Tag: টাকার মান

  • ডলারের দাম ফের বৃদ্ধি

    ডলারের দাম ফের বৃদ্ধি

    আবারও বাড়ল মার্কিন ডলারের দাম। সোমবার (১৩ জুন) কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে এক ডলারের বিপরীতে নিয়েছে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগে ছিল ৯২ টাকা।

    বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আজ প্রতি ডলার ৯২ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১০৫ মিলিয়ন ডলার (১০ কোটি ৫০ লাখ) বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়, আজকে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আজ সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এটিই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর।

    এক‌ দিন আগেও এক ডলা‌র বিক্রি হয়েছে ৯২ টাকা। এ নিয়ে গত দুই মাসে ডলারের দাম ৬ টাকা ৩০ পয়সা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা ২০ পয়সা।

    বিভিন্ন ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ (সোমবার) ব্যাংকগুলো আমদানি বিলের জন্য প্রতি ডলারের বিপরীতে নিয়েছে ৯৪ থেকে ৯৫ টাকা, নগদ ডলার বিক্রি করেছে ৯৬ থেকে ৯৭ টাকা। ব্যাংকের বাইরে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হয়েছে ৯৭ থেকে ৯৮ টাকায়।

    দেশে বেশি রেমিট্যান্স আনতে গত ২ জুন ডলারের দামের সীমা তুলে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যাংকগুলো নিজেরাই ডলারের দাম নির্ধারণ করতে পারবে।

    বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

    ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়ায়। এ বছরের ৯ জানুয়ারিতে এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়।

    ২৭ এপ্রিল আ‌রও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। ১৬ মে বাড়ে ৮০ পয়সা। ২৩ মে বাড়ে ৪০ পয়সা। ফলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সায়।

    গত ৩১ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে ৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর পর ৪ জুন ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ জুন হয় ৯১ টাকা ৫০ পয়সা ৬ জুন দাঁড়ায় ৯১ টাকা ৯৫ পয়সা। ৭ জুন ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৯২ টাকায়। এর পর ৮ জুন নেমে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা হয়। পরদিন ৯ জুন আবার ৯২ টাকা হয়। আজ আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ঠেকল ৯২ টাকা ৫০ পয়সায়।

  • টাকার বিপরীতে ডলারের দাম আরও বৃদ্ধি

    টাকার বিপরীতে ডলারের দাম আরও বৃদ্ধি

    আমদানি ব্যয় পরি‌শো‌ধের চাপে মা‌র্কিন ডলারের ব্যাপক চা‌হিদা বে‌ড়ে‌ছে। কিন্তু সেই হা‌রে বাজা‌রে সরবরাহ না বাড়ায় নিয়ন্ত্রণহীনভা‌বে বাড়ছে ডলারের দাম। বিক্রি করেও ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক দিনেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান ক‌মে গে‌ছে ৮০ পয়সা। আর গত ২০ দিনের ব্যবধা‌নে তিন দফায় ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হলো এক টাকা ৩০ পয়সা।

    সোমবার (১৬ মে) আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। এক‌দিন আ‌গেও এক ডলা‌রে লেগেছিল ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা। আর গত ১০ মে ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ২৭ এপ্রিল ছিল ৮৬ টাকা ২০ পয়সা।

    ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করছে এর চেয়ে পাঁচ থেকে ৭ টাকা বেশি দরে। ব্যাংকের বাইরে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে ৯২ থেকে ৯৭ টাকায়।

    সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে একদিকে ব্যাপক হারে আমদানির চাপ বেড়েছে। ফলে আমদানির দায় পরিশোধে বাড়তি ডলার লাগছে। কিন্তু সেই তুলনায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়েনি। ফলে ব্যাংক ব্যবস্থা ও খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ বাড়ছে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে ঘাটতি দেখা দি‌য়ে‌ছে। যার কারণে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম। বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করছে। এতে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। কিন্তু তারপরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না ডলার।

    এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি বেশি, এ কারণে ডলারের উপর চাপ প‌ড়ে‌ছে। বাজার বিবেচনা করে ডলারের রেট ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

    তিনি জানান, রপ্তানি বাড়ছে, ঈদের সময় রেমিট্যান্স ২০০ মিলিয়ন এসেছে। এর স‌ঙ্গে ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে। এখন পর্যন্ত ব্যাংকগু‌লোর চা‌হিদার বিপরী‌তে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে। যখনই প্রয়োজন হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে।

    ত‌বে আশার কথা আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। নিত্যপ্র‌য়োজনীয় খাদ্যপণ্য ছাড়া অন্যান্য পণ্যের আমদানিতে গড় মা‌র্জিনসহ আমরা বিভিন্ন বিধিনিষেধ দিয়েছি। আশা করছি খুব শিগগিরই বাজার স্থি‌তিশীল হ‌য়ে যা‌বে।

    এ‌দি‌কে ডলারের দাম নিয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, চাহিদা বাড়ায় ডলারের দাম বাড়ছে। অনেক বিদেশি ব্যাংক ডলার ৯৪/৯৫ টাকায় কিনছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে বাজারের কী অবস্থা। এখন দর ঠিক রাখতে হলে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া ভালো। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এক দাম বেঁধে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো আরেক দামে কেনাবেচা করছে। লাভ কী তাহলে? এতে যেকোনো সময় বাজার অস্থির হয়ে যেতে পারে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ডলারের দাম বাজারের ওপর নির্ভয় করে। আমাদেরও ছেড়ে দেওয়া উচিত।

    বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

    ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু’এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতাে ৮৫ টাকা ছাড়ায়। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এ‌প্রিল আ‌রও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। আজ ১৬ মে বাড়‌লে ৮০ পয়সা। ফলে এখন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায়। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। অর্থাৎ গত ৯ মাসের ব্যবধানে প্রতি ডলারে দর বেড়েছে দুই টাকা ৭০ পয়সা।

    রেকর্ড ডলার বিক্রি

    চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১২ মে পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫০২ কোটি (৫.০২ বিলিয়ন) ডলার বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

    এর আগে বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত অর্থবছরে ডলার কেনায় রেকর্ড গড়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সবমিলিয়ে প্রায় ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

    রিজার্ভের ওপর পড়ছে চাপ

    এদিকে আমদানির চাপে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের (রিজার্ভ) ওপর চাপ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ২৪ আগস্ট এই রিজার্ভ আগের সব রেকর্ড ভেঙে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল। দেশের ওই রিজার্ভ গত ১১ মে (বুধবার) ৪১.৯৩ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ১৯৩ কোটিতে নেমে এসেছে।

    রপ্তা‌নির চেয়ে আমদানি বেড়েছে

    বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে রপ্তানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৯২ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানি বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আলোচিত ৯ মাসে রপ্তানি থেকে দেশ আয় করেছে তিন হাজার ৬৬২ কোটি ডলার। পণ্য আমদানির পেছনে ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় থেকে রপ্তানি আয় বাদ দিলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় দুই হাজার ৪৯০ কোটি ডলার।

    রেমিট্যান্স

    জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ৫৭৮ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। যা ছিল আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম।