এই কাজ করছে। তিনি এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

    বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন পেঁয়াজ নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

  • সংসদে সৌদিতে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধের দাবি

    সংসদে সৌদিতে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধের দাবি

    জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের এমপিরা মঙ্গলবার দাবি করেছেন যে গৃহস্থালি কাজের জন্য সৌদি আরবে নারী জনশক্তি পাঠানো বন্ধ করা উচিত। কেননা তারা প্রায়শই শারীরিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন।

    জবাবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে সরকার খুবই চিন্তিত।

    সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশিদ ও মুজিবুল হক চুন্নু এবং গণফোরামের এমপি সুলতান মনসুর আহমেদ পৃথকভাবে বিষয়টি তুলে ধরেন।

    ‘বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রশিক্ষণের পরে নারী কর্মীদের প্রেরণের পদক্ষেপ নেয়া হবে। যদি মনে হয় যে এটি পুরোপুরি অসম্ভব তবে আমরা নারী কর্মীকে (সৌদি) না পাঠানোর চিন্তা করব,’ বলেন মন্ত্রী।

    ইমরান বলেন, ঢাকাস্থ সৌদি আরব দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সের সাথে সাক্ষাতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

    তিনি উল্লেখ করেন যে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ওই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি তোলার জন্য।

    ‘আগামী ২৬-২৭ নভেম্বর জয়েন্ট টেকনিক্যাল গ্রুপের একটি বৈঠক সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও এই প্রশ্নগুলো তোলা হবে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।

    তিনি বলেন, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া বা যে দেশেরই শ্রমবাজার হোক না কেন তাদের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী পাঠাতে হয়। ‘আমাদের চেষ্টা থাকবে নারীদের সম্মানজনক চাকরি নিশ্চিত করা। আর একেবারেই যদি সম্ভব না হয় তাহলে আমরা না পাঠানোর চিন্তা করব।’

    ইমরান আহমেদ বলেন, গত কয়েক মাসে ১৬০টি ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স স্থগিত এবং তিনটির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

  • রাঙাকে সংসদে তুলাধুনা, বহিস্কারের দাবি

    রাঙাকে সংসদে তুলাধুনা, বহিস্কারের দাবি

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদের বিরোধীদলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙাকে তুলাধুনা করেছেন সংসদের সিনিয়র সদস্যরা।

    একইসাথে তাকে জাতীয় পার্টি ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ পদ থেকে বহিষ্কার এবং তার এই ধরনের কটূক্তিতে জাতীয় পার্টির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তারা রাঙার ওই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং রাঙ্গাকে দুঃখ প্রকাশ ও সংসদে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।

    মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি জানান সংসদ সদস্যরা। আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সিনিয়র সদস্যরাও তাকে তুলাধুনা করেন। রাঙা কীভাবে সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলের তার দলের সংসদ সদস্যরা।

    এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন- আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তাহজীব আলম সিদ্দীকি, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ, মুজিবুল হক চুন্নু, গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। এসময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

    পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এই প্রসঙ্গের সূত্রপাত করে তাহজীব আলম সিদ্দীকি বলেন, নূর হোসেন দিবসে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন মশিউর রহমান রাঙ্গা। নূর হোসেনকে হত্যার পর সারাদেশের আনাচে কানাচে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। সেই নূর হোসেনকে নিয়ে অপমানজনক বক্তব্যের প্রতিকার চাই। তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রুতিও দিতে হবে।

    এরপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, রাঙ্গা এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন, যেটাতে বাংলার মানুষের হৃদয়ে আঘাত লেগেছে। নূর হোসেন হত্যার ঘটনার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন বেগবান হয় এবং মানুষ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। আমি অবাক হলাম রাঙ্গা বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। অথচ রাঙ্গা ভুলে গেছেন এরশাদও নূর হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিল, সংসদে ক্ষমা চেয়েছিল। রাঙ্গা তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। তার এই বক্তব্যের ধিক্কার জানাই।

    তিনি বলেন, এরশাদের বক্তব্যের জন্য আমরা প্রশংসা করেছিলাম। কিন্তু রাঙ্গার বক্তব্যের কারণে সারাদেশে স্বৈরাচার শব্দটি উচ্চারণ হচ্ছে। রাঙ্গা যে বক্তব্য দিয়েছেন, এর জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি যে এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, সেই এলাকায় আওয়ামী লীগ তার সঙ্গে না থাকলে নির্বাচিত হতে পারতেন কিনা সেটা আমরা বলতে চাই না। রাঙ্গা খুবই খারাপ বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার বক্তব্যে ঘৃণা প্রকাশ করি। সবাই এখন স্বৈরাচারী এরশাদ বলছে। একজন সুস্থ্য মানুষ, তিনি যদি স্বাভাবিক থাকেন তার পক্ষে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও নূর হোসেনকে নিয়ে এই বক্তব্য দেয়া সম্ভব নয়।

    আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। রাঙ্গা সেই চেষ্টা করেছেন। নূর হোসেন যখন হত্যা হয়, তখন দেশে ফেনসিডিল-ইয়াবা ছিল না। ভোট ডাকাতি, মিডিয়া ক্যু’র কথা বলা হয়। এই ভোট ডাকাতি-মিডিয়া ক্যু’র মূলহোতা ছিল এরশাদ। আজ সেটাকে ঢাকার জন্য রাঙ্গা এত বড় দুঃসাহস দেখাতে পারে না। এরশাদের সময় রাজনৈতিক নেতাদেরকে নির্যাতন ও পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। এরশাদকে শুধু আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার বলে না, সারাদেশের মানুষ তাকে স্বৈরাচার বলে অভিহিত করেছে। বিশ্বে স্বৈরাচার বলে পরিচিতি পেয়েছে। রাঙ্গাকে অবশ্যই তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।

    আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, রাঙ্গা যেকথা বলেছেন, এটা কোনো সুস্থ মানুষ বলতে পারে না। বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে কথা বলার আগে তার চিন্তা করা দরকার ছিল। রাঙ্গার এই বক্তব্য গণতন্ত্রের ওপর আঘাত করেছে। তাকে শুধু ক্ষমা চাইলেই হবে না, জাতীয় পার্টিকেও তার এই বক্তব্যের ক্লারিফিকেশন দিতে হবে।

    সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, নূর হোসেনকে নিয়ে কটাক্ষ করে কথা বলেছেন রাঙ্গা। কথায় আছে ‘রতনে রতন চেনে….’। আমি বাকি কথাটা আর বললাম না। যে নূর হোসেনকে সামনে রেখে আমরা আন্দোলন করেছি। তাকে তিনি কটাক্ষ করেছেন। এটা করে তিনি সংসদকে অপমান করেছেন। কারণ স্বৈরাচারের পতন না হলে তিনি সংসদে এসে বসতে পারতেন না। একথা বলে তিনি প্রমাণ করেছেন, স্বৈরাচার, দালালদের চরিত্র পরিবর্তন হয় না। এর জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।

    নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, মনে হয় রাঙ্গা শুধু নূর হোসেনের বিরুদ্ধে নয়, দেশের স্বাধীনতা, সংসদ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি গণতন্ত্রের ধারাকে অপমান করেছেন। তার এই বক্তব্যের জন্য যদি জাতীয় পার্টি কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে জাতীয় পার্টি আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। রাঙ্গাকে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি ক্ষমা না চাইলে জাতীয় পার্টি থেকে তাকে বহিষ্কার করতে হবে।

    রাঙ্গার বক্তব্য নিয়ে সংসদে কড়া সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বান্দরকে লাই দিলে গাছের মাথায় ওঠে। আমি যতদিন রাজনীতি করি ততদিন ওর (মসিউর রহমান রাঙ্গা) বয়সও না। ও এই ধৃষ্টতা দেখায় কিভাবে, এই দুঃসাহক কিভাবে পেল? এই সংসদই তাকে লাই দিয়েছে। যাদের অতীত নাই, বর্তমানে কিছুই ছিল না। হঠাৎ তাকে মন্ত্রী বানানো হলো, একটার পর একটা প্রমোশন দেয়া হলো। আমরা তো তাজ্জব হয়ে গেলাম। এগুলো আমরা দেইনি। এই সংসদে সে চিফ হুইপ। আমি একদিন বললাম তাজুল ইসলাম চৌধুরী মারা গেছেন, তার বিষয়ে বক্তব্য রাখব। সে বলে আপনি দেবেন, আমি কেন নাম পাঠাব। এই ধৃষ্টতা সে দেখাতে পারে। সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা সম্পর্কে বক্তব্য হয়েছে। তার বক্তব্য আমি শুনেছি, আমি সেদিন সভায় ছিলাম না। পরে এটা ভাইরাল হয়ে গেছে। এই বক্তব্য জাতীয় পার্টির বক্তব্য না। এটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য হতে পারে না। এটা রাঙ্গার নিজস্ব বক্তব্য হতে পারে। এই বক্তব্যের জন্য জাতীয় পার্টি লজ্জিত। আমরা দুঃখিত এবং অপমানিত অনুভব করছি।

    ফিরোজ রশীদ বলেন, কোথায় আন্দোলন করেছে? কোথায় সংগ্রাম করেছে? সে করেছে যুবদল। শুধু তাই না প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কেও সে কথা বলেছে। সে গণতন্ত্রের ছবক দেয়। যে লেখাপড়া করে নাই, রাতারাতি কাগজের মালা গলায় দিয়ে পরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে হঠাৎ করে এখানে এসে বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়ে গেছে। সে এ ধরনের ধৃষ্টতা দেখায়। আর তার জবাব দিতে আজ সংসদে দাঁড়াতে হয়। আজকে খুব লজ্জিত। এটা সম্পূর্ণ আমাদের ঘাঁড়ে এসে পড়েছে। আমরা দুঃখিত। নূর হোসেনের গায়ে লেখাটা ছিল একটা পোস্টার। সারা বিশ্বের লোক দেখেছে। এটা ছিল তার মনের কথা। তিনি বলেন, নূর হোসেন ’৯০-তে তার জীবন দিয়ে গেছেন। যে যুবক গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিতে পারেন, স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে পারেন সেই সাহসী যুবকের প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। আমরা কখনো এই ধরনের ধৃষ্টতা দেখাইনি। এই ধরনের অপমানজনক কথা কখনো বলিনি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার বক্তব্য হতে পারে না।

    মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এটা রাঙ্গার ব্যক্তিগত বক্তব্য। জাতীয় পার্টি দলীয়ভাবে এটা সমর্থণ করে না। এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত বক্তব্য । তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা তিনি নিজেই দেবেন।

    তিনি বলেন, নূর হোসেন মারা যাওয়ার পর তার বাসায় গিয়ে আমাদের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দু:খ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া নূর হোসেনের পরিবারকে সাহায্য করেছেন। আমরা ১৯৯৬ সাল থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি।