Tag: নাগরিকত্ব আইন

  • ভালোবাসা দিবসে বিয়ে,১২ দিন পর দাঙ্গায় স্বামীহারা ফাতিমা

    ভালোবাসা দিবসে বিয়ে,১২ দিন পর দাঙ্গায় স্বামীহারা ফাতিমা

    ভারতের রাজধানী দিল্লীতে বিগত কয়েকদিনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বিয়ের মাত্র ১২ দিনের মাথায় নিহত হলেন ২২ বছর বয়সী আশফাক হোসেন।

    দুপুরে ভাত খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু আর ফেরা হলো না তার। তাকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।

    প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এখন তার লাশ পেতে অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার। গায়ে জ্বর নিয়ে বাড়িতে পরে আছেন স্ত্রী তাসলিমা ফাতিমা। ঘুমের মধ্যে স্বামীকে হাতড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। স্বামীকে ভালোভাবে জানা কিংবা চেনা হলো না সদ্য বিবাহিত এই তরুণীর।

    দিল্লির গোকুলপুরীর অন্তর্গত মুস্তফাবাদের ঘিঞ্জি গলির এক পাশে কোনও রকমে মাথা গোঁজার একটা জায়গা তাদের। পরিবার নিয়ে সেখানেই বসবাস পেশায় বিদ্যুৎকর্মী আশফাকের।

    বিয়ে করেন গত ১৪ ফেব্রুয়ারির ভ্যালেন্টাইন ডেতে। উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহরের তসলিমার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ভেবেছিলেন সব কিছু মিটিয়েই দিল্লি ফিরবেন। তসলিমকে নিয়ে সেখানেই নতুন জীবনে পা রাখবেন। একে অপরকে চিনবেন, জানবেন। কিন্তু কাজের প্রয়োজনে রোববার রাতে স্ত্রীকে ছাড়াই মুস্তফাবাদে ফেরেন আশফাক। ঠিক তখনই জাফরাবাদ এবং মৌজপুরে বিক্ষোভের আগুনে লাগে।

    উত্তরপ্রদেশেও সে খবর পৌঁছায়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে পর দিন ফিরে আসেন তসলিমও।

    নয়াবউ হিসেবে ওই দিন তার কাঁধেই রান্নার ভার পড়ে। রান্না সেরে দুপুর নাগাদ সবাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন। সেই প্রথম পাশাপাশি বসে খাওয়ার সুযোগ হয় স্বামী-স্ত্রীর। কিন্তু দুপুরে খাওয়ার পরই একটি ফোন আসে আশফাকের কাছে।

    বলা হয়, পাড়ায় একটি বাড়িতে আচমকা বিদ্যুৎ চলে গিয়েছে। তাকে গিয়ে দেখতে হবে। ১২ দিনের স্ত্রীকে রেখে বাড়ি থেকে বের হন আশফাক। পরস্পরকে সেই শেষ দেখা তাদের। তারপর আর ফেরা হয়নি আশফাকের।

    বাড়ি থেকে কিছু দূর এগোতেই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরিবারের লোকজন কিছু জানার আগে স্থানীয়রাই তাকে নিউ মুস্তফাবাদের আল হিন্দ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মৃত্যু হয় আশফাকের। ময়নাতদন্তের জন্য পরে গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তার মরদেহ। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত তার দেহ হাতে পায়নি পরিবার।

    এদিকে ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অন্তত ৪২জন নিহত হয়েছেন। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দিল্লি পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

    এক বিবৃতিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতির বিষয়টি তারা বিবেচনা করেছেন।

    এদিকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে বৃহস্পতিবার ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক সতর্ক বিবৃতিতে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক অ্যালিস ওয়েলস দেখাতে চেয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার মতানৈক্য সামান্যই।

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের সময়েই এই দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। অ্যালিস বলেন, আমরা মোদির কথারই প্রতিধ্বনি করে শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাচ্ছি। সব পক্ষকেই শান্তি বজায় রাখা ও সহিংসতা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

    দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে এই দাঙ্গা নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, এটা ভারতের বিষয়। ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মোদির অবিশ্বাস্য বিবৃতিরও প্রশংসা করেন তিনি।

    ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিস্তৃত সহিংসতা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, তার সমালোচনা করেছেন দেশটির ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স।

    জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। মানবাধিকার রক্ষায় তাদের নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছে।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মুসলিমবিদ্বেষী এই সহিংসতার শুরুতে পুলিশ নিষ্ক্রীয় ছিল। তলোয়ার, বন্দুক ও পাথর নিয়ে হিন্দুত্বাবাদীরা মুসলমানদের ওপর হামলা চালায়। তারা মুসলমানদের মসজিদ, ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও সম্পত্তি আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করে দিয়েছে।

    আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন কমিশমনও পুলিশের নিষ্ক্রীয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

    দিল্লিতে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে বেছে বেছে মুসলিমদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। সব দেখেও সরকার নীরব বলে অভিযোগ করেছে এই কমিশন।

    মার্কিন কমিশন বলেছে, মুসলিমদের ওপর আঘাতের আবহে ভারত সরকারের উচিত ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা।

  • দিল্লিতে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ওআইসি

    দিল্লিতে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ওআইসি

    বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের জেরে বেশ কয়েকদিন ধরে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত। দেশটির রাজধানী দিল্লিতে গত কয়েকদিন ধরেই সহিংসতা চলছে। যেখানে উগ্র হিন্দুরা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন। এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।

    বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওআইসি বলেছে, ভারতে মুসলিমদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। এই ঘৃণ্য হামলায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি আমরা আন্তরিক শোক প্রকাশ করছি। ভারত সরকারের উচিত হত্যা ও হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া।

    এছাড়া ভারতে বসবাসকারী সব মুসলমান নাগরিক ও ধর্মীয় পবিত্র স্থানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওআইসি।

    তবে ওআইসির এই বিবৃতিকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভিশ কুমার বলেছেন, দিল্লিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের কাছে অনুরোধ, তারা যেন দিল্লিতে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য না দেন।

    এ দিকে গত কয়েকদিনের সহিংসতায় ভারতে এখন পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক মানুষ।

  • দিল্লিতে নিহত বেড়ে ৩৫; জাতিসংঘের ক্ষোভ

    দিল্লিতে নিহত বেড়ে ৩৫; জাতিসংঘের ক্ষোভ

    ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গত রোববার থেকে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে শুুুরু হওয়া সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

    এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিল্লি যে ব্যর্থ সে কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দিল্লিতে এতো মানুষের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।

    খবরে প্রকাশ, সিএএ সমর্থনকারী ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এদিকে বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় প্রাণ গেল আরও সাতজনের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এর ফলে দিল্লিতে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আড়াইশ’র বেশি মানুষ। ৭০ জনের শরীরে গুলির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

    দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অশান্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন বলে জানানো হয়েছে। বুধবার রাতের পর থেকে আর নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

    ইতোমধ্যে আহত ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। নিহতদের দুই লাখ টাকা সরকারি ক্ষতিপূরণ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

    দিল্লির যে এলাকাগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে সেসব এলাকার বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সচেষ্ট হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

    বাইরে থেকে কেউ যেন দিল্লিতে প্রবেশ করে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন কেজরিওয়াল। পাশাপাশি বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

  • জ্বলছে দিল্লি:দেখামাত্র গুলির নির্দেশ,নিহত ১৮

    জ্বলছে দিল্লি:দেখামাত্র গুলির নির্দেশ,নিহত ১৮

    ভারতের রাজধানী দিল্লিতে টানা তিন দিন ধরে চলছে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। ফলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকা।

    অভিযোগ, একদল মানুষ লাঠি, রড নিয়ে মুসলিমদের উপর সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে। পুড়িয়ে দিচ্ছে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকান। বহু জায়গাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে কারফিউ। ইতিমধ্যেই সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮। আহত হয়েছে ২৫০-এর বেশি মানুষ।

    মঙ্গলবার ৬৭ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনীকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিয়োগ করা হয়েছে।সেনাবাহিনীকেও তৈরি রাখা হয়েছে।

    বুধবার সকালের দিল্লি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হয়েছিলেন জামিয়া ও জেএনইউয়ের ছাত্ররা। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান প্রয়োগ করেছে বলে জানা গেছে।

    পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শনে মঙ্গলবার মধ্যরাতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়েছিলেন।

    উত্তর-পূর্ব দিল্লির পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকও করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন তিনি। সূত্রের খবর, পুলিশকে হিংসা দমনে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। দিল্লির হিংসা নিয়ে খবর সম্প্রচারের উপরে সংবাদমাধ্যমগুলিকে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

    বলা হয়েছে, এমন কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না, যা হিংসায় মদত জোগাতে পারে। এদিকে, পুলিশ দাবি করেছে, হিংসায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০ জনকে আটক করেছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ঢোকার ৩টি পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

    দিল্লি পুলিশের স্পেশাল কমিশনার জানিয়েছেন, জাফরাবাদ ও মৌজপুর চক থেকে বিক্ষোভকারীদের তুলে দেয়া হয়েছে। রবিবার থেকে জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের সামনে মহিলারা নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে অবস্থান শুরু করার পর থেকেই নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ নিয়ে একদল আক্রমণ শুরু করে।

    এরপর থেকেই শহরের ভজনপুরা ও মৌজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করেছে। তবে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে একদল যুবক বেপরোয়াভাবে আগুন লাগানো থেকে শুরু করে আন্দোলনকারীদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন।

    সেখানেই আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লি পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন।

    মঙ্গলবার রাতে নজিরবিহীনভাবে দিল্লি হাইকোর্ট দিল্লি পুলিশকে এক নির্দেশে উপদ্রুত এলাকা থেকে আহতদের নিরাপদে হাসপাতালে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতে বলেছেন। জানা গেছে, আজ সুপ্রিম কোর্টেও দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে শুনানি হবে।

  • দিল্লিতে সাংবাদিকের প্যান্ট খুলতে ধর্ম যাচাই

    দিল্লিতে সাংবাদিকের প্যান্ট খুলতে ধর্ম যাচাই

    প্রথম বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের মধ্যেই নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে রাজধানী নয়াদিল্লি।

    সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ভুক্তোভোগী হয়েছেন দেশটির প্রথমসারির সংবাদমাধ্যমগুলোর সাংবাদিকরাও।

    সংঘর্ষ চলাকালে সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে, মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে। এমনকি সাংবাদিক মুসলমান কিনা তা নিশ্চিত করতে প্যান্ট খুলে যাচাই করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে।

    মঙ্গলবার দেশটির প্রসিদ্ধ সংবাদমাধ্যম দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস এসব তথ্য নিশ্চিত করে একটি অনলাইন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

    সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লিতে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন কেন্দ্র করে ক্ষোভের নিশানায় পড়েছে সংবাদমাধ্যম। মঙ্গলবার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বেধড়ক মারধর করা হয়েছে আরও দুই সংবাদকর্মীকে। এর আগের দিন বিক্ষোভে উত্তপ্ত এলাকায় খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছেন এক বাঙালি সাংবাদিক। তাকে প্যান্ট খুলে নিশ্চিত করতে হয়েছে তিনি মুসলমান নন।

    মঙ্গলবার টাইমস অফ ইন্ডিয়ার চিত্র সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এমন সাম্প্রদায়িক ত্রাসের শিকার হন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।

    বিড়ম্বনাময় অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে ভুক্তোভোগী সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় জানান, উত্তেজনাপূর্ণ জাফরাবাদ অঞ্চলে সংবাদ সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি ও তার সহকর্মী সাংবাদিক।

    সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মৌজপুর মেট্রো রেল স্টেশন এলাকায় একটি হিন্দু সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের হাতে এ হেনন্তার শিকার হন তিনি।

    তিনি জানান, সেদিন তার কপালে তিলক এঁকে দিতে তৎপর হলে তিনি আপত্তি করলে ক্ষিপ্ত হয়ে যান ওই সংগঠনটির সদস্যরা। হিন্দু হলে তিলক আঁকতে আপত্তি কিসের প্রশ্ন করা হয় তাকে।

    এর ১৫ মিনিট পরেই এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয় এবং ‘মোদি’ ‘মোদি’ স্লোগানের মাঝে কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যায়।

    এ সময় স্থানীয় একটি বাড়িতে আগুন লাগলে অগ্নিকাণ্ডের ছবি তুলতে গিয়ে আবারও বাধাপ্রাপ্ত হন এবং সেই একইধরনের প্রশ্নের সম্মূখীন হন। তারা সাংবাদিক অনিন্দ্য বলেন, ‘আপনিও তো হিন্দু। তা হলে ওখানে কেন যাচ্ছেন? আজ হিন্দুরা জেগে উঠেছে।’

    তবে তাদের কথায় কান না দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছবি তুলতে গেলে অনিন্দ্যকে একদল সশস্ত্র চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তারা তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।

    এ ঘটনার কিছু পরেই এক তরুণ এগিয়ে এসে সাংবাদিক অনিন্দ্যকে ফের পথরোধ করে হুমকি দেয় ও জিজ্ঞেস করে, ‘তুই একটু বেশি চালাকি করছিস। তুই হিন্দু, না মুসলিম?’

    এ সময় তারা সাংবাদিক অনিন্দ্যর প্যান্ট খুলতে বাধ্য করে এবং তার ধর্মীয় চিহ্ন খোঁজার চেষ্টা করে। অবস্থা বেগতিক দেখে হাতজোড় করে অনেক অনুনয়-বিনয় দেখানোর পরে কোনো মতে রেহাই পান ওই চিত্র সাংবাদিক।

    তখনও বিপদ কাটেনি ওই সাংবাদিকের। অটোরিকশা নিয়ে ফেরার পথে ফের সশস্ত্র বাহিনীর মারধরের মুখে পড়েন ।

    কারণ তিনি প্যান্ট খুলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বলে নিশ্চিত করলেও অটোরিকশাচালক মুসলমান ছিলেন। তাই ফের সশস্ত্র বাহিনীর রোষানলে পড়তে হয়।

    তাদের মাঝপথে থামিয়ে ঘেরাও করে চারজন সশস্ত্র যুবক। কলার ধরে দুজনকে অটো থেকে নামিয়ে মারধরের চেষ্টা করে। সাংবাদিক পরিচয় এবং অটোচালক নির্দোষ, এমন কথা বলে অনেক অনুনয়ের পরে তারা ছাড়া পান।

    অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘মুহূর্তগুলো আমার পার হলো ভয়ানক আতঙ্কে। ওই অটোওয়ালাই যখন আমাকে অফিসে দিয়ে গেল, তখনও সে ভয়ে কাঁপছে। চলে যাওয়ার আগে শুধু বলল, ‘সারা জীবনে কেউ আমাকে ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করেনি কখনো।’

    এনডিটিভি জানিয়েছে, সোমবার থেকে উত্তর-পূর্ব দিল্লিজুড়েই ১৪৪ ধারা করা হয়েছিল। মঙ্গলবারও তা অব্যাহত ছিল। কিন্তু কারফিউ উপেক্ষা করেই মঙ্গলবার পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এতে দিল্লি পুলিশের উদ্বেগ আরো বেড়েছে।

    পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পেরে অবশেষে সন্ধ্যার দিকে সবচেয়ে উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে ফের কারফিউ জারি করা হয়েছে।

    ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ায় উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

  • ট্রাম্পের সফরের দিনে রণক্ষেত্র দিল্লি, পুলিশ নিহত

    ট্রাম্পের সফরের দিনে রণক্ষেত্র দিল্লি, পুলিশ নিহত

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সপরিবারে ভারত সফরের মধ্যে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ভারতের রাজধানী শহর নয়াদিল্লি।সংশোধিত নাগরিক আইন (সিএএ) নিয়ে আবার উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত। নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ-বিপক্ষে এই হাঙ্গামায় পড়ে নিহত হয়েছেন পুলিশের একজন হেড কনস্টেবলের। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব দিল্লির একাধিক জায়গায় নতুন করে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে।

    সোমবার দুই দিনের সফরে ভারতে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সন্ধ্যায় আগ্রার তাজমহল পরিদর্শন শেষে দিল্লি যান তিনি। ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দিল্লি সফরে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারেন বলে এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

    ট্রাম্পের সফরের প্রথম দিনই ঘটল এই সংঘর্ষ। তাতে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার। শান্তি বজায় রাখতে ইতিমধ্যে বিক্ষোভকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। দুই পক্ষকে শান্ত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজলও।

    শনিবার রাত থেকে শাহিন বাগের ধাঁচে বিক্ষোভ চলছে জাফরাবাদের রাস্তায়। কয়েক শ মহিলা জড়ো হন সেখানে। তা নিয়ে রবিবার পুলিশকে হুমকি দিয়েছিলেন বিজেপির কপিল মিশ্র। তিন দিনের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের না হঠালে তারাও পাল্টা রাস্তায় নামবেন। সেই নিয়ে রবিবারই তেতে উঠেছিল জাফরাবাদ।

    গতকাল দুপুরেও তা নিয়ে বিক্ষোভ চলছিল গোকুলপুরি, ভজনপুরা এলাকায়। তখনই সিএএ-র সমর্থনে একদল মানুষ সেখানে এসে হাজির হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে দিতে সিএএ বিরোধী মিছিলের সামনে হাজির হয় দলটি। তাতে রাস্তার ওপরই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। একে অপরকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইট ছুড়তে থাকে। বেশ কিছু গাড়ি ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি একটি পেট্রোল পাম্পেও আগুন ধরানো হয় বলে অভিযোগ।

    খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তাতে সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করে। পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইটবৃষ্টি শুরু হয়। তাতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান রতনলাল নামের এক হেড কনস্টেবল। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

    ইটের আঘাতে আরও বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। জিটিবি হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।

    ঘটনার সময়কার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে পিস্তল উঁচিয়ে পুলিশকে শাসানি দিতে দেখা গিয়েছে এক যুবককে। এমনকি গুলির শব্দও শোনা গেছে। তবে ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

    ক্ষোভ যাতে চরম আকার ধারণ না করে, তার জন্য ইতিমধ্যেই জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, জোহরি এনক্লেভ এবং শিব বিহার মেট্রো স্টেশনের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনো ট্রেন দাঁড়াবে না। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারাও জারি হয়েছে।

    এ দিনের ঘটনার জন্য বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রকে দায়ী করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। রবিবার জাফরাবাদে অশান্তির পর থেকে টুইটারে একাধিক মন্তব্য পোস্ট করেছেন কপিল মিশ্র। কোথাও তিনি লেখেন, ‘দিল্লিতে দ্বিতীয় শাহিন বাগ হতে দেব না।’

    এই ধরনের মন্তব্য করে কপিল মিশ্রই জাফরাবাদে হিংসায় মদত জুগিয়েছেন বলে এ দিন অভিযোগ করেছেন ওয়াইসি।

  • প্রণব মুখার্জির মেয়ে শর্মিষ্ঠা আটক

    প্রণব মুখার্জির মেয়ে শর্মিষ্ঠা আটক

    ধর্মভিত্তিক নাগরিকত্ব আইন পাসের প্রতিবাদে যখন উত্তাল ভারত তখন পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি।

    আজ শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাড়ির সামনে থেকে শর্মিষ্ঠা মুখার্জিকে আটক করা হয়।

    বার্তাসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে ধর্মভিত্তিক নাগরিকত্ব আইন পাসের প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাড়ির সামনে দিল্লি কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন শর্মিষ্ঠা মুখার্জি। এ সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তার সঙ্গে দলটির অন্তত ৫০ মহিলাকে আটক করে পুলিশ।

    উল্লেখ্য, প্রধান শর্মিষ্ঠা দিল্লি কংগ্রেসের মহিলা ইউনিটের প্রধান। নিজের আটকের কথা টুইটারে নিজেই জানিয়েছেন শর্মিষ্ঠা মুখার্জি।

    তিনি টুইটে লেখেন, আমাদের আটক করে মন্দির মর্গ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

    প্রসঙ্গত বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী দিল্লিসহ অন্তত দশটি রাজ্যের তেরোটি শহর।

    বিক্ষোভ দমাতে দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ কয়েকটি রাজ্যে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ও ১৪৪ ধারা জারির পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

    বৃহস্পতিবার ১৪৪ ধারা ভাঙার শপথ নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে রাজপথে নেমে এসেছে কয়েক লাখ প্রতিবাদী জনতা। এসময় পুলিশের গুলিতে বেঙ্গালুরু ও লখনৌ রাজ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন।

    এছাড়াও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। এর মধ্যে রয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ডি রাজা, সীতারাম ইয়েচুরী, নীলোৎপল বসু, বৃন্দা করত, অজয় মাকেন, সন্দ্বীপ দিক্ষিত প্রমুখ। পূবের কলম।

  • উত্তপ্ত ভারত:পুলিশের গুলিতে নিহত ৩

    উত্তপ্ত ভারত:পুলিশের গুলিতে নিহত ৩

    সারা ভারত জুড়ে চলছে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঢেউ। বিক্ষোভের মুখে পরে পুলিশের গুলিতে নিহত ৩, আহত বহু মানুষ।

    বৃহস্পতিবার কর্নাটকের ম্যাঙ্গালুরু শহরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ চলার সময় পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে দুইজন নিহত হয়েছে। উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌয়েও গুলিতে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে।

    বৃহস্পতিরার অন্তত ১০টি রাজ্যের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে নাগরিক সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পর অসমে বিক্ষোভের সময় ৫ জন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ম্যাঙ্গালুরুতে চার পুলিশ সদস্যকে গুলি চালাতে দেখা গেছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের একটি দলকে লক্ষ করে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার হাসপাতালের কর্মকর্তারা আহত দুইজনের মৃত্যুর খবর জানান।

    স্থানীয় একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, এদিন বিকাল থেকেই শহরটিতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভে নামা বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে।

    ওদিকে উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌয়ে বৃহস্পতিবার একজনের মৃত্যুর খবর সম্পর্কে বিক্ষোভকারীরা বলেছে, বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন পুলিশের গুলিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কথা অস্বীকার করেছে।

    সহিংসতার আশঙ্কায় বুধবার রাত থেকেই গোটা উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন। চারজনের বেশি লোকের জমায়েতের উপর জারি করা হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল ব্যাঙ্গালুরুসহ কর্ণাটকের বিভিন্ন স্থানেও।

    বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে ২১ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যাঙ্গালুরুতে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাস্তায় নামে জনতা।

  • নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদী টালিউড

    নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদী টালিউড

    ভারতজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে অশান্তির আবহ। আসাম, ত্রিপুরা, বাংলার পর অশান্তির আঁচ রাজধানী দিল্লিতে।

    গত রোববার বিকেলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। আর বিক্ষোভের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ওপর দিল্লি পুলিশ চড়াও হয়।

    বিষয়টি নিয়ে নিন্দা জানান টালিউড তারকারা। জামিয়ার পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, পরিচালক অপর্ণা সেন, সৃজিত মুখার্জি, অনুপম রায় থেকে অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকেই। প্রতিবাদে জাতীয় পুরস্কার বয়কট করেছেন পরিচালক সুপ্রিয় সেন।

    অন্যদিক নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গণআন্দোলনে পথে নেমেছেন গৌতম ঘোষ, মিমি চক্রবর্তী, সোহম, নুসরাত জাহান।

    অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি টুইটারে লেখেন, আর কেউ না হলেও ছাত্ররা এই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। ‘ব্ল্যাক ডে’ হিসেবে উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় সরকারের জোর সমালোচনা করেছেন তিনি।

    পরমব্রত লেখেন, হিরক রাজার দেশে। সৃজিত লেখেন, দেশের ছাত্রসমাজের উপর এরকম নৃশংস আক্রমণের তীব্র নিন্দা করছি। পরিচালক অরিন্দম শীলও জামিয়া পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে পোস্ট শেয়ার করেছেন।

  • বাংলায় এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন মানব না:মমতা

    বাংলায় এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন মানব না:মমতা

    নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি কিছুতেই কার্যকর করা হবে না পশ্চিমবঙ্গে। সোমবার আরও একবার সাফ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    একইসঙ্গে রাজ্যে সাম্প্রতিক বেড়ে চলা ঘটনায় কেন্দ্রের উপরেও দায় চাপিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গত কয়েকদিন অধিকাংশ ট্রেন চালানোও কেন্দ্র বন্ধ রেখেছে বলেও এদিন অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বাতিলের দাবিতে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। সোমবার থেকে পথে নেমে প্রতিবাদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আম্বেদকর মূর্তি থেকে মিছিল শুরু করেন তৃণমূল প্রধান। জোড়াসাঁকো চত্বরে এসে শেষ হয় মিছিল।

    নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে উত্তাল বাংলা। গত কয়েকদিন ধরেই এই আইনের প্রতিবাদে রাজ্যের কোণায় কোণায় আন্দোলনের নামে চলছে তাণ্ডব। ট্রেন জ্বালিয়ে, বাস পুড়িয়ে চলা আন্দোলনে এককথায় বিপর্যস্ত রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা। পূর্ব ঘোষণা মতোই সোমবার তৃণমূলের উদ্যোগে নাগরিক্তব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে মিছিল শুরু হয় আম্বেদকর মূর্তি থেকে।

    মিছিল শুরুর আগেই উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের দিয়ে শপথবাক্য পাঠ করান তৃণমূল প্রধান। বাংলায় এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন কার্যকর নয়। কেন্দ্রের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে শান্তিপূর্ণ পথে লড়াইয়ের বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে চলে মিছিল। তৃণমূলনেত্রীর পাশাপাশি মিছিলে সামিল হন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

    জোড়াসাঁকোতে মিছিল শেষে দেওয়া বক্তৃতায় আগাগোড়া কেন্দ্রকে তুলোধনা করেন তৃণমূলনেত্রী। গত কয়েকদিন ধরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের মদতে অধিকাংশ ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণণূলনেত্রীর। কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইন অসাংবিধানিক বলে ফের একবার জানালেন মমতা। বিজেপির তোলা দাবি নিয়েও এদিন মুখ খুলেছেন মমতা। রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছে বিজেপি। বিজেপির দাবি প্রসঙ্গে এদিন মমতার সাফ জবাব, ‘কেউ কেউ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলছেন। সরকার ফেলে দিলেও মাথা নোয়াব না। কোনও মতেই বাংলায় এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন মানব না।’ দাবিতে অনড় থেকে ফের তৃণমূলনেত্রীর দাবি, ‘নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি প্রত্যাহার করতেই হবে। আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন চলবে।’

    এদিন আরও একবার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী। কেন্দ্রের পদক্ষেপের প্রতিবাদে রাজ্যের ব্লকে ব্লকে দলীয় কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে মিছিলের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরই পাশাপাশি আরও একবার আন্দোলনের নামে হিংসার বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলনের বার্তা দিয়ে মমতার আবেদন, ‘আন্দোলনের নামে ট্রেন-পোস্ট অফিসে আগুন ধরাবেন না। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করবেন না।’

    নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে আগামিকালও পথে নামবেন তৃণমূলনেত্রী৷ যাদবপুরের এইট বি বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিলে হাঁটবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদুবাবুর বাজার পর্যন্ত যাবে মিছিল।