Tag: তথ্য ফাঁস

  • হ্যাক হয়নি, কিছু তথ্য ফাঁস হয়েছে: এনআইডি ডিজি

    হ্যাক হয়নি, কিছু তথ্য ফাঁস হয়েছে: এনআইডি ডিজি

    নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সার্ভার হ্যাক হয়নি, কিছু তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর।

    তিনি বলেন, আমি হ্যাক কথাটা বলিনি। কিছুটা লিকেজ (ফাঁস) হয়েছে। হ্যাক হলে ডেটা লস হওয়ার কথা। এনআইডি নম্বর তো ব্যাংকও চাইলে নিতে পারে। এটা গোপন কিছু নয়। বেতন নেওয়ার জন্য, পাসপোর্ট করার জন্য দিতে হয়।

    বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) নির্বাচন ভবনে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

    এনআইডি নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং টেকনিক্যাল পারসনদের নিয়ে বসেছিলাম। তাদের মতামত, পরামর্শ নিয়েছি। আমরা এগুলো বাস্তবায়নের জন্য ১৭১টি পার্টনারের সঙ্গে কথা বলবো। তখন আরও বেশি টেকনিক্যাল পারসনদের নিয়ে বসবো।

    ইসির সার্ভারে কোনো ফাঁকফোকর আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের এখানে কোনো ফাঁকফোকর এখন পর্যন্ত নেই। তবে আমাদের সিস্টেমকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে হবে। আমরা যাতে পিরিওডিক্যাল অডিট করতে পারি, টেকনিক্যাল কমিটি মাঝেমধ্যে বসে দেখতে পারে কোনো রকমের কোনো হুমকি আছে কি না।

    তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পরামর্শ দিয়েছেন যে পিরিয়ডিক্যাল অডিট করতে হবে। আমাদের যে কাজগুলো সামনে রয়ে গেছে ফিজিক্যাল ও টেকনিক্যাল সিকিউরিটি বাড়াতে হবে। যদিও উনারা বলেছেন আমাদের এখান (এনআইডি সার্ভার) থেকে কোনো কিছু (তথ্য ফাঁস) হয়নি।

    এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, সরকারের আইসিটি বিভাগ একটি টেকনিক্যাল কমিটি করেছে। সেখানে আমাদের লোকজনকে সম্পৃক্ত করার জন্য বলেছি। যাতে আমরা আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে পারি। প্রতিদিন সাইবার অ্যাটাকিংয়ের জন্য এগিয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দক্ষতাও যদি ওইভাবে বৃদ্ধি না করা হয়, তাহলে আমরা সবসময় ঝুঁকিতে থাকবো।

    এনআইডি মহাপরিচালক আরও বলেন, তারা (প্রযুক্তবিদরা) আমাদের ডিজাস্টার রিকভারি সিস্টেমের (ডিআরএস) কথা বলেছেন। গতকাল বিসিসির সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি। সেই চুক্তির মোতাবেক আমাদের ডেটা আগামী মাস থেকে চলে যাবে কালিয়াকৈর ডিআরএসে সংরক্ষণের জন্য। এতে কোনো ডিজাস্টার হলে আমরা সেখান থেকে রিকভারি করতে পারবো। আমরা একটা টেকনিক্যাল কমিটি করবো প্রথিতযশা ব্যক্তিদের নিয়ে। তারা আমাদের যে সাজেশন দেবেন সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবো।

    পার্টনার সার্ভিগুলোর সঙ্গে চুক্তির আগে তাদের সিস্টেমের দুর্বলতা খতিয়ে দেখেছিলেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন চুক্তি হয় তখন কিন্তু আমরা সিকিউরিটির বিষয়টি দেখে নেই। তারা আইসিটি থেকে একটি সনদপত্র নিয়ে আসে। এখন আমরা ম্যানডেটরি করবো চুক্তির আগে আইসিটি থেকে নিয়ে আসেন। কিন্তু চুক্তির পরে আমাদের পিরিওয়ডিক্যিাল অডিট বাড়াতে হবে। তিন মাস… ছয় মাস। তাদের সঙ্গে আমাদের বসার তাগিদ দিয়েছেন প্রযুক্তিবিদরা।

    চুক্তি ভঙ্গ করলে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এনআইডি ডিজি বলেন, চুক্তি ভঙ্গ যেখানে হবে, আমরা ব্যবস্থা নেবো। আইন, বিধি-বিধান আছে, কমিশনের অনুমোদন নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।

    অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ডিআরএসটা হবে ব্যাকআপ। অ্যাক্টিভ ডিআরএস আমরা করবো। এই প্রজেক্টের সময়ের মধ্যেই করবো। এতদিন ছিল না, অনেক কিছুই ছিল না। মিরর ব্যাকআপ রেখেছি আইসিটিতে, বিসিসিতে। এখন আমরা যাচ্ছি ডিআরএসে। আমরা এতদিনও চেষ্টা করেছি।

    আরেক প্রশ্নের জবাবে এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, আমাদের সার্ভারে কোনো দুর্বলতা নেই। এটা সবাই স্বীকার করেছেন। এনআইডি নম্বর তো ব্যাংকও চাইলে নিতে পারে। এটা গোপন কিছু নয়। বেতন নেওয়ার জন্য, পাসপোর্ট করার জন্য দিতে হয়। এটা তো না পাওয়ার মতো কিছু না।

    আইডিইএ (স্মার্টকার্ড) প্রকল্প পরিচালক আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম বলেন, সাইবার সিকিরিটি সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা আছে সবারই। পৃথিবীতে ১০ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে সাইবার সিকিউরিটি সাবজেক্ট আছে। আমাদের এখানে পোস্ট গ্র্যাজুয়েটে আছে। কাজেই আমাদের এখানে সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে সচেতনতা কম আছে। আমরা চেষ্টা করছি সচেতনতা বাড়ানোর, জ্ঞান বাড়ানোর।

    বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোসাদ্দেক হোসেন কামাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব, আইজিপির প্রতিনিধি, র‌্যাবের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্টার জেনারেল, এনআইডি সার্ভারের ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি প্রধান, বুয়েট ও আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

  • তথ্য ফাঁস : তদন্তে নেমেছে র‌্যাবের সাইবার টিম

    তথ্য ফাঁস : তদন্তে নেমেছে র‌্যাবের সাইবার টিম

    সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

    র‍্যাব জানিয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার সুযোগে হ্যাক করে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কি না, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য পাচার করা হয়েছে— এসব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

    র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কাজ করছি। পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সাইবার টিম সমন্বিতভাবে বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্তে তথ্য ফাঁসের ব্যাপারে আমলযোগ্য অগ্রগতির আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।

    তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংরক্ষিত তথ্য এক জায়গায় পাওয়া গেছে। তথ্যগুলো যে কোথা থেকে কীভাবে এলো তা এখন পর্যন্ত বোধগম্য নয়। সেটাই জানার চেষ্টা করছি।

    উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ধরুন একজনের তথ্য ফাঁস হয়েছে। সেই তথ্যটি এনআইডি থেকে ফাঁস হয়েছে নাকি লোকাল কোনো সার্ভার থেকে হয়েছে… আমরা তা জানার চেষ্টা করছি। তথ্য কীভাবে ফাঁস হয়েছে, সার্ভার হ্যাক হয়েছিল কি না, নাকি সার্ভারের দুর্বলতা ছিল, নাকি কেউ কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য দিয়েছে— আমরা সেসব জানতে কাজ করছি।

    কমান্ডার মঈন বলেন, তথ্যের অনেক প্যাটার্ন আছে। কোন ধরনের তথ্য ফাঁস হয়েছে, ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য নাকি প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য ফাঁস হয়েছে, ফাঁসকৃত তথ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    এদিকে তথ্য ফাঁসের বিষয়টি স্বীকার করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক। রোববার (৯ জুলাই) সকালে বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস অ্যাওয়ার্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, সিস্টেমের দুর্বলতার কারণে তথ্য ফাঁস হয়েছে।

    এ ব্যাপারে দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, নাগরিকদের তথ্য ফাঁসের এ কাজে যদি কেউ সহায়তা করে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না৷ এ বিষয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ করার মতো উপাদান এখনো হাতে পাইনি৷ আমাদের সাইবার ইউনিট এ বিষয়ে কাজ করছে৷ আমাদের আগে দেখতে হবে কী ফাঁস হয়েছে৷ সেগুলো বের করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।

    গত ২৭ জুন হঠাৎ করে বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের বিষয়টি খুঁজে পান সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা বিটক্রেক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস। তিনি দাবি করেন, ফাঁসকৃত তথ্যের মধ্যে নাগরিকদের পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর রয়েছে। এরপর তিনি বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে (সিইআরটি) বিষয়টি অবহিত করেন।

    গুরুতর এমন দাবি জানানো ভিক্টর মার্কোপোলোস জানিয়েছেন, তথ্য ফাঁস করার বিষয়ে তিনি বাংলাদেশের সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানকে ইমেইল বা অন্যান্য মাধ্যমে অবহিত করেছেন, সেগুলোর কোনোটিই তাকে কোনো জবাব দেয়নি। সিইআরটি, বাংলাদেশ সরকারের প্রেস অফিস, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউইয়র্কের বাংলাদেশের কনস্যুলেটের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের বিষয়টি সত্যি। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ওই ওয়েবসাইটের ‘পাবলিক সার্চ টুলে’ ফাঁস হওয়া তথ্য খুঁজে দেখা হয়।

    তথ্য খোঁজার পর ওয়েবসাইট থেকে ফাঁসকৃত তথ্যসহ অন্যান্য তথ্য দেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে— যিনি রেজিস্ট্রেশন করার আবেদন করেছেন তার নাম। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বাবা-মায়ের নামও পাওয়া গেছে।

    টেকক্রাঞ্চ জানিয়েছে, তারা ওই ওয়েবসাইটটির নাম প্রকাশ করবে না কারণ, সেটিতে এখনো ফাঁসকৃত তথ্যগুলো রয়েছে।

    টেকক্রাঞ্চকে ভিক্টর মার্কোপোলোস বলেছেন, ফাঁসকৃত তথ্যগুলো পাওয়া খুবই সহজ। গুগলের ফলাফল হিসেবে এগুলো সামনে আসে। আমি এটি খুঁজতেও যাইনি। আমি এসকিউএল ইরর নিয়ে গুগলিং করছিলাম, আর এটি দ্বিতীয় ফলাফলে চলে আসে।

    বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সী প্রত্যেককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। যেটির প্রত্যেকটির আলাদা নম্বর থাকে। প্রত্যেক নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক। এ পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, জমি বেচা-কেনা ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলাসহ সব কাজ করা হয়।

    সে কারণে যেসব তথ্য ফাঁস হয়েছে সেগুলোই বেশ ঝুঁকির। কিন্তু এসব তথ্য ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অনলাইনের আবেদনে ঢোকা, পরিমার্জন বা আবেদন মুছে ফেলা এমনকি জন্মনিবন্ধনের তথ্যের ভ্যারিফিকেশনও দেখা যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভিক্টর মার্কোপোলোস।

  • তথ্য ফাঁসের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

    তথ্য ফাঁসের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, নাগরিক তথ্য ফাঁসের সঙ্গে যদি কেউ জড়িত থাকে বা সহায়তা করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

    তিনি বলেন, এ বিষয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করার মতো কোনো উপাদান এখনো হাতে পায়নি। আমাদের সাইবার ইউনিট এ বিষয়ে কাজ করছে। আগে দেখতে হবে কি ফাঁস হয়েছে। সেগুলো বের করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।

    রোববার (৯ জুলাই) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিরাপত্তা বিষয়ক আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে এসব কথা বলেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

    এনআইডি সার্ভার থেকে বেশ কিছু তথ্য ফাঁস হয়েছে। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এনআইডি আমাদের অধীনে এলেও আমরা এখনো তার কার্যক্রম শুরু করিনি। বর্তমানে তা নির্বাচন কমিশনের হাতে রয়েছে। আইনি জটিলতা শেষ করে আমরা হাতে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করতে চাই। তবে এই ফাঁস হওয়ার ঘটনার কথা আমরা শুনেছি, বিস্তারিত জেনে আপনাদের জানাতে পারব। এ মুহূর্তে আমাদের কাছে বিস্তারিত তথ্য নেই। আপনি যেমন শুনেছেন, আমরাও ঠিক সেরকমভাবে শুনেছি। আরেকটু না জেনে জবাব দেওয়ার মতো তথ্য আমার কাছে নেই।

    ডিজিটাল নিরাপত্তায় যদি কোনো ফাঁক-ফোকর থাকে কিংবা কেউ দায়ী থাকেন, সে ক্ষেত্রে আপনারা কী ধরনের ব্যবস্থা নেবেন? জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আগে আমাকে শনাক্ত করতে হবে যে ঘটনা কী ঘটেছে। কতখানি ফাঁস হয়েছে, সেগুলো তো আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। তারপর যদি দেখি, কেউ এটা করেছে বা সহায়তা করেছে, তাহলে অবশ্যই আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সেই জায়গায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কখনো কাউকে ছাড় দেয় না, সেটি আপনারা দেখেছেন। আগে পুরো বিস্তারিত জেনে, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

    আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে কি না; জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুরু করার মতো উপাদান এখনো আমাদের হাতে আসেনি। তবে আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের সাইবার ইউনিটগুলো এরইমধ্যে কাজ করেছে। আমরা আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছি।

    এ তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনায় সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবনার কিছু আছে কি না? -এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আগে দেখতে হবে আমাদের সুরক্ষার কী আছে। অবশ্যই সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেব। সেখানে কোনো ফাঁকফোকর থাকবে না।

  • তথ্য ফাঁসের তির জন্মনিবন্ধন ওয়েবসাইটের দিকে

    তথ্য ফাঁসের তির জন্মনিবন্ধন ওয়েবসাইটের দিকে

    ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী সরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল সরকার। এ ২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকেই নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

    তিনি বলেন, এ ২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭ নম্বর প্রতিষ্ঠানটি থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে। সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২৭ নম্বর প্রতিষ্ঠান হচ্ছে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন)।

    রোববার (৯ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

    পলক বলেন, সরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে চিহ্নিত করি। এই ২৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রজ্ঞাপনের তালিকা থেকে ২৭ নম্বর প্রতিষ্ঠানটি এ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। আমরা আগেই এই বিষয়টি শনাক্ত করেছিলাম। এই প্রতিষ্ঠানের ত্রুটিতে তথ্যগুলো উন্মুক্ত ছিল। যাদের গাফিলতিতে এ তথ্যগুলো উন্মুক্ত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করব।

    তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় সরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণা করে সরকার। তথ্য পরিকাঠামো হলো কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক, যেখানে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়।

    প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড, সেতু বিভাগ, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, জাতীয় ডেটা সেন্টার (বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (নির্বাচন কমিশন সচিবালয়), সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইমিগ্রেশন পুলিশ, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশ, রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।

    গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করলে সাত বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে বলে আইনে উল্লেখ আছে। বেআইনিভাবে প্রবেশ করে ক্ষতিসাধন বা ক্ষতির চেষ্টা করলে ১৪ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডই দেওয়া যাবে।

    প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পাঁচ কোটিরও বেশি নাগরিকের সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটে ঢুকলেই পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, গুগলে সার্চ করলেই যে কেউ ওয়েবসাইটটিতে ঢুকে পাঁচ কোটি নাগরিকের নাম, জন্ম তারিখ ও এনআইডি নম্বর দেখতে পারছেন। গত ২৭ জুন এটি দেখতে পান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস।

    বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটি দক্ষিণ আফ্রিকার একটি কম্পিউটার নিরাপত্তা সমাধান সংস্থা। তার বরাতে বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে মার্কিন অনলাইন পোর্টাল টেকক্রাঞ্চ।

  • তথ্য ফাঁস হওয়ার খবরে সতর্কতা জারি সার্টের

    তথ্য ফাঁস হওয়ার খবরে সতর্কতা জারি সার্টের

    বাংলাদেশের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবরে ‘সিচুয়েশনাল অ্যালার্ট’ বা সতর্কতা জারি করেছে সরকারের সাইবার ইস্যু দেখভালকারী প্রতিষ্ঠান বিজিডি-ইগভ সার্ট। শনিবার প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প পরিচালক সাইফুল আলম খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেটা সুরক্ষায় নিয়মিত কাজ করছে সার্ট। নিয়মিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন মাধ্যমে সাইবার মনিটরিং করা হয় এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হয়। সম্প্রতি তথ্য ফাঁস ইস্যুতেও কাজ করছে সার্ট। ঈদের আগেও প্রতিষ্ঠানটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার বিষয়ে সতর্ক করে।

    তাই বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁস মোকাবিলায় বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব পরামর্শের মধ্যে রয়েছে- সাইবার হুমকি মোকাবিলায় নিজেদের দক্ষতা বাড়ানো; ডিএনএস, এনটিপি ও নেটওয়ার্ক মিডেল বক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো সুরক্ষিতভাবে কনফিগার করা ও ইন্টারনেটে উন্মুক্ত না করা; সকল কর্মচারী, গ্রাহক এবং ভোক্তাদের সঠিক তথ্য ও সাইবার সিকিউরিটি সচেতনতা প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা, যাতে কোনো অসঙ্গতি এবং সন্দেহমূলক কার্যক্রম নজরে আসলে রিপোর্ট করতে পারে; সার্বক্ষণিকভাবে কঠোর নেটওয়ার্ক ও ব্যবহারকারীদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা; নিয়মিতভাবে দুর্বলতা মূল্যায়ন এবং অনুপ্রবেশ পরীক্ষা (ভিএপিটি) সমস্ত সিস্টেমের জন্য পরিচালনা করা; ওডব্লিউএএসপি’র নির্দেশিকা অনুযায়ী কনফিগার এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন শক্ত করা; যেকোনো ধরনের সন্দেহকজনক কার্যকলাপ শনাক্তকরণের বিষয়ে বিজিডি ই-গভ সার্ট’কে রিপোর্ট অথবা ইনফর্ম করা।

    বাংলাদেশ লাখ লাখ নাগরিকের তথ্য ফাঁস

    বাংলাদেশ সরকারের একটি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে খবর দিয়েছে প্রযুক্তি বিষয়ক খ্যাতনামা ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চ। এসব তথ্যে মধ্যে নাগরিকের সম্পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ইমেল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর রয়েছে।

    গত ২৭ জুন এই তথ্য ফাঁসের বিষয়টি বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস ঘটনাক্রমে আবিষ্কার করেন বলে ৭ জুলাই রাতে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে টেকক্রাঞ্চ।

    ‘বাংলাদেশ গভর্মেন্ট ওয়েবসাইট লিকস সিটিজেনস পারসোনালা ডাটা শিরোনামের প্রতিবেদনে টেকক্রাঞ্চ বলেছে, ফাঁসের বিষয়টি আবিষ্কারের পর বাংলাদেশি ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের (সার্ট) সঙ্গে যোগাযোগ করেন মার্কোপোলোস। তিনি জানান, ফাঁসের মধ্যে লাখ লাখ বাংলাদেশি নাগরিকের তথ্য রয়েছে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো বৈধ কিনা তা টেকক্রাঞ্চ একটি পাবলিক সার্চ টুলের মাধ্যমে যাচাই করছে। তবে টেকক্রাঞ্চ সরকারি ওয়েবসাইটির নাম জানায়নি। কেননা তথ্যগুলো এখনও অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।

    টেকক্রাঞ্চ জানায়, অন্য কাজ করার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবেই এই ফাঁসের বিষয় ধরতে পারেন মার্কোপোলোস। তিনি বলেছেন, ডাটাগুলো পাওয়া খুব সহজ ছিল। তবে এটি খোঁজার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিল না। এটা শুধু একটি গুগল সার্চের ফলাফল হিসেবে পেয়েছি। আমি গুগলে এসকিউএল ত্রুটি নিয়ে কাজ করার সময় এই তথ্যগুলো পেয়ে যাই।

    বাংলাদেশে, ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রতিটি নাগরিককে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়, যা প্রত্যেক নাগরিককে একটি অনন্য পরিচয়পত্র প্রদান করে। কার্ডটি বাধ্যতামূলক এবং নাগরিকদের বিভিন্ন পরিষেবাতে অ্যাক্সেস দেয়, যেমন একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, জমি কেনা-বেচা, একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা এবং অন্যান্য।

    বাংলাদেশের সিইআরটি, সরকারের প্রেস অফিস, ওয়াশিংটন, ডিসিতে দূতাবাস এবং নিউইয়র্ক সিটিতে কনস্যুলেটের কাছে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে জানায় টেকক্রাঞ্চ।