Tag: ডিসি প্রত্যাহার

  • ‘চট্টগ্রামের ডিসিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে’

    ‘চট্টগ্রামের ডিসিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে’

    জেলা পরিষদ নির্বাচনে পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে।

    রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা।

    নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয় কামনা করে দলীয় নেতাদের সঙ্গে মোনাজাতে অংশ নেওয়া ও দোয়া চাওয়ার অভিযোগে জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

    শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সংস্থাপন সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান এই আইনি নোটিশ পাঠান।

    নোটিশদাতা আইনজীবী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান নোটিশে উল্লেখ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয় চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার মোনাজাত ও বক্তৃতা’ শিরোনামে অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত খবরটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদ থেকে আরও জানা যায় মোনাজাত পরবর্তী বক্তব্যে ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে ভোট চেয়েছেন এবং অন্যদেরকেও উক্ত রাজনৈতিক দলের জন্য দোয়া করতে অনুরোধ করেছেন। অথচ জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর নিরপেক্ষ ভূমিকা থাকার উচিত ছিল। গত ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সেই দোয়া অনুষ্ঠানে একজন প্রার্থীর জয় কামনা করে ডিসি আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা নিয়ে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা ও সন্দেহের সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে সকল ভোটার ও অন্য প্রার্থীরাও আস্থাহীনতায় ভুগছেন। ডিসির এমন কার্যকলাপে নির্বাচনী ফলাফল প্রভাবিত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।’

    নোটিশে আইনজীবী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান আরও উল্লেখ করেন, একজন রিটার্নিং কর্মকর্তার (ডিসি) মাধ্যমে ২০১৬ সালের জেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ৭৯, ৮০ ও ৮১ বিধির লঙ্ঘন হওয়া সত্যেও দায়িত্বপ্রাপ্তরা (অপর নোটিশ গ্রহীতারা) সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন, যা আপনাদের অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিষয়টি উদ্বেগেরও।

    নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিসির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হলে, আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবেন বলেও নোটিশে হুঁশিয়ারি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান।

    উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘আ. লীগের বিজয়ের জন্য বিএনপি-জামায়াতেরও দোয়া করা উচিত’- শিরোনামে সমকালের শেষ পৃষ্ঠায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার এমন আচরণে চট্টগ্রামে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। তার এমন বক্তব্যে নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন প্রার্থীসহ বিশিষ্টজনরা।

    গত ১৫ সেপ্টেম্বর আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান প্রার্থীর বিজয় কামনা করে দলীয় নেতাদের সঙ্গে মোনাজাতে অংশ নেন।

    একপর্যায়ে আ’লীগ প্রার্থীকে নিজের পাশে বসিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যও রাখেন তিনি। সেই বক্তব্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবার যেন আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়, সে জন্য বিএনপি-জামায়াতেরও দোয়া কামনা করেন তিনি।

    বক্তব্যে আগামী নির্বাচনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, ‘এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের পক্ষের শক্তির হাতে থাকবে নাকি স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির হাতে যাবে। আমি মনে করি যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে যদি থাকে, তাহলে আমাদের দেশে আওয়ামী লীগ বলি, বিএনপি বলি, জামায়াত বলি, সবাই নিরাপদ থাকবে। আমি মনে করি, বিএনপি-জামায়াতেরও এখন দোয়া করা উচিৎ শেখ হাসিনা যেন আবার ক্ষমতায় আসেন।’

    ২৪ঘণ্টা/এনআর

  • ডিসি সুলতানা প্রত্যাহার, মামলার সিদ্ধান্ত

    ডিসি সুলতানা প্রত্যাহার, মামলার সিদ্ধান্ত

    গভীর রাতে বাসায় গিয়ে সাংবাদিককে আটকের পর ডিসি অফিসে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনকে কুড়িগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

    একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবার দুপুরে এ কথা জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

    এর আগে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে জামিন দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কারণে তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

    আরিফুল ইসলামের পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২৫ হাজার টাকা জামানতে আরিফকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে মামলাটির আপিল চলমান রয়েছে।

    আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে আমাদের বাড়ির গেটে ধাক্কাধাক্কির শব্দ শুরু হয়। আমরা জানতে চাই কারা ধাক্কাচ্ছে। এ সময় বলা হয়, দরজা খুলুন, না হয় ভেঙে ফেলা হবে। পরে তারা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে। ঢুকেই মারতে শুরু করে আরিফকে। কেন মারছেন জিজ্ঞাসা করতেই তারা আরিফকে বলে, ‘তুই অনেক জ্বালাচ্ছিস।’ মারতে মারতে তাকে নিয়ে যায়।’

    তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের বিরুদ্ধে অনিয়মের সংবাদ পরিবেশন এবং ফেসবুকে দুর্নীতি সংক্রান্ত পোস্ট দেওয়ার কারণে উনি ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ’

    তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ডিসি সুলতানা পারভীন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘যদি ঐ ঘটনাই হতো, সেটা তো এক বছর আগের কথা। ঐটা যদি কোনো বিষয় হতো, তাহলে তো তখনই আমরা কোনো অ্যাকশনে যেতাম।’ তিনি বলেন, টাস্কফোর্সের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

    এদিকে গভীর রাতে সাংবাদিকের বাসায় টাস্কফোর্সের অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

    অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাসা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে মোবাইল কোর্ট সাজা দিতে পারে না। গাঁজা-মদ যদি ঘরে থেকেও থাকে, তবে তা নজরদারিতে রাখবে। এরপর যখন সময় হবে তখন তাকে মাদকসহ আটক করবে। আর এসব মাদকদ্রব্য যদি কেউ লুকিয়ে রাখে, তাহলে আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তার নিজস্ব আইনবলে পদক্ষেপ নেবে।’

    উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে আরিফুল ইসলামকে মাদকবিরোধী অভিযানের কথা বলে আটক এবং পরে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

    অভিযানের সময় মাদকসহ আরিফুল ইসলাম রিগানকে আটক করা হয় বলে দাবি করেন অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা।