Tag: জোড়া খুন

  • ফয়সালের পরিকল্পনায় পাহাড়তলীতে জোড়া খুন

    ফয়সালের পরিকল্পনায় পাহাড়তলীতে জোড়া খুন

    নগরের পাহাড়তলী এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোড়া খুন মামলার মূল পরিকল্পনাকারী মো. ফয়সালকে আটক করেছে র‌্যাব।

    হালিশহর এলাকার একটি বাসায় ছদ্মবেশে অবস্থানকালে বৃহস্পতিবার (১১ মে) ভোর ৪টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।

    আসামি ফয়সাল নোয়াখালীর কবিরহাট এলাকার মো. নূর নবীর পুত্র। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

    সকালে চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম জানান, গত ৮ মে সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়তলীতে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। এতে যারা অংশ নিয়েছিল তাদের সবার বয়স ১৬ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে।

    পাহাড়তলীর কথিত বড় ভাই ইলিয়াছ মিঠুর অনুসারী এসব কিশোর ও তরুণরা চলাফেরা করতো বন্ধুর মতো। ইলিয়াছকে সবাই বড় ভাই বলে সম্বোধন করতো।
    সিরাজুল ইসলাম শিহাব ও বন্ধু রবিউলের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা মীমাংসা করার কথা বলে দু’পক্ষকে ডেকে নিয়ে রাত ৮টায় বৈঠকে বসে ইলিয়াছ। ওই বৈঠকে ইলিয়াছের সামনেই বেধড়ক পিটুনি ও ছুরিকাঘাত করে মাসুম ও সজীব নামের দুই যুবককে খুন করে ফয়সাল ও রবিউল বাহিনী।

    তিনি আরও জানান, ৮ মে সন্ধ্যা ৭টায় সাগরিকা জহুর আহমদ স্টেডিয়াম এলাকায় নিহত মাসুমের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম শিহাব তার বান্ধবীকে নিয়ে ঘুরতে যায়। ওই সময় শিহাবকে উদ্দেশ্য করে ফয়সাল ও রবিউল বলে, ‘ওই মেয়ের সঙ্গে তোকে মানায়নি’ এবং মেয়েটিকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করা শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে মারামারিও হয়। ওইসময় ফয়সাল ও রবিউলরা আঘাত পেয়ে বিষয়টি ইলিয়াছ মিঠুকে জানায়। রাত ৮টার দিকে সিরাজুল ইসলাম শিহাবকে ফোন করে ইলিয়াস বলে, বিষয়টি মীমংসা করতে তার অফিসের আসতে হবে। কথামতো শিহাবের সাথে বন্ধু মাসুম, সজীব, ফাহিম, রোকন, রজিন, তুহীন, মেহেদী হাসান, ইউসুফ ও প্রান্তসহ ইলিয়াসের অফিসে যায়। সেখানে আগে থেকেই ইলিয়াসের নির্দেশে ও ফয়সালের পূর্বপরিকল্পনায় রবিউলসহ প্রায় ২০-২৫ জন কিশোর দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে মাসুম ও সজীবকে ছুরিকাঘাত করে ফয়সাল, রনি, বাবু ও আকাশ। আহত মাসুম ও সজীবের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ইলিয়াস, ফয়সাল এবং রবিউলসহ অন্যান্যরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন মাসুম ও সজীবকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।

    জোড়ার খুনের ঘটনায় নিহত সজীবের বড় ভাই বাদী হয়ে গত ৯ মে পাহাড়তলী থানায় ১৮ জনের নামোল্লেখ এবং ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশের বিশেষ অভিযানে ইলিয়াস, রবিউলসহ ৮ জন গ্রেফতার হলেও অন্য আসামিরা পলাতক ছিল। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৪ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফয়সালের পূর্বপরিকল্পনার কথা জানায়।

  • মণিরামপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় যুবক গ্রেফতার

    মণিরামপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় যুবক গ্রেফতার

    নিলয় ধর, যশোর প্রতিনিধি : যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পুলিশ জাহিদ হাসান ওরফে মানিক (২৩) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছেন। পূর্বশত্রুতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।

    ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় যশোর সদরের চাউলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ২২ অক্টোবর দুপুর সোয়া ২টায় নিজ কার্যালয়ে যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এই সব তথ্য দেন।

    তিনি বলেন, গত (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যারাতে মণিরামপুর উপজেলার উত্তরপাড়া এলাকায় খুন হন বাদল হোসেন (২২)ও আহাদ মোল্যা (২৫) নামে দুই যুবক। ক্লু লেস এই মামলায় পুলিশ প্রথমে ধারণা করেছিল মোটরসাইকেল ছিনতাই কিংবা ডিশ লাইনের কাজ সংক্রান্ত ঘটনায় এই হত্যাকাণ্ড। কিন্তু ঘটনার রাত থেকেই পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেন। সেইসময় সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজনকে ধরে আনা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ইনোসেন্টদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ধৃতদের মধ্যে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মানিকের নাম আসে। এরপর ডিবি পুলিশের ইনচার্জ সৌমেন দাশের নেতৃত্বে তাদের একটি টিম অভিযান চালিয়ে মানিককে আটক করা হয়। মানিকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত বাদলের একটি মোবাইলফোন সেট এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটি উদ্ধার করা হয়।

    পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদে মানিক এ ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে সে পুলিশকে জানিয়েছে- বাদলের সঙ্গে প্রতিবেশী আহাদের নারীঘটিত বিষয়ে শত্রুতা ছিলো। বাদল তার শত্রু হিসেবে আহাদকে খুন করানোর জন্যে তারই বন্ধু মানিককে ম্যানেজ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন বসুন্দিয়া জয়ন্তা বাজার থেকে বাদলের মোটরসাইকেলে তারা ৩জন বের হয়। এক পর্যায়ে মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল মানিক, মাঝে বসেছিল আহাদ এবং পেছনে বাদল।

    মণিরামপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বাদল তার কাছে থাকা চাকু দিয়ে আহাদের গলায় পোচ দেয়। আহাদ একটু শক্ত সামর্থ হওয়ায় বাদলের কাছ থেকে চাকুটি কেড়ে নেয় এবং তাকে আঘাত করে। মোটরসাইকেল পড়ে যাওয়ায় মানিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করে। আহাদের চাকুর আঘাতে বাদলের মৃত্যু হলে সে মানিককে ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে মানিক দেখতে পায়, আহাদ ধীরে ধীরে মোটরসাইকেলের কাছে গিয়ে লাইট নিভিয়ে নিজেও পড়ে যায়। তখন মানিক সেখানে পৌঁছে এবং আহাদের কাছে থাকা চাকুটি নিয়ে তার বুকে পেটে আঘাত করে। এরপর তার কাছে থাকা বাদলের মোবাইলফোন সেট পাশের একটি পুকুরে এবং চাকুটি আরও কিছু দূরে একটি ধানক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়।

    পুলিশ সুপার জানায়, ধৃত মানিকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ডুবুরি দিয়ে ফেলে দেওয়া সেই মোবাইলফোন সেট এবং আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ধানক্ষেত থেকে চাকুটি উদ্ধার করা হয়েছে।তিনি বলেছেন, আজই তাকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

    প্রসঙ্গত, (১৫ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোরের মণিরামপুরে খুন হন যশোর সদরের জয়ন্তা গ্রামের আক্তার গাজীর ছেলে বাদল এবং একই এলাকার লুকমান মোল্যার ছেলে আহাদ। এ ঘটনায় নিহত বাদলের মা আঞ্জুয়ারা বেগম মণিরামপুর থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর ১০/১৮১ (১৬.১০.২০২০)।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

     

  • চাঁন্দগাওয়ে মা-ছেলে হত্যার ৩৭ দিন পর প্রধান আসামি গ্রেফতার

    চাঁন্দগাওয়ে মা-ছেলে হত্যার ৩৭ দিন পর প্রধান আসামি গ্রেফতার

    চট্টগ্রাম ডেস্ক : চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন চাঁন্দগাও এলাকায় চাঞ্চল্যকর মা-ছেলে হত্যাকাণ্ডের ৩৭ দিন পর অবশেষে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েছে প্রধান খুনী মো. ফারুক (৩৩)।

    আজ বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় নিহতের কথিত ধর্মের ভাই ফারুকের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে আকবরশাহ থানার পাক্কারমাথা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ফারুক চাঁন্দগাও থানার খাজারোড কসাইপাড়ার মো. সিরাজের ছেলে।

    র‌্যাব জানায় হত্যাকান্ডের পর গ্রেফতার এড়াতে ফারুক প্রথমে খাগড়াছড়ি চলে যায়। সেখানে একটি গ্যারেজে কিছুদিন কম বেতনে চাকরি করে। এরপর সেখান থেকে ঢাকায় ছিলেন কিছুদিন। সেখানেও আয় রোজগার ভাল না দেখে আবারো চট্টগ্রামে চলে আসে।

    সবশেষে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় একটি মাজারে অবস্থান নিয়েছে তথ্য পেয়ে র‌্যাব পুলিশের যৌথ টিম চট্টগ্রাম শহরের আশেপাশে মাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। বিষয়টি টের পেয়ে কৌশলে সে আবারো ঢাকায় চলে যায়।

    তবে ৩৭ দিনের নানা পন্থা অবলম্বন করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত র‌্যাবের হাতে ধরা পড়তে হলো কুখ্যাত এই খুনী। বৃৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় র‌্যাব চান্দগাঁও কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-৭ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল।

    তিনি বলেন, ফারুক ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখে হত্যার কৌশল রপ্ত করেছে এবং হত্যার পর আত্মগোপনে থেকে গ্রেফতার এড়াতেও সিরিয়ালের বিভিন্ন কৌশলগুলো কাজে লাগিয়েছে। তিনি বলেন, বিগত ৩৭ দিনের মধ্যে বারবার সিম মোবাইল ও লোকেশান পরিবর্তণ করেছে খুনী।

    মশিউর রহমান জুয়েল আরো বলেন, খুনি ফারুক প্রায় সময় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের সিনেমার কাহিনীর স্টাইলে খুন করার হুমকি দিত। বাস্তবেও সে তাই করেছে। ফিল্মি স্টাইলে প্রথমে ধর্মের বোন গুলনাহার বেগমকে খুন করে। এ ঘটনা দেখে ফেলায় পরে ৯ বছরের ছেলে রিফাতকেও রান্না ঘরে নিয়ে জবাই করে হত্যা করে ফারুক।

    র‌্যাব-৭ এর চাঁন্দগাও ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কাজী তারেক আজিজ বলেন, ফারুক ভুক্তভোগী গুলনাহার বেগমের সাথে যৌথভাবে সিঙ্গারা, সমুচা, পিঠা বিরিয়ানীসহ নাস্তার ব্যবসা করতেন।

    হত্যার কিছুদিন আগে থেকে দুজনের মধ্যে প্রায় সময় কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এর জেরে রাগের মাথায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় ফারুক। মা ও ভাইয়ের খুনীকে গ্রেফতার করা হয়েছে শুনে সংবাদ সম্মেলনে ছুটে আসেন নিহত গুলনাহার বেগমের মেয়ে ও নিহত রিফাতের বড় বোন ময়ূরী আকতার।

    উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমার মা অসুস্থ ছিলেন। টুকটাক পিঠা বানিয়ে বিক্রি করতেন। অনেকটা টানাপোড়নে আমাদের সংসার চলতো। একমাত্র ছোট ভাইটা ছিলো আমাদের পরিবারে সকলের মধ্যমণি। মা ও ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে পরিবারে একটু স্বচ্ছলতার আশায় নিজে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে গার্মেন্টসে যোগ দিয়েছিলাম। সে ভাই আর মাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমি ফারুকের ফাঁসি চাই।

    উল্লেখ্য গত ২৪ আগস্ট চাঁন্দগাও থানার পাঠানিয় গোদা এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংভাবে হত্যা করা হয় গুলনাহার বেগম ও তার ৯ বছরে শিশু পুত্র রিফাতকে। যার নেপথ্যে ছিলেন পাতানো ভাই মো. ফারুক।

    ২৪ ঘণ্টা/রাজীব