২৪ ঘণ্টা আন্তর্জাতিক সংবাদ : সুপার সাইক্লোন আম্পানের তাণ্ডবলীলায় তছনছ হয়ে গেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। লন্ডভন্ড কলকাতা। ঘন্টায় ১৩০ কিমি বেগে বয়ে চলা আম্পানের তাণ্ডবলীলায় রাস্তায় একের পর এক ভেঙে পড়েছে গাছ।
বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাও। কারণ বিভিন্ন ট্র্যাফিক লাইটগুলি ভেঙে পড়ে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছেন। তাছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ১০ থেকে ১২ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০ মে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সুন্দরবনে আছড়ে পড়ার পর দক্ষিণে তাণ্ডব চালিয়ে যখন উত্তর ২৪ পরগনায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়, সেইসময় রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ তথ্য জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সুপার সাইক্লোন আম্পানের তাণ্ডবলীলায় কলকাতায় গাছ পড়ে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবেই এই ঘটনা ঘটে। হাওড়ায় ঘরের টিন ভেঙে পড়ে এক তরুণীর মৃত্যু হয়, এছাড়া মিনাখাঁয় এক মহিলার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বসিরহাটে ঝড়ে নারকেল গাছ চাপা পড়ে ৪ জন হতাহতের খবর জানা গেছে। তাছাড়াও মেনকা মিনাখা হিঙ্গলগঞ্জ সন্দেশখালি হাসনাবাদ হাড়োয়া সহ আশেপাশে এলাকার কমপক্ষে ৫ হাজার ২শ টি মাটির তৈরি ঘর ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসক।
এদিকে ঝড়ের তান্ডব শুরু হওয়ার আগেই বুধবার সকালে দিঘাতে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়। একেবারে গার্ডওয়াল টপকে আসে জল। বেলা বাড়ার সঙ্গে তা ভয়ঙ্কর চেহারা নেয়। প্রায় ৪ থেকে পাঁচ ফুট চেহারা নেয় ঢেউয়ের। আর তার সঙ্গে বাড়তে থাকে ঝোড়ো হাওয়া। যার কারণে বহু জায়গায় বোল্ডার একেবারে রাস্তার উপরে চলে আসে।
এরপর যখন ল্যান্ডফল শুরু হয় তখন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠে পরিস্থিতি। বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে। যার কারণে বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে, দিঘায় প্রচুর ঝাউ গাছের উপড়ে পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। রাস্তার দুধারে সেগুলি ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ খুঁটিগুলিও ভেঙে পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে দোকানগুলিরও।
ঝড়ের পর মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে জানিয়েছেন, এলাকার পর এলাকা ধ্বংস। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রশাসন সাধারণ মানুষের সাহায্যে ৫ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছি। দঃ ও উত্তর ২৪ পরগণা প্রায় ধ্বংস ঝড়ের দাপটে। গাছ পড়ে মানুষ মারা গেছেন। মোট ক্ষতি এখনও গণনা করা যায়নি।
অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, জল নেই। পাথরপ্রতিমা, নামখানা, কাকদ্বীপ, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর সব জায়গায় ধ্বংসের ছবি। রাজারহাট, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, গোসাবা, হাবড়া সব জায়গাই বিপর্যস্ত।’
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার’এর খবরে বলা হয়, এখন পর্যন্ত পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে।’ ধ্বংসের হাত থেকে উন্নয়নের পথে আবার সবাইকে শামিল করে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা।
২৪ ঘণ্টা/রাজীব প্রিন্স