২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। রাজীব সেন প্রিন্স // দেশের মধ্যে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। মোট আক্রান্তের সিংহভাগই ঢাকা বিভাগে।
গতকাল ৯ মে শনিবার পর্যন্ত সরকারি ওয়েভ সাইট http://covid19tracker.gov.bd/ সংযুক্ত তথ্য মতে করোনা ভাইরাসে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭শ ৭০ জন।
এরমধ্যে শুধু ঢাকা বিভাগেই আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ৯শ ৮৭ জন। এই বিভাগের অন্য জেলাগুলোতেও সংক্রমণ বেশি।
ঢাকা বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা শহর ও জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৬শ ২৯ জন। এরপরেই রয়েছে নারায়ণগঞ্জ। এ জেলায় গতকাল পর্যন্ত সরকারি হিসেবে মতে ১ হাজার ১শ ৭৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এরপরেই আছে গাজীপুর। এ জলায় মোট আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে ৩শ ৩২ জন।
ঢাকা বিভাগের মধ্যে মুন্সিগঞ্জ জেলায় ২শ ১২ জন, কিশোরগঞ্জ জেলায় ২শ ২ জন, নরসিংদী জেলায় ১শ ৭১ জন, শরিয়তপুর জেলায় ৫৭ জন, মাদারিপুর জেলায় ৫৪ জন, গোপালগঞ্জ জেলায় ৫০ জন, টাঙ্গাইল জেলায় ৩১ জন, মানিকগঞ্জ জেলায় ২৮ জন, রাজবাড়ী জেলায় ২৩ জন এবং এ বিভাগের সবচেয়ে কম ফরিদপুর জেলায় গত শনিবার পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২১ জন।
এদিকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম বিভাগেও এখন পর্যন্ত ৬শ ৮১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল ৯ মে শনিবার রাত পর্যন্ত শুধুমাত্র চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় ২১৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি।
গতকাল ৯ মে শনিবার পর্যন্ত সরকারি ওয়েভ সাইট http://covid19tracker.gov.bd/ সংযুক্ত তথ্য মতে করোনা ভাইরাসে চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য জেলার মধ্যে চট্টগ্রামের পরেই রয়েছে কুমিল্লা। এ জেলায় গতকাল পর্যন্ত সর্বমোট ১শ ৬৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে কক্সবাজার সদর ও জেলায় ৭৭ জন, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৫৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৫৭ জন, চাঁদপুর জেলায় ৫৫ জন, নোয়াখালী সদর ও জেলায় ২৭ জন, ফেনী সদর ও জেলায় ৮ জন, রাঙ্গামাটি জেলায় ৪ জন, বান্দরবান জেলায় ৪ জন এবং সর্বশেষ সরকারি তথ্য অনুযায়ী খাগড়াছড়ি জেলায় ৩ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে।
এর আগে গতকাল শনিবার (৯ মে) দুপুরে করোনা ভাইরাস নিয়ে নিয়মিত অনলাইন সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬শ ৩৬ জন জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে মোট ১৩ হাজার ৭শ ৭০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো বাংলাদেশে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৮ জন। এ নিয়ে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২১৪ জনে দাড়িয়েছে।
এরমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান সহকারী খলিলুর রহমান করোনায় আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকালে মারা গেছেন। এর আগে একজন পরিচালকের মৃত্যু হয় করোনার ছোবলে। তাছাড়া দেশের মধ্যে পুলিশের মধ্যেই সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১৫শ ৯ জন পুলিশ সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৭ জন।
করোনার প্রবণতা বিশ্লেষণে সরকার গঠিত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য অধ্যাপক শাহ মনির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, তাদের টীম পর্যবেক্ষণ করে যে পূর্বাভাস দিয়েছে তাতে মনে করা হচ্ছে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহটি হবে সংক্রমণের চরম সময়। জুনের শেষ সপ্তাহ নাগাদ ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে নেয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই অভিজ্ঞ চিকিৎসক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, পরিস্থিতি খুব খারাপ হলে দিনে ৬৫ হাজারের মত মানুষ সংক্রমিত হতে পারে। যদি এমনই হয় তাহলে এর পাঁচ ভাগের এক ভাগকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা ডা. এবি এম আবদুল্লাহ বলেছেন, যেহেতু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল করা হয়েছে এখন এর প্রভাবে যদি সংক্রমণ বেড়ে যায় তখন আবারো কঠোর লকডাউন এমন কি প্রয়োজনে কারফিউ দেয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকবে না।
২৪ ঘণ্টা/আর এস পি