Tag: দিশেহারা

  • নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ

    নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ

    মানুষের মেীলিক অধিকার গুলোর মধ্যে অন্ন বস্ত্র,বাসস্হান,শিক্ষা, চিকিৎসা এগুলো অন্যতম। বেঁচে থাকতে গেলে এই অপরিহার্য বিষয় গুলোকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া কখনো সম্ভব নয়। আর বেঁচে থাকা ও জীবনযাত্রার সাথে দ্রব্যমূল্যের সম্পর্ক অতি নিবিড় ও বাস্তব।

    একটি পরিবার ও একটি সমাজ কিভাবে তাদের দৈনন্দিন জীবন চালাবে তা নির্ভর করে তাদের আয়, চাহিদা ও দ্রব্যমূল্যের ওপর। পণ্যের মূল্য যখন সহনীয় ও সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে তখন তাদের জীবন কাটে স্বস্তিতে।

    অন্য দিকে পণ্যের মূল্য যখন মানুষের আর্থিক সঙ্গতির সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে যায় তখন তাদের জীবনে নেমে আসে হতাশা ও অশান্তি। অস্বীকার করার জো নাই বর্তমান সময়ে দেশে সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি বিপদে আছেন।

    লজ্জায় তারা না পারছেন কাউকে বলতে, না পারছেন হাত পাততে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জীবন ধারনের অনুষঙ্গ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম।

    শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মূল্য নয়, সর্বস্তরে যেমন : বাস, ট্রেন, বিমান ও লঞ্চ ভাড়া, রিকশা ভাড়া, গ্যাস, বিদ্যুৎ পানিসহ সব পরিষেবার দামও কয়েক গুণ বেড়েছে। যা ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।

    এই পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের বাড়তি চাপ ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাইতো মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।ঘটনা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, যেন দেখার কেউ নাই।

    বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাপনা মোটেই সংগঠিত নয়। করোনার নিদারুণ কষাঘাতে সাগরের ঢেউয়ের মতো ক্ষুধার জ্বালা আছড়ে পড়ছে। করোনার প্রভাবে কাজের ক্ষেত্র সীমিত হওয়ায় আয়ের পরিমাণ কমে গেছে, অনেকে কর্মহীন।

    এ অবস্থায় নিয়ন্ত্রণহীন মাত্রাতিরিক্ত পণ্যমূল্য মানুষকে দারুণভাবে হতাশ করেছে। নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তের কাছে এখন বাজারে যাওয়া মানেই আতঙ্ক আর অস্থিরতা।

    দরিদ্র ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য এমনিতে ত্রাণ কার্যক্রমের দরকার এর মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি চরম অমানবিক ও ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন।

    কালোবাজারী, মুনাফাখোর, মজুতদার প্রভৃতির কারণে খাদ্যদ্রব্য, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মরিচ, চিনি, দুধ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য দ্রব্যগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিদিন এবং ক্রমে এসব পণ্য সংগ্রহ কঠিনতর হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য।

    নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারের এ দুর্বিসহ অবস্থা দু’একদিনে সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানোর যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তা থেকে দেশের সব পর্যায়ের ভোক্তা-ক্রেতা শ্রেণির যেন পরিত্রাণ নেই।

    আয়ের তুলনায় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উলস্নম্ফন ঘটায় মধ্য ও নিম্নআয়ের মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।কেননা নিত্যপণ্যের মূল্য হরদম বেড়েই চলেছে।

    অস্বীকার করার উপায় নেই, আমাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে। বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে, মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে।ফলে আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

    তবে এখানে উল্লেখ না করলেই নয়, সম্প্রতি ২০০০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে অতি দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি কমেছে এমন ১৫টি দেশের যে তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক, সে তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই।

    তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের নাম থাকলেও বাংলাদেশের নাম নেই। ওই ১৫টি দেশে যে গতিতে দারিদ্র্য কমেছে, বাংলাদেশে কমেছে এর চেয়ে কম গতিতে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি।

    নিম্নআয়ের মানুষ যা আয় করছে, তার পুরোটাই জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদির জন্য ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে থাকছে না।

    দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সব থেকে বেশি কষ্টকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন নিম্নবিত্ত, অবসরপ্রাপ্ত সৎ সরকারি কর্মচারী, প্রবীণ জনগোষ্ঠী ও নিম্নআয়ের মানুষ। সবচেয়ে বেশি কষ্টকর পরিস্থিতিতে রয়েছেন অধিকাংশ প্রবীণ। তারা না ঘরের মরা, না ঘাটের মরা।

    কেননা প্রবীণ বয়সে খাদ্যদ্রব্যের চেয়েও বেশি জরুরি ওষুধপত্র ও চিকিৎসাসেবা। আমার বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখছি, প্রবীণ বয়সে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সুস্থ থাকার জন্য মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ করতে হয়।

    কিন্তু আর্থিক যোগানের সীমাবদ্ধতা থাকায় জীবন দিন দিন দূর্বিষহ হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এক মাসে প্রায় ১৯.৬৪% বেড়ে গেছে।

    এক মাসের ভেতর দ্রব্যমূল্য এতটা বাড়তে আগে কখনও দেখা যায়নি!সরকারের সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক মাসের ব্যবধানে বিভিন্ন পণ্যের দাম প্রায় ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

    এর মধ্যে আটা সাদা (খোলা) ১.৪৯ শতাংশ, সয়াবিন তেল (খোলা) ৩.৭৭ শতাংশ, পাম অয়েল (খোলা) .৭৯ শতাংশ, পাম অয়েল (সুপার) .৩৮ শতাংশ, পেঁয়াজ (দেশি) ১১.৫৪ শতাংশ, পেঁয়াজ (আমদানি) ১৩.৬৪ শতাংশ, রসুন (আমদানি) ৮.৭০ শতাংশ, আদা (আমদানি) ৪.৩৫ শতাংশ, লবঙ্গ ২.২৭ শতাংশ, মুরগি (ব্রয়লার) ১.৪৯ শতাংশ, চিনি .৬৩ শতাংশ।

    সম্প্রতি বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদন অনুসারে, গত এক বছরের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যের দাম কমেনি; বরং পণ্যভেদে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

    এর মধ্যে চাল মোটা কেজিতে বেড়েছে ৭.৫৬ শতাংশ, সয়াবিন তেল লিটারে ৩৮ শতাংশ, পাম অয়েল খোলা লিটারে ৭০.৩৮ শতাংশ, পাম অয়েল সুপার লিটারে ৬১ শতাংশ, চিনি কেজিতে ২৬ শতাংশ, আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিতে ৩০ শতাংশ ও আমদানি করা রসুন কেজিতে বেড়েছে ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত।

    জনগণ আশা করছেন- তাদের এরূপ অবস্থার উন্নতি হবে, দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসের মূল্য কমবে। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। বাজারের ওপর সরকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে কি ব্যর্থ হচ্ছে- বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এমন প্রশ্ন দাঁড়ায়।

    অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে বাজারে যাচ্ছেতাই কান্ডকীর্তি চালাতে না পারে, এ জন্য টিসিবিকে শক্তিশালী করার তাগিদ ইতোমধ্যে বহুবার নানা মহল থেকে এসেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে আশানুরূপ উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

    যারা দৈত্যের মতো জনগণের ওপর চেপে বসে আছে, তাদের কর্মকাণ্ড রোধ করতে হবে সবার আগে।পণ্যমূল্য বৃদ্ধির এই চাপ থেকে জনগনকে রেহাই দিতে হলে পণ্যমূল্য যাতে ভোক্তাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এখনই নিতে হবে। মনিটরিং বাড়াতে হবে।

    পণ্য যেন ভোক্তাসাধারণের কাছে সহজলভ্য হয়, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। এজন্য সরকারকে সতর্কভাবে গোটা পরিস্থিতি মনিটরিং করতে হবে এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে।

    মুলত বাজার মনিটরিং টিম থেকে দাম নিয়ন্ত্রণের সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থাকলেও মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন। খেয়াল রাখতে হবে, ব্যবসায়ী যেন সিন্ডিকেট করতে না পারে।

    সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের অবশ্যই মাঠ পর্যায়ে যেতে হবে। আরও কিছু বিষয়ে নজর দিতে হবে। যেমন বাজারে সব পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রেতা এবং নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনাসহ নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

    স্বাধীন দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বল্গাছাড়া অবস্থা দরিদ্র ব্যক্তিদের পক্ষে বজ্রাঘাততুল্য। বিভিন্ন শ্রেণির ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করছেন। সরকারকে কঠোর হাতে অতিলোভী অসাধু এসব ব্যবসায়ীকে দমন করতে হবে।

    বিক্রেতারা যাতে ইচ্ছামতো দ্রব্যমূল্য বাড়াতে না পারে সে জন্য সরকার এরই মধ্যে দোকানে পণ্যের নির্ধারিত মূল্য তালিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেছে। বিষয়টি মনিটরিং করার জন্য ‘টিসিবিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

    এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে সরকার। সরকারি ও বেসরকারিভাবে এ ব্যাপারে আরো শক্তিশালী ভূমিকা পালন করলে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

    শুধু সরকার নয় সাধারণ মানুষকেও দ্রব্যমূল্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধের জন্য সামাজিকভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অসৎ ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।

    এভাবে সরকার, জনগণ ও ব্যবসায়ী সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এবং বর্তমানে ক্ষুধা ও দরিদ্রমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন তা সফল ও সার্থক হবে।

    নুর মোহাম্মদ রানা
    লেখক : কলামিষ্ট, প্রাবন্ধিক ও সংগঠক।

  • বোয়ালখালীতে এনজিওর চাপে দিশেহারা নিন্ম আয়ের মানুষ

    বোয়ালখালীতে এনজিওর চাপে দিশেহারা নিন্ম আয়ের মানুষ

    বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
    বোয়ালখালীতে এনজিও সংস্থার ক্ষুদ্র ঋণ আদায়ের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষজন। এই মানুষগুলো বেশিরভাগই কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। এছাড়া রয়েছেন পোশাক কারখানা, শিল্প কারখানার শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

    বেশ কয়েকজন ঋণ গ্রহীতা জানান, গত মার্চ মাসের ২৫ তারিখ থেকে মে মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ছিলো। আয় রোজগারের পথ ছিলো বন্ধ। এরই মাঝে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে পরিবারগুলোকে। সরকারি, বেসরকারি, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ সহায়তা এবং নিজেদের হাতেপাতে থাকা অর্থ দিয়ে কোনো রকমে দিনাতিপাত করছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে।

    ঋণ গ্রহীতা পোশাক শ্রমিক আরতি, ফেরদৌসী বেগম বলেন, গত সপ্তাহ থেকে কিস্তি আদায়ের লোকজন বাড়িতে এসে বসে থাকছে, কিস্তি দিতে না পারলে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন। তাদের বলেছি হাতে টাকা পয়সা একদম নেই জুন মাসের বেতন পেলে দেবো। তারা তা মানছেন না।

    একই অভিযোগ করে কৃষক সুমন দে বলেন, এই দুঃসময়ে তারা একপ্রকার চাপ সৃষ্টি করছে। স্বাস্থ্য বিধি না মেনে মানুষের বাড়ি বাড়ি পাড়ার মহিলাদের একত্রিত করে কিস্তি দাবী করছেন। অনেকে ধান বিক্রি করতে পারেনি, টাকা যোগাড় না হওয়া পর্যন্ত কিস্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

    বিউটি পার্লারের মালিক প্রিয়া চৌধুরী বলেন, গত দুই মাস পার্লার বন্ধ রাখতে হয়েছে। এখন খোলার চেষ্টা করছি। দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়ে গেছে। জমানো টাকা শেষ। পার্লার খুলেও লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না। ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় কাজ শিখে এ ব্যবসায় এসেছিলাম। বিয়েসহ সামাজিক আনন্দ আয়োজনে যা কাজ ছিলো তা বন্ধ হয়ে গেছে করোনার প্রাদুর্ভাবে। কাজ না থাকলে খাবো কি সেই চিন্তায় রয়েছি। এর মধ্যে কিস্তি ওয়ালার চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে জানি না।

    এপ্রিল মাসে এনজিও সংস্থাগুলো কিস্তি আদায় বন্ধ রাখলেও মে মাস থেকে মুঠো ফোনে চাপ দিতে থাকে। চলতি জুন মাসের শুরু থেকে পাড়ায় পাড়ায় বাড়ি বাড়ি কিস্তি আদায়ের লোকজন ঘুরছেন।

    তবে এ সংক্রান্ত বিষয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি সুনির্দিষ্ট নিদের্শনায় বলা হয়েছে ‘ জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত কিস্তি আদায়ে চাপ সৃষ্টি বা বাধ্য করা যাবে না। উল্লেখিত সময়ে কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিস্তি প্রদান করেন তা গ্রহণ করা যাবে।’ এছাড়া কিস্তি না দিলে তা বকেয়া অথবা খেলাপী হিসেবে গণ্য করা যাবে না।

    নিদের্শনা থাকা স্বত্বেও এনজিওর লোকজন পুলিশে দেওয়ার ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বোয়ালখালী উপজেলা প্রশাসন ও সরকারী কমিশনার (ভূমি) ফেসবুক আইডিতে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটির নিদের্শনা তুলে ধরেছেন।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এনজিও কর্মকর্তা জানান, মালিক পক্ষের চাপে পড়ে চাকুরী বাঁচাতে এক প্রকার বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে কিস্তি আদায়ে গ্রামে গ্রামে যেতে হচ্ছে।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া খাতুন বলেন, জুন মাস পর্যন্ত কিস্তি আদায়ে ঋণ গ্রহীতাদের বাধ্য করা যাবে না। স্বেচ্ছায় কেউ ঋণ পরিশোধে কিস্তি প্রদান করলে নিতে পারবে এনজিও সংস্থাগুলো। না দিলেও তা বকেয়া বা খেলাপী হিসেবে গণ্য করতে পারবে না। এ সংক্রান্ত নিদের্শনা সংশ্লিষ্ট দপ্তর দিয়েছে। সংস্থাগুলোকে সরকারি নির্দেশনা মানার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর