Tag: দুর্নীতিবাজ

  • দল, রাষ্ট্র, সমাজ সব জায়গায় শুদ্ধি অভিযান দরকার-সুজন

    দল, রাষ্ট্র, সমাজ সব জায়গায় শুদ্ধি অভিযান দরকার-সুজন

    ২৪ ঘন্টা চট্টগ্রাম ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান শুদ্ধি অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে জাগ্রত ছাত্র যুব জনতা।

    আজ ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে বিশাল এ সমাবেশ ও শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জাগ্রত ছাত্র যুব জনতার প্রধান উপদেষ্টা খোরশেদ আলম সুজন।

    শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান শুদ্ধি অভিযানকে আরো বেগবান করার মাধ্যমে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল দেশের জনগনের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন সমাবেশে সমবেত শত শত ছাত্র যুব জনতার উদ্দেশ্যে সুজন বলেন, শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির এক অমূল্য আমানত।

    হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি জাতির জনকের নেতৃত্বে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়া এক টুকরো বাংলাদেশ আজ শেখ হাসিনার হাত ধরে সারা বিশ্বে এক প্রচন্ড বিস্ময়। বাংলাদেশ আজ ক্ষুধা দারিদ্রের দেশ নয়। এক সময় যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা দারিদ্র খরার দেশ বলে উপহাস করা হতো শুধুমাত্র একজন শেখ হাসিনা’র যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

    তিনি বলেন, শত্রুদের শত ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে আমাদের উন্নয়নের যাদুর কাঠি শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আরাধনা আজ প্রতিটি বাঙালির। সে লক্ষ্যে দল, রাষ্ট্র, সমাজ সব জায়গায় শুদ্ধি অভিযান দরকার। আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল যারা এতোদিন বিভিন্ন অপকর্ম করেছে তাদের মুখোশ উম্মোচন করে দেওয়াই শুদ্ধি অভিযানের মূল লক্ষ্য।

    তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ছাত্র যুব জনতা প্রধানমন্ত্রীর শুদ্ধি অভিযানকে শতভাগ সফলতার অভিপ্রায় নিয়ে জানাতে চাই যারা একসময় মধ্যবিত্ত পরিবারের ছিল তারা কোন আশ্চর্য প্রদীপের ছোয়ায় আজ দেশে বিদেশে বিপুল পরিমান সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। তাদের আয়ের উৎস কি জনগন জানতে চায়। আজ সময় এসেছে তাদের অবৈধ সম্পদ বিদেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার। এ সকল সম্পদ দেশে ফিরিয়ে এনে জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ করে উন্নয়ন কর্মকান্ডে ব্যবহার করতে হবে।

    তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামেও শুদ্ধি অভিযানের প্রয়োজন রয়েছে। এ শুদ্ধি অভিযানকে আরো বিকশিত করে দুর্নীতি, মাদক, ক্যাসিনো ও জুয়া ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করতে হবে। যারা দলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে দলের নাম ভাঙিয়ে নানা ধরনের অপকর্ম করছে তাদেরও চিহ্নিত করার সময় চলে এসেছে। এছাড়াও কথায় কথায় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিকারী ও খাদ্যে ভেজালকারীদের বিরুদ্ধেও কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

    তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, চট্টগ্রামে মাদক ধরা পড়ে, ইয়াবা ধরা পড়ে, স্বর্ণ ধরা পড়ে এরা কারা। এদের পিছনে কারা জনগন আজ তা জানতে চায়। নিশ্চয়ই কোন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী কেউ এ ধরনের অপকর্ম করে সরকারকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে এদের মুখোশও খুলে দিতে হবে।

    পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ৪০ টাকার পেঁয়াজ কেন ১৫০ টাকার বেশী বিক্রয় হচ্ছে? শষ্যের ভিতরের ভুুুত আগে তাড়াতে হবে। শুধু রাজনৈতিক দল নয় প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা আসীন হয়ে আছেন তাদের দুর্নীতির চিত্রও জনগনের সামনে উপস্থাপন করতে হবে।

    আধারের রজনীশদের আর আলোতে আসতে দেওয়া হবে না বলেও হুশয়ারি উচ্চারন করেন সুজন। তিনি বলেন সরকার চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ করেছে। এসব প্রকল্পের জন্য কতো টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে এবং কোন খাতে কতো টাকা ব্যয় হয়েছে তার হিসাব নেওয়ার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ জানান তিনি।

    প্রধানমন্ত্রীর শুদ্ধি অভিযানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি এগিয়ে যান চট্টগ্রামসহ সারা বাংলাদেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ আপনার সাথে আছে। এ

    র আগে সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জাতির জনক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি নিয়ে মিছিল সহকারে সমবেত হয়ে পুরাতন রেল ষ্টেশন চত্বর লোকে লোকারন্য হয়ে যায়।

    জাগ্রত ছাত্র যুব জনতার আহবায়ক এ. এস. এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রকিবুল আলম সাজ্জির সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মসিউর রহমান চৌধুরী, হাজী মোঃ ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান, নগর যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক মাহবুবুল হক সুমন, হাসানুর রহমান লিটন, সাবেক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সহ-সম্পাদক শওকত হোসাইন, ফরহান আহমেদ, মোঃ সালাউদ্দিন, নগর যুবলীগ সদস্য আব্দুল আজিম, নগর সৈনিক লীগের আহবায়ক শফিউল আজম বাহার, খলিলুর রহমান নাহিদ, আব্দুস সালাম মাসুম, মোরশেদ আলম, এনামুল হক মিলন, সাজ্জাদ হোসাইন, মোর্শেদ আলী, আবুল হাসনাত বেলাল, আনিসুর রহমান ইমন, কামরুল হক, জানে আলম, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, আবুল হাসান সৈকত, আসাদুজ্জামান মনি, সমীর মহাজন লিটন, ওয়াসিম আকরাম, সাজ্জাদ হোসেন, রাজিব হাসান রাজন, তোফায়েল আহমেদ রয়েল, আশিকুন্নবী চৌধুরী, শাহনেওয়াজ রাজিব, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু, তালেব আলী, জয়নাল উদ্দিন জাহেদ, নাঈম রনি, নোমান চৌধুরী, সুজন বর্মন, ইরফানুল আলম জিকু, খোরশেদ আলম প্রমূখ।

    সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে ফেস্টুন, বাদ্য বাজনা, বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি সম্বলিত বিশাল শোভাযাত্রা নগরীর পুরাতন রেল ষ্টেশন চত্বর থেকে শুরু হয়ে নিউমাকের্ট কোতোয়ালী হয়ে ঐতিহাসিক লালদিঘীর মাঠে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় উৎসুক জনতা হাত নেড়ে শোভাযাত্রাকে স্বাগত জানান এবং পথচারীরাও স্বতস্ফুর্তভাবে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করেন।

    শোভাযাত্রা শেষে লালদিঘীর মাঠে জাগ্রত ছাত্র যুব জনতার উদ্যোগে ক্যাসিনো ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারী এবং অনুপ্রবেশকারীদের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।