Tag: টেস্ট সিরিজ

  • মিরপুরের ঘূর্ণি-ফাঁদে প্রথম দিনে ১৫ উইকেট

    মিরপুরের ঘূর্ণি-ফাঁদে প্রথম দিনে ১৫ উইকেট

    মিরপুর শেরে বাংলায় টেস্টের প্রথম দিনের লাটিমের মতো ঘুরছে বল। এই ঘূর্ণি-ফাঁদে পড়ে ১৭২ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।

    জবাব দিতে নেমে স্বস্তিতে নেই নিউজিল্যান্ডও। ৫ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে সফরকারী দল। আলোক স্বল্পতায় আধ ঘণ্টার মতো বাকি থাকতেই দিনের খেলা সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।

    ব্যাটিংয়ে আছেন নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস ৫ আর ড্যারেল মিচেল ১২ রানে। বাংলাদেশ এখনও ১১৭ রানে এগিয়ে। অর্থাৎ প্রথম দিনেই চালকের আসনে বসে পড়েছে স্বাগতিকরা।

    মিরপুরের পিচ প্রথম দিন থেকেই স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনে দুই দলের যে ১৫ উইকেট পড়েছে, এর মধ্যে ১৩টিই নিয়েছেন স্পিনাররা।

    সফরকারীদের শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ডানহাতি এই স্পিনারের বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হয়েছেন ওপেনার ডেভন কনওয়ে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ২০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় কিউইরা।

    কনওয়েকে ফেরানের পরের ওভারেই টম ল্যাথামকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তাইজুল ইসলাম। নিচু হয়ে বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ল্যাথাম।

    পরের উইকেটটি পেতেও বেশি সময় লাগেনি বাংলাদেশের। তাইজুলকে ডাউন দ্য উইকেটে হাঁকাতে গিয়ে মিডঅনে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন হেনরি নিকোলস (১)।

    কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু ইনিংসের ১২তম ওভারে মিরাজের বলে শর্ট লেগে শাহাদাত হোসেন দিপু যে ক্যাচটা ধরলেন, উইলিয়ামসনও হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন। ১৩ করে উইলিয়ামসন সাজঘরে ফেরেন দিপুর প্রায় মাটিতে লেগে যাওয়া ক্যাচে।

    ওই ওভারেই মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হন টম ব্লান্ডেল। তিনি রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ৪৬ রানে ৫টি উইকেট হারায় কিউইরা।

    এর আগে টস জিতে প্রথম ইনিংসের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশও। স্যান্টনার-অ্যাজাজের ঘূর্ণিতে প্রথম সেশনে ৪৭ রান তুলতেই চলে যায় ৪ উইকেট।

    দ্বিতীয় সেশনে ৪০ রান করতে গেছে আরও ৪ উইকেট। শেষ পর্যন্ত একদিন শেষ করার আগেই (৬৬.২ ওভার) প্রথম ইনিংস শেষ করেছে বাংলাদেশ, গুটিয়ে গেছে ১৭২ রানে।

    ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ৪৭ রানে ছিল না ৪ উইকেট। তখন মনে হয়েছিল, নতুন কোনো হতাশার রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ। তবে সেটি হয়নি। চরম বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে বলার মতো একটা জয়গায় এনে দিয়েছিলেন মুশফিকুর ও শাহাদাত।

    এটি যে টেস্ট ফরম্যাটের খেলা, তা যেন ভুলেই গিয়েছিলেন ওপেনার জাকির হাসান। দিনের শুরুতেই বাজে ক্যাচে সাজঘরে ফিরে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের মুখে হাসি ফোটালেন জাকির। ২৪ বলে ৮ রান করে মিচেল স্যান্টনারকে আকাশে তুলে মিড-অন অঞ্চলে কেন উইলিয়ামসনের হাতে সহজ হন তিনি।

    ২৯ রানের মাথায় জাকিরের উইকেট হারানো যেন দিশা হারিয়ে ফেললেন পরবর্তী ব্যাটাররা। এরপরের ১৮ রান তুলতেই আরও ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। বাজেভাবে আউট হয়ে ফিরেছেন মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

    জাকিরের দেখানো পথে হাঁটলেন আগের ম্যাচে ৮৬ করা ওপেনার জয়ও। অ্যাজাজ প্যাটেলের বল ঠেকাতে গিয়ে শর্টলেগে টম ল্যাথামের হাতে ধরা পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। ৪০ বলে ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান আগের টেস্টের প্রথম ইনিংসের সেরা ব্যাটার।

    জয়কে ফেরানোর পর ব্যাক টু ব্যাক বল করতে এসে মুমিনুলকেও সাজঘরের পথ দেখান প্যাটেল। এটি তার দ্বিতীয় শিকার। বাঁহাতি কিউই স্পিনারের করা বল মুমিনুলের ব্যাটে চুমু দিয়ে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ হয়।

    আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো অধিনায়ক শান্ত এই ম্যাচে দলের হাল ধরতে পারলেন না। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে শান্তকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান স্যান্টনার। ১৪ বলে ৯ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

    ৪৭ রানে ৪ টপঅর্ডারকে হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে বাংলাদেশকে কিছুটা এগিয়ে মুশফিক ও শাহাদাত। লাঞ্চ-বিরতিতে যাওয়ার আগে স্বাগতিকদের স্কোরকার্ডে ৩৩ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটার।

    বিরতির পর এসে সমর্থকদের হতাশ করেন মুশফিক। প্রথম কোনো বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ফিল্ডিংয়ে বাধা দেওয়ার অপরাধে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরত যান এই ডানহাতি ব্যাটার।

    ইনিংসের ৪১তম ওভারে কাইল জেমিসনকে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ঠেকিয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু ডানহাতি এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে বল পিচে পড়ে উইকেটের পেছন দিকে যাচ্ছিল। মুশফিক ভেবেছেন, বলটি হয়তো স্টাম্পে আঘাত করতে পারে। যে কারণে তিনি হাত দিয়ে বলটি ঠেকিয়ে দেন। এতে কিউই ফিল্ডাররা আম্পায়ারের কাছে আউটের আবেদন জানান।

    ফলে রিভিউ দেখে টিভি আম্পায়ার মুশফিকককে ইতিহাসের ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট ঘোষণা দেন। ফলে দেখেশুনে খেলে ৮৩ বলে ৩৫ রান করে ফিরলেন এই ডানহাতি। অপ্রত্যাশিত এই আউটে মুশফিক-শাহাদাতের করা ১৫১ বলে ৫৭ রানের জুটিটি ভেঙে যায়।

    মুশফিকের ফেরার পর তার সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়া শাহাদাত বেশিক্ষণ টিকলেন না। দলীয় স্কোরকার্ডে ১৯ রান যোগ করতেই ফিরলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। নিজের নামের পাশে ৩১ রান লিখিয়ে গ্লেন ফিলিপসের বলে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ হন শাহাদাত।

    এরপর মাঠে নেমে শুধু হতাশাই বাড়িয়েছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান। ১৬ বলে ৭ রান করে ফিলিপসের বলে স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। আগের ম্যাচে ফিফটি করা মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ২০ রান।

    লোয়ারঅর্ডারে ৬ রান করেছেন তাইজুল ইসলাম। ১০ রান করেন শরিফুল ইসলাম। অপরাজিত থেকে ১১ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন নাঈম হাসান।

  • জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে চতুর্থ দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

    জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে চতুর্থ দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

    অসাধারণ এক জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান নেই, নেই তামিম ইকবাল, লিটন দাসের মত ব্যাটার এবং এবাদত হোসেন, তাসকিন আহমেদের মত পেসার। নাজমুল হোসেন শান্তর অধীনে বলা যায় ভাঙাচোরা একটি দল খেলতে নেমেছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

    অন্যদিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল নিউজিল্যান্ড। এই দলটিতে কে নেই! টম ল্যাথাম, ডেভন কনওয়ে, কেন উইলিয়ামসন, হেনরি নিকোলস, টিম সাউদির মত বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটাররা।

    এমন একটি দলের বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন দেখাটাও মনে হতে পারে দুঃস্বপ্ন। কিন্তু সেই অসম্ভব স্বপ্নকেই সম্ভব করার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। আর মাত্র ৩টি উইকেট। তাইজুল, মিরাজ, নাঈম হাসানরা যদি দ্রুত এই ৩টি উইকেট তুলে নিতে পারে, তাহলেই অসাধারণ এক জয় তুলে নেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। জিততে হলে বাকি তিন উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে করতে হবে আরও ২১৯ রান।

    দিনের শুরুতে মনে হয়েছে মনে হয়েছিলো এটি বাংলাদেশের জন্য ভালো দিন নয়। কিন্তু স্পিনারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সে ধারণা বদলে গেছে। বাংলাদেশকে নিশ্চিত জয়ের সামনে এনে দাঁড় করিয়েছেন তাইজুল-নাইমরা। যদি না মিরাকল কিছু ঘটে না যায়, তাহলে জয় দিয়েই সিরিজ সিলেট টেস্ট শেষ করবে বাংলাদেশ।

    চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের স্পিনারদের তোপের মুখে পড়ে ৭ উইকেট হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৪৯ ওভার খেলে রান করেছে মাত্র ১১৩। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার আর ৩ উইকেট। অপরদিকে কিউইদের করতে হবে ২১৯ রান।

    ইনিংসের শুরু থেকেই কিউইদের চেপে ধরেছেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাইম হাসান। তাইজুল তুলে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। মেহেদি আর নাইম শিকার করেছেন ১টি করে উইকেট। পেসার হিসেবে একটি উইকেট পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম।

    সবশেষ কাইল জেমিসনকে এলবিডব্লিউ করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তাইজুল। ২৮ বলে ৮ রান করেন এই কিউই লোয়ার অর্ডার। এর আগে গ্লেন ফিলিপসকে এলবিডব্লিউ করেছেন ডানহাতি অফস্পিনার নাইম। এই কিউই ব্যাটার করেছেন ২৬ বলে ১২ রান।

    শুরুতেই ৩ উইকেট হারানোর পর দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওপেনার ডেভন কনওয়ে। দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই কিউই ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত তাকেও পিচে থাকতে দিলেন না অফস্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৭৬ বলে ২২ করা এই ব্যাটারকে শাহাদাত হোসেনের ক্যাচ বানান বাঁহাতি স্পিনার। এরপর উইকেটরক্ষক ব্যাটার টম ব্লান্ডেলকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান তাইজুল। ১৬ বলে ৬ রান করে শর্টলেগে নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই কিউই ব্যাটার।

    এর আগে একে একে সাজঘরে ফিরেছেন ৩ কিউই টপঅর্ডার। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে রানের খাতা খোলার আগেই টম ল্যাথামকে (৬ বলে ০) সাজঘরে ফেরত পাঠান শরিফুল ইসলাম। এই বাঁহাতি পেসারের ফুল লেন্থের বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ল্যাথাম।

    প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ দলের কাঁটা হয়ে ব্যাট করছিলেন কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে উইলিয়ামসনকে সেটি করতে দিলেন না তাইজুল ইসলাম। ইনিংসের শুরুর দিকেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে এই কিউই ব্যাটারকে আউট করেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। ২৪ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান উইলিয়ামসন।

    এরপর ব্যাট করতে নামা হেনরি নিকোলসে সাজঘরের পথ দেখান অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ২ রানে করে নাইম হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই কিউই ব্যাটার।

    এর আগে ২ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। আজ চতুর্থ দিনে ৭ উইকেটে ১২৬ রান করেছে বাংলাদেশ। এর আগে গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেটে ২১২ রান করেছিল টাইগাররা। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত হাঁকিয়েছেন রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের মোট দাঁড়িয়েছে ৩৩৮ রান।

    এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩১০ রান করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩১৭ রানে গিয়ে থামে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। ম্যাচের তৃতীয় দিনের শুরুর দিকে টাইগারদের থেকে ৭ রান এগিয়ে ইনিংস শেষ করে সফরকারীরা। সেই লিড পার হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৩৮ রানের সুবাদে ৩৩১ রানের লিড পায় কিউইরা।

    ম্যাচের চতুর্থ দিনটা যেমন হওয়ার কথা তেমন ভালো ছিল না বাংলাদেশের। ব্যাট করতে নেমে যেন তাড়াহুড়ো করেই আউট হয়েছেন ব্যাটাররা। চতুর্থ দিনে ৯৬ রান নিতেই চলে গেছে ৪ উইকেট। অথচ তৃতীয় দিনের খেলা দেখে মনে হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের সামনে রানপাহাড় দাঁড় করাবে বাংলাদেশ। সেটি সম্ভবত আর হচ্ছে না। তবে লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগেই লড়াই করার মতো পুঁজি পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। প্রথম সেশন শেষ করে ৭ উইকেটে ৩০১ রানের লিড দিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গেছেন টাইগাররা।

    দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফিরেছেন শান্ত। গতকালের অপরাজিত ১০৪ রানের সঙ্গে আজ মাঠে নেমে মাত্র ১ রান যোগ করতে পেরেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার শান্ত। দিনের প্রথম বলে ১০৫ রানে খেলা শান্তকে ফিরিয়েছেন কিউই পেসার টিম সাউদি। উইকেটরক্ষক ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

    এর কিছুক্ষণ পরেই উইকেট বিলিয়ে দিলেন শাহাদাতও। ইশ সোধির বলে লেগবিফোর উইকেটের (এলবিডব্লিউ) ফাঁদে পড়েন শাহাদাত হোসেন। ১৯ বলে ১৮ রান করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

    গতকালের ৪৩ রানকে বাড়িয়ে ফিফটি হাঁকিয়েছেন মিস্টার ডিফেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম। ১১৬ বলে ৬৭ রান করে অ্যাজাজ প্যাটেলের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার।

    মেহেদি হাসান মিরাজ ৭৬ বলে ফিফটি (৫০) করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। নুরুল হাসান সোহান করেছেন ১০ রান। অবশেষে ৩৩৮ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

    দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। ২৬ রানে ছিল না ২ উইকেট। ৩০ বলে ১৭ রান করে অ্যাজাজ প্যাটেলের অনেক বেশি টার্ন করা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ওপেনার জাকির হোসেন।

    দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হয়ে ফেরেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। সাউদির বলে ড্রাইভ খেলেন শান্ত, বল বোলারের হাত স্পর্শ করে ভেঙে যায় ননস্ট্রাইকের স্টাম্প। সেখান থেকে দলীয় সংগ্রহ ১১১ তে নিয়ে যায় চা-বিরতিতে যান শান্ত ও মুমিনুল।

    অপ্রত্যাশিত রানআউটের মাধ্যমে শতরানের (৯০) কাছাকাছি এসে ভেঙে যায় শান্ত-মুমিনুলের জুটি। ভুল বোঝাবুঝিতে ৬৮ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৪০ রান করে সাজঘরে ফেরত যান মুমিনুল।

    দুই ওপেনারের দ্রুত বিদায়ের পর দলের হাল ধরেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। অভিজ্ঞ মুমিনুল ৪০ রানে ফিরলেও দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন শান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৯২ বলে সেঞ্চুুরি তুলে নিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। শতক হাঁকাতে শান্ত খেলেছেন ৯টি চারের মার।

    কিউইদের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছেন অ্যাজাজ প্যাটেল। ২ উইকেট পেয়েছেন ইশ সোধি। একটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন টিম সাউদি ও গ্লেন ফিলিপস।

  • ভালো শুরুর পরও আক্ষেপ দিয়ে দিন শেষ বাংলাদেশের

    ভালো শুরুর পরও আক্ষেপ দিয়ে দিন শেষ বাংলাদেশের

    সিলেটে আজ নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যকার প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের ব্যাটারদের আক্ষেপ করার কথা সবচেয়ে বেশি। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বাজে শটের পসরা বসিয়ে শুরুর শক্ত ভীত বিসর্জন দিয়ে এসেছেন তারা। যে উইকেটে ৪৫০ রান করা সহজ সেখানে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় প্রথম দিনের খেলা শেষের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। যদিও শেষ পর্যন্ত টিকে আছেন শেষ দুই ব্যাটার তবে আগামীকাল তারা দলকে কতদূর নিতে পারে তাই দেখার বিষয়।

    মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে মাঠে নামে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় টাইগার বাহিনী। দিন শেষে ৮৫ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১০ রান সংগ্রহ নাজমুল শান্তর দলের।

    শুরুতে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে দলীয় মাত্র ৩৯ রানে নিচু হওয়া বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন ওপেনার জাকির হাসান। এরপরে নাজমুল হোসেন শান্ত ও আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় হাল ধরেন দলের। ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করা শান্ত ব্যক্তিগত ৩৭ রান করে ফুল টস বলে আউট হন। এরপরে মুমিনুল হক এসে জয়কে যোগ্য সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করেন। জুটিতে ৮৮ রান হলে আউট হন মুমিনুল। তিনিও ফেরেন ৩৭ রান করে।

    মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হকের ব্যাটে বড় ইনিংসের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দুজনেই হতাশ করেছেন।

    ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে এভাবে একের পর এক আউটে হতাশ করেছে ভক্তদের। বিশেষ করে শান্ত যেভাবে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিংয়ে ছিলেন, সেটি টেস্টের তার সাথে একজন অধিনায়কের সঙ্গে বড্ড বেমানান। আবার জাকিরের আউটও মেনে নেওয়া যায় না। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি যেভাবে রান করেছেন, তার প্রভাব দেখা যায়নি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ভুলভাবে ব্যাট চালিয়ে ফিরেছেন শুরুতেই।

    এ দিকে মুমিনুল আউট হওয়ার পর সেঞ্চুরির আশা দেখানো জয়ও হতাশ করে আউট হন। তিনি ৮৬ রান করে ইশ সোধির বলে আউট হয়েছেন। তবে জয় চাইলে ইনিংসটাকে আরও বড় করতে পারতেন। অপরদিকে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮৪ রান। এরপরে চা বিরতি শুরু হয়। ফিরে এসে উইকেট খোয়ানোর প্রতিযোগিতায় নামে বাংলাদেশ। ১২ রান করে মুশফিকুর রহিম, ২৪ রান করে অভিষিক্ত শাহাদাত হোসেন দিপু ও ২০ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হন।

    শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহানও খেলতে পারেননি দায়িত্বশীল ইনিংস। ২৮ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ২৯ রান করে বিদায় নেন বাংলাদেশের এই উইকেটরক্ষক। সোহানের এই উইকটটি ছিল গ্লেন ফিলিপসের চতুর্থ শিকার। এরপরে নাঈম হাসান ৮ রান করে আউট হলে একসময় ২ উইকেটে ১৮০ রান করা টাইগাররা ৩০০ রান করতে পারবে কি না সে প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে এ যাত্রায় রক্ষা করেছেন তাইজুল ও শরিফুল। দুজনে দলের রানকে ৩০০ পার করেন। শেষ পর্যন্ত ২০ রানের এই জুটি অপরাজিত থাকে। তাতে দ্বিতীয় দিনেও দেখা যাবে বাংলাদেশের ব্যাটিং। যদিও তা ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারবে কি না তা ভাবনার বিষয়।

  • টস জিতে ব্যাট করছে ভারত, জাকিরের অভিষেক

    টস জিতে ব্যাট করছে ভারত, জাকিরের অভিষেক

    চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করছে ভারত। এর আগে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সফরে প্রথমবারের মতো টস জিতে সফরকারিরা। এরপর ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল।

    অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের খেলা নিয়ে একটা সংশয় থাকলেও ম্যাচের দিন সকালে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। ইনজুরির কারণে ওয়ানডে সিরিজের পর টেস্টেও খেলা হচ্ছে না তামিম ইকবালের। তার পরির্বতে একাদশে সুযোগ পেয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটার জাকির হাসান। দেশের ১০১তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে ক্রিকেটের অভিজাত ফরম্যাটে অভিষেক হলো তার।

    এদিকে টেস্ট একাদশে ফিরেছেন ইয়াসির আলী। ইনজুরির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবশেষ সিরিজে ছিলেন না তিনি। চট্টগ্রামে তিন স্পিনার নিয়ে খেলতে নেমেছে দুদল।

    বাংলাদেশ দলে অধিনায়ক সাকিব ছাড়াও একাদশে আছেন তাইজুল ইসলাম ও অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। ভারতীয় দলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে খেলছেন অক্ষর প্যাটেল ও কুলদীপ যাদব।

    দুই দলের একাদশ
    বাংলাদেশ একাদশ
    সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, ইয়াসির আলী রাব্বি, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ ও ইবাদত হোসেন।

    ভারতীয় একাদশ
    লোকেশ রাহুল (অধিনায়ক), শুভমান গিল, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, রিশভ পন্ত, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ সিরাজ।

  • বাংলাদেশকে ‘১০’ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জিতল শ্রীলঙ্কা

    বাংলাদেশকে ‘১০’ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জিতল শ্রীলঙ্কা

    সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। চট্রগ্রাম টেস্টে ড্রয়ের পর এই হারে কার্যত সফরকারীদের কাছে সিরিজও খোয়ালো স্বাগতিকরা।

    চট্রগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্রয়ের পর ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনেই চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

    শেষ পর্যন্ত দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ৷ তবে টাইগারদের এই পুঁজি যে যথেষ্ট ছিল না, লঙ্কান ব্যাটাররা সেটা হারে হারে প্রমাণ করে দেন। প্রথম ইনিংসে কুশল মেন্ডিস ও দীনেশ চান্ডিমালের সেঞ্চুরিতে ৫০৬ রানে অলআউট হওয়ার আগে ১৪১ রানের বড় লিড পায় সফরকারীরা।

    ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মতো একই ম্যাচের দুই ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হন ওপেনার তামিম ইকবাল। ব্যাটিংয়ে ছন্দ হারানো দলপতি মুমিনুল হকও ফেরেন শূন্য হাতে।

    এছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত ২ এবং আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় মাত্র ১৫ রানে আউট হলে টাইগারদের বিপদ বাড়তে থেকে। সেখান থেকে আর উইকেট না হারিয়ে ১১ রানের জুটিতে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেন প্রথম ইনিংসের দুই নায়ক মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। ৩৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের চেয়ে ১০৭ রানে পিছিয়ে থেকে চতুর্থ দিন শেষ করে টাইগাররা।

    আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার পঞ্চমদিনের শুরুতে অবশ্য লঙ্কান পেসারদের ভালোই সামলাচ্ছিলেন। ব্যক্তিগত ৯ রানে কাসুন রাজিথার বলে আম্পায়ার লিটনকে ক্যাচ আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান এই টাইগার ব্যাটার। তবে রাজিথার পরের ওভারে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। আউট হওয়ার আগে মুশফিক করেন ২৩ রান।

    লিটনকে সঙ্গে নিয়ে সাকিব কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। লিটন ৫২ ও সাকিব ৫৮ রানে ফিরে গেলে হারের খুব কাছে চলে যায় বাংলাদেশ। এরপর ব্যাট হাতে মোসাদ্দেক কিংবা অন্য কেউই তেমন কিছুই করতে পারেননি। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২৮ রানের লিডে ১৫৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

    ২৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে তেমন বেগ পেতে হয়নি লঙ্কানদের। দুই ওপেনার ফার্নান্দো ও করুনারত্নে মাত্র তিন ওভারেই সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেন। ১০ উইকেটের বড় জয় নিয়ে চলতি বছর নিজেদের প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল সফরকারীরা।

    সংক্ষিপ্ত স্কোর
    টস: বাংলাদেশ

    বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৩৬৫/১০ (১১৬.২ ওভার)
    মুশফিক ১৭৫*, লিটন ১৪১, তাইজুল ১৫
    রাজিথা ৬৪/৫, আসিথা ৯৩/৪

    শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস : ৫০৬/১০ (১৬৫.১ ওভার)
    ম্যাথিউস ১৪৫, চান্দিমাল ১২৪, করুনারত্নে ৮০, ধনঞ্জয়া ৫৮, ওশাদা ৫৭
    সাকিব ৯৬/৫, এবাদত ১৪৮/৪

    বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : ১৪৯/৫ (৪৬ ওভার)
    সাকিব ৫৮, লিটন ৫২
    আসিথা ৫১/৬, রাজিথা ৪০/২

    শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ২৯/০ (৩ ওভার)
    ফার্নান্দো ২১*, করুনারত্নে ৭*

    ফল: শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেটে জয়ী।

  • ম্যাথিউসের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২৬৪

    ম্যাথিউসের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২৬৪

    চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম দিন শেষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। শেষ সেশনে উইকেট তুলে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম।

    প্রথম সেশনে দুই উইকেট তুলে নেওয়ার পর দ্বিতীয় সেশন কাটে উইকেটবিহীন। প্রথম সেশনে যেখানে ২ উইকেটে ৭৩ রান তুলেছিল সেখানে চা-বিরতির আগে স্কোরবোর্ডে ১৫৮ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন কুশল মেন্ডিস।

    এমনকি ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাথিউসও। উইকেটবিহীন একটি সেশন কাটানোর পর স্বাভাবিকভাবে হতাশ হওয়ার কথা। তবে তৃতীয় সেশনে শুরুতে সেটি কাটিয়ে দেন তাইজুল। ৫৪ রান করা মেন্ডিসকে ক্যাচ আউট করে সাজঘরে ফেরান তাইজুল।

    ধনঞ্জয়া এসে একটু আগ্রাসী খেলার চেষ্টা করেন। তবে ধনঞ্জয়া ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। তাঁর আগেই তাঁকে সাজঘরের পথ দেখান সাকিব। তাঁর করা বলটি ব্যাটের কানায় লেগে দারুণ এক ক্যাচ নেন স্লিপে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়।

    তবে আম্পায়ার নিশ্চিত আউটে সাড়া দেননি। ফলে বাধ্য হয়েই রিভিউ নেন মুমিনুল। রিভিউতে দেখা যায় পরিস্কার ব্যাটের সঙ্গে সংযোগ ছিল বলের। সাথে সাথেই নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন আম্পায়ার।

    ১৮৩ রানে চতুর্থ উইকেটের পতন পর ম্যাথুসকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন চান্দিমাল। ম্যাথিউসও ধীরে ধীরে এগোতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। নিজের ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরিটি আসে বাউন্ডারি মেরে। নতুন বল হাতে নেওয়ার পর শরিফুলের ওভারে চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

    শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেট হারিএ ২৫৮ রান করেই প্রথম দিন শেষ করে শ্রীলঙ্কা। ৩৪ রান করে অপরাজিত রয়েছেন চান্দিমাল ও ২১৩ বলে ১১৪ রান করে অপরাজিত রয়েছেন ম্যাথিউস। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম দিনে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন নাঈম হাসান।

  • কর্ণওয়াল-জোমেলের স্পিনে হেরেই গেল টাইগাররা

    কর্ণওয়াল-জোমেলের স্পিনে হেরেই গেল টাইগাররা

    ঢাকা টেস্টে জোমেল ওয়ারিক্যান এবং রাহকিম কর্ণওয়ালের স্পিন বিষে নীল হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশকে ১৭ রানে হারিয়ে ২-০ তে সিরিজ জিতে নিলো ক্যারিবীয়রা।

    মিরপুরের উইকেটে স্পিনাররা বেশ ভালোভাবেই ভোগাবে সেটা জানাই ছিল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। যে কারণে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন তামিম ইকবাল। তবে শেষ বিকালে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আফসোস করতেই পারে। চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে শেষ ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তকে সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন রাহকিম কর্ণওয়াল।

    তখনও জয়ের জন্য ১৫৩ রানের প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। এই উইকেটে ২৩১ রান তাড়া করা যে সহজ ছিল না সেটি ভালো করেই জানা। তবুও আশা জেগেছিল মুশফিক-মুমিনুল আছেন বিঁধায়। তবে সেই আশায় পানি ঢালতে বেশি দেরি করেনি ক্যারিবীয়রা।

    দলীয় ১০১ রানে ওয়ারিক্যানের বলে পা সামনে এগিয়ে আনতেই উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফিরতে হয় মুশফিককে। যদিও রিভিউ নিয়েও সে যাত্রায় বাঁচতে পারেননি তিনি। মুশফিকের বিদায়ের পর রান তাড়া যেন আরও কঠিন হয়ে পড়ে বাংলাদেশের জন্য। বাংলাদেশের জন্য কাজটা আরও কঠিন করেন কর্ণওয়ালই। দলীয় ১১৫ রানে মিঠুনকে সাজঘরে ফেরান তিনি।

    ১১৫ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে কাজটা যখন কঠিন হয়ে পড়ে তখনই কিছুটা আশা দেখাচ্ছিলেন দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক এবং উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস। দুই ব্যাটসম্যানই কর্ণওয়াল, ওয়ারিক্যানকে বেশ দেখেশুনেই খেলছিলেন। সেই সাথে এই দুই ব্যাটসম্যানকে দিতে হচ্ছে ধৈর্য পরীক্ষাও। কিন্ত মুমিনুলও আশা দেখিয়ে টিকতে পারলেন না ক্রিজে। দলীয় ১৪৭ রানে ওয়ারিক্যানের বলে থামতে হয় তাকে।

    আউট হওয়ার আগে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। বাংলাদেশের জন্য জয়ের কাজটা আরও কঠিন হয় দলীয় ৬ রান যোগ করতেই। কর্ণওয়ালের করা অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল মারতে গিয়ে উইকেটকিপার জশুয়া ডা সিলভার হাতে ক্যাচ তুলে দেন লিটন।

    লিটনের বিদায়ের পর একপাশ থেকে আগলে রেখে বাংলাদেশের জয়ের আশা টিকিয়ে রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের সঙ্গে তাইজুল কিছুটা সঙ্গ দিলেও দলীয় ১৬৩ রানে আউট হন তিনি। নবম উইকেট জুটিতে দলীয় স্কোরবোর্ডে মিরাজের সঙ্গে ২৫ রান যোগ করেন নাঈম। তবে সেই নাঈমও বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হতে পারলেন না। ক্রেগ ব্র্যাফেটের বলেই এলবিডব্লুর শিকার হতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় নাঈমকে (১৪)।

    তবে তখনও আশা টিকিয়ে রাখেন মিরাজ। ৫৯তম ওভারে কর্ণওয়েলকে ছয় এবং চার মেরে লড়াই চালিয়ে যান মেহেদী হাসান। তবে নাটকের শেষটা হয় কর্ণওয়ালের হাতেই। দলের যখন ১৮ রান প্রয়োজন তখনই ওয়ারিক্যানের বলে স্লিপে থাকা কর্ণওয়ালের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মিরাজ। সেই সাথে শেষ হয় মিরাজের লড়াকু ৩১ রানের ইনিংস।

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম ইনিংস) ৪০৯ (বনার ৯০, জশুয়া ডা সিলভা ৯২: আবু জায়েদ ৪-৯৮)

    বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) ২৯৬ (লিটন ৭১, মিরাজ ৫৭, মুশফিক ৫৪ঃ কর্ণওয়েল ৫-৭৪)

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২য় ইনিংস) ১১৭ (বনার ৩৮, জশুয়া ডা সিলভা ২০ঃ তাইজুল ৪-৩৬)

    বাংলাদেশ (২য় ইনিংস) ২১৩ (তামিম ৫০, মুমিনুল ২৬, মিরাজ ৩১ : কর্ণওয়াল ৪-১০৫)।

  • উইন্ডিজ অলআউট,বাংলাদেশের সামনে ২৩১ রানের লক্ষ্য

    উইন্ডিজ অলআউট,বাংলাদেশের সামনে ২৩১ রানের লক্ষ্য

    মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে নাঈম হাসান এবং তাইজুলের বোলিং নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১১৭ রানে অল আউট করলো বাংলাদেশ। বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট লাভ করেন তাইজুল ইসলাম।

    ৯৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিল ক্যারিবীয়রা। সফরকারীদের বাকি চার উইকেট তুলতে বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশ। দলীয় ১০৪ রানের মাথায় জশুয়া ডা সিলভাকে সাজঘরে ফেরান তাইজুল ইসলাম। আগের ইনিংসে ব্যাট হাতাএ দুর্দান্ত করা আলজারি জোসেফ দ্বিতীয় ইনিংসে বড় কিছু করতে পারেনি। ৮ বলে ৯ রান করে তাইজুলের বলে ফিরেন যান এই ক্যারিবীয়।

    ব্যাট হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে হাল ধরেছিলেন এনক্রুমাহ বনার। ব্যক্তিগত ৩৮ রান করা বনারকে থামান নাঈম হাসান। দলীয় ১১৬ রানে নবম উইকেটের পতন হলে দলীয় মাত্র এক রান যোগ করেই নাঈমের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রাহকিম কর্ণওয়েল। ফলে ১১৭ রানেই শেষ হয়ে যায় ক্যারিবীয়দের ইনিংস।

    বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট লাভ করেন তাইজুল। ২১ওভার বোলিং করে ৩৬ রান দিয়ে চার উইকেট নেন এই বাঁহাতি স্পিনার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট লাভ করেন নাঈম। ১৫.৫ ওভার বোলিং করে ৩৪ রান দিয়ে তিন উইকেট লাভ করেন তিনি। তাইজুল, নাঈম বাদে বল হাতে দুটি আবু জায়েদ রাহী এবং একটি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

    ক্যারিবীয়দের হতে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৩৮ রানই আসে বনারের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করে জশুয়া ডা সিলভা এই টেস্ট জিততে বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা ২৩১ রান।

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম ইনিংস) ৪০৯ (বনার ৯০, জশুয়া ডা সিলভা ৯২: আবু জায়েদ ৪-৯৮

    বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) ২৯৬ (লিটন ৭১, মিরাজ ৫৭, মুশফিক ৫৪ঃ কর্ণওয়েল ৫-৭৪

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২য় ইনিংস) ১১৭ (বনার ৩৮, জশুয়া ডা সিলভা ২০ঃ তাইজুল ৪-৩৬।

  • তৃতীয় দিন শেষে সুবিধাজনক অবস্থানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

    তৃতীয় দিন শেষে সুবিধাজনক অবস্থানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

    দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়ে আছে ১৫৪ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪১ রান। সাদা পোশাকে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম ১০০ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

    প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল বাংলাদেশের শরীরী ভাষা। যার ফলও বাংলাদেশ দ্রুতই পায়। ১১ রানের মাথায় ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে শিকার করেন নাঈম হাসান। উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ আউট আম্পায়ার প্রথমে না দিলেও রিভিউ নিয়ে উইকেটটি আদায় করেন বাংলাদেশ।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় উইকেটটি শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শেইন মোসলেকে শিকারের মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ উইকেটের ক্লাবে প্রবেশ করেন এই ডানহাতি স্পিনার। চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে এই ক্লাব নাম লেখালেন তিনি। বাংলাদেশিদের মধ্যে দ্রুততম হিসেবে ১০০ উইকেট শিকারের রেকর্ড নতুন করেও লিখেছেন মিরাজ। ২০ রানে ২ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

    তাইজুল ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে বাংলাদেশের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন জন ক্যাম্পবেল। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ভাগ্য কিছুটা খারাপই বলতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৯ রানে ৩টি উইকেট হারায়।

    তৃতীয় দিনশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৪১ রান। উইকেট হারিয়েছে ৩টি। সফরকারীরা এগিয়ে আছে ১৫৪ রানে।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ করেছিল ৪০৯ রান। জবাবে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ করে ২৯৬ রান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন লিটন দাস। এছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৭ ও মুশফিকুর রহিম ৫৪ রান করেন। তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। অধিনায়ক মুমিনুলের ব্যাট থেকে এসেছিল ২১ রান। বাকি ব্যাটসম্যানরা বলার মতো রান করতে পারেননি।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডানহাতি স্পিনার রাহকীম কর্নওয়াল নিয়েছিলেন ৫টি উইকেট। এছাড়া শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ৩টি ও আলজারি জোসেফ ২টি উইকেট শিকার করেন।

    সংক্ষিপ্ত স্কোর

    টস : ওয়েস্ট ইন্ডিজ

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪০৯/১০ (১ম ইনিংস)

    বাংলাদেশ ২৯৬/১০ (৯৬.৫ ওভার)
    লিটন ৭১, মিরাজ ৫৭, মুশফিক ৫৪, তামিম ৪৪, মুমিনুল ২১, মিঠুন ১৫, শান্ত ৪, সৌম্য ০;
    কর্নওয়াল ৫/৭৪, গ্যাব্রিয়েল ৩/৭০, জোসেফ ২/৬০।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪১/৩ (২১ ওভার)
    ক্যাম্পবেল ১৮, বনার ৮*;
    তাইজুল ১/১৩, নাঈম ১/১৪, মিরাজ ১/১৪।

  • দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

    দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

    ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে পারল না বাংলাদেশ। একের পর এক উইকেট হারিয়ে দিশেহারা স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইন। ক্যারিবীয়দের হয়ে উইকেট লাভ করেন

    দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনও নিজেদের করে নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অবশ্য দ্বিতীয় সেশনে বল হাতে ভালো জবাব দিয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা। দ্বিতীয় সেশনে ক্যারিবীয়দের ৪০৯ রানে বেঁধে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। তবে শেষ সেশনে ব্যাটসম্যানরা দায়িত্বহীন পরিচয় দিবেন এমন কিছু হয়তো ভাবতেও পারেননি কেউ। সাদমানের বদলি একাদশে ঢুকা সৌম্য যেন সাজঘরে ফিরলেন শুরুতেই।

    তৃতীয় সেশনের প্রথম ওভারের শেষ বলে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে গালি তে ক্যাচ তুলে ‘শুন্য’ রান করেই ফিরেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেট যেতেও বেশিক্ষণ সময় লাগেনি বাংলাদেশের। ১৪তম বলে গ্যাব্রিয়েলের করা অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল মারতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে এনক্রুমাহ বনারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই ইনিংসেও বড় স্কোর পাননি তিনি, করেছেন কেবল চার রান।

    দলীয় ১১ রানে দল যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে তখন হাল ধরেন তামিম ইকবাল এবং মুমিনুল হক। গ্যাব্রিয়েল, জোসেফদের বিরুদ্ধে কিছুটা আগ্রাসী ব্যাটিংই করেন তামিম। অন্যদিকে মুমিনুলও টেস্ট মেজাজের ব্যাটিং করে দলকে কিছুটা চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন। এই দুজনের ব্যাটিং যখন ভালো কিছুর আশা দেখাচ্ছিল সেটা স্বপ্নে পানি ঢেলে দেন রাকিম কর্ণওয়েল। দলীয় ৬৯ রানে কর্ণওয়েলের বল ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফিরেন দলের অধিনায়ক মুমিনুল।

    আউট হওয়ার আগে ৩৯ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলেন মুমিনুল। দলের অধিনায়ক আউট হওয়াতে দল যখন আবারো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে তখন বেশ তাড়াহুড়ো করেই আউট হন দারুণ খেলতে থাকা তামিম। বলতে গেলে অনেকটাই আত্মহত্যাই করেন এই ওপেনার। জোসেফের বলে ব্যক্তিগত ৫২ বলে ৪৪ রান করে আউট হন তামিম।

    ৭১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দল যখন আবারো বিপদে তখনই হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন জুটি। কোন ধরণের ঝুঁকি না নিয়েই রান বের করতে থাকেন মুশফিক। অন্যদিকে জোসেফের বলে মিঠুনকে আউট করতে আবেদন করেন উইকেটরক্ষক জশুয়া ডি সিলভা তবে রিভিউ নিয়ে সে যাত্রায় বেঁচে যান মোহাম্মদ মিঠুন। এক পাশ থেকে মুশফিক রান তুললেও অন্যপাশে রান না তুলে ক্রিজে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যান মিঠুন।

    শেষ পর্যন্ত দুই ব্যাটসম্যানের লড়াকু মানসিকতায় দ্বিতীয় দিনশেষে আর উইকেট হারাতে হয়নি বাংলাদেশকে। চার উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ৬১ বলে ৬ রান করে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন মিঠুন সেই সঙ্গে ৬১ বলে ২৭ করে অপরাজিত রয়েছেন মুশফিক।

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম ইনিংস) ৪০৯

    ডি সিলভা ৯২, বনার ৯০ঃ রাহী ৪-৯৮

    বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) ১০৫-৪

    তামিম ৪৪, মুশফিক ২৭*, মিঠুন ৪*: গ্যাব্রিয়েল ২-৩।

  • সমানে সমান লড়াই প্রথম দিনে

    সমানে সমান লড়াই প্রথম দিনে

    ঢাকা টেস্টে এনক্রুমাহ বনার এবং জশুয়া ডি সিলভার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম দিন শেষে ব্যাট হাতে ৭৪ রান করে অপরাজিত রয়েছেন বনার এবং ২২ রান করে অপরাজিত রয়েছেন জশুয়া ডি সিলভা।

    প্রথম সেশনেও বাংলাদেশের বোলারদের ধৈর্যর পরীক্ষা নিয়েছিল ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা। ওই সেশনে মাত্র একটি উইকেট হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে দ্বিতীয় সেশনে ঠিকই ঘুরিয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। চা-বিরতির সেশনে ক্যারিবীয়দের তিনটি উইকেট ফেলতে সক্ষম হয়েছিল টাইগাররা। ১৪৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে প্রথম দিনের শেষ সেশন শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

    তবে আগের সেশনে ব্যাট হাতে বাজে একটা সময় কাটালেও শেষ সেশনে এসে ফের বাংলাদেশের বোলারদের ধৈর্য পরীক্ষা নিয়েছেন জার্মাইন ব্ল্যাকউড এবং এনক্রুমাহ বনার। তাইজুল-নাঈম-মিরাজদের বেশ দেখে শুনেই ধৈর্যর সঙ্গে ব্যাট করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। এই দুজনের জুটি ভাঙে দলীয় ১৭৮ রানে। তাইজুলের করা বলটিতে, তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন ব্ল্যাকউড। সেই সাথে শেষ হয় তার ৭৭ বলে ২৮ রানের ইনিংসও।

    দলীয় ১৭৮ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন হলে সেখান থেকে বনারের সঙ্গে দলের হাল ধরেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জশুয়া ডি সিলভা। মিরাজের বলে একবার বনার একবার এলবিডব্লুর শিকার হলে পরবর্তীতে রিভিউ নিয়ে সে যাত্রায় বেচে যান বনার। তারপর থেকেই তাইজুল-রাহীদের বলে ধীরে ধীরে রান তোলেন ডি সিলভা এবং বনার।

    অন্যপাশে উইকেটের খোঁজে ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। বারবার বোলিংয়ে পরিবর্তন এনেও উইকেট যেন ধরা দিচ্ছিল না বাংলাদেশের বোলারদের কাছে। শেষ সেশনে মাত্র একটি উইকেট সন্তুষ্ট থাকতে হলো বাংলাদেশকে। বনার এবং ডি সিলভা জুটি প্রথম দিন শেষে স্কোরবোর্ডে তুলেছেন ৪৫ রান। টাইগারদের হয়ে দুটি করে উইকেট লাভ করেছেন আবু জায়েদ এবং তাইজুল।

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম ইনিংস) ২২৩-৫ (বনার ৭৪*, ডি সিলভা ২২*, ব্র্যাফেট ৪৭, ক্যাম্পবেল ৩৬: রাহী ২-৪৬)

  • মেয়ার্সের রেকর্ড দ্বিশতকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঐতিহাসিক জয়

    মেয়ার্সের রেকর্ড দ্বিশতকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঐতিহাসিক জয়

    ইনিংস ঘোষণা করে দেওয়া নিয়ে এখন নিশ্চয়ই আফসোস করছেন মুমিনুল হক। মাঠের বাইরে বসে বসেই দলের হার দেখলেন চোটাক্রান্ত সাকিব আল হাসানও। প্রথম চারদিনই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রাখার পরেও শেষ একদিনের খেলায় হেরে গেল বাংলাদেশ। কাইল মেয়ার্সের দ্বিশতকে ওয়েস্ট পেয়েছে ৩ উইকেটের ঐতিহাসিক জয়।

    পঞ্চম দিনের প্রথম দুই সেশনই ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের দখলে নিয়েছিল। দুই শতাধিক রানের জুটি গড়েন এনক্রুমাহ বনার ও কাইল মেয়ার্স। আঙুলে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক মুমিনুল হক। হাতে ব্যথা পেয়ে আগের দিন মাঠ ছাড়া তামিম ইকবাল মাঠে ফেরেন অধিনায়ক করতে। অবশ্য কয়েক ওভার পরেই মাঠে ফেরেন তিনি এবং তামিমও কিছুক্ষণ পরে আবার মাঠ ছাড়েন।

    চা বিরতির সময়ে দলের সাথে আলোচনা করতে দেখা যায় সাকিবকে। চা বিরতির পরেও মেহেদী হাসান মিরাজকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। চা-বিরতির পরে মাঠে নেমেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

    তাইজুল ইসলামের বলে ছয় মারার পরেই এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন বনার। ফেরার আগে তিনি করেন ২৪৫ বলে ৮৬ রান। ভেঙে যায় ২১৬ রানের জুটি। বনার ফেরার পরে মাঠে নামেন জার্মেইন ব্ল্যাকউড। তিনিও আক্রমণাত্মক খেলার প্রবণতা দেখান। ডাউন দ্য উইকেটে এসে নাঈম হাসানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ২৯২ রানে ৫ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

    তবে মেয়ার্স ঠিকই এগিয়ে নিতে থাকেন দলকে। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টেই প্রথম সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন তিনি। অপরপ্রান্তে দলকে জয়ের বন্দরে রেখে আউট হন জসুয়া ডা সিলভা। তারপর ক্রিজে আসেন কেমার রোচ। দুই দলের স্কোর সমান করে মিরাজের শিকার হন তিনি।

    তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন মেয়ার্স। ২ ওভার ও ৪ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

    প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ৪৩০ রান। সেঞ্চুরি করেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন সাদমান ইসলাম ও সাকিব আল হাসান। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়েছিল ২৫৯ রানে।

    দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২২৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। এই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। দ্বিতীয় দিনের পরে সাকিব আল হাসান আর মাঠে নামতে পারেননি।

    টস : বাংলাদেশ

    বাংলাদেশ ৪৩০/৭ (১ম ইনিংস)
    মিরাজ ১০৩, সাকিব ৬৮, সাদমান ৫৯, লিটন ৩৮, মুশফিক ৩৮, মুমিনুল ২৬, শান্ত ২৫, নাঈম ২৪, তামিম ৯;
    ওয়ারিকান ৪/১৩৩, কর্নওয়াল ২/১১৪, বনার ১/১৬, রোচ ১/৬০, গ্যাব্রিয়েল ১/৬৯।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৯/১০ (৯৬.১ ওভার)
    ব্রাথওয়েট ৭৬, ব্ল্যাকউড ৬৮, জসুয়া ৪২, মেয়ার্স ৪০, বনার ১৭, জসুয়া ১২*;
    মিরাজ ৪/৫৮, মুস্তাফিজ ২/৪৬, নাঈম ২/৫৪, তাইজুল ২/৮৪।

    বাংলাদেশ ২২৩/৮ (৬৭.৫ ওভার- ইনিংস ঘোষণা)
    মুমিনুল ১১৫, লিটন ৬৯, মুশফিক ১৮, সাদমান ৫, তামিম ০, শান্ত ০;
    ওয়ারিকান ৩/৫৭, কর্নওয়াল ৩/৮১, গ্যাব্রিয়েল ২/৩৭।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৯৫/৭ (৯৭ ওভার)
    মেয়ার্স ২১০*, বনার ৮৬, ক্যাম্পবেল ২৩, ব্রাথওয়েট ২০;
    মিরাজ ৪/১১৩, তাইজুল ২/৯১।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ উইকেটে জয়ী।