ইসলাম মাহমুদ, কক্সবাজার প্রতিনিধি : সেন্টমার্টিনে আটকাপড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক অবশেষে স্বস্থি নিয়ে ফিরেছেন। আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় সোমবার (১১ নভেম্বের) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পর্যটকবাহী জাহাজে করে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট পৌঁছান তারা।
এসময় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে পর্যটকদের হাতে ফুল ও চকলেট তুলে দেন স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে গত শুক্রবার থেকে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় তারা সেন্টমার্টিনে আটকে পড়েছিলেন। তবে আবহাওয়া ভালো হয়ে আসায় জাহাজ পৌছানোর আগেই আজ সোমবার সকালে কাঠের ট্রলারে করে শতাধিক পর্যটক টেকনাফে ফিরে আসেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের সমন্বয় কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, সকালে বৈরী আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় টেকনাফ থেকে তিনটি পর্যটকবাহী জাহাজ টেকনাফ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়ে। আবার এসব জাহাজ ফেরার সময় আটকাপড়া পর্যটকদের নিয়ে আসে।
কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আবদুর রহমান ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় কক্সবাজারের উপকূলে স্থানীয় সর্তক সংকেত উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। নাফ নদ ও সমুদ্র শান্ত আছে। ফলে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযানকে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
সোমবার সকালে টেকনাফ দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নিয়ে ফরহান, আটলান্টিক ক্রুজ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন কিছু লোকজন নিয়ে টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উদ্দেশে জাহাজগুলো ছেড়ে যায়। একই দিন সন্ধ্যায় এসব জাহাজে করে আটকাপড়া পর্যটকরা ফিরে আসে।
তিন দিন আটকে থাকার পর আজ ফিরে আসা পর্যটকদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৬০ জনের একটি দল। এই দলের নেতা উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, ‘আমরা একটু ভয়ে ছিলাম। তবে ছাত্রদের নিয়ে ফিরে এসেছি এটা অনেক বড় বিষয়। দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন খুবই অপরিষ্কার ছিল। ফলে সবাইকে নিয়ে একদিন বিচ পরিষ্কার করছি।’
ঢাকা মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েছিলেন অন্তরা নামে এক নারী। তিনি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো দ্বীপে এসেছিলাম। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে গত তিন দিন আটকে ছিলাম। সন্তানদের নিয়ে অনেক টেনশন করেছিলাম। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় সেন্টমার্টিনে আটকাপড়া পর্যটকদের ফেরত আনা হয়েছে। তারা সবাই ভালো আছেন। অনেকে নিজ নিজ বাড়ির পথে রওনাও দিয়েছেন। আসলে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। অবশেষে পর্যটকদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এখন স্বস্তিতে আছি।