মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশেষে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল ও জ্বালানি পণ্যের শুল্ক ব্যাপক কমিয়েছে।
আমদানি করা চালের সমুদয় শুল্ক প্রত্যাহার এবং রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ডিজেলের আগাম কর ৫ শতাংশ প্রত্যাহার এবং আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
রোববার রাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে এ দুটি পণ্যের শুল্কহার হ্রাস ও প্রত্যাহার করেছে এবং এদিন থেকে তা কার্যকর করেছে।
এর আগে আমদানি করা চালের শুল্ক ছিল ২৫ শতাংশ এবং সঙ্গে রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ শতাংশ। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন চালের শুল্ক থাকবে মাত্র ৫ শতাংশ।
আর ডিজেল আমদানিতে মোট শুল্ক-কর ছিল ৩৪ শতাংশ। এখন ১০ শতাংশ কমানো হলো। ফলে ডিজেলের শুল্ক থাকল ২৪ শতাংশ।
এনবিআর বলেছে, দেশের বৃহৎ স্বার্থে জনকল্যাণে চাল ও ডিজেলের শুল্ক করহার কমানো হলো। এর ফলে চালের দাম কমে আসবে এবং ভোক্তা কম দামে চাল কিনে খেতে পারবে।
তবে ডিজেলের শুল্ক কমানোর ফলে এর দাম কমানো হবে কি না, সে বিষয়ে সরকার এখনও পরিষ্কার কিছু বলেনি। সরকারের নীতিনির্ধারক সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বিবেচেনা করে সরকার ডিজেলের দাম কমাতে পারে। শিগগিরই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।
চালের মৌসুমে কিছুতেই এর দাম কমছে না। কোনো কারণ ছাড়াই এর দাম হু হু করে বাড়ছে। এতে করে নির্ধারিত ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়ে গেছে। সরকার বেসরকারি খাতে চাল আমদানি বাড়িয়ে এর সরবরাহ বাড়াতে চায়। সে জন্য শুল্ক হার ব্যাপক কমানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ জুন চালের শুল্ক কমিয়েছিল সরকার।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ আগস্ট সরকার সব ধরনের জ্বালানি পণ্যের দাম ৪২ থেকে সর্বোচ্চ ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
মূলত ভর্তুকির চাপ কমাতে এ খাতে ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। জ্বালানি একটি স্পর্শকাতর পণ্য। এ কারণে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। এরই মধ্যে বাজারে সব কিছুর দাম বেড়েছে। এটি আগামীতে মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দেবে।
এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানি পণ্যের শুল্ক কমানো হলো। আশার আলো হচ্ছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি পণ্যের দাম কিছুটা কমে আসছে। এসব বিবেচনায় ধারণা করা হচ্ছে, দেশের ভেতর জ্বালানি পণ্যের দাম কমাতে যাচ্ছে সরকার।