২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। রাজীব,চট্টগ্রাম : সন্তান হিসেবে একটি কথা বলতেন সবসময়, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার জন্য জীবনবাজি রাখতে হবে, তাকে ছাড়া এই বাংলাদেশ মুখথুবড়ে পড়বে, মনে প্রানে এটি বিশ্বাস করতেন চট্টলবীর এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
নেত্রীও তাকে সেভাবেই দেখেছেন, মৃত্যুর পরে ছুটে এসেছিলেন। প্রতিনিয়ত তার চিকিৎসার খবর নিয়েছিলেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। জন্মিলে মরিতে হবে, এই চিরন্তন সত্যের কাছে তিনি আত্মসমর্পন করেন আত্মবিশ্বাসের সাথে।
ঠিক এভাবেই নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে স্ট্যাটাস দিয়ে সন্তান হিসেবে পিতার বলে যাওয়া কথাগুলো প্রকাশ করে প্রয়াত পিতাকে স্মরণ করলেন মহিউদ্দিন চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ পুত্র শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি আজ ১৫ ডিসেম্বর পিতার ২য় মৃত্যুবার্ষিকীর দিন রাত ৮ টা ১১ মিনিটে স্ট্যাটাসটি আপলোড করেন।
২৪ ঘন্টা ডট নিউজের পাঠকদের জন্য নওফেলের স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরে হলো।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল লিখেছেন :
ধ্যানে জ্ঞানে, পিতা মুজিবকে তিনি লালন করতেন, চর্চা করতেন। আওয়ামী লীগ কে সংগঠিত করতে সারা দেশ চষে বেরিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে অস্ত্রধারী হয়েছিলেন। খুনী জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। প্রতিকূল পরিবেশে দূর্গম টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধুর কবর বাধিয়ে নিয়েছিলেন।
শেষ বয়সে জীবন সায়াহ্নে নেতার স্মরণে টুঙ্গিপাড়ায় তীর্থতূল্য ভ্রমণ করেছিলেন প্রতি বছর। আজীবন সাধারন মানুষের স্বার্থে দল এবং প্রশাসনকে পরিচালিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। কঠিন সময়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য বারবার জীবন ঝুঁকি নিয়েছেন, নেত্রীর প্রতি আনুগত্যের প্রশ্নে কখনও পিছপা হন নাই।
শ্রমজীবি মানুষের জন্য, বঙ্গবন্ধু মুজিব যেই রাজনীতি করার নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিছেন সেটাই আমৃত্যু করে গেছেন। পরিবার হারিয়েছেন কিন্তু আপোষ করেন নাই, পরিবার পরিজন, কোনো কিছুর কথা ভেবে পিছপা কখনও হন নাই।
একজন “মহিউদ্দিন চৌধুরী” সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার একজন সহকর্মী হিসেবে, সাধারন শ্রমজীবি মানুষের নেতা হিসেবে সমদৃত হয়েছেন সারা বাংলাদেশে।
প্রিয় নেত্রীর নির্দেশে আন্দোলন সংগ্রামের সাথে সাথে পার্বত্য শান্তি চুক্তি, নগরপিতার দায়িত্ব, আবার লাশ ধোয়ানো, রোগীর দেখভাল, রাস্তা পরিস্কাত, করেননি এমন কোনো কাজ বাকি ছিলোনা। আর্থিক সমৃদ্ধি কখনো তার হয়ে উঠেনি, এটি তিনি গৌরবময় মনে করতেন।
রাজনৈতিক জীবনের যবনিকাপাত ঘটিয়েছেন লালদীঘিতে বক্তব্য রেখে। জন্ম হয়েছিলো তার বিজয়ের মাসে, বিদায়ও সেই মাসেই সেই লালদীঘির ময়দানে জানাযার নামাজের মাধ্যমে। একটি জীবন্ত ইতিহাস ছিলেন, এখন প্রয়াত হয়ে মুজিব সেনাদের অনুপ্রেরণা জাগাবেন।
“এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী”, নানান বিশেষণে ঢাকা এই নামটির মাঝে একজন অতি সাধারণ মানুষের সাদামাটা জীবন লুকিয়েছিলো, লক্ষ্য ছিলো তার আদর্শিক পিতার নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালনের চেষ্টা করার। কোনো চাওয়া পাওয়ার জীবন তার ছিলোনা।
পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে শিয়ালদহ স্টেশনে সাধারণ শ্রমিকের জীবন থেকে, পতাকা উড়িয়ে জনপ্রতিনিধির জীবন সবই তিনি দেখেছিলেন। কিছু নিয়েই তার আক্ষেপ ছিলোনা। সন্তান হিসেবে একটি কথা বলতেন সবসময়, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার জন্য জীবনবাজি রাখতে হবে, তাকে ছাড়া এই বাংলাদেশ মুখথুবড়ে পড়বে, মনে প্রানে এটি বিশ্বাস করতেন। তার নেত্রীও তাকে সেভাবেই দেখেছেন, মৃত্যুর পরে ছুটে এসেছিলেন।
প্রতিনিয়ত তার চিকিৎসার খবর নিয়েছিলেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। জন্মিলে মরিতে হবে, এই চিরন্তন সত্যের কাছে তিনি আত্মসমর্পন করেন আত্মবিশ্বাসের সাথে।
আমি আজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সকলের প্রতি, যারা চট্টলবীর “এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী’র” মৃত্যুবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার জন্য দোয়া করেছেন, প্রার্থনা করেছেন, তাকে স্মরণ করেছেন। সারা দেশে তার অসংখ্য সহকর্মী এখনো বেচে আছেন, তাদের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
এদের সকলের আত্মত্যাগ, বিসর্জন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে একটি রাজনৈতিক দল থেকে পরিনত করেছেন একটি অনুভুতিতে। বিজয়ের মাসে সেই অনুভুতি, যার নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আমাদের সকলকে অনুপ্রানিত করে। এই দল, এই দেশ, এই মুজিব পাগল মানুষগুলোর প্রতি চিরঋণী হয়ে থাকবে।