Tag: দুদক

  • রেল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক’র হয়রানিমূলক মামলা

    রেল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক’র হয়রানিমূলক মামলা

    বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক বর্তমানে বেজার উপ-সচিব মুহাম্মদ রাশেদুল আমিন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির স্বত্বাধিকারী এএসএম ইকবাল মোর্শেদকে আসামি করে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলা করেন দুদক।

    সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম- ১ এর উপপরিচালক আহসানুল কবীর পলাশ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

    এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের ২৩ মার্চ পাহাড়তলী ডিপো হতে ১৪৬ দশমিক ৯২৭ টনের কাঁচা লোহা (পিগ আয়রন) ক্রয়ের চাহিদা প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠানো হয়। ওই অর্থবছরে বাজেট স্বল্পতার কারণে ১৪৬ দশমিক ৯২৭ টনের পরিবর্তে ৮৫ মেট্রিক ক্রয় করা যেতে পারে বলে ক্রয় পরিকল্পনার অনুচ্ছেদ ৫.১-এ উল্লেখ করা হয়। সেই মোতাবেক প্রাক্বলিত ব্যয় নির্ধারণী কমিটি বাজার যাচাইপূর্বক প্রতি টন কাঁচা লোহার দাম ২ লাখ ৩৪ হাজার ১০০ টাকা নির্ধারণ করেন। ওই মালামাল ক্রয়ের আনুমানিক সরকারি খরচ অনুমোদন দেওয়া হয় ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর এবং প্রতিবেদন দাখিল হয় একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর। সবশেষ মালামাল ক্রয়ের চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয় ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রাক্কলন ব্যয়ের ৩১ শতাংশ কমে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মালামাল সরবরাহের কাজ পায়। কিন্তু মালামাল সরবরাহ না করে বিল নিয়েছে বলে দুদক অনুসন্ধানে পেয়েছে।  ক্রয়ের প্রাক্কলন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বাজারমূল্য ৩ কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার ৬০০ টাকা। টেন্ডার কমিটির সদস্যরা ঠিকাদারের সাথে পরস্পর যোগসাজসে অসৎ উদ্দেশ্যে লাভবান হওয়াসহ প্রতারণামূলকভাবে পিপিআর ২০০৮ এর ধারা লঙ্ঘন করে। ফলে চাহিদাকৃত ১৪৬ দশমিক ৯২৭ টনের পরিবর্তে ৮৫ টন সরবরাহ দেখিয়ে মালামাল সরবরাহ না করে সরকারের ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে।

    দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

    কিন্তু মামলায় অভিযুক্তরা বলছেন ভিন্নকথা। তারা বলেন, একটি পক্ষ আমাদের সম্মানহানি করার জন্য এধরণের তথ্য দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছেন।

    রেলবুদ্ধারা বলছেন, মালামাল ক্রয়ের দরপত্র আহ্বান ও মূল্যায়নের সঙ্গে জড়িত কমিটির সদস্যরা মামলার আসামি হলেও মালামাল পরিদর্শন, পরীক্ষণ ও গ্রহণের সঙ্গে জড়িতদের মামলায় আসামি করা হয়নি। প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকসহ মুল্যায়ন কমিটির সদস্যরা মালামাল গ্রহণ ও মুল্য পরিশোধের সঙ্গে জড়িত নয়। ফলে এখানে মালামাল গ্রহণ, পরীক্ষণ ও বণ্টনের সঙ্গে জড়িত দপ্তরগুলো মূলত দায়ী হওয়ার কথা।

    জানা গেছে, প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে ৮৫ মেট্রিক টন পিগ আয়রন ক্রয়ে ইজিপি দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র মূল্যায়ন শেষে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির সঙ্গে চুক্তি হয়। সরবরাহকারী মালামালগুলো জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের পরিদর্শন দপ্তরে সরবরাহ করে। পরিদর্শন দপ্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গ্রহণ করে ও গ্রহণপত্র জারি করে। ওই গ্রহণপত্রের ভিত্তিতে হিসাব বিভাগ থেকে বিল পরিশোধ করা হয়। এরপর মালামালগুলো পরিদর্শন দপ্তর থেকে জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক, পাহাড়তলী ডিপো ও সৈয়দপুর জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে পাঠায়। প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকসহ মুল্যায়ন কমিটির সদস্যবৃন্দ দরপত্র আহ্বান ও মুল্যায়নের সংগে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। মালামাল গ্রহন ও মুল্য পরিশোধের সংগে জড়িত ছিলেন না।

  • স্ত্রীকে পাঁচটি জাহাজ কিনে দিয়েছেন এডিসি কামরুল

    স্ত্রীকে পাঁচটি জাহাজ কিনে দিয়েছেন এডিসি কামরুল

    ১৯৮৯ সালে পুলিশের এসআই পদে নিয়োগের পর চাকরির ধারাবাহিকতায় বর্তমানে সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কামরুল হাসান। এর মধ্যে তিনি গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়িসহ তার ভাণ্ডারে যেন সবই আছে। শুধু নিজের নয়, স্ত্রীর নামেও গড়েছেন অঢেল সম্পদ।

    দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কিছু অবৈধ সম্পদের তথ্য। সেখানে স্ত্রী সায়রা বেগমকে পাঁচটি জাহাজ (বার্জ) কিনে দেওয়ার তথ্য মিলেছে। সম্প্রতি এসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

    দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সায়মা বেগমের নামে থাকা পাঁচ জাহাজের মধ্যে আছে– এমভি প্যাসিফিক রাইডার, এমভি পানামা ফরেস্ট-১, এমভি রাইসা তারাননুম, বার্জ আল বাইয়েত। এ পাঁচটি জাহাজের মধ্যে এক তৃতীয়াংশের মালিক সায়মা বেগম। এসব জাহাজে কাগজে-কলমে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে এক কোটি ৫১ লাখ ৩১ হাজার ৩৮০ টাকা। অথচ বাস্তবে এ বিনিয়োগ তিন থেকে চার গুণ বেশি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

    এসব জাহাজ পরিচালনা করছে ‘সওদাগর নেভিগেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকও সায়মা। নগরীর আগ্রাবাদের পোর্টল্যান্ড সাত্তার টাওয়ারের চতুর্থ তলায় রয়েছে সওদাগর নেভিগেশনের অফিস।

    এদিকে, দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে কামরুল হাসানের নামে ১২ কোটি ৭২ লাখ ৯২ হাজার ২১৬ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ২১৬ টাকার অস্থাবর সম্পত্তিসহ মোট ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ৩১ হাজার ৯১১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।

    জানা গেছে, পুলিশে ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পেয়ে চট্টগ্রামের ৮টি থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্বপালন করেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা কামরুল হাসান। মূলত ওই সময়েই বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন।

    সূত্রের তথ্যমতে, দৃশ্যত কোনো আয় না থাকলেও কামরুল হাসানের স্ত্রী সায়মা বেগমের ২ কোটি ৫৩ হাজার ২৪০ টাকার সম্পদ থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সায়মা বেগমের আছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার স্থাবর ও ১ কোটি ৯৯ লাখ ২৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ।

    দুদক সূত্রে জানা যায়, কামরুল হাসানের চট্টগ্রাম নগরের সবচেয়ে অভিজাত খুলশী আবাসিক এলাকায় ‘ফয়জুন ভিস্তা’ অ্যাপার্টমেন্টের অষ্টমতলায় সি-৭ নামে ২ হাজার ৫৭০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ও ১৩৬ বর্গফুটের গাড়ি পার্কিং রয়েছে। সোয়া সাত লাখ টাকায় ফ্ল্যাট ও মাত্র ২৫ হাজার টাকায় পার্কিং স্পেস কিনেছেন আয়কর নথিতে দাবি করলেও খুলশীতে আড়াই হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজারমূল্য তিন কোটি টাকার বেশি।

    চট্টগ্রাম নগরের পশ্চিম নাসিরাবাদে সাত শতক জমির উপর চারতলাবিশিষ্ট বাড়ি করেছেন কামরুল হাসান। জমিসহ এই ভবন নির্মাণে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা খরচ দেখালেও নাসিরাবাদ এলাকায় এক শতক ভূমিই এক কোটি টাকার বেশি মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে। সেই হিসাবে ভূমি ও ভবনের বাজারমূল্য কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা।

    ঢাকার সাভারে ১০৭ শতক জায়গার উপর সাভার সিটি সেন্টার নামে ১২ তলা ভবনের চারজন অংশীদারের একজন এডিসি কামরুল। সেখানে তিনি কাগজ-কলমে সাত কোটি ৫২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এ ভবনের বেজমেন্টে ৯০টি, প্রথমতলায় ১৪০টি, দ্বিতীয় তলায় ১৪৬টি, তৃতীয়তলায় ৮৯টি ও চতুর্থ তলায় ১০৩টি দোকান এবং ৫ হাজার বর্গফুটের ফুডকোর্ট, পঞ্চম তলায় অফিস ও ষষ্ঠতলায় ৬৭টি ফ্ল্যাট রয়েছে। বাজারমূল্যে এ সম্পদের মূল্য শতকোটি টাকারও বেশি।

    এদিকে সাভার সিটি টাওয়ার নামে একটি ১০ তলা আবাসিক ভবনেরও অংশীদার কামরুল। সেখানে ৫৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরের উত্তর হালিশহর, নাসিরাবাদ, চান্দগাঁও এলাকা শতাধিক ফ্ল্যাট ও দোকান রয়েছে কামরুলের। চট্টগ্রাম ও ঢাকার সাভারে ১৫৪ শতক জমি ও দুটি বাড়ি রয়েছে তার। পাশাপাশি কামরুলের ব্যাংকে ১ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার বন্ড ও এফডিআর থাকার তথ্য উঠে এসেছে দুদকের অনুসন্ধানে।

  • অর্থ আত্মসাৎ: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

    অর্থ আত্মসাৎ: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

    গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

    আজ সোমবার (২৯ জানুয়ারি) এ চার্জশিট দেওয়া হয়।

    গত বছরের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। সংস্থার উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

    মামলার আসামিরা হলেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।

    এ ছাড়া অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

  • অনিয়ম-দুর্নীতি খুঁজতে চসিকে দুদকের অভিযান

    অনিয়ম-দুর্নীতি খুঁজতে চসিকে দুদকের অভিযান

    চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) বিদ্যুৎ উপ-বিভাগের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাসের অনিয়ম খুঁজতে অভিযানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

    বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে চসিকের প্রধান কার্যালয়ে অভিযানে যায় দুদকের একটি টিম। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয় -১ এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক। প্রায় সাড়ে তিনঘন্টা অভিযান চালায় দুদকের এ টিম।

    সূত্র জানায়, প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাসের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে এসেছেন দুদক কর্মকর্তারা। তারা ঝুলন কুমার দাশের ৪১৬ নম্বর রুমে বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই করেছেন। পরে ঝুলন দাশকে নিয়ে দুদকের টিম নির্বাহী প্রকৌশলী তাসমিয়া তাহসিনের রুমে (৩০৩ নম্বর কক্ষ) যান।

    এদিকে, ঝুলন কুমার দাশের বিরুদ্ধে জাইকার এলইডি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল শুরু থেকেই। প্রকল্পটির বৈদ্যুতিক পোল স্থাপনে ঠিকাদারের যোগসাজশে নজিরবিহীন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। একটি বৈদ্যুতিক পোলে উচ্চতা কমিয়ে বিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটে। চসিকের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জাইকা এলইডি প্রকল্পে মানহীন ক্যাবল ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ার পর ঝুলন কুমার দাশ নিজ উদ্দ্যোগে চুয়েটের ল্যাবে পুনরায় ক্যাবল পরীক্ষা করে ‘মানসম্পন্ন’ ক্যাবলের রিপোর্ট নথিভুক্ত করেছেন। এ কারণে গত বছরের আগস্টে শোকজও খান প্রকৌশলী ঝুলন দাশ।

    অভিযান প্রসঙ্গে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক বলেন, ‘২০১৯ সালে জাইকার অর্থায়নে ৪৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে টেন্ডারে অনিয়ম, নিজের পছন্দমতো ঠিকাদারকে কাজ দেওয়াসহ দুনীর্তির অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে এসেছি। অভিযানে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন যাচাইবাছাই করতে হবে। আরও কিছু কাগজপত্র আমরা চেয়েছি। সেগুলো যাছাইবাছাই শেষে একটা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাঠাবো। তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’।

    প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৪ জুন ঝুলনের দুনীর্তি বিষয়ে আরও একটি অভিযোগ দেন নাছির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। নগরের রহমতগঞ্জ এলাকায় জায়গার মালিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আবাসন প্রতিষ্ঠান ‘স্কাই প্রপার্টিজ’ নামের একটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করেন এ প্রকৌশলী। তবে চুক্তি অনুযায়ী ভবন মালিকদের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো টাকা আত্মসাৎ করেছেন ঝুলন কুমার দাশ। দুদক সেই অভিযোগেরও তদন্তে নেমেছে বলে জানা যায়।

  • চট্টগ্রাম ওয়াসায় দুদক টিম

    চট্টগ্রাম ওয়াসায় দুদক টিম

    চট্টগ্রাম ওয়াসার পাম্প অপারেটর নিয়োগ ও বিভিন্ন প্রজেক্টে আর্থিক অনিয়ম তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই অংশ হিসেবে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম ওয়াসায় আসেন দুদকের উপ পরিচালক ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম।

    এসময় ওয়াসার চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল্লাহ ও প্রধান প্রকৌশলী মাকুসদ আলমের সঙ্গে দেখা করেন তারা।

    দুদকের উপ পরিচালক ফখরুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন আগে ওয়াসার পাম্প অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্তে এসেছি। এছাড়া বিভিন্ন প্রজেক্টের বিষয় নিয়েও আমরা প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করেছি। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করবো।

    নথিপত্রে কোনো অনিয়ম পাওয়া গেছে কিনা এমন প্রশ্নে তদন্তাধীন বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

    এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহ ও প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলমকে একাধিকবার ফোন করলেও তারা ফোন ধরেননি।

    প্রসঙ্গত, প্রজেক্টের অধিন প্রকৌশলী নিয়োগ দিয়ে পরে তা ওয়াসায় স্থায়ী করা, পাম্প অপারেটর নিয়োগ ও মিটার পরিদর্শক নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার বিরুদ্ধে।

  • দুদক কার্যালয়ে ড. ইউনূস

    দুদক কার্যালয়ে ড. ইউনূস

    শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলার প্রধান আসামি হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মুখোমুখি হয়েছেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

    বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হন তিনি। এরপর সংস্থাটির উপপরিচালক গুলশান আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

    জিজ্ঞাসাবাদের আগে ড. ইউনূসের পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তিনি বক্তব্য দেওয়ার জন্য দুদকে এসেছেন।

    এর আগে, গতকাল (বুধবার) একই অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। সংস্থাটি উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

    যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক নাজনীন সুলতানা, নূরজাহান বেগম ও এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।

    গত ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জন আসামিকে তলব করে দুদক।

    গত ৩০মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। সংস্থার উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

    মামলার আসামিরা হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।

    এছাড়া অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

    মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকম বোর্ডের সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খোলা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি হয় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল।

    গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভার হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত ৯ মে হলেও হিসাব খোলা হয় একদিন আগে ৮ মে। সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টেও ৮ মে ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। এরকম ভুয়া সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত অনুযায়ী ও ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২ সালের ১০ মে গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়।

    পরবর্তী সময়ে ২২ জুন অনুষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকমের ১০৯তম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা প্রদানের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়। অন্যদিকে, ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাব থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নামীয় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের লোকাল অফিসের হিসাব থেকে তিন দফায় মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।

    কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের আগেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়েই অসৎ উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা মো. কামরুজ্জামানের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার হিসাবে মোট ৩ কোটি টাকা, সিবিএ নেতা মাইনুল ইসলামের হিসাবে ৩ কোটি ও সিবিএ নেতা ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার হিসাবে ৩ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।

    একইভাবে অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার হিসাবে ৪ কোটি টাকা ও দ্য সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে ৫ কোটি টাকা এবং অ্যাড. জাফরুল হাসান শরীফ ও অ্যাড. মো. ইউসুফ আলীর স্ট্যান্ডার্ড টাচার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ হিসাবে ৬ কোটি স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না।

    দুদকের রেকর্ডপত্র অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং অ্যাডভোকেটসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অসৎ উদ্দেশ্যে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত লঙ্ঘন করে জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যা দণ্ডবিধি ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

    শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরেই ২০২২ সালের ২৮ জুলাই অনুসন্ধান শুরু।

    অভিযোগগুলো ছিল— অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন, শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ। এছাড়া কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ।

    অভিযোগ অনুসন্ধানে গত বছরের আগস্টের বিভিন্ন সময়ে এমডিসহ ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। গত বছরের ২৩ নভেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল ইসলাম গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগতভাবে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

  • চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে দুদকের সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যু

    চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে দুদকের সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যু

    দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে(৬৭) সিআর মামলায় গ্রেফতারের পর চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতেই তার মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহীদুল্লাকে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার।

    চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-উত্তর) পংকজ দত্ত সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

    তবে পুলিশ বলছে, অভিযোগ সত্য নয়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১১ টার সময় নগরীর চান্দগাঁও থানার ১ কিলোমিটার এলাকার নিজ বাসা থেকে শহীদুল্লাহকে একটি সিআর মামলায় গ্রেফতার করা হয়।

    থানায় আনার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে দ্রুত বেসরকারি হাসপাতাল পার্ক ভিউতে নেয়া হয়। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    মৃত শহীদুল্লাহ চট্টগ্রামের দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২-এ উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকে ২০০৭ সালের ১২ জুলাই অবসর গ্রহণ করেন।

    সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে ছেলে ক্যাপ্টেন নাফিস শহিদ বলেন, বাবা দুদকের সাবেক একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হলেও তাকে ন্যূনতম সম্মান না দিয়ে রাত ১১টার দিকে চান্দগাঁও থানার কয়েকজন পুলিশ ধস্তাধস্তি করে নিয়ে যায়।

    কোনো ওয়ারেন্ট না দেখিয়ে, এমনকি আদালত থেকেও কোনো নোটিশ প্রাপ্ত না হয়েও তাকে আচমকা গ্রেফতার করা হয়। তাদের পিতা হার্টের রোগী জানিয়ে অভিযোগ করে বলেন, গ্রেফতারের সময় বাবাকে ইনহেলার আর মেডিসিন নেয়ার সুযোগও দেয়নি পুলিশ। তাদের দাবি পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

    এদিকে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করলেও তার সাথে কোনো ধরণের অসদাচরণ করা হয়নি দাবি করেন চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম।

    তিনি বলেন, দুদকের সাবেক এ কর্মকর্তাকে একটি সিআর মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের অল্প কিছুক্ষণ পরে তিনি অসুস্থবোধ করলে তার ভাইদের জানিয়ে পার্কভিউ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন।

  • দেড় কোটি টাকা ঘুস লেনদেন: দুদক মহাপরিচালকের পিএ গ্রেফতার

    দেড় কোটি টাকা ঘুস লেনদেন: দুদক মহাপরিচালকের পিএ গ্রেফতার

    দেড় কোটি টাকা ঘুস নেওয়ার সময় গ্রেফতার হয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকের (মানিলন্ডারিং) পিএ গৌতম ভট্টচার্য ও চাকরিচ্যুত এক পুলিশ কনস্টেবল। এই দুইজনসহ শুক্রবার মতিঝিলের একটি হোটেল থেকে চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

    গ্রেফতাররা হলন- দুদক মহাপরিচালকের (মানিলন্ডারিং) পিএ গৌতম ভট্টচার্য, চাকরিচ্যুত পুলিশ কনস্টেবল মো. এসকেন আলী খান, হাবিবুর রহমান ও পরিতোষ মন্ডল। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে মিষ্টির চারটি প্যাকেট, নগদ দেড় লাখ টাকা, চারটি মোবাইল ফোন, দুদকের মনোগ্রাম দেওয়া খাকি রঙের একটি খাম ও দুদকের একটি নোটিশ উদ্ধার করা হয়।

    শনিবার (২৪ জুন) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

    সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ

    তিনি বলেন, ভুয়া অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে দুদকের নামে চিঠি ইস্যু করে তাকে হয়রানি করা হচ্ছিল। এ চক্রে আছেন দুদকের মহাপরিচালকের পিএ, পুলিশ সদস্য (বরখাস্ত) এসকেন আলী খান ও দুই দালাল হাবিবুর রহমান, পরিতোষ মন্ডল।

    রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকার ব্যবসায়ী আশিকুজ্জামান। দুর্নীতির দমন কমিশনের (দুদক) নামে তাকে একটি চিঠি দেয় দালাল চক্র। চক্রটি আশিকুজ্জামানকে জানায়, তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে। এই মামলা থেকে বাঁচানোর কথা বলে চক্রটি প্রথমে তার কাছে ৫ কোটি ও পরে ২ কোটি টাকা দাবি করে।

    এরপর চক্রটি ভুক্তভোগীকে মিষ্টির প্যাকেটে টাকা নিয়ে মতিঝিলের একটি হোটেলে আসতে বলে। এ বিষয়ে আগে থেকে গোয়েন্দা নজরদারি চালাচ্ছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। পরে দাবি করা টাকা নিতে চক্রের চার সদস্য হোটেলে আসলে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

  • ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কারাদণ্ড

    ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কারাদণ্ড

    ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার এক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তারের পরপরই তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

    দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আবদুল মজিদ এ রায় দেন।

    দণ্ডিত ব্যক্তির নাম আজিমেল কদর। তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

    দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ বলেন, আদালত আজিমেল কদরকে একটি ধারায় ১ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আরেকটি ধারায় ১ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

    আদালত সূত্র জানায়, ফটিকছড়ির বেড়াজালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তার তাঁকে তাঁর গ্রামের কাছাকাছি বদলির জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন করেন বেশ কয়েকবার। ২০১৯ সালের ২০ মার্চ তাঁকে বদলির জন্য ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিমেল কদর। ২৭ মার্চ তাসলিমা আক্তার এ নিয়ে দুদক চট্টগ্রাম জেলা অফিসে অভিযোগ করেন। এর পরদিন দুদকের একটি দল ফাঁদ পেতে ঘুষের ১০ হাজার টাকাসহ আজিমেল কদরকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় দুদক চট্টগ্রামের তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্ত শেষে দুদক আজিমেল কদরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এ রায় দেন।

  • চাকরি ফিরে পাচ্ছেন না শরীফ, শোকজ ছাড়াই অপসারণ করা যাবে দুদক কর্মচারীদের

    চাকরি ফিরে পাচ্ছেন না শরীফ, শোকজ ছাড়াই অপসারণ করা যাবে দুদক কর্মচারীদের

    রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ অনিয়মের বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত করে আলোচিত দুর্নীতি দমন কমিশনের বরখাস্ত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন চাকরি ফিরে পাচ্ছেন না।

    বৃহস্পতিবার কোনো কারণ দর্শানো (শোকজ) ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মচারীদের অপসারণ সংক্রান্ত ৫৪(২) বিধি বাতিল বিষয়ক রিট খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

    প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

    আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ রায়ের ফলে দুদকের অপসারিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন আর চাকরিতে ফিরতে পারবেন না।

    ২০০৮ সালের দুদক কর্মচারী বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুযায়ী গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে দুদক।

    ওই বিধিমালায় কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই একজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার ক্ষমতা দুদকের রয়েছে। এরপরই চাকরিচ্যুতি ও ৫৪(২) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের ১৩ মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন শরীফ।

    রিটের শুনানিতে আপিল বিভাগ বলেন, দুদক কর্মকর্তা শরীফের চাকরিচ্যুতিতে তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন ছিল না। তবে অভিযোগ থাকলে দুদকের চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যেত।

    আদালত আরও বলেন, হতে পারে দুদক কর্মকর্তা শরীফের বিরুদ্ধে এমন কোনও অভিযোগ আছে যার ভিত্তিতে তাকে দ্রুত চাকরিচ্যুত করেছে সংস্থাটি।

    শুনানি শেষে গত ২ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৮ সদস্যের আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য ১৬ মার্চ দিন ধার্য করেছিলেন।

  • তিন এমপিসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

    তিন এমপিসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

    ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে তিন এমপিসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিম্ন আদালত থেকে এ আদেশ দেয়া হয়েছে। দুদক পরিচালক ও ক্যাসিনো সংক্রান্ত অনুসন্ধান টিমের প্রধান সৈয়দ ইকবাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তারা হলেন চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান সাজ্জাদুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হাই এবং ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ।

    এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ইমিগ্রেশন বরাবর পাঠানো চিঠিতে এই ছয় জনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞায় অনুরোধ জানিয়েছিল দুদক। তবে সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসরণ করে দেশত্যাগে বা বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞায় নিম্ন আদালতের অনুমতি নিতে হচ্ছে সংস্থাটিকে। এরই ধারাবাহিকতায় দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিল আদালত।

    ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এর পরপরই ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এরইমধ্যে ২৩টির মতো মামলা দায়ের করা হয়েছে। একইভাবে ১২টি মামলার চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে। এসব মামলায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের অবৈধ সম্পদও জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অনেক আসামিকে।

    কমিশনের পরিচালক সৈয়দ ইকবালের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্ব পালন করছে। টিমের অপর সদস্যরা হলেন- দুদকের উপ-পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ সালাহউদ্দিন, গুলশান আনোয়ার প্রধান, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, আতাউর রহমান ও মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী।

    ২৪ ঘণ্টা/পায়েল

  • দুদকের মামলায় কর্ণফুলী গ্যাসের জিএমসহ ২ কর্মকর্তা কারাগারে

    দুদকের মামলায় কর্ণফুলী গ্যাসের জিএমসহ ২ কর্মকর্তা কারাগারে

    দুর্নীতির দায়ে দুদকের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রামে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির একজন জিএমসহ দুই কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

    বৃহস্পতিবার(১০জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদলত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

    কর্মকর্তা দুজন হলেন নগরীর ষোলশহরস্হ কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন ও সাবেক কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান।

    দুর্নীতির মামলায় সকাল ১০টার দিকে দুদকের একটি অভিযানিক টিম এই দুই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে।

    দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রাম কোর্টের পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) ইমরান হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দুদক সম্মিলিত-১ এর কর্মকর্তা শরীফ উদ্দীন বাদি হয়ে এ মামলাটি করেছেন।

    ওই মামলায় সকালে তাদের দু’জনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হলে দুপুরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।