Tag: নতুন সেতু

  • উদ্বোধনের আগেই সামান্য বৃষ্টিতে ভেসে গেল সেতু

    উদ্বোধনের আগেই সামান্য বৃষ্টিতে ভেসে গেল সেতু

    কক্সবাজার পৌর এলাকায় উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা একটি সেতু পানিতে ভেসে গেছে। পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কুতুব বাজার এলাকায় দুই দিনের সামান্য বৃষ্টিতে বুধবার সেতুটি ভেঙে পড়েছে।

    জানা গেছে, কক্সবাজার পৌরসভার দরপত্রে সেতুটির নির্মাণ কাজ পেয়েছিলেন পৌরসভার ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এস আই এম আক্তার কামাল আজাদ। সম্প্রতি সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

    সংযোগ সড়ক তৈরি করে আগামী মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল।
    কিন্তু তার আগেই দুই দিনের বৃষ্টিতে ভেসে গেল সেতুটি।

    এ ব্যাপারে এক নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি আতিকুল্লাহ কোম্পানি সাংবাদিকদের বলেন, ব্রিজটি নির্মাণে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি। বুধবার বিকেল চারটার দিকে ব্রিজটি ভেঙে অর্ধেক অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে।

    বাকি অংশে আমরা কোনো রডের ব্যবহার দেখিনি। শুধু সিমেন্ট দেখেছি।

    স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে বলেন, ভেঙে যাওয়া ব্রিজটি থেকে মাত্র ৪০ ফুট দূরে জাপানের দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে আরও একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। সেটি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এটা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • নতুন কালুরঘাট সেতুর স্বপ্ন নিয়ে সাংসদ বাদলের পরপাড়ে পাড়ি

    নতুন কালুরঘাট সেতুর স্বপ্ন নিয়ে সাংসদ বাদলের পরপাড়ে পাড়ি

    পূজন সেন, বোয়ালখালী প্রতিনিধি : বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধা সাংসদ মঈন উদ্দীন বাদল পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কালুরঘাটে সড়ক কাম রেল সেতুর দাবিতে অনড় ছিলেন। শুধুমাত্র কালুরঘাট সেতু নয়, বোয়ালখালীকে গড়তে চেয়েছিলেন আধুনিক মডেল উপজেলা হিসেবে।

    স্বপ্ন দেখেছিলেন সুখী সমৃদ্ধ অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এ সৈনিক তার স্বপ্নের কথাগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য আপ্রাণ আমৃত্যু চেষ্ঠা করে গেছেন।

    বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ভোরে ৬৭ বছর বয়সে ভারতের বেঙ্গালুর নারায়ণা হৃদরোগ রিসার্চ এণ্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদল। তাঁর মৃত্যুর খবরে বোয়ালখালীর স্বর্বস্তরের মানুষের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

    ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল (জাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদল প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন। সংসদের অনর্গল বক্তা হিসেবে আপামর জনসাধাণের হৃদয় জয় করেন নেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনেও সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।

    শুরু থেকেই বোয়ালখালীকে স্বপ্নের উপজেলা গড়ার স্বপ্ন বুনেন তিনি। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে বড় বাধা কর্ণফুলী নদীর ওপর বিট্রিশ আমলে নির্মিত জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু। সংসদে বারবার তিনি সড়ক সেতু নির্মাণের দাবি নিয়ে কথা বলেছেন।

    গত দুই বছর আগে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি সরকারকে জানিয়ে দেন ‘কালুরঘাটে সেতু দেখে যেতে না পারলে মরেও শান্তি পাবো না’। ২০১৮ সালের নির্বাচনের জাতীয় সংসদের অধিবেশনে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর বিষয়ে সুরাহা না হলে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

    এ সেতু নির্মাণের প্রয়োজনে নিজ দল জাসদ ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের কথা বলেছিলেন তিনি। যে কোনো কিছুর বিনিময়ে কালুরঘাটে সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি পূরণ করতে চেয়েছিলেন এ সাংসদ। এই সড়ক কাম রেল সেতু জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণের প্রস্তাব রেখেছিলেন সংসদে।

    সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর কালুরঘাটে সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণের দাবিতে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাসদ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদল বলেছিলেন, সেতু নির্মাণের দায়িত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন। তিনি করবেন বলে আশা রাখি। বোয়ালখালী উপজেলাকে দেশের আধুনিক মডেল উপজেলা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। পৌর এলাকার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে একটি কারিগরি বিদ্যালয় করার ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া বিগত দিনের স্বপ্ন অপূরণ থাকার কথা পুন ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।

    এছাড়াও শুরু থেকে বোয়ালখালী উপজেলার পাহাড়ে অবস্থিত তিন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র ও কমপ্লেক্স গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। এ স্বপ্নের কথাগুলো বিভিন্ন সভা সমাবেশে বারবার বলেছিলেন বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ। তিনি উপজেলা কড়লডেঙ্গা পাহাড়ের পাদদেশে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারসহ ডাকবাংলো করার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েও তা নানা জটিলতার কারণে পূরণ হয়নি সাংসদের স্বপ্ন।

    ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলীতে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি জাসদ একাংশের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন ছেলে এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।

    সাংসদের মৃত্যুতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বোয়ালখালী শাখার সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস জানান, সাংসদ বাদলের মৃত্যুতে বোয়ালখালীবাসী একজন গুনী ব্যক্তিকে হারালো। তাঁকে আরো বেশ কিছুদিন বোয়ালখালীবাসীর প্রয়োজন ছিলো।

    বোয়ালখালী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি রাজু দে বলেন, সাংসদ বাদল গণমানুষের মনের কথা সাবলীলভাবে সংসদে তুলে ধরতেন। তাঁর চিরবিদায়ে দেশের অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেল।