Tag: দিল্লি

  • শীতের কারণে দিল্লিতে স্কুল বন্ধ ঘোষণা

    শীতের কারণে দিল্লিতে স্কুল বন্ধ ঘোষণা

    শীতের কারণে দিল্লির দিল্লির সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।

    দিল্লির বেসরকারি স্কুলগুলোয় রোববার শেষ হয়েছে শীতের ছুটি। আগামীকাল সোমবার থেকে স্কুলগুলো খোলার কথা ছিল। এরই মধ্যে রোববার দিল্লির শিক্ষা অধিদপ্তরের এক সার্কুলারে বলা হয়, ‘দিল্লিতে চলমান শৈত্যপ্রবাহের কারণে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সব বেসরকারি স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো।’ খবর এনডিটিভির

    কয়েক দিন ধরেই দিল্লিসহ এর আশপাশের এলাকার তাপমাত্রা কমছিল। তবে রোববার শীতের প্রকোপ ছিল সবচেয়ে বেশি। সকালে সফদারজং আবহাওয়া কেন্দ্রে দিল্লির তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ১০ বছরে এটা দিল্লির দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে ২০২১ সালের রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

     

  • দিল্লিতে রেলের ৫০০ বগিতে হচ্ছে করোনা ওয়ার্ড

    দিল্লিতে রেলের ৫০০ বগিতে হচ্ছে করোনা ওয়ার্ড

    ভারতের রাজধানী দিল্লিতে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রেলের ৫০০ বগিকে করোনা ওয়ার্ডে রুপান্তর করা হচ্ছে।

    সম্প্রতি শহরটিতে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

    রোববার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য তারা দিল্লি কর্তৃপক্ষকে রেলে ৫০০ কোচ দিতে যাচ্ছেন। এই কোচগুলোতে রোগীদের জন্য বিছানাসহ হাসপাতালের বিভিন্ন সরঞ্জাম থাকবে। এর ফলে দিল্লি কর্তৃপক্ষ করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় আট হাজার বিছানা পাচ্ছে।

    ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক ঘোষণায় দিল্লির জন্য বেশ কয়েকটি জরুরি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে, করোনার দ্রুত ও ব্যাপক পরীক্ষাও। এছাড়া, তিনি করোনা সংকট মোকাবেলা নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

    বিশ্বে করোনা সংক্রমণের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে ৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার প্রায় ১২ হাজার মানুষের করোনা শনাক্তের তথ্য জানানো হয়েছে। দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তের রেকর্ড এটি।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • ভারতের রাজধানীর নর্দমায় মিলল পচা গলা ১১ মরদেহ

    ভারতের রাজধানীর নর্দমায় মিলল পচা গলা ১১ মরদেহ

    উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবের পর থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লির নর্দমায় মিলছে লাশ। মঙ্গলবার পর্যন্ত গত পাঁচ দিনে ১১টি পচা গলা লাশ ভেসে উঠেছে।

    সব মিলিয়ে কয়েক দিনের ওই সহিংসতায় অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে ৩০০ জন।

    হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, প্রতিদিনই হাসপাতালে স্বজনদের খোঁজে মানুষের ভিড় বাড়ছে। অনেকেই সারা দিন বসে থেকে দিন শেষে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে।

    বিতর্কিত সিএএকে কেন্দ্র করে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লির উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সামনেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ মুসলিমদের অসংখ্য বাড়িঘর ও দোকানপাট বেছে বেছে আগুন ধরিয়ে দেয় উগ্রপন্থীরা।

    টানা তিন দিন ধরে চলে এ হামলা, অগ্নিকাণ্ড। ২৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লির নর্দমায় প্রথম গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা অঙ্কিত শর্মার লাশ ভেসে উঠেছিল। তাকে সহিংসতার মধ্যে উন্মত্ত জনতা পিটিয়ে হত্যা করেছিল বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

    সর্বশেষ রোববার ও সোমবার নর্দমাতে পাওয়া গেছে পাঁচটি অজ্ঞাত মৃতদেহ। মরদেহগুলোর বেশির ভাগই পচে গেছে। ফলে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ডিএনএ পরীক্ষা করে এসব মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হবে।

    তবে ভেসে ওঠা মৃতদেহগুলোর সবই দিল্লির সহিংসতায় নিহত কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছে পুলিশ।

    দিল্লিতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক চিত্র প্রশাসনের তৈরি করা একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্টে উঠে এসেছে।

    উত্তর-পূর্ব জেলার তৈরি ওই রিপোর্টে বলা হয়, এখন পর্যন্ত সহিংসতার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ১২২টি বাড়ি, ৩২২টি দোকান এবং ৩০১টি গাড়ি।

    সোমবার প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানান, চূড়ান্ত রিপোর্টে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জানা যায়, সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনে তৈরি ১৮টি দলের পেশ করা তথ্যের ভিত্তিতেই ওই অন্তর্বর্তী রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

    দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নির্দেশে এই দলগুলো উত্তর-পূর্ব দিল্লির সহিংসতা বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে ‘ড্যামেজ অ্যাসেসমেন্ট সার্ভে’ চালিয়েছে।

    দাঙ্গার পর থেকে এখনও প্রায় ৭ শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের খোঁজে হাসপাতালে ছুটছেন স্বজনেরা। মর্গে নতুন কোনো লাশ এলে সেখানে দৌড়াচ্ছেন।

    গুরু তেজ বাহাদুর (জিটিবি) হাসপাতালে আসা সোনিয়া বিহারের বাসিন্দা পঙ্কজ বলেন, ‘আমার মা পুনম সিং এবং ভাগ্নে শাগুন ২৭ ফেব্রুয়ারি এ হাসপাতালে আসেন চিকিৎসার জন্য। তারপর থেকে তাদের খোঁজ মিলছে না। লোক নায়ক হাসপাতাল, জগপ্রদেশ চন্দ্র হাসপাতালেও খোঁজ নিয়েছি, পাইনি। আমার মায়ের ফোনও বন্ধ পাচ্ছি।’

  • ‘আমাদের মসজিদ জ্বলেছে, বাঁচাব শিবমন্দির’

    ‘আমাদের মসজিদ জ্বলেছে, বাঁচাব শিবমন্দির’

    দিল্লি সংঘর্ষে হাহাকারের মধ্যেই সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল ছবি উঠে এল পুরনো মুস্তাফাবাদের বাবুনগরে। মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে শিব মন্দির রক্ষায় ত্রাতা হয়ে উঠলেন মুসলিমরাই।

    আশেপাশের অঞ্চলে গোষ্ঠী সংঘর্ষ ভয়ঙ্কর রূপ নিলেও এই অঞ্চলের বাসিন্দারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুখে দিয়েছেন সংঘর্ষ। তুলে ধরেছেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত দেশবন্ধু কলেজের পড়ুয়া মহম্মদ হাসিন এমনই এক জন। বছর চব্বিশের এই পড়ুয়ার কথায়, ‘‘পরিস্থিতি যেমনই হোক, আমরা চেয়েছিলাম সব সময়েই ঐক্যবদ্ধ থাকতে। যাতে হিংস্র জনতার মোকাবিলা করা যায়।’’ যে কোনও মূল্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সৌভ্রাত্র অটুট রাখাই ছিল তাঁদের সংকল্প। সে জন্যে মন্দির বাঁচাতে ওই কয়েকটা দিন পালা করে নজরদারি করেছেন তাঁরা। হাসিনের কথায়, ‘‘দুই ধর্মের মানুষই ছোট ছোট দল তৈরি করে সতর্ক থেকেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাতে তুলে নিয়েছিলাম লাঠি।’’

    মন্দির থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকেন কামরুদ্দিন। স্থানীয় চায়ের দোকানে খাবার সরবরাহ করে পেট চলে তাঁর। এ হেন কামরুদ্দিনের গলাতেও সম্প্রীতির সুর। ‘‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা একসঙ্গে রয়েছি। কখনও সংঘর্ষের কথা ভাবতেই পারিনি। এই কঠিন সময়ে মানবতা রক্ষা করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মসজিদ জ্বলে গিয়েছে জানি, কিন্তু মন্দিরে কোনও আঁচ লাগতে দেব না।’’

    গত ৩০-৩৫ বছর ধরে মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক রীনা (৫২)। দৈনন্দিন পুজোর সমস্ত দায়িত্বই তাঁর। এই বিপদের সময়ে তিনিও ধর্ম বিচার না করে আস্থা রেখেছেন ভিন্ ধর্মের ভাইদের উপরেই। তুলে দিয়েছেন মন্দিরের চাবি। ‘‘ওরা তো নিজেদেরই লোক। গত কয়েক দিন মন্দিরে যেতে পারিনি। কিন্তু আমি নিশ্চিত ছিলাম, ওরা থাকতে মন্দিরের কোনও ক্ষতি হবে না। এত দিন একসঙ্গে রয়েছি। পরিস্থিতি খারাপ বলে কি সব বদলে যাবে? আমরা পৃথক ভাবে ধর্মাচরণ করলেও ঈশ্বর তো একই,’’ বলেন রীনা। তাই মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলেও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নন ৫২ বছরের এই মহিলা।

    উল্লেখ্য,নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) সমর্থক-বিরোধীদের মধ্যে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এ ঘটনায় অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত ১৪৮টি অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশের কাছে এবং আটক হয়েছে ৬৩০ জন।

  • দিল্লিতে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ওআইসি

    দিল্লিতে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ওআইসি

    বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের জেরে বেশ কয়েকদিন ধরে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত। দেশটির রাজধানী দিল্লিতে গত কয়েকদিন ধরেই সহিংসতা চলছে। যেখানে উগ্র হিন্দুরা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন। এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।

    বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওআইসি বলেছে, ভারতে মুসলিমদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। এই ঘৃণ্য হামলায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি আমরা আন্তরিক শোক প্রকাশ করছি। ভারত সরকারের উচিত হত্যা ও হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া।

    এছাড়া ভারতে বসবাসকারী সব মুসলমান নাগরিক ও ধর্মীয় পবিত্র স্থানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওআইসি।

    তবে ওআইসির এই বিবৃতিকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভিশ কুমার বলেছেন, দিল্লিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের কাছে অনুরোধ, তারা যেন দিল্লিতে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য না দেন।

    এ দিকে গত কয়েকদিনের সহিংসতায় ভারতে এখন পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক মানুষ।

  • দিল্লিতে নিহত বেড়ে ৩৫; জাতিসংঘের ক্ষোভ

    দিল্লিতে নিহত বেড়ে ৩৫; জাতিসংঘের ক্ষোভ

    ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গত রোববার থেকে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে শুুুরু হওয়া সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

    এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিল্লি যে ব্যর্থ সে কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দিল্লিতে এতো মানুষের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।

    খবরে প্রকাশ, সিএএ সমর্থনকারী ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এদিকে বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় প্রাণ গেল আরও সাতজনের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এর ফলে দিল্লিতে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আড়াইশ’র বেশি মানুষ। ৭০ জনের শরীরে গুলির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

    দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অশান্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন বলে জানানো হয়েছে। বুধবার রাতের পর থেকে আর নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

    ইতোমধ্যে আহত ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। নিহতদের দুই লাখ টাকা সরকারি ক্ষতিপূরণ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

    দিল্লির যে এলাকাগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে সেসব এলাকার বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সচেষ্ট হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

    বাইরে থেকে কেউ যেন দিল্লিতে প্রবেশ করে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন কেজরিওয়াল। পাশাপাশি বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

  • উহান থেকে দিল্লিতে ২৩ বাংলাদেশি

    উহান থেকে দিল্লিতে ২৩ বাংলাদেশি

    প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে চীনের উহানে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৩ জন ভারতে পৌঁছেছেন। ফ্লাইট জটিলতার কারণে এসব শিক্ষার্থীকে সরাসরি দেশে আনা যায়নি। তাই ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ সরকার।

    পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।

    তিনি জানান, আজ তারা উহান থেকে ভারতের দিল্লীতে পৌঁছেছেন। করোনাভাইরাস সংক্রামক হওয়া এবং তাতে আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ দেখা দিতে ১৪ দিন প্রয়োজন হয়। তাই দিল্লি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে তারা সবাই ২ সপ্তাহ ‘কোয়ারেন্টাইনে’ থাকবে। এরপর তারা বাংলাদেশে আসবে।

    এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে আটকে পড়া ৩১২ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

    করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যাওয়ার পর চীনে বসবাসরত মানুষের মাঝে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় উহান শহরটিকে অবরুদ্ধ করে দেয় চীন।

    পরিপ্রেক্ষিতে, চীনের হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী সেখানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়লে চীনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তারা দেশে ফেরার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

    বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ‘রেসকিউ ফেরি ফ্লাইট বিজি-৭০০২’ ২ ফেব্রুয়ারি ৩১২ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনে। এরপর আটকে পড়া বাকীদের আনতে ফ্লাইট মেলানো যাচ্ছিলো না। পরে ভারতের সাথে আলাপ করে কিছু বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে আনা হয়।

  • দিল্লিতে মসজিদে আগুন,মিনারে হনুমানের পতাকা,ভস্মীভূত কোরআন

    দিল্লিতে মসজিদে আগুন,মিনারে হনুমানের পতাকা,ভস্মীভূত কোরআন

    ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভে হামলার প্রেক্ষাপটে দুটি মসজিদে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা কোরআনের বিভিন্ন পাতা মাটিতে পুঁতে রাখতে দেখা গেছে লোকজনকে।

    ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এবং ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকালে ৫০০ জনের মতো একদল হিন্দু আশক নগর এলাকায় একটি মসজিদের দরজা ভেঙে ফেলে ভেতরে ঢোকে। এরপর সেটির মিনারে উঠে হিন্দুত্ববাদী পতাকা টানিয়ে দেয়। তারা মসজিদটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

    পরবর্তী সন্ধ্যায় আরেকটি ছোট মসজিদ ও মুসলমানদের দোকানে আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়া হয়েছে।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মুসলমান বলেন, তারা তিন ঘণ্টা ধরে মসজিদটিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এরপর হিন্দুত্ববাদী স্লোগান দিতে দিতে চলে যায়।

    গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, বিকালে এসে মসজিদের ভেতরে যা ছিল সব পুড়িয়ে ফেলেছে। এরপর লুটপাট চালিয়েছে। মসজিদ লাগোয়া দোকানেও তারা আগুন দেয়। এরপর পাশের দুটি মুসলমানদের বাড়িতে চড়াও হয়।

    ওই ব্যক্তি বলেন, কি বলবো, তাও আমি জানি না। গত ৩৫ বছরে এমন দৃশ্য আমি কখনো দেখিনি। হিন্দু-মুসলমান এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করছিলেন। ঈদুল আজহা ও দেউয়ালি আমরা একসঙ্গে উদযাপন করেছি।

    হিন্দু নারীরা সন্তানদের নিয়ে আমাদের মসজিদেও আসতেন বলে তিনি জানান। ওই ভারতীয় বলেন, এটা কেবল মুসলমানদের জন্যই না, পুরো সম্প্রদায়ের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের সেই শান্তি আজ নাই হয়ে গেছে।

    বুধবার সকালেও মুসলমানদের বাড়ি-সম্পত্তিতে হামলা অব্যাহত রয়েছে। তবে কোথাও কোথাও মুসলমানদের বাড়িঘর-মসজিদ সুরক্ষায় স্থানীয় হিন্দুদের টহল দিতেও দেখা গেছে।

    উত্তরপূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, বাবরপুর, ব্রাহামপুর, গোরাখপার্ক, মৌজপুর, ভাজানপুরা, কবিরনগর, চান্দবাগ, গোকুলপুরি, কারওয়াল নগর, কাজুরিখাস ও কারদুমপুরেও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে।

    কোনো কোনো আক্রান্ত এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর ভারী উপস্থিতি দেখা গেছে। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতা কপিল মিশ্র একদল হিন্দুকে উসকে দিলে এই সহিংসতার সৃষ্টি হয়।

  • জ্বলছে দিল্লি:দেখামাত্র গুলির নির্দেশ,নিহত ১৮

    জ্বলছে দিল্লি:দেখামাত্র গুলির নির্দেশ,নিহত ১৮

    ভারতের রাজধানী দিল্লিতে টানা তিন দিন ধরে চলছে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। ফলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকা।

    অভিযোগ, একদল মানুষ লাঠি, রড নিয়ে মুসলিমদের উপর সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে। পুড়িয়ে দিচ্ছে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকান। বহু জায়গাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে কারফিউ। ইতিমধ্যেই সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮। আহত হয়েছে ২৫০-এর বেশি মানুষ।

    মঙ্গলবার ৬৭ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনীকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিয়োগ করা হয়েছে।সেনাবাহিনীকেও তৈরি রাখা হয়েছে।

    বুধবার সকালের দিল্লি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হয়েছিলেন জামিয়া ও জেএনইউয়ের ছাত্ররা। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান প্রয়োগ করেছে বলে জানা গেছে।

    পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শনে মঙ্গলবার মধ্যরাতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়েছিলেন।

    উত্তর-পূর্ব দিল্লির পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকও করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন তিনি। সূত্রের খবর, পুলিশকে হিংসা দমনে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। দিল্লির হিংসা নিয়ে খবর সম্প্রচারের উপরে সংবাদমাধ্যমগুলিকে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

    বলা হয়েছে, এমন কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না, যা হিংসায় মদত জোগাতে পারে। এদিকে, পুলিশ দাবি করেছে, হিংসায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০ জনকে আটক করেছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ঢোকার ৩টি পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

    দিল্লি পুলিশের স্পেশাল কমিশনার জানিয়েছেন, জাফরাবাদ ও মৌজপুর চক থেকে বিক্ষোভকারীদের তুলে দেয়া হয়েছে। রবিবার থেকে জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের সামনে মহিলারা নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে অবস্থান শুরু করার পর থেকেই নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ নিয়ে একদল আক্রমণ শুরু করে।

    এরপর থেকেই শহরের ভজনপুরা ও মৌজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করেছে। তবে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে একদল যুবক বেপরোয়াভাবে আগুন লাগানো থেকে শুরু করে আন্দোলনকারীদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন।

    সেখানেই আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লি পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন।

    মঙ্গলবার রাতে নজিরবিহীনভাবে দিল্লি হাইকোর্ট দিল্লি পুলিশকে এক নির্দেশে উপদ্রুত এলাকা থেকে আহতদের নিরাপদে হাসপাতালে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতে বলেছেন। জানা গেছে, আজ সুপ্রিম কোর্টেও দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে শুনানি হবে।