Tag: থাইল্যান্ড

  • পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

    পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

    থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদের সতর্ক করেছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

    কিছু অসাধু ব্যক্তি এবং এসব দেশে গড়ে ওঠা বেশ কিছু স্ক্যাম প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার অপারেটর, টাইপিস্ট, কলসেন্টার অপারেটরসহ বিভিন্ন পদে আকর্ষণীয় বেতনের প্রলোভন দিয়ে নিয়োগের লক্ষ্যে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে (ভুয়া ওয়েবসাইট, ই-মেইল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ইত্যাদি) প্রচার কার্যক্রম ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করছে।

    এসব ক্ষেত্রে স্ক্যাম সেন্টারগুলো বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সঙ্গে বাংলাদেশিদেরও সুকৌশলে স্ক্যাম সেন্টারের ভেতরে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক জিম্মি করে স্ক্যামের কাজে নিয়োজিত করছে।

    ব্যাংককস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস মিয়ানমার ও কম্বোডিয়ায় গড়ে ওঠা স্ক্যাম সেন্টারগুলো থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ও পালিয়ে আসা বেশ কিছু বাংলাদেশিকে ইতোমধ্যে দেশে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছে।

    এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারসমূহকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

    এছাড়া, এসব দেশগুলোতে সাইবার স্ক্যাম নিয়ে কাজ করছে এরূপ এনজিওসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।

    বিদেশে চাকরির উদ্দেশ্যে গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের এসব দেশে কম্পিউটার পরিচালনা সংক্রান্ত চাকরির প্রস্তাব পেলে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা অথবা জনশক্তি, কর্মস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট শাখার মাধ্যমে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহের সহযোগিতায় নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য যাচাই করে নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

    এছাড়াও স্ক্যাম সেন্টার থেকে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ আইডির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে-বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদেরকে টার্গেট করে আর্থিকভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে। দেশে-বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করলে প্রতারক চক্রটি তাৎক্ষণিকভাবে এসব লেনদেনের অ্যাকাউন্ট বন্ধের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে।

    এ বিষয়ে দেশে-বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে আরো বেশি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

  • প্রথম বিদেশ সফরে থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

    প্রথম বিদেশ সফরে থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

    অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম বিদেশ সফরে যাচ্ছেন থাইল্যান্ড। বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর তিনি ব্যাংকক যাবেন।

    মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সফরকে সামনে রেখে সম্প্রতি থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ফাইয়াজ মুর্শেদ কাজীকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যাংককে পাঠানো হয়েছে। তিনি ব্যাংকক পৌঁছেছেন।

    আগামী ২-৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সাত-জাতির আঞ্চলিক জোট বিমসটেকের (বঙ্গোপসাগরীয় বহুমাত্রিক কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জোট) ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে ভারতসহ জোটের সব সদস্য শীর্ষ নেতারা যোগ দিচ্ছেন।

    মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ৫ সেপ্টেম্বর ফিরবেন। ৪ সেপ্টেম্বর তিনি বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতা করবেন।

    শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

  • থাইল্যান্ডে শিশু ডেকেয়ারে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে নিহত ৩১

    থাইল্যান্ডে শিশু ডেকেয়ারে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে নিহত ৩১

    পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তা এই বন্দুক হামলা চালিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার দেশটির পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। দেশটির পুলিশের উপ-মুখপাত্র আচায়ন ক্রাইটং রয়টার্সকে বলেছেন, গুলিতে কমপক্ষে ৩১ জন মারা গেছেন।

    সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র খবরে থাই পুলিশের বিবৃতিরে বরাতে বলা হয়েছে, ডে কেয়ার সেন্টারে নিহতদের মধ্যে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকরাও রয়েছেন। পুলিশের সেই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

    দেশটির সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ডে কেয়ার সেন্টারে হামলার পর দেশটির সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা এবং কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচা। একই সঙ্গে অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

    ওই পুলিশ কর্মকর্তা সম্প্রতি চাকরিচ্যুত হয়েছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে। পুলিশ বলছে, তাকে শেষবার ব্যাংককের রেজিস্ট্রেশন প্লেটসহ একটি সাদা টয়োটা পিকআপ ট্রাক চালাতে দেখা গেছে।

    এদিকে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা ৩০ জন বলা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল আচায়ন ক্রাইথং বলেন, ওই বন্দুকধারী নোংবুয়া লাম্পু শহরের কেন্দ্রে ওই ডেকেয়ারে স্থানীয় সময় বিকেলে গুলি চালায়।

    তিনি বলেন, বন্দুকধারীর গুলিতে ৩০ জনের বেশি নিহত হয়েছে এবং এর বেশি কিছু জানা যায়নি। হত্যাকাণ্ডের পর আততায়ী আত্মহত্যা করেছে বলেও খবর মিলেছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

    স্থানীয় পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে। যার মধ্যে ২৩ শিশু ও দুই শিক্ষক এবং এক পুলিশ কর্মকর্তার মরদেহ শনাক্ত করা গেছে।

    ২৪ঘণ্টা/বিআর

  • থাইল্যান্ডে বন্যার কবলে ৭০ হাজার ঘরবাড়ি

    থাইল্যান্ডে বন্যার কবলে ৭০ হাজার ঘরবাড়ি

    বন্যার পানি থেকে ব্যাংককের বিভিন্ন অঞ্চলকে রক্ষায় থাই কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার দ্রুততার সাথে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ইতোমধ্যে দেশটির উত্তর ও মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে ৭০ হাজার ঘরবাড়ি বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে এবং ছয়জনের প্রাণহানি ঘটেছে। খবর এএফপি’র।

    থাই দুর্যোগ মোকাবেলা ও প্রশমন বিভাগ জানায়, গ্রীস্মমন্ডলীয় ঝড় দিয়ানমুর কারণে থাইল্যান্ডের ৩০টি প্রদেশ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এতে দেশটির মধ্যাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    চাও পিরায় নদীর পানি স্তর ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ জলোচ্ছাস রোধে নির্মিত বাঁধ থেকে একেবারে উজানের দিকে পানি ছেড়ে দিচ্ছে। নদীটি ব্যাংককের ভিতর দিয়ে এঁকেবেঁকে গেছে।

    ব্যাংককের প্রায় ৬০ কিলোমিটার উত্তরে পুরাতন রাজবংশীয় রাজধানী আয়ুথায়ার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষায় সৈন্যরা বিভিন্ন বাঁধ নিমার্ণ করেছে এবং ভাঙ্গনে বালির বস্তা ফেলেছে।

    এতে করে ব্যাংকক ২০১১ সালে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঘটা সর্বনাশা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এড়াতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাঁচ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারান।

    এন-কে

  • থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরল ৪৮ বাংলাদেশি-এক মরদেহ

    থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরল ৪৮ বাংলাদেশি-এক মরদেহ

    করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে ব্যাংককে চিকিৎসা নিতে যাওয়া এবং পর্যটক হিসেবে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে এনেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট।

    শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে ব্যাংককের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪৮ জন যাত্রী ও একজন বাংলাদেশির মরদেহ নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে উড়োজাহাজটি।

    করোনায় দুর্যোগকালীন বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে প্রথম কোনো স্পেশাল ফ্লাইট পরিচালনা করলো ইউএস-বাংলা কৃর্তপক্ষ।

    এছাড়া আগামী ২০ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ছয়টি ফ্লাইটে চেন্নাই থেকে ঢাকা এবং ২১ ও ২৩ এপ্রিল দু’টি ফ্লাইটে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফ্লাইটি পরিচালিত হবে। চেন্নাই থেকে দুপুর ১২: ১৫ মিনিটে এবং কলকাতা থেকে সকাল ১১: ৩০ মিনিটে ফ্লাইটগুলো ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।

    ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সই একমাত্র বাংলাদেশি এয়ারলাইন্স যা সপ্তাহে প্রতি শনিবার একটি ঢাকা-গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এছাড়া দুর্যোগকালীন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে প্যাসেঞ্জার ফ্লাইট পরিচালনা ছাড়াও কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

    বিশেষ ফ্লাইটগুলোতে শুধুমাত্র বাংলাদেশিরাই ভ্রমণ করতে পারবে।

    টিকেট রিজার্ভেশন সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য ১৩৬০৫ অথবা ০১৭৭৭৭৭৭৮০০-৮০৬ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।

  • কাসিকর্ন ব্যাংকে পাপিয়ার চার কোটি টাকার সন্ধান

    কাসিকর্ন ব্যাংকে পাপিয়ার চার কোটি টাকার সন্ধান

    যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া রাজধানীর একাধিক পাঁচতারকা হোটেলে রেখে নারীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করা ও বিত্তশালীদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে । এছাড়া অবৈধভাবে বিদেশে টাকা পাচার করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ওই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে তিনি বিদেশে নিয়ে যান। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের ‘কাসিকর্ন’ ব্যাংকের একটি শাখায় তার অন্তত ৪ কোটি টাকা রয়েছে।

    ২০১৭ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর তিনি ওই ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেন। ব্ল্যাক মেইলিং, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, তদবির, চাঁদাবাজির ভাগ নেয়াসহ অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ড করে ওই টাকা তিনি অর্জন করেন বলে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে স্বীকার করেছেন। তবে এ পর্যন্ত দেশের কোন ব্যাংকে রাখা তার বড় অংকের অর্থের কোন তথ্য মিলেনি জিজ্ঞাসাবাদে। টাকা পাচারে মতিঝিলের এক হুন্ডি ব্যবসায়ীর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া ওই টাকা উদ্ধারের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।

    তার বিরুদ্ধে যে মানি লন্ডারিং মামলা রয়েছে সেই মামলার আওতায় ওই টাকা পাচারের বিষয়টি তদন্ত চলছে। প্রত্যেক মাসে পাপিয়া তার দলবল নিয়ে প্রমোদ ভ্রমণে যেতেন ব্যাংককে। ব্যাংককের ‘পাকরেট’এলাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে থাকতেন। গত ২২শে ফেব্রুয়ারি রাতে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ও তার স্বামীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১। রাজধানীর দুই থানায় তার নামে ৩ টি মামলা হয়েছে। ওই তিন মামলায় আদালত তাদের ১৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন।

    মামলাটি বর্তমান তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর)। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, ‘পাপিয়া র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের ব্যাংকে টাকা পাচার করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। এটা তদন্ত সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছি।’

    তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, পাপিয়া থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ইউক্রেন, রাশিয়া, চায়না, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়াসহ অন্তত ১২ টি দেশে ঘুরতে গেছেন। তবে বেশি যাতায়াত করতেন ব্যাংককে। ব্যাংককে গেলে দুই সপ্তাহ ধরে থাকতেন। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের কাছাকাছি থাকা ‘পাকরেট’ এলাকায় চুক্তিভিত্তিক ভাড়া করা বাসায় তিনি থাকতেন। চুক্তিতে ১৫ দিন ওই ফ্ল্যাটে থাকতে হলে তাকে দেয়া লাগতো বাংলাদেশী টাকাই প্রায় আড়াই লাখ টাকা।

    সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার বাংলাদেশের ব্যাংকে কোন টাকা নেই বলে জানিয়েছেন। বিদেশের ব্যাংকে কোন টাকা নেই বলে তিনি দাবি করলেও এক পর্যায়ে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন,‘ তার থাইল্যান্ডের একটি ব্যাংকে টাকা রয়েছে। ওই টাকা তিনি দেশ থেকে পাচার করেছেন।

    সূত্র জানায়, পাপিয়া তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানান যে, তাকে প্রায় সময় থাইল্যান্ডে যেতে হতো। সেখানে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি সহজ করা ও তার অবৈধ অর্থের নিরাপত্তার বিষয়টির চিন্তা থেকেই তিনি ওই দেশের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন।

    হুন্ডির মাধ্যমে পাপিয়ার দেশ থেকে টাকা পাচারের বিষয়টি দেখভাল করতেন তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া সাব্বির খন্দকার। তিনি বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে স্বীকার করেছেন। পাপিয়া যতোবার থাইল্যান্ডে গেছেন তার সঙ্গি হয়েছিলেন সাব্বির খন্দকার।

    রাশিয়ান মডেলদের মাধ্যমে অর্থপাচার: এদিকে পাপিয়ার অর্থ পাচারের বিস্তর তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অবৈধভাবে কামানো টাকা থেকে পাপিয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে এমন তথ্য এখন সিআইডির বিশেষ তদন্ত ও গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তাদের হাতে। রাশিয়া ও থাই মডেলদের মাধ্যমে পাপিয়া বিদেশে বিপুল পরিমান অর্থ পাচার করেছেন। এর বাইরে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছেন পাপিয়া। প্রাথমিকভাবে তার সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে আরো ব্যাপক তথ্য প্রমান সংগ্রহের কাজ চলছে। আরো কিছু তথ্য প্রমান পেলেই শিগগির মানিলন্ডারিং আইনে সিআইডি বাদী হয়ে পাপিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করবে। সিআইডি ছাড়া পাপিয়ার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ ফিনানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। দুদক পাপিয়ার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়ে তদন্তে মাঠে নেমেছে। দুদকের পক্ষ থেকে তথ্য চেয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও হোটেল ওয়েস্টিনে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিএফআইইউ পাপিয়ার বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা, লেনদেন টাকা হস্তান্তর নিয়ে কাজ করছে।

    সিআইডি সূত্র জানিয়েছে, পাপিয়া গ্রেপ্তারের পরপরই অর্থ পাচারের বিষয়টি সামনে এসেছে। সতত্য যাচাই করতে সিআইডি খোঁজ-খবর নিতে শুরু করে। তারপর অর্থ পাচারের নানা তথ্য পাওয়া যায়। শুধু পাপিয়া নয় তার সঙ্গে আরো কয়েকজন জড়িত রয়েছেন। তাদের বিষয়েও খোঁজ নিচ্ছে সিআইডি। অনুসন্ধানে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনের দেশের বাইরে ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে। অনৈতিক কাজের জন্য বিভিন্ন সময় দেশের বাইরে থেকে মডেলদের নিয়ে আসতেন। পরে পাপিয়া বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের কাছে বিদেশী মডেল সরবরাহ করে বড় অংকের টাকা নিতো। আবার ওই মডেলদের মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছে। বিদেশী মডেলদের মাধ্যমে অর্থ পাচারের বিষয়টি যাচাই করার জন্য সিআইডি কর্মকর্তারা হোটেল ওয়েস্টিন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চেয়েছেন। এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পাপিয়ার ঘনিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিআইডি।

    সিআইডির বিশেষ তদন্ত ও গোয়েন্দা শাখার ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, গত সপ্তাহ থেকে আমরা পাপিয়ার অর্থপাচারের বিষয়টি তদন্ত করছি। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব নিকাষ সংগ্রহ করেছি। আরো কিছু তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে তার যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবো। তার পরেই সিআইডি বাদী হয়ে পাপিয়ার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করবে।

    কোন কোন দেশে অর্থ পাচার করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু কিছু দেশের তথ্য আমরা পেয়েছি। এখন তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখছি সঠিক কিনা। যদি সঠিক হয় তবে আমরা অ্যাকশনে যাবো। বিদেশী মডেলদের দিয়ে পাপিয়া অর্থ পাচার করেন এমন তথ্যের সত্যতা জানতে চাইলে সিআইডির অগ্রানাইজড ক্রাইমের এই ডিআইজি বলেন, বিষয়টি আমরাও শুনেছি। এখন নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। এছাড়া পাপিয়ার কাছের মানুষ ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তথ্য চেয়েছি।

    ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, পাপিয়ার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন অভিযোগ আমরা যাচাই করে দেখছি।

    প্রসঙ্গত, গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। বাকিরা হলেন, পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)। এরপর রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে ও নরসিংদীতে বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ তাদের নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থের খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব।

    অভিযানে ইন্দিরা রোডে পাপিয়ার বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র আইনে একটি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা করা হয়।।এরপর তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়।