Tag: দিনাজপুর

  • দিনাজপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪

    দিনাজপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪

    দিনাজপুরের বীরগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস ও ধানবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বাসের ড্রাইভার ও ট্রাকের ড্রাইভারসহ বাসের দুই যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে। এ সময় বাসের অনেক যাত্রী আহত হয়েছেন।

    শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বীরগঞ্জ উপজেলার ঠাকুরগাঁও দশ মাইল মহাসড়কের যদুর মোড় এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

    দশ মাইল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক ঘটনারা সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

    তিনি বলেন, আজ শুক্রবার আনুমানিক সকালে সাড়ে ৮টার দিকে বীরগঞ্জ উপজেলার যদুর মোড়ে ধানবোঝাই ট্রাক ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে বাস ও ট্রাকের চালক এবং দুইজন বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। এ সময় বাসের বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছেন। আমাদের উদ্ধারকাজ চলছে।

    নিহতদের নামপরিচয় পাওয়া যায়নি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলেও জানান ওসি ওমর ফারুক।

  • দিনাজপুরে বাসচাপায় নিহত ৪

    দিনাজপুরে বাসচাপায় নিহত ৪

    দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীবাহী একটি চার্জারভ্যানে বিআরটিসি বাসের চাপায় ৪ জন নিহত হয়েছেন।

    মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের রানীরবন্দর বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

    স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা রংপুরগামী বিআরটিসির দ্রুতগতির একটি বাস রানীরবন্দর বাজারে পৌঁছালে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীবাহী চার্জারভ্যানকে চাপা দেয়। এতে ভ্যানে থাকা ৪ জন যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত হন। এসময় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আরও একটি ভ্যান ওই বাসের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যায়।

    চিরিরবন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিআরটিসি বাসের চাপায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। পরে বিস্তারিত জানাব।

  • বিচারপতিকে নিয়ে কটূক্তি: দিনাজপুর পৌরসভার মেয়রকে জেল-জরিমানা

    বিচারপতিকে নিয়ে কটূক্তি: দিনাজপুর পৌরসভার মেয়রকে জেল-জরিমানা

    বিচারপতিকে নিয়ে কটূক্তি করার দায়ে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে ১ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও সাতদিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

    বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

    মেয়র যে ক্ষমা চেয়েছেন তা গ্রহণযোগ্য হয়নি আদালতে।

    রায়ে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে এক সপ্তাহের মধ্যে দিনাজপুরের আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। না হয় তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

    বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে একটি ইউটিউব চ্যানেলে জাহাঙ্গীর আলম অবমাননাকর মন্তব্য করেন। এর প্রেক্ষিতে চার আইনজীবী আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার আবেদন করলে গত ১৭ আগস্ট আদালত অবমাননার নোটিশ দিয়ে তাকে তলব করা হয়।

    একই সঙ্গে ভিডিও অপসারণ করতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

  • ফুলবাড়ীতে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৩

    ফুলবাড়ীতে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৩

    দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে যাত্রীবাহী বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন।

    রোববার (১১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টায় উপজেলার ফুলবাড়ী-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের এই দুর্ঘটনা ঘটে।

    নিহতেরা হলেন—চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার দুর্গাপুর গ্রামের জেন্টু আলীর ছেলে পিকআপচালক ওলিউল্লাহ (২২), একই উপজেলার মরারচর গ্রামের সেতাবুর রহমানের ছেলে হেলপার আজিজুর রহমান নিশান (২৪) এবং অপর নিহত ব্যক্তি পিকআপের যাত্রী ফুলবাড়ী উপজেলার আদর্শ কলেজপাড়া গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মোত্তাসিম বিল্লাহ (২৫)।

    ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা বলছে, রোববার ভোরে একটি ছোট পিকআপ টমেটো নিয়ে দিনাজপুর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাচ্ছিল। পথে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ফুলবাড়ী-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার ভিমলপুর মির্জা অটো মিলের সামনে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। কুয়াশার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলেই পিকআপের চালক তার সহকারী ও একজন যাত্রী নিহত হয়। পিকআপটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং যাত্রীবাহী বাসটি পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ফুলবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের একটি দল উদ্ধার কাজ চালিয়ে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে থানা–পুলিশ দুর্ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ থানায় নিয়ে যায়।

    ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশ্রাফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। নিহতের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

  • দিনাজপুরে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

    দিনাজপুরে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

    ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। ব্যাপক প্রচারণা থাকায় স্বতস্ফূর্তভাবে লোকজন এখানে ঈদের নামাজ আদায়ে দলে দলে সমবেত হন।

    মঙ্গলবার (৩ মে) সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত এ জামাতে প্রায় ছয় লাখ মুসল্লি অংশ নেয় বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন। জামাতে ইমামতি করেন দিনাজপুরের জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের ইমাম শামসুল হক কাসেমি।

    করোনাভাইরাসের কারণে গত ২ বছর এখানে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। এ বছর করোনার প্রভাব নিয়ন্ত্রণে থাকায় ঐতিহাসিক এ ময়দানে নামাজ আদায় করতে মুসল্লিদের ঢল নামে। ঐতিহাসিক এ ঈদের জামাতে অংশ নিতে সদর উপজেলা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশেপাশের জেলার মুসল্লিরা ছুটে আসেন।

    বৃহৎ এ ঈদ জামাতকে ঘিরে ঈদগাহ মাঠ জুড়ে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিসিটিভি ক্যামেরার পাশাপাশি ছিল কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি। মাঠের আশপাশে র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও ছিলেন তৎপর।

    নামাজে অংশ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, জেলা পরিষদের প্রশাসক আজিজুল ইমাম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেত-কর্মী ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

    প্রসঙ্গত, একসঙ্গে এত লোক নামাজ আদায় করার মতো ঈদগাহ মাঠ উপমহাদেশে আর একটিও নেই। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে। ঈদগাহটি তৈরি করা হয়েছে মোগল স্থাপত্যরীতির অনুসরণে। মেহরাবের উচ্চতা ৫৫ ফুট। ৫২ গম্বুজবিশিষ্ট এই ঈদগাহে রয়েছে দুটি মিনার, প্রতিটির উচ্চতা ৬০ ফুট। মাঝের গেট দুটি ৪৭ ফুট করে চওড়া। এতে খিলান আছে ৩২টি। জাতীয় সংসদের হুইপ ও দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিমের পরিকল্পনায় ঈদগাহটি নির্মাণ করা হয়েছে। ঈদগাহ মিনারের মূল অংশ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ৫২টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট।

    দেশের সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক গোড়-এ-শহীদ ময়দানের পশ্চিম দিকের প্রায় অর্ধেক জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঈদগাহ মিনারটি। দৃষ্টিনন্দন হিসেবে উপস্থাপন করতে প্রতিটি গম্বুজে আছে বৈদ্যুতিক সংযোগ। সন্ধ্যার পর থেকেই মিনারে আলো ঝলমল করে ওঠে। এছাড়া ৫১৬ ফিট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে।

    ঈদের নামাজের আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এনায়েতুর রহিম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।

    এ সময় হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, আয়তনের দিক দিয়ে এটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ। এর আয়তন প্রায় ২২ একর। এবার ঈদের নামাজে দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থায়নে এ মিনারটি নির্মিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এটিকে আরও সুন্দর করার পরিকল্পনা রয়েছে।

  • ইউএনও ওয়াহিদার বাবার কোমরের নিচের অংশ অবশ হয়ে গেছে

    ইউএনও ওয়াহিদার বাবার কোমরের নিচের অংশ অবশ হয়ে গেছে

    দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের বাবা ওমর আলী শেখের (৭০) কোমরের নিচের অংশ অবশ হয়ে গেছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, আস্তে আস্তে এই সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে।

    রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ওমর আলীর ডায়াবেটিস আছে। ঘটনার রাতে তিনি ঘাড়ে আঘাত পান। স্পাইনাল কর্ডে আঘাতটি গুরুতর ছিল। এ ক্ষেত্রে তার দুই হাত কিছুটা সচল থাকলেও কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত অবশ আছে। এটি সারতে কিছুটা সময় নেবে। এমনিতেই তার অবস্থা আগের থেকে দিন দিন উন্নতি হচ্ছে।
    হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে তিনি এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কোমরের নিচের অংশ কিছুটা অবশ হয়ে গেলেও তিনি কথা বলতে পারছেন।

    গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। তারা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমানে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • ঘোড়াঘাটের ইউএনও এবং তার বাবাকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা

    ঘোড়াঘাটের ইউএনও এবং তার বাবাকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা

    দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম সন্ত্রাসী হামলা শিকার হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) ভর্তি করা হয়েছে।
    তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

    বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে ঘোড়াঘাট ইউএনওর সরকারি ডাকবাংলোতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

    ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঠিক কি কারণে ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো জানা যায়নি।

    জানা গেছে, হামলার সময় ডাকবাংলোতে ইউএন ও তার বাবা অমর আলী অবস্থান করছিলেন।

    রাত ২টার দিকে দুর্বৃত্তরা বাসায় ঢুকে ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি জাতীয় কিছু দিয়ে ইউএনও এবং তার বাবার ওপর হামলা চালায়। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়েছে এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে।

    এ সময় ইউএনওর চিৎকারে সরকারি কর্মচারী ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইউএনও বর্তমানে ওই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। অবস্থার গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

    এদিকে, ইউএনওর ওপর হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলী সাদিক, জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম ও পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

    ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানমের স্বামী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ ইউএনও হিসেবে কর্মরত আছেন। ওয়াহিদা খানমের সঙ্গে তার বাবা ওমর আলী থাকতেন।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • দিনাজপুরে ‘অপকর্মের অভিযোগে’ যুব মহিলা লীগের ৩ নেত্রীকে বহিষ্কার

    দিনাজপুরে ‘অপকর্মের অভিযোগে’ যুব মহিলা লীগের ৩ নেত্রীকে বহিষ্কার

    দিনাজপুরে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের তিন নেত্রীকে অপকর্মের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে।

    রোববার দিনাজপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ছবি সিনহা ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদা বেগম মুক্তা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশক্রমে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ২২ (ক) উপধারা মোতাবেক তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হলো।

    বহিষ্কৃত ওই তিন নেত্রী হলেন- দিনাজপুর পৌর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবলী আক্তার পিংকি, বিরামপুর উপজেলা পৌর যুব মহিলা লীগের সভাপতি শারমিন আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে হাবিবা।

    এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ছবি সিনহা জানান, উল্লিখিত তিন নেত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগগুলো কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠানো হলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বলে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশক্রমেই ওই তিন নেত্রীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

    তবে এ ব্যাপারে সোমবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাবলী আক্তার পিংকি বলেন, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে গত ২০১৯ সালের ৮ অক্টোবর আমি রাজনীতি থেকে অব্যাহতি গ্রহণ করি। তার পর থেকে আমি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করিনি।

    কিন্তু গত ১৫ মার্চ যুব মহিলা লীগ দিনাজপুর শাখার সভাপতি ছবি সিনহা ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদা বেগম মুক্তা স্বাক্ষরিত একটি অব্যাহতিপত্র পাই। পরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ দেখতে পাই। অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ না থাকলেও সংবাদমাধ্যমে যুব মহিলা লীগ দিনাজপুর শাখার সভাপতি ছবি সিনহার দেয়া বক্তব্যে বলা হয়েছে- বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

    সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যেহেতু আমি আগেই পদত্যাগ করেছি, সেহেতু আমাকে বহিষ্কারের কোনো সুযোগ নেই। তার পরও তাদের বহিষ্কারের চিঠি নিয়ে বলতে চাই, তা হলো যে, আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে নিয়মবহির্ভূত ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।

    তিনি বলেন, কাউকে বহিষ্কারের আগে কারণ দর্শানো নোটিশ করার কথা। কিন্তু আমাকে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়নি। এমনকি আমি যে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছি, তা বারবার জানতে চাওয়ার পরও তা গ্রহণ বা বাতিল করা হয়েছিল কিনা, তাও জানানো হয়নি। উপরন্ত সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে– আমাকে অপকর্মের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে, যা আমার সফলতা, অর্জন ও পারিবারিক জীবনে প্রভাব ফেলেছে। তিনি এ ঘটনার জন্য সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক তদন্ত দাবি করেন।

  • সেই ‘রাজকুমারের’ পাশে পুলিশ সুপার

    সেই ‘রাজকুমারের’ পাশে পুলিশ সুপার

    দিনাজপুরের বিরামপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থী অসহায় রাজকুমারকে একটি পাকা দোকান ঘর ও নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেছেন পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন।

    শনিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে পৌর শহরের ঘাটপাড়ে তার হাতে অনুদানের টাকা তুলে দেন তিনি।

    উল্লেখ্য বিরামপুর পৌর শহরের ঘাটপাড় মহল্লার রাজ কুমার শীল ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০ তম ব্যাচের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ছাত্র থাকা অবস্থায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় ডাক্তারী পড়া শেষ করতে পারেননি।

    বর্তমানে তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ সংক্রান্ত সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে পড়লে জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন পরিবারটিকে সহায়তার হাত বাড়ান।

    তারই প্রেক্ষিতে রাজকুমার শীলের বসত বাড়ীর সাথে একটি পাকা দোকান ঘর এবং দোকানের মালামাল ক্রয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে এমন সহায়তা পেয়ে পরিবারের লোকজন আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন রাজকুমার।

    এসময় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজেম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) হাফিজুর রহমান, বিরামপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিথুন সরকার, বিরামপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান, স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও সুধীজন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • চিরিরবন্দরে ট্রাকচাপায় ২ যুবলীগকর্মী নিহত

    চিরিরবন্দরে ট্রাকচাপায় ২ যুবলীগকর্মী নিহত

    দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় বালুবাহী ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবলীগকর্মী নিহত হয়েছেন।

    মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চিরিরবন্দর উপজেলার খেরকাটী নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

    নিহতরা হলেন- চিরিরবন্দর উপজেলার জয়পুর গ্রামের ওসমান গণির ছেলে আশিকুর রহমান (৩৫) ও একই উপজেলার খেরকাটি গ্রামের দেবেশ চন্দ্র রায় (৩০)। তারা দুজনেই যুবলীগকর্মী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

    চিরিরবন্দর থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার জানান, রাত ১০টার দিকে চিরিরবন্দর উপজেলার খেরকাটি গ্রামের কাঁকড়া নদী থেকে একটি বালুবাহী ট্রাক মোহনপুর ব্রিজের দিকে যাচ্ছিল। পথে ওই এলাকায় ট্রাকটি বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলে চাপা দেয়। এতে দুজন গুরুতর আহত হন।

    তাদের উদ্ধার করে চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। নিহতরা যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয়রা পুলিশকে নিশ্চিত করেন।

  • এবার দিনাজপুরের ডিসির বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ (ভিডিও)

    এবার দিনাজপুরের ডিসির বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ (ভিডিও)

    জামালপুরের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) পর এবার নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলমের বিরুদ্ধে।

    ভিডিওবার্তায় এক নারী দাবি করেছেন, পরিচয় হওয়ার পর ডিসি মাহমুদুল আলম নানা প্রলোভনে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সেই ফাঁদে পা দিয়ে সংসার ভেঙেছে তার। ঘটনা প্রকাশ করলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওই নারীর। ভিডিওটি এরইমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

    ভাইরাল ভিডিওতে ওই নারী দাবি করেন, জামালপুরের ডিসির নারী কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক। ঘটনা প্রকাশ করলে হত্যার হুমকিও দেয়া হয় তাকে। এই তথ্যপ্রযুক্তি আর ডিজিটাল যুগে ডিসি এবং তার ফোন যাচাই করলে সব বেরিয়ে পড়বে বলেও ভিডিও বার্তায় দাবি করেন ওই নারী। এক পর্যায়ে তাকে বাঁচাতে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির দৃষ্টি কামনা করে কেঁদেও ফেলেন তিনি।

    তবে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম বলছেন, এঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করেছেন। তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

    জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ওই নারীর ভিডিওবার্তাটি ফেসবুকে ভাইরাল হয় মাস দেড়েক আগে। এর কয়েকদিন পর আরেকটি ভিডিওবার্তা ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেখানে তিনি জেলা প্রশাসককে নির্দোষ দাবি করেন। স্বামী সেলিমের চাপের মুখে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ওই ভিডিওবার্তা ফেসবুকে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন। তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে খবর এলে বুধবার বিকালে ওই নারীর আরও একটি ভিডিওবার্তা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি এঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান জিয়াকে দায়ী করেছেন। বলেছেন, তাকে চাপে ফেলে ডিসির বিরুদ্ধে ওই ভিডিওবার্তা ফেসবুকে তিনি ছেড়েছিলেন।

    দিনাজপুর শহরে ওই নারীর বাড়ি। তার বাবা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি দিনাজপুরের দক্ষিণ কোতয়ালীস্থ একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা। তার তিনটি সন্তানও রয়েছে। তার সাথে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে, তার মা সংবাদ প্রকাশের আগে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করলেও এখন আর এবিষয়ে কথা বলছে চাইছেন না।

    সচেতন মহল বলছে, ডিসির বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির ভিডিওবার্তা যদি মিথ্যা হয়, তবে কেন ওই নারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিলেন না তিনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে তারা।

    এর আগে গত আগস্ট মাসে জামালপুরের ডিসির একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারী কর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। ওই ঘটনায় জামালপুরসহ সারাদেশের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে আহমেদ কবীরকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

  • ‘আমাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যদায় দাফন করা না হয়’

    ‘আমাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যদায় দাফন করা না হয়’

    এসিল্যান্ড, ইউএনও, এডিসি, ডিসি ছেলেকে চাকরিচ্যুৎ ও বাস্তুচ্যুৎ করে পেটে লাথি মেরেছে। তাই মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা হিসেবে তাদের সালাম/ স্যালুট শেষ যাত্রার কফিনে চাননি দিনাজপুর সদর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন।

    মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসমাইল হোসেনের মুক্তিবার্তা নং ০৩০৮০১১০০২, ভাতা বই নং -৮১৯।

    পুত্রের চাকরিচ্যুতির ঘটনার ক্ষোভ জানিয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের কাছে লেখা চিঠির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যান।

    গত ২২ অক্টোবর জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির বরাবরে তিনি চিঠিটি লেখেন। যেখানে তার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন না করার কথা বলেন।

    হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিঠি লেখার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন ৮০ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসমাইল হোসেন। তার এই চিঠিতে লিখে যাওয়া ওসিয়ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা (গার্ড অফ অনার) ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

    ফলে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের শেষ বিদায়ের সময় সেখানে বিগউলে বাজেনি বিদায়ের সুর। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসমাইল হোসেনের মরদেহ জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত করা হয়নি।

    সদর উপজেলার ৬ নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের যোগীবাড়ী গ্রামের মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসমাইল হোসেন পিতৃস্নেহে চিঠিতে যা লিখে গেছেন তার মূল কথা হচ্ছে, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির সুপারিশে ছেলে নুর ইসলামের নো ওয়ার্ক নো পে ভিক্তিতে গাড়ি চালক হিসাবে চাকরি হয়। সেই সুবাদে নুর ইসলাম সদর এসি ল্যান্ডের গাড়ি চালাতেন। কর্মস্থলে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

    এ সময় তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে সেখানে উপস্থিত এডিসি রাজস্বকে বিষয়টি দেখতে বলেন। হুইপকে বিষয়টি আবগত করায় প্রশাসন থেকে প্রথমে নুর ইসলামকে তার বসবাসরত খাস পরিত্যক্ত বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেয়া হয়। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এসি ল্যান্ড সদরের মিসেস নুর ইসলামকে বাথরুম পরিষ্কার ও মাংস রান্না করতে বলেন। মাংস রান্না ঠিক না হওয়াসহ বিভিন্ন অজুহাতে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে চাকরিচ্যুত করা হয়।

    পরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকারিয়াকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করতে গেলে জেলা প্রশাসকও ক্ষিপ্ত হয়ে যান।

    এ ছাড়াও নুর ইসলাম তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে মাফ চাওয়ার জন্য এসি ল্যান্ডের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও দেখা করতে পারেনি।

    চাকরি চলে যাওয়ায় তারা উপায় না পেয়ে হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু প্রশাসন সেটি চরম নেগেটিভ ভাবে নেয়।

    বর্তমানে তার ছেলেটি চাকরিচ্যুত ও বাস্তচ্যুত হয়ে পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

    তিনি আরো লিখেছেন, জীবন বাজি রেখে অস্ত্র হাতে নিয়ে করা স্বাধীন দেশে আমার ছেলের রুজি রোজগারটুকুও অন্যায়ভাবে কেড়ে নেয়া হল।

    গত ২১.১০.২০১৯ তারিখ থেকে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল দিনাজপুরের কার্ডিওলজি বিভাগে, ওয়ার্ড নং -২, বেড নং -৪৪ এ ভর্তি অবস্থায় আছি , এই পত্রটি তোমার কাছে লিখছি। তোমার কাছে আমার আকুল আবেদন তুমি ন্যায় বিচার কর। ঠুনকো অজুহাতে আমার ছেলেটিকে চাকরিচ্যুত করায় তাকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা কর। আমার বয়স প্রায় ৮০ বৎসরের কাছাকাছি। ছেলেটি হটাৎ করে চাকরিচ্যুত হওয়ায় একে তো আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থ তারপর মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছি।

    জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হঠাৎ যদি আমার মৃত্যু হয়, আমাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন না করা হয়। কারণ এসিল্যান্ড, ইউএনও, এডিসি, ডিসি যারা আমার ছেলেকে চাকুরিচ্যুত, বাস্তুচ্যত করে পেটে লাথি মেরেছে, তাদের সালাম/ স্যালুট আমার শেষ যাত্রার কফিনে আমি চাই না।

    পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২২ অক্টোবর চিঠিটিতে তিনি স্বাক্ষর করে ডাক যোগে ঢাকায় জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের বরাবরে প্রেরণ করেন। পরের দিন ২৩ অক্টোবর সকাল ১১টার সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবস্থায় মারা যান।

    বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর সকাল ১১টায় সদর উপজেলার ৬ নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের যোগীবাড়ী গ্রামে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসমাইল হোসেনের জানাযা নামাজ শুরুর পূর্ব মুহূর্তে ম্যাজিস্ট্রেট মহসীন উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসনের একটি চৌকশদল গার্ড অব অনার প্রদান করার জন্য যান।

    এ সময় স্ত্রী ছেলে মেয়েরা তাদের পিতার জীবণ মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লিখে যাওয়া চিঠি অনুযায়ী তারা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন বা গার্ড অব অনার প্রদান করতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তাদের ভাষায় এটাই হবে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে মরহুম ইসমাইল হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং আমলাতান্ত্রিক প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।

    জানাজার আগে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসমাইল হোসেনের পরিবার পরিজনের পক্ষে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল উপস্থিত সকলে উদ্দেশে বলেন, অন্যায়ভাবে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসমাইল হোসেনের ছেলেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি এই চিঠি লিখে গেছেন। আমরা তার লিখে যাওয়া চিঠির ওসিয়ত অনুয়ায়ী দাফন করতে চাই। চিকিৎসার জন্য তিনি অনেকের কাছে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন।

    গার্ড অব অনার প্রদান করতে যাওয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে ছেলেরা বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় জেলা প্রশাসক বেতন পান। তিনি জেলার পিতা। তার সঙ্গে একজন মুক্তিযোদ্ধা দেখা করতে গিয়ে দেখা পান না। এর চেয়ে লজ্জার কি হতে পারে। এই কারণেই তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাখান করেছেন।

    এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ মাহমুদুল আলম বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রশাসন থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করতে যাওয়ার পর বিষয়টি অবগত হই।

    তিনি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করতে না দেয়ায় তা প্রদান করা সম্ভব হয়নি।