২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি বলেন-শিল্প ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের উপযুক্ততা কাজে লাগিয়ে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করতে সকল উপাদানগুলোর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং এই গুরুত্ব ও সম্ভাবনা ধরে রাখতে হবে।
তিনি সময়ের সাথে শহরের জনসংখ্যা ও মাথাপিছু আয় কি পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে তা প্রাক্কলন করে সমন্বিত মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে একটি দীর্ঘমেয়াদী ও সুপরিকল্পিত নগরী গড়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানান। মন্ত্রী প্রকল্প গ্রহণে যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজনীয়তা ও জনসম্পৃক্ততার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
শনিবার সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র আয়োজনে “স্মার্ট সিটি চট্টগ্রাম” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. এ. লতিফ বক্তব্য রাখেন।
বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি স্মার্ট সিটি তৈরীতে বিভিন্ন সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনকেই বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে শহর অঞ্চলের সাংসদ ও অংশীজনদের মতামত গ্রহণ করা আইনগত কাঠামোর মধ্যে এনে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যেতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথি এম. এ. লতিফ এমপি বলেন, নগর পরিচালনা করার ক্ষেত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের সাথে মতবিনিময়ের কোন নজীর নেই উল্লেখ করে আমলাতান্ত্রিক মানসিকতা পরিহারপূর্বক জনপ্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণীর পেশাজীবীদের সাথে নিয়মিত পরামর্শ করে প্রাণপ্রিয় চট্টগ্রামকে একটি সুন্দর ও স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর এবং নাগরিকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা, সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সুস্বাস্থ্য ও সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন- মাতারবাড়ীতে কোল টার্মিনাল, ডিপ সীপোর্ট, পাওয়ার হাব, এলএনজি ও এলপিজি টার্মিনাল, কর্ণফুলী টানেল, লালদিয়া টার্মিনাল, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, রিং রোড, মেরিন ড্রাইভ, মিরসরাইয়ে ৩০ হাজার একর জায়গাজুড়ে দেশের বৃহত্তম স্পেশাল ইকনোমিক জোন, আনোয়ারায় চীন ও জাপানের জন্য ৪০০ একর জায়গাজুড়ে দু’টি ইকনোমিক জোনসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
তিনি চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন লক্ষাধিক কোটি টাকার এসব প্রকল্পের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চট্টগ্রাম সিটি কে স্মার্ট সিটিতে পরিণত করার লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণে এই বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান।
প্যানেল আলোচকগণ নাগরিকদের সমস্ত সেবা নিশ্চিত করা, জনগণের মতামত গ্রহণ, নারী ও প্রতিবন্ধীবান্ধব ও টেকসই নগরী নিশ্চিত করা, সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা, সব ধরণের পেশাজীবীদের সম্পৃক্ততা এবং আগামী একশত বছরের কথা মাথায় রেখে সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে চট্টগ্রামকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাউদার্ণ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত প্রো-ভিসি প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার এম. আলী আশরাফ।
প্যানেল আলোচক হিসেবে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজ, চুয়েট’র ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, ভিত্তি স্থপতি ব্রিন্ডো লিঃ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি ইকবাল হাবীব, চেম্বার পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, দৈনিক ইনকিলাব’র সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, দৈনিক ভোরের কাগজ’র সম্পাদক শ্যামল দত্ত, চট্টগ্রাম বার কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি ইফতেখার শিমুল চৌধুরী, দৈনিক সমকাল’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তাফিজ শফি, জেএফ (বাংলাদেশ)’র সিইও এ.কিউ.আই চৌধুরী, ওবিই, চিটাগাং ক্লাব লিঃ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান মিয়া আবদুর রহিম, সিসিসিআই ও এফবিসিসিআই’র প্রাক্তন পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হক ও বিএসআরএম’র লীড সিএসআর রুহী মুর্শিদ আহমেদ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় চেম্বার পরিচালক সৈয়দ জামাল আহমেদ, মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), ছৈয়দ ছগীর আহমদ, অঞ্জন শেখর দাশ ও শাহজাদা মোঃ ফৌজুল আলেফ খান উপস্থিত ছিলেন।