লক্ষ্মীপুরে নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) প্রতিরোধে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১১ দিন শহরের জামা-কাপড়, জুতা ও কসমেটিকসের দোকানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২০ মার্চ) বিকালে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও লক্ষীপুর বণিক সমিতির সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু দোকানে দোকানে গিয়ে এ নির্দেশনা দেয়।
একই সময় দ্রব্যমূল্য তালিকা না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দুই দোকানির ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ জরিমানা করেন।
এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত এ জেলায় করোনা আক্রান্ত কেউ শনাক্ত হয়নি। দোকানপাট বন্ধ কিংবা লকডাউন করার মত পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়নি।
অন্যদিকে চেয়ারম্যান টিপুর নির্দেশনা শুনে ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, করোনা আতঙ্কে শহরে মানুষের চলাফেরা কমে গেছে। এতে বেচাকেনাও কমেছে। তারা রাতে তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করছে। কিন্তু ১১ দিন বন্ধ রাখলে ঋণ পরিশোধ ও দোকান ভাড়ার টাকা দিতে সবাইকে হিমশিমে পড়তে হবে।
লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, করোনা প্রতিরোধে বণিক সমিতির পক্ষ থেকে জামা-কাপড়, জুতা ও কসমেটিকসের দোকানগুলো আগামি ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানগুলো খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ড. আবদুল গাফ্ফার বলেন, এ জেলায় এখনো পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত কেউ নেই। করোনা সন্দেহে ৪৬০ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে দোকানপাট বন্ধ কিংবা জেলা লকডাউন করার মত পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়নি।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, এ জেলায় ৪৫৮ জন প্রবাসী ও দুইজন ঢাকার একটি কারখানার শ্রমিককে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪ জন, সদর উপজেলায় ৬৯, রায়পুরে ১৭৪, রামগঞ্জে ৮৫, কমলনগর ২৫ ও রামগতিতে ১০৩ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে দিয়ে তাদেরকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কিন্তু চলতি মাসে ৩ হাজার ৬৬২ জন প্রবাসী লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩ হাজার ২১৪ জন প্রবাসীর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এদিকে হোম কোয়ারেন্টাইন বিধি লঙ্ঘন করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সদরে একজনের ৫ হাজার, রামগঞ্জে দুইজনের ২০ হাজার ও রামগতিতে একজনের ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। চারজনই বিদেশ ফেরত।