গত ১৮ নভেম্বর ছিল নাট্যযুধিষ্টির অধ্যাপক জিয়া হায়দারের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী। এদিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির গ্যালারি হলে ‘নাটকের মানুষ জিয়া হায়দার’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং তাঁর সৃষ্টি সম্ভার থেকে উপস্থাপনা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল।
জিয়া হায়দার ফাউন্ডেশন ও চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক কবি ফউজুল কবির, চট্টগ্রাম গ্রুপ থিয়েটার ফোরামের সভাপতি নাট্যজন খালেদ হেলাল এবং চট্টগ্রাম বেতারের প্রযোজক মাইনুদ্দীন সোহেল।
ফাউন্ডেশনের সদস্য মোস্তফা কামাল যাত্রা এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার নাট্যজন মোসলেম উদ্দিন সিকদার।
‘নাটকের মানুষ জিয়া হায়দার’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জিয়া হায়দার ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ মুকাভিনয় ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল রিজোয়ান রাজন। প্রবন্ধকার রিজোয়ান রাজন বলেন নাট্যকার জিয়া হায়াদারের প্রয়োজন কখনোই ফুরোবার নয়। তিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন রচনা করে গেছেন তাঁর নাটকে। তাঁর নাটকের প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় করা বাংলা নাটকের জন্যই জরুরী।
এ প্রসঙ্গে প্রবন্ধকারের কিছু প্রস্তাবনা হলো- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে জিয়া স্যারের নাট্য দর্শনের আলোকে পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করে বাঙলা নাটকের নিজস্বতা নির্মাণে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহরস্থ ক্যাম্পাস তথা চারুকলা ইনিস্টিটিউটে অধ্যাপক জিয়া হায়দার মুক্তমঞ্চ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাঁকে স্মরণীয় করে রাখা এবং শিল্পকলা একাডেমি কেন্দ্রিক নাট্যদলগুলোর উদ্যোগে বছরে একটি জিয়া হায়দারের নামে নাট্যউৎসব আয়োজন করা।
উপরোক্ত প্রস্তাবনাগুলোর সাথে আলোচকগণ সহমত পোষণ করেন। চট্টগ্রাম গ্রুপ থিয়েটার ফোরামের সভাপতি নাট্যজন খালেদ হেলাল তার বক্তব্যে বলেন- উৎসবের ব্যাপারে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানান।
সভার সভাপতি চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির কার্যকরী পর্ষদের সেক্রেটারি সাইফুল আলম বলেন- নিকট ভবিষ্যতেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে এই বিষয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে জিয়া হায়দারের সৃষ্টিসম্ভার থেকে ‘একদা কুখ্যাত একজন’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন আবৃত্তি শিল্পী ফারুক তাহের। চট্টগ্রাম বেতারের প্রযোজক মাইনুদ্দীন সোহেল জিয়া হায়দার রচিত ‘মা’ চলচিত্রের ‘বিদায় বন্ধু’ গানটি গেয়ে শোনান। সবশেষে জিয়া হায়দার রচিত ‘এলেবেলে’ নাটকের কিছু অংশ পাঠ করেন অরিন্দম নাট্য সম্প্রদায়ের সিরাজাম মুনিরা, শেখ আনিস সেন্টু ও মিজানুর রহিম।