Tag: দৃষ্টান্ত

  • অসহায়দের জন্য এক মায়ের মানবতা/সংসারের খরচ বাঁচিয়ে কষ্টের সঞ্চিত পুরো অর্থ দিয়ে দিল ওসির হাতে

    অসহায়দের জন্য এক মায়ের মানবতা/সংসারের খরচ বাঁচিয়ে কষ্টের সঞ্চিত পুরো অর্থ দিয়ে দিল ওসির হাতে

    ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : বর্তমানে প্রাণঘাতী করোনার করাল গ্রাসে পুরো দেশ যখন এলোমেলো, নানা গণমাধ্যমে যখন ভেসে বেড়ায় অসহায়দের আর্থনাদ। সন্তানের মুখে একটু খাবার তুলে দিতে অনেক মা যখন অক্ষম,দিশেহারা।

    ঠিক সেসময়ে আরেক মা তার নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে গেলেন চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিনের হাতে। নিজের পরিচয় গোপন ও প্রদত্ত অর্থ গরীব অসহায়দের সহায়তায় খরচ করতে অনুরোধ করে গেলেন তিনি।

    জানা যায় ওই মায়ের মধ্যবিত্ত পরিবার। সাধ ও সামর্থের যুদ্ধ ছিল সংসারের নিত্য সঙ্গী। এরপরও সংসারের নিত্য দৈনন্দিন খরচ থেকে বাঁচিয়ে অল্প অল্প করে সারাবছর ধরে কিছু অর্থ সঞ্চয় করেছেন ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে।

    আজ মানব কল্যাণে তার সারা বছরের জমানো কষ্টার্জিত পুরো অর্থ দান করে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ওই মা।

    এ বিষয়ে এ মানব মাতার একটি ছবি পোস্ট করে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন.. একজন মা। মধ্যবিত্ত পরিবার, উচ্চবিত্ত মন।

    সংসারের ছোট ছোট খরচ বাঁচিয়ে আজীবনের সঞ্চয় ৩০ হাজার টাকা। আজ সব দিয়ে গেলেন আমাকে! উনার অনুরোধ, এই টাকা ব্যয় হোক অসহায়দের কল্যাণে। এমন মা যে দেশের ঘরে ঘরে সে দেশ কিভাবে হারে?

    ২৪ ঘণ্টা/রাজীব প্রিন্স

  • পটিয়া’য় দোকান ভাড়া মওকুফ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মালেক

    পটিয়া’য় দোকান ভাড়া মওকুফ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মালেক

    ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। পটিয়া প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার উত্তর হাইদগাঁও শালিক পাড়া এম.এ মালেক মার্কেটের প্রতিটি দোকানের এপ্রিল মাসের ভাড়া মওকুফ করে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ইউনিয়ন আ”লীগ নেতা ও সাবেক ৮নং ওয়ার্ডের সভাপতি এম.এ মালেক।

    মার্কেটের মালিক এম.এ মালেক শনিবার মার্কেটে উপস্থিত হয়ে দোকান ভাড়া মওকুফের ঘোষণা দেন। তিনি করোনা ভাইরাসের কারনে নিজের মার্কেটের সকল ভাড়াটিয়াদের এপ্রিল মাসের ভাড়া মওকুফ করে দেন।

    এসময় ভাড়াটিয়ারা অত্যন্ত খুশি হয়ে বলেন আমাদের এক মাসের ভাড়া মওকুফ করে তিনি আর্থিক সহযোগীতা করেছেন। আমরা তাহার জীবন আরো সাফল্য কামনা করি।পটিয়া দোকান ভাড়া মওকুফ করলেন মালিক

    তিনি প্রতিবেদককে বলেন,এই দু:সময়ে সকলে সকলের পাশে থাকা দরকার এবং প্রতিটি মানুষকে যার যার অবস্থান থেকে আর্থিক ভাবে সহযোগীতা করলে এই বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে। অভুক্ত থাকবে না কোন মানুষ।

    এসময় উপস্থিত ছিলেন পটিয়া উপজেলা আ’লীগ নেতা আহম্মদ নুর, মাকের্টের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ডা. পার্থ কুমার মহাজন, সুদর্শন, কাঞ্চন, মাহাবুল আলম, মো. সেলিম, ইব্রাহিম প্রমুখ।

    ২৪ ঘণ্টা/ সঞ্জয় সেন/আর এস পি

  • নিজের সঞ্চিত অর্থ দান করে মানব সেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মানসিক প্রতিবন্ধী ফারুক

    নিজের সঞ্চিত অর্থ দান করে মানব সেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মানসিক প্রতিবন্ধী ফারুক

    ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান :  রাউজান উপজেলা সদরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোই তার দৈনন্দিন কাজ।

    কার্লভাটের নিচে ঘুমায়। কারো কাছেই হাত পাতে না, কেউ নিজে থেকে দিলে নেয়, কেউ খাওয়ালে খায়। মানসিক প্রতিবন্ধী,নাম তার ফারুক।

    তবে সে মানসিক প্রতিবন্ধী হয়েও সে অনুধাবন করেছে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কতটা অসহায় মানুষ। আর তাইতো সে তার সকল সঞ্চিত অর্থ দান করে মানবিক কাজে সহযোগীতার প্রয়াসে এগিয়ে এসেছে।

    খবর নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদরের মুন্সির ঘাটাস্থ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের নিচেই বেশীরভাগ সময় কাটান সে। ফারুক মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও এই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাকে এক নামেই চেনেন।

    বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের আপনজন, রাউজান পৌরসভার প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ খুবই স্নেহ করেন মানসিক প্রতিবন্ধী ফারুককে। পারভেজের গাড়ী দেখলেই ভোঁ দৌঁড়ে তার গাড়ীর কাছে ছুটে যান ফারুক। গাড়ী থেকে নেমেই ফারুকের হাতে কচকচে ১০০ টাকার নোট গুঁজে দিলেই তবেই প্রশান্তি ফারুকের।

    আবার রাউজান সরকারি কলেজ মাঠের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা মঞ্চে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে একটা অনুষ্টানের আয়োজন করেন জমির উদ্দিন পারভেজ। সেই মঞ্চে জ্বালাময়ী বক্তব্যে সবাইকে মাতিয়ে রেখে এলাকায় আলাদা পরিচিতি লাভ করেন ফারুক। এই কারণেই সবাই খুব পছন্দ করে তাকে।

    তবে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী হয়েও তার ভেতর যে মানবিকতার টান যে আছে সেটি এতদিন অজানা ছিল সবার।

    সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতাল সমূহে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের রমজান মাসে সেহেরি খাওয়ার কথা অনুধাবন করে নিজে উদ্যোগ নিয়ে ১লা রমজান থেকে প্রতিরাতে দুই হাজার প্যাকেট সেহেরির খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেন রাউজানের সাংসদ ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ.বি.এম ফজলে করিম চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান ফারাজ করিম চৌধুরী।

    ১০ জন বাবুর্চির মাধ্যমে রাউজান দায়ারঘাটাস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে রান্নার কার্যক্রম দেখতে ছুটে যান মানসিক প্রতিবন্ধী ফারুক। সে সময় রান্নার তদারকিতে থাকা নেতৃবৃন্দের কাছে তিনি জানতে চান, খাবারগুলো কি জন্য তৈরী করা হচ্ছে।

    পুরো বিষয় বুঝতে পেরে প্রতিবন্ধী ফারুক নিজের সঞ্চিত অর্থ এই মানবিক কাজে দিয়ে দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় তার কথা শুনে উপস্থিত অনেকেই হতবাক হয়ে যান।

    বিষয়টি কারো কারো কাছে পাগলের প্রলাপ মনে হলেও গত ২৬ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যায় রাউজান পৌরসভার দায়ার ঘাটাস্থ সেহেরীর খাবার আয়োজনের জন্য প্রস্তুতকৃত রান্নাঘরে নিজের জমানো অর্থ নিয়ে ছুটে যান ফারুক।

    এ সময় রাউজান পৌরসভার প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ ও উপজেলা যুব লীগের সহ সভাপতি সুমন দে’র হাতে জমানো টাকাগুলো তিনি সেহেরি কার্যক্রমের জন্য তুলে দেন।

    সেহেরি কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত থাকা পারভেজ ও সুমন গুণে দেখেন ফারুকের প্রদানকৃত ১৯৯০ টাকা। টাকা তুলে দেওয়ার পর দুই হাত তুলে সে মোনাজাতও করেন।

    প্রতিদিন ফারুককে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ যে দশ, বিশ টাকা সহযোগীতা করেন সেগুলো থেকে জমিয়ে টাকাগুলো রেখেছিলেন ফারুক। নিজে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও করোনাকালীন সময়ে মানুষের কষ্টটুকু অনুধাবন করে মানবিক কাজে নিজের জমানো সবটুকু টাকাই দিয়ে দিলেন সে।

    মানসিক প্রতিবন্ধী হয়েও এভাবে মানবিক কাজে তার সহযোগীতার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে রাউজানজুড়ে তার মানবিকতার ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে উপজেলার সর্বত্র। এক সময় মানসিক প্রতিবন্ধী হিসেবে যারাই ফারুককে নিয়ে ঠাট্টাতামাসা করতো তারাও তার মানবিকতার গল্প শুনে অবাক হয়ে যান।

    অনেকেই ফারুককে নিয়ে তাদের অনুভূতি তোলে ধরেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একজন মানসিক প্রতিবন্ধী ফারুকই যেন হয়ে উঠেন মানবিকতার প্রতিচ্ছবি হয়ে।

    বিষয়টি নিয়ে জমির উদ্দিন পারভেজ ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজকে বলেন, দেশে করোনা পরিস্থিতির সংকটময় সময়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে যারা নিজেদের প্রাণের মায়া ত্যাগ করে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন, জাতির সেই গর্বিত সন্তানদের জন্য নিজে উদ্যোগ নিয়ে রাউজানবাসীর সহযোগীতায় রমজান মাসজুড়ে প্রতিরাতে নগরীতে দুই হাজার প্যাকেট সেহেরির খাবার বিতরণের যে মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন রাউজানের সাংসদপুত্র ফারাজ করিম চৌধুরী সেই মানবিক কাজে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী হয়েও ফারুক যে সহযোগিতার দৃষ্টান্ত দেখালেন সেটি অনেকের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।

    রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সুমন দে ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজকে বলেন, “ নিজে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী হয়েও মানবিক কাজে নিজের সঞ্চয়কৃত সব অর্থ দিয়ে ফারুক এই সমাজে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন। আমরা ফারুককে নিয়ে গর্ববোধ করি।”

    নিজ উদ্যোগে সেহেরী বিতরণ কার্যক্রমে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সহযোগিতা প্রসঙ্গে রাউজানের সাংসদপুত্র ফারাজ করিম চৌধুরী ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজকে বলেন, ” কয়েকদিন আগে ফারুক নামের একজন সমাজের চোখে মানসিক প্রতিবন্ধী (সম্মানের সাথেই বলছি) আমাদের সেহেরীর কার্যক্রম দেখতে এসে চট্টগ্রামের ভাষায় বলেন, “এগিন কি মাইনষুর লাই গইরতে লাইজ্ঞু দে না?” অর্থাৎ, এগুলো কি মানুষের জন্য করছেন? তাকে যখন বলা হল, হ্যাঁ এগুলো মানুষের জন্যই করা হচ্ছে। তখন সে বললো, “আইও কিছু দিয়ুম!” অর্থাৎ, আমিও কিছু (অর্থ) দিবো।

    সে ২৬ এপ্রিল (রবিবার) আমাদের সেহেরীর খাবার তৈরীর রান্নাঘরে এসে তার পলিথিনের থলে থেকে গুণে গুণে ১৯৯০ টাকা দিল। মানসিক প্রতিবন্ধী বলে ফারুকদের সবাই অবজ্ঞা করে, অথচ ফারুকরা কোন প্রতিবন্ধী নয় বরং এরাই দেশের রত্ন।

    কথায় আছে ধনী হতে টাকা লাগে না, প্রকৃত ধনী তারাই যাদের বিশাল একটি মন আছে। ফকির বা গরিব সেই সমাজের ধনীরা, যারা মানুষের এই দুর্দিনেও মানুষের হক মেরে খায়। তাদেরই মানসিক প্রতিবন্ধী বলতে হবে, যারা এই দুর্দিনে মানুষের খাবার চুরি করে।

    ফারুকের জন্য ১৯৯০ টাকা নিশ্চয়ই কম টাকা নয়। আমি চাই আপনারা এই ছবি সকলের কাছে পৌঁছে দিয়ে আমাদের সমাজের ফারুক নামের এই রত্নকে পরিচয় করিয়ে দিন।”

    ২৪ ঘণ্টা/রাজীব প্রিন্স